২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
শতবর্ষে প্রামাণ্য স্মৃতিচারণ

পঁচিশ মার্চের কাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধ্বংসযজ্ঞ

-

‘দ্বিতীয়বারের লাইনে দেখলাম একজন বুড়ো দাড়িওয়ালা লোক রয়েছে। সে বসে পড়ে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছে। আমার মনে হচ্ছিল, সে তার দাড়ি দেখিয়ে বোঝাতে চেয়েছিল যে, সে মুসলমান। কিন্তু বর্বর পাকবাহিনী তার কোনো কথাই শুনতে চায়নি। তাকে গুলি করে মারা হলো। মাঠের অপর দিকে অর্থাৎ পূর্বপাশে পাকবাহিনী একটি তাঁবু বানিয়ে ছাউনি করেছিল। সেখানে দেখছিলাম, ওরা চেয়ারে বসে বেশ কয়েকজন চা খাচ্ছে আর হাসি-তামাশা ও আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ছে।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের তদানীন্তন অধ্যাপক ড. নূরুলউলাহ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল মাঠের যে মর্মস্পশী দৃশ্য জানালা থেকে টেলিস্কোপ লাগিয়ে মুভি ক্যামেরায় ধারণ করেছিলেন তারই একটি চিত্র এটি। এর আগের রাতেই অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তান সশস্ত্রবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বা বাঙালি ‘এথনিক ক্লিনজিং’ শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকেই।

আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ দুটি তারিখ ২৫ ও ২৬ মার্চ সমাগত। ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস এবং একাত্তরের ২৫ মার্চের কাল রাতেই বর্বর পাকবাহিনী নিরীহ বাঙালির ওপর চালিয়েছিল নৃশংস বর্বরতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ (১৯২১-২০২১) উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে ১২ মার্চ ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দিনব্যাপী আয়োজন করে ‘শতবর্ষের মিলনমেলা’র। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল পারস্পরিক শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময়, আলোচনা সভা, শতবর্ষের শত গুণীজনের সম্মাননা, মাতৃসম অ্যালমাম্যাটারের প্রতি অঙ্গীকার ঘোষণা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খাওয়া-দাওয়া। এ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘যান্ত্রিক’ নামক চার শতাধিক পৃষ্ঠার স্মরণিকার শুরুতে একাত্তরের ২৫ মার্চের কাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি সবিস্তারে তুলে ধরেন অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম তার ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক লেখায়। অধ্যাপক ইসলাম সম্প্রতি মারা গেছেন। তিনি লিখেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা চেতনার উন্মেষ কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পাকিস্তানিদের বর্বর সার্চলাইট অপারেশনের প্রথম শিকার হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম তার লেখায় বুয়েটের তৎকালীন অধ্যাপক ড. নূরুলউলাহর সাক্ষাৎকারের উদ্ধৃতি তুলে ধরেছেন। সেখানে জগন্নাথ হল আক্রান্ত হওয়ার বিবরণ তুলে ধরতে গিয়ে ড. নূরুলউলাহ বলেন, ‘২৬ মার্চ, ১৯৭১ সকালে জগন্নাথ হল মাঠে যে মর্মস্পর্শী দৃশ্য ঘটেছিল, আমি তার ছবি আমার বাসার জানালা থেকে টেলিস্কোপ লাগিয়ে মুভি ক্যামেরায় তুলেছিলাম। ওটা ছিল বুয়েটের টেলিভিশন ভিডিও টেইপ ক্যামেরা। ২৫ মার্চ মধ্যরাতেই বিশ্ববিদ্যালয় আক্রান্ত হয়। ২৬ মার্চ সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যবর্তী সময়ে বাসার জানালা দিয়ে লক্ষ করলাম, জগন্নাথ হলের সামনের মাঠে কিছু ছেলেকে ধরে বাইরে আনা হচ্ছে এবং তাদের লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছে। তখনই আমার সন্দেহ জাগে এবং ক্যামেরা অন করি। আমাদের ক্যামেরার বিশেষ গুণ ছিল এই যে, এতে মাইক্রোফোন দিয়ে শব্দ তুলে রাখার সুযোগ ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখলাম ছেলেগুলোকে একাধারে গুলি করে যাচ্ছে এবং এক একজন করে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। আবার কিছু সংখ্যক লোককে ধরে আনা হচ্ছে, লাইন করে দাঁড় করিয়ে গুলি করছে। দ্বিতীয়বার লাইনে ছিল একজন বুড়ো দাড়িওয়ালা লোক। তিনি তার দাড়ি দেখিয়ে মুসলমান প্রমাণ করার চেষ্টা করলেও বর্বর পাকবাহিনী তাকে গুলি করে। হল থেকে যাদের ধরা হয়, তাদের দিয়ে হলের ভেতর থেকে মৃতদেহ বের করে আনা হচ্ছিল। এসব লাশ এক জায়গায় জমা করা হয়। এরপর ওদেরকে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। আমার মনে হয়, প্রায় ৭০-৮০টি লাশ এক জায়গায় জমা করা হয়েছিল। এদের মধ্যে ছাত্র ছাড়াও হলের মালী, দারোয়ান, বাবুর্চি এদেরও গুলি করা হয়। অনেক ভালো কাপড় পরা বয়সী লোকও ছিলেন। তাদের দেখে মনে হয়েছে তারা ছাত্রদের গেস্ট হিসেবে ছিলেন। ড. নূরুলউলাহর মতে, বিজ্ঞানী ড. মোজাম্মেল হোসেন ধারণকৃত পাকিস্তান বাহিনীর ২৫ মার্চ রাতের ‘ওয়ারলেস সংলাপে’র চেয়েও তাৎপর্যপূর্ণ জগন্নাথ হল মাঠের ২৬ মার্চের সকালের মর্মস্পর্শী দৃশ্য।’

