১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইভিএম স্ট্র্যাটেজি!

- ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর এক বাসটার্মিনালে অলস আলাপ করছেন কয়েকজন ড্রাইভার। আমি একটু দূরে নীরব দর্শক মাত্র। নেতা গোছের একজন ননস্টপ কথা বলেই যাচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘উনি তো গত ইলেকশনের পর থেকে বুদ্ধিতে শাণ দিচ্ছেন আগামী নির্বাচনে কী কৌশল করবেন। বিনা ভোটের নির্বাচন শেষ। রাতের নির্বাচন শেষ। এখন নতুন ফন্দিফিকির তালাশ করছেন কিভাবে আগামী নির্বাচনেও আগের মতো জেতা যায়।’ যে দিন প্রধানমন্ত্রী ইভিএমের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন করার কথা বললেন, এটি সে দিন বা তার পরের দিনের কথা। একজন উত্তর করছেন, ‘এবারে তা হবে না।

বুদ্ধিশুদ্ধি সব শেষ। ইলেকশন কমিশনই তা করবে না। হুদা কমিশনের মতো হবে না মনে হয়।’ আরেকজন সংলাপে অংশ নিয়ে বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কথার ওপর তো তারা না করতে পারে না, তাই কায়দা কইরা কইছে তাদের হাতে অত ইভিএম নেই।’ এবার নেতা মন্তব্য করলেন, ‘তাহলে ধাক্কা তো একটা খাইলো!’ আমি নীরবে নিভৃতে কথাগুলো শুনছিলাম। বাংলাদেশ সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেন ‘এটি একটি অতিমাত্রিক রাজনীতিপ্রবণ দেশ।’ আমি হাতেনাতেই তার প্রমাণ পেলাম। এ দেশে সবাই রাজনীতি করে। রাজনীতি বোঝে। সরকারের পরিবর্তন চায় বারবার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাই একবার বলেছিল, সরকারের মেয়াদ হবে চার বছর। এতে জনগণের সরকার পরিবর্তন প্রবণতা এবং প্রকারান্তরে দুই মেয়াদের জন্য থাকা সহজ হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত গণতন্ত্রে এই প্রবণতা দেখা যায়। যা হোক আমরা ইভিএম প্রসঙ্গে ফিরে আসি।

গত সপ্তাহজুড়ে এই ইভিএম প্রসঙ্গটি প্রাধান্য পেয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রী, ‘ইভিএমে ভোট হবে’ বলার পর বিষয়টি নিয়ে বাদানুবাদ চলতেই থাকে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন আসলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচন কৌশল নিয়ে বিগত বছরগুলোতে কাজ করে আসছে। তাদের মিত্র বুদ্ধিজীবীরা এবং অফিসিয়াল থিংকট্যাংকগুলো অনেক ফন্দিফিকিরের কথা গবেষণা করছে বল জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে তারা একমত যে, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তাদের নেই। তাই যেতে হবে ক‚টকৌশলে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছে। তারা ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন হয়েছে। তারা ক্ষমতায় যেতে পারেনি। বিগত নির্বাচনগুলোতে কৌশল প্রয়োগের যুক্তিকতা- এতে বুঝা যায়।

বস্তুত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয়। আগামী নির্বাচনে এ ধরনের কৌশল ছাড়া তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো সুযোগ নেই। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তাদের পরাজয় ১০০ ভাগ অবধারিত। এই নিশ্চিত পরাজয়কে জয়েতে রূপান্তরের জন্য তাদের ছলাকলার শেষ নেই। আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচন কৌশল সম্পর্কে শেষ কথা বলার সময় এখনো আসেনি। খলের ছলের অভাব হয় না।