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ২৫-২৬ মার্চের ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বা জেনোসাইড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আক্রমণের একমাত্র প্রামাণ্য দলিল যার মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে পাকিস্তানিদের নৃশংসতা ও বর্বরতার পরিচয় উদঘাটিত হয়। ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে ২৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত পাক বর্বররা ট্যাংক, জিপে বসানো রিকয়েললেস রাইফেল, মর্টার, ভারী ও হালকা মেশিনগান, রকেট লঞ্চার ও চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল প্রভৃতি মারণাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আক্রমণ করে। এরা চার দিক থেকে জহুরুল হক হলেও (সাবেক ইকবাল হল) আক্রমণ চালায়।’

১৯৭২ সালের ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি দৈনিক আজাদ পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রের ভয়াল গর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত্র এলাকা প্রকম্পমান ছিল। হানাদাররা অক্টোপাসের মতো ঘিরে ফেলে তৎকালীন ইকবাল হল। কামান দাগাচ্ছে, গ্রেনেড ছুড়ছে এবং ছুড়ছে একধরনের আগুনে বোমা। এগুলো হলের জানালা দিয়ে কক্ষে পড়তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। সব কিছু পুড়ে ছারখার হচ্ছে। ইকবাল হলের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের রেলওয়ে বস্তিতেও আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। ২৬ মার্চ সকালে ইকবাল হলে দেখা গেছে লাশ আর লাশ। জহুরুল হক হল সংলগ্ন নীলক্ষেতে শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় পাকিস্তানি সেনারা সিঁড়িতে ছাদে ও ঘরে ঢুকে শিক্ষক, আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তিবাসীকে হত্যা করেছে এবং ধরে নিয়ে গেছে। পাক হানাদাররা এসএম হলের আবাসিক শিক্ষকদের বাসা এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলে ঢুকে হত্যাযজ্ঞ চালায়। ব্রিটিশ কাউন্সিলে প্রহরারত ইপিআর জওয়ানদেরও হত্যা করা হয়। তারা শিববাড়ী, শহীদ মিনার ও বাংলা একাডেমিতেও গোলাবর্ষণ করে। ঢাকা হল সংলগ্ন শিক্ষক আবাসন এবং কিংবদন্তির চরিত্র মধুদার বাড়িতে ঢুকে আক্রমণ চালায়। আক্রমণে সেদিন ২৩ নম্বর নীলক্ষেত আবাসনের ছাদ থেকে ৩০ জনের লাশ সরানো হয়। এ আবাসনে বসবাসকারী বাংলার অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ইংরেজির অধ্যাপক রাশিদুল হাসান অলৌকিকভাবে ২৫ মার্চ রাতে বেঁচে যান পরিবার পরিজন নিয়ে। তারা ঘরের সব বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে খাটের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেনারা বাড়িতে ঢুকে টর্চ ফেলে কাউকে দেখতে না পেয়ে এই বলে বেরিয়ে যায় যে, ‘বাঙালি কুত্তা ভাগ গিয়া’। বর্বররা টিএসসিতে ঢুকে সেখানকার কর্মচারীদেরও হত্যা করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোকেয়া হলে ২৫ মার্চ রাতে ঘটেছিল বীভৎস ঘটনা। হলের কক্ষে ফ্যানের সিলিংয়ে ঝুলে ছিল ছয়টি মেয়ের লাশ। পাক বর্বররা ধর্ষণের পর মেয়েদের নগ্ন করে তাদের লাশ পা বেঁধে ফ্যানে ঝুলিয়ে রেখেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত, ফুলার রোড, ঈশা খাঁ রোড, জগন্নাথ হল, শহীদ মিনার, ঢাকা হল ও ফজলুল হক এলাকাকে বিরানভূমিতে পরিণত করা হয়। ক্যাম্পাসে গোলা ও বোমার আঘাতে ও আগুনে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে বা রক্তাক্ত করেই তারা ছাড়েনি, সেখান থেকে সব মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়। হিসাব মতে, ২৫ মার্চের কাল রাতে ও ২৬ মার্চ সকালের মধ্যেই ক্যাম্পাসে প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়, যার মধ্যে ১০ জন শিক্ষক, ২৬ জন কর্মচারী, বাকিরা ছাত্র ও তাদের অতিথি।

শহীদ মিনার এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের হাতে ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও তার মুসলমান পালক মেয়ের মুসলমান স্বামীসহ একই সাথে তার বাসভবন এবং ৩৪ নম্বর দালানের সিঁড়ির নিচে একসাথে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন প্রফেসর মুনিরুজ্জামান, তার ছেলে, ছোট ভাই ও শ্যালক এবং প্রফেসর জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা। উভয় স্থানেই হিন্দু ও মুসলমানের রক্তের ধারা একই সাথে মিলে যায়। অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ২৫ মার্চ রাতে বাসায় খাটের নিচে লুকিয়ে সপরিবারে বেঁচে গেলেও ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১, বাঁচতে পারেননি। তিনি মার্চ-ডিসেম্বর তার আত্মজৈবনিক ‘রাইফেল রেটি আওরাত’ গ্রন্থে ২৫ মার্চের ঘটনা লিখে গেছেন এভাবে- ‘ড. দেবকে ও তার পুত্রকে একই সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয়। পাশাপাশি লুটিয়ে পড়ে দু’টি দেহ। ওরা পিতা-পুত্র। কিন্তু রক্তের মিল কোথায়? ওদের রক্তের মিল হয়েছে ওদের মৃত্যুর পর। এমনি রক্তের মিল হয়েছিল আরো দু’জনের। পরিসংখ্যানের অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান ও ইংরেজির রিডার ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা। ৩৪ নম্বর বিল্ডিংয়ে তারা থাকতেন। নিজ নিজ ধর্মে দু’জনেরই নিষ্ঠা ছিল প্রবল। পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে দু’জনকে গুলি করা হলে রক্তের ধারা মিশে গিয়েছিল।

ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক কে এম এ মুনিম ১৯৭২ সালে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘বার্ষিক প্রতিবেদন ১৯৭০-৭১’-এ লিখেন, পাক হানাদার বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু বা নিশানা বানিয়েছিল। কারণ এটি ছিল আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। তাই চিরদিনের জন্য নিশ্চিহ্ন করে দিতে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

২৫ মার্চের মধ্যরাতে ট্যাংক নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি বহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ক্যাম্পাস এলাকা ও ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি দখল করে। হল ও আবাসিক এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়। অনুমান করা হয়, ইকবাল হলেই প্রায় ২০০ ছাত্র নিহত হয়। মৃতদেহ পাকিস্তানিরা সরিয়ে ফেলে। দুই দিন পরও ৩০টি লাশ ক্যাম্পাসে পড়েছিল। বস্তির বিভিন্ন লোক বিভিন্ন বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছিল; তাদেরও হত্যা করা হয়।

শহীদ মিনার আবাসিক এলাকার বাসিন্দা, সলিমুল্লাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মফিজুল্লাহ দৈবক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭০-৭১ বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিক প্রতিবেদনে লিখেন, ২৫ মার্চ রাত ও ২৬ মার্চ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০০ জনকে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে ১০ জন শিক্ষক ও ২৬ জন কর্মচারী। বাকিরা ছাত্র ও অন্যান্য। পাক বর্বররা জগন্নাথ হলের ভীষণ ক্ষতি করে। এর টিনের চালাগুলো আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এসএম হলের ৫০ বছরের দলিলপত্র পুড়িয়ে ছাই করা হয়।

অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম তার লেখাটি শেষ করেন এভাবে- ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর কয়েকমাস পর সামরিক নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়। সেপ্টেম্বর মাসের দিকে মুক্তিযুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্লাসে উপস্থিতির সংখ্যা রহস্যজনকভাবে বেড়ে যায়। আসলে মুক্তিযোদ্ধা ছাত্ররা কড়া সামরিক প্রহরার মধ্যেও ক্লাসে যোগদান করতে থাকে। তারা ক্লাসে যোগদানের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় গ্রেনেড বিস্ফোরণ করে যেত। এ নিয়ে পাক বর্বররা দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধও করতে পারছিল না। একপর্যায়ে নিরাপত্তার কথা ভেবে কলাভবনের সামনের বট গাছটি তারা কেটে ফেলে। মধুর ক্যান্টিন ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। এটি ছিল নবাব সলিমুল্লাহর বাগানবাড়ির জলসাঘর। এখানেই ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই এটি ধ্বংস করে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হলে উর্দুর অধ্যাপক ড. আহমদ সিদ্দিকী খবর পেয়ে এসে এটি রক্ষা করেন। তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটতেন। খোঁড়াতে খোঁড়াতে এসেই তিনি তাদেরকে ভবনটির গুরুত্ব বুঝিয়ে এবং এই ভবনটিই মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার স্থান এ কথা বলে ঐতিহাসিক ভবনটি রক্ষা করেছিলেন।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব
ইমেইল : babdal62@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’

সকল