দৃশ্যত ইভিএম স্ট্র্যাটেজি নিয়ে তারা কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর ইভিএম মন্তব্য ছিল সম্ভবত একটি টেস্ট কেচ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও এর সাক্ষ্য মেলে। এই টেস্ট কেসে হতাশ হয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশন, গোটা নির্বাচন ইভিএমে করার সক্ষমতা তাদের নেই বলে প্রকারান্তরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল বিনয়ের সাথে এটাও বলেছেন যে বিষয়টি তাদের এখতিয়ারভুক্ত। অপর দিকে সব বিরোধী দল একবাক্যে না বলেছে। গণপরিষদে আপাত ‘না জয়যুক্ত হয়েছে, না জয়যুক্ত হয়েছে, না জয়যুক্ত হয়েছে।’ জাতীয় সংসদে হ্যাঁ জয়যুক্ত হলেও এই হ্যাঁ ও না-এর দ্বন্দ্ব নির্বাচনকাল অবধি তাড়িয়ে বেড়াবে। ইভিএম নির্বাচন সম্পর্কে একেবারে প্রথম থেকেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কঠোর মনোভাব প্রদর্শন করে আসছে। শামসুল হুদা ২০১০ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর ইভিএম প্রয়োগে উৎসাহী হয় বলে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি ইসির বৈঠকে সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের মিত্র ছাড়া আরকেউই ইভিএম সমর্থন করেনি। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর মুখে বিতর্কিত ইভিএমের কথা উচ্চারিত হওয়ায় সবাই নতুন করে উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, আগামী নির্বাচনের ৩০০ আসনেই ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। অথচ নির্বাচন কমিশনের সেই সক্ষমতা আছে কি না তা বিবেচনায় নেয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে সব সংসদীয় আসনে ভোটের জন্য সাড়ে চার লাখ ইভিএম প্রয়োজন হলেও ইসির হাতে রয়েছে মাত্র দেড় লাখ ইভিএম। কমিশনের হাতে বিদ্যমান ইভিএম দিয়ে মাত্র ১০০ সংসদীয় আসনে ভোট করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান। নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে আগামীতে সব নির্বাচনই ইভিএম ব্যবহারের দিকে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। বর্তমান কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। নির্বাচন কমিশনের এই অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।অথচ বর্তমান কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ না হয়ে স্বাধীন হবে এই আশাবাদ মানুষের। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, আসন্ন কুমিল্লা সিটির ভোটও ইভিএম পদ্ধতিতে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ শুধু বাংলাদেশেই বিতর্কিত নয়; বরং গোটা বিশ্বে ইভিএম ব্যবহার অনেকাংশেই হ্রাস পেয়েছে। জটিলতার কারণে উন্নত দেশগুলো ইভিএম ব্যবহার থেকে সরে যাচ্ছে। আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস ইভিএম ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। জার্মান ও ফিনল্যান্ডে আদালতের নির্দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ইভিএম। যুক্তরাষ্ট্রে এবং ভারতের নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। পৃথিবীর শতকরা ৯০ ভাগ দেশে ইভিএম পদ্ধতি নেই। যে কয়েকটি দেশ এটি চালু করেছিল তারাও এখন এটি নিষিদ্ধ করেছে। ২০০৬ সালে আয়ারল্যান্ড ই-ভোটিং পরিত্যাগ করে। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে জার্মানি ফেডারেল কোর্ট ইভিএমকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা দেন।

২০০৯ সালে ফিনল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্ট তিনটি মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনের ফলাফল অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা করে। নেদারল্যান্ডসে ই-ভোটিং কার্যক্রমের প্রথম প্রয়োগ শুরু হয়। তবে জনগণের আপত্তির মুখে তা প্রত্যাহার করতে ব্যাধ্য হয় ডাস্ট সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, জালিয়াতির সুযোগ থাকায় এতে এক চাপে পঞ্চাশটি ভোট দেয়া সম্ভব। বিদেশের মাটিতে বসেও ইভিএম হ্যাকিং করা যায় এবং একটি ইভিএম হ্যাকিং করতে এক মিনিটের বেশি সময় লাগে না। ড. অ্যালেক্স হান্ডারম্যান আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে ইভিএমের পর গবেষণা করেন। তিনি প্রমাণ পেয়েছেন আমেরিকায় ইভিএম টেম্পার প্রæফ নয়। ফলে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যেও ইভিএম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। আমেরিকার ২২টির বেশি অঙ্গরাজ্যে এটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইভিএম ব্যবহার নিয়ে পাশের ভারতেও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ভারতের আদালতে ইভিএম নিয়ে একাধিক পিটিশন আছে। ভারতে বিভিন্ন এনজিও এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। এর মধ্যে ভারতের জনতা পার্টির প্রেসিডেন্টও তার দু’টি আসনে ইভিএম নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন। ভারতের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন জালিয়াতি প্রতিরোধ নয়- দাবি করেছেন একদল মার্কিন আইটি বিশেষজ্ঞ। আর এই ভারতের ইভিএমই বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ জন্যই রাজনৈতিক মহল ও জনগণের মধ্যে আগামী নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা বহুলাংশে বেড়েছে।

বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর উক্তির পর সিভিল সোসাইটির অন্যতম ব্যক্তিত্ব ড. জাফর ইকবাল বলেছেন, ‘ভোট যাকেই দেন ভানু-মতির খেলায় তা নৌকায় গিয়ে পড়বে।’ গণ অধিকার পরিষদের প্রধান রেজা কিবরিয়া প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সামনের বা পেছনের দরজা নয় আপনারা জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সন্দেহ পোষণ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এ সরকারের অধীনে যারা নির্বাচনে যাবে তারা জাতীয় বেঈমান। বস্তুত বাংলাদেশের বিগত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ছলা কলা করেই ক্ষমতায় গেছে। ১৯৭৩ সালে তারা সে প্রক্রিয়া শুরু করে। ১৯৭৫ সালে তারা চিরকালের জন্য ভোটের ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব কায়েম করে। সামরিক সরকারের আমলে তারা তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ১৯৯০ সালে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে তারা সামরিক জান্তা সৃষ্ট রাজনৈতিক দলের কাছে চরমভাবে হেরে যায়। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে ছলা কলা করেই তারা ক্ষমতায় আসে। এখন ২০২৩ সালের নির্বাচনেও কারসাজির মাধ্যমে ভোটে জিততে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা ডিজিটালের স্লোগান দিচ্ছে এবং ডিজিটাল ইভিএমকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করার ফন্দিফিকির আঁটছে।

নির্বাচনে বিরোধীদের অংশগ্রহণ নিয়ে ধোঁয়াশায় আছে তারা। তাদের একদল বুদ্ধি দিচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার। নির্বাচনকালীন সরকার না হলে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। এই সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারলে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তাতে সাপে বর হবে- এরকম ধারণা কতক আওয়ামী নীতিনির্ধারকের। অন্য দিকে নির্বাচনে ২০১৮-এর মতো কৌশল করে বিএনপিকে নিয়েই নির্বাচন করার খায়েশ কিছু নীতিনির্ধারকের। এদের যুক্তি প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন বৈধতা পাবে না। বিশেষ করে মার্কিন প্রশাসনের ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাপ অতিক্রম করা সহজ হবে না। অন্য দিকে শীর্ষ নেতৃত্ব ‘কুচ পরওয়া নেহি’ মনোভাবের ধারক। বেপরোয়াভাবে ক্ষমতায় থাকার কৌশল অবলম্বন করতে চান তিনি। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নতুন করে বিরোধী দল পেটানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অবশ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষপুষ্ট নয়। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে জিতে যাওয়ার প্রবণতা প্রবল হচ্ছে। শক্তি প্রয়োগে বিশ্বাসী অংশ মনে করে বিএনপির উচিত জাতীয় পার্টির মতো অনুগত থাকা। ক্ষমতাসীন দল হাত-পা বেঁধে দেবে, তারপরও দৌড়াতে হবে তাদের। বিএনপিকে হেরে যেতে হবে আনন্দের সাথে সন্তুষ্টির সাথে। তবেই তারা হতে পারবে সফল বিরোধী দল।

বিরোধী দলগুলোর এখন একমাত্র দাবি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার। অপর দিকে বিরোধীদের এক অংশ জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। এই উভয় দাবির প্রতি কঠিনভাবে না বলতে চায় আওয়ামী লীগ। বিএনপিও এবার অনড় এ দাবির পক্ষে। সুতরাং একটি সঙ্ঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে দেশ। ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিকভাবে নয়; বরং ক‚টচালে জিততে চায় আওয়ামী লীগ। পর্দার অন্তরালে রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা আছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের আশঙ্কা ছিল। তা ছাড়া ২০১৮ এর নির্বাচন প্রমাণ করেছে যে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না। তাই এখন তত্তাবধায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি যৌক্তিক প্রমাণিত। এ বিষয়ে পাশের সরকারকে সম্মত করানোর চেষ্টায় আছে বিরোধী দলগুলো- এরকম গুজবও শোনা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুক‚ল নয় ক্ষমতাসীনদের। এ দিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ঐক্যের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। ক্ষমতাসীন সরকারও সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বিএনপিকে ভাঙার। অন্যান্য দলকেও ভাগ করে শাসন করাকে নিরঙ্কুশ করতে চায় আওয়ামী লীগ।

ইভিএম কৌশলের মাধ্যমে ভোটে যে স্বপ্ন আওয়ামী লীগ দেখছে- তা হয়তো স্বপ্নই থেকে যাবে। বিরোধী দলগুলো যদি কার্যকর গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করতে পারে তাহলে ইভিএম উড়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ ভূমিকায় জনগণ সুড়ঙ্গের অবশেষে আশার ক্ষীণ আলো দেখতে পাচ্ছে। জনগণ ও নির্বাচন কমিশনের আশা-আকাক্সক্ষা ও কার্যক্রমের যদি সমন্বয় ঘটে তাহলে সব স্ট্র্যাটেজি ব্যর্থ হবে। সফল হবে জনগণতন্ত্র।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement