২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আমি ম্যাও হুলো ক্যাট, ইঁদুরকে চাই

আমি ম্যাও হুলো ক্যাট, ইঁদুরকে চাই - ছবি : সংগৃহীত

শিরোনামের কথাগুলো আমি ধার করেছি একটি জনপ্রিয় শিশুতোষ কবিতা থেকে। কবি কাজী আবুল কাশেম রচিত ক্রিং ক্রিং টেলিফোন কবিতাটি শিশুকালে যারা পড়েছেন তাদের কেউই সম্ভবত এ কবিতার অনুপম ছন্দ এবং রসাত্মক শব্দমালা ভুলতে পারেননি- যেমনটি পারিনি আমি। আরো অনেক শিশুতোষ ছড়া বা কবিতার মতো ক্রিং ক্রিং টেলিফোন কবিতাটি আমি মাঝে মধ্যে আবৃত্তি করি যখন মনের মধ্যে এক ধরনের আনন্দময় নস্টালজিয়া সৃষ্টি হয়ে যায়। কিন্তু আজকের নিবন্ধে যে কারণে কবিতাটির কথা দিয়ে শিরোনাম করেছি তার সাথে কোনো নস্টালজিয়ার সম্পর্ক নেই। বরং বুদ্ধিবৃত্তির এক ধরনের অসারতা এবং মনের অন্তর্নিহিত হাপিত্যেশের পাশাপাশি দিব্যদৃষ্টির বন্ধ্যত্বের কারণে ইদানীংকালের সমাজ-সংসার রাষ্ট্রে যে ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে সেই প্রেক্ষাপট বর্ণনার জন্যই আলোচ্য শিরোনামের অবতারণা।

বিষয়টি যাতে খুব সহজে অনুধাবন করতে পারেন এ জন্য উদাহরণ হিসেবে আমার নিজের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং চিন্তাভাবনার কতিপয় এলোমেলো দৃশ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরতে চাই। চলমান সময়ের বন্ধ্যত্বের কবলে পড়ে আমি যেন শেষ হয়ে না যাই এ জন্য নিজেকে উজ্জীবিত রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা সবাই কমবেশি জানেন, শরীর উজ্জীবিত রাখার জন্য আহার-নিদ্রা ও শ্রম আবশ্যক। মনকে উজ্জীবিত রাখার জন্য প্রিয়জনের সান্নিধ্য, নির্ভেজাল আনন্দ-ফুর্তি, প্রেম-বিনোদন এবং প্রিয়বাক্য শ্রবণ অপরিহার্য। অন্য দিকে, চিন্তাচেতনা উজ্জীবিত রাখার জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা, অর্জিত জ্ঞানের অনুশীলন এবং জ্ঞানভিত্তিক আলাপ-আলোচনা ও আড্ডার বিকল্প নেই।

কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রে যখন বন্ধ্যত্ব দেখা দেয় তখন তার প্রথম প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় শরীরে তারপর মনে এবং সর্বশেষে মস্তিষ্কে। বন্ধ্যত্বকবলিত সমাজে সব সময় অসম প্রতিযোগিতা, যোগ্যকে নির্বাসনে পাঠানো, অযোগ্যকে নানাবিধ পুরস্কার দিয়ে সাধারণ মানুষের ঘাড়ের ওপর বসিয়ে দেয়া, সম্মানিত লোকদেরকে অসম্মান করা, সৎ ও নিষ্ঠাবানদের জুলুম-অত্যাচার এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তাদেরকে অসৎ কর্মে প্রলুব্ধ করার মতো বহু শত অপকর্ম অহরহ চলার কারণে পরিশ্রমী মানুষ শ্রমের মূল্য পায় না। ফলে কর্মের প্রতি আগ্রহ কমে যায় এবং শরীর অবশ হয়ে পড়ে। দারিদ্র্যের নানান উপদ্রবে অবশ শরীর ক্রমশ আক্রান্ত হয়ে পড়ে যা কি না পরবর্তীকালে মন ও মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে।

মানবজাতির ইতিহাসে বহু দেশ বহু সমাজ বহু কাল বহুবার বন্ধ্যত্বে আক্রান্ত হয়েছে। সুতরাং বন্ধ্যত্বকালে বেঁচে থাকার জন্য কী করণীয় তা মহাকালের জ্ঞানী-গুণী সাধক-সিদ্ধার্থরা বিস্তারিত লিখে রেখে গেছেন।

সক্রেটিস-প্লেটো-এরিস্টটল-সেনেকার মতো প্রাচীন দুনিয়ার মহাপণ্ডিতরা যেমন পশ্চিমা দুনিয়ার মানুষজনের মন-মানসিকতা বিবেচনা করে বহু মূল্যবান উপদেশমালা রচনা করেছেন তেমনি প্রাচ্য দেশের প্রাচীন পণ্ডিতরা যেমন পশ্চিমা দুনিয়ার মানুষজনের মন-মানসিকতা বিবেচনা করে বহু মূল্যবান উপদেশমালা রচনা করেছেন তেমনি প্রাচ্যদেশের প্রাচীন পণ্ডিতরাও জাতীয় জীবনের দুর্বিষহ অবস্থা মোকাবেলার নানান উপায় বাতলে দিয়ে গেছেন। চীনের কনফুসিয়াস, লাউঝু, ভারতের চাণক্য ছাড়াও বিশ্ববিখ্যাত সর্বকালের সেরা রাজা-বাদশাহ-সম্রাটদের কেউ কেউ নিজেদের পাণ্ডিত্যপূর্ণ রচনায় পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করেছেন। রোমান সম্রাট মার্কাস অরিলিয়স রচিত মেডিটেশন নামক পুস্তকটি বন্ধ্যত্ব মোকাবেলায় কত বড় মহৌষধ হিসেবে কাজ করতে পারে তা পরখ করতে গিয়ে আমি সে কি বিপত্তিতে পড়েছি সেই কাহিনী আজ আপনাদের না বলে কোনো অবস্থাতেই নিবন্ধ শেষ করব না।

কাহিনী শুরু করার আগে রোমান সম্রাট মার্কাস অরিলিয়স সম্পর্কে কিছু বলে নিই। তিনি বিশাল রোম সম্রাজ্যের সম্রাট ছিলেন ১৬১ সালের ৭ মার্চ থেকে ১৮০ সালের ১৭ মার্চ অবধি। তিনি শুধু হাজার বছরের রোমান সম্রাজ্যের ইতিহাসে নয়, তাবৎ দুনিয়ার মহাকালের ইতিহাসে অল্প কয়েকজন মহান সম্রাটের অন্যতম যিনি তলোয়ার এবং কলম দুটিই চালাতে পারতেন সমভাবে। তার তলোয়ার অথবা কলম পরিচালিত হতো সর্বোচ্চ মেধা মননশীলতা-প্রজ্ঞা এবং মানবতা দ্বারা। তার শরীর-মন-মস্তিষ্ক এবং আত্মা পারস্পরিক সুসংহতির সঙ্গে এক হয়ে কাজ করত। বিবেক-ধর্মবোধ মানবতা ন্যায়বিচার সাহস-বিচক্ষণতা-পরিশ্রম-মিতব্যয়-সংযম-নিয়মানুবর্তিতা এবং গভীর ধ্যানের সমন্বয়ে তার কথা ও কর্ম পরিচালিত হতো। ফলে মাত্র কুড়ি বছরের শাসনে তিনি রোম সম্রাজ্যের ইতিহাসে এমন কতগুলো মাইলফলক রচনা করে গেছেন যা আধুনিক সভ্যতাকেও মোহবিষ্ট করে।

সম্রাট মার্কাস অরিলিয়সের বিখ্যাত কর্মগুলোর মধ্যে সর্বাধিক খ্যাতি পাওয়া কর্মের নাম ছিল তার রচিত পুস্তক মেডিটেশন। এটি মূলত একটি সংবিধান যা তিনি নিজের জন্য রচনা করেছিলেন। মানবজাতির ইতিহাসে তিনিই একমাত্র সম্রাট যিনি জনগণের জন্য সংবিধান তৈরির আগে নিজের জন্য সংবিধান রচনা করেছিলেন এবং সেই সংবিধান অনুসারে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজেকে পরিচালনা করেছেন। তার সেই সংবিধানের বহু বিভাগ-অনুবিভাগ ছিল। একটি বিভাগে তিনি ডায়েরির মতো করে নিজের কর্মপঞ্জি-আবেগ-অনুভূতি-মন্তব্য কিংবা সিদ্ধান্ত লিখে রাখতেন। তিনি কিভাবে করবেন, কেন করবেন, কখন কী করবেন ইত্যাদি বিস্তারিতভাবে লিখে নিয়েছিলেন। তার আহার-নিদ্রা-বিহার, ধর্ম-কর্ম-যুদ্ধ সব কিছুই লিখিত সংবিধান অনুসারে পরিচালিত হতো। জ্ঞানার্জন এবং অর্জিত জ্ঞানকে ধ্যানের মাধ্যমে কিভাবে প্রজ্ঞায় পরিণত করা যায় সেই সব মূলনীতিও তিনি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছিলেন।

সম্রাট মার্কাস অরিলিয়স মহামতি সক্রেটিস এবং দার্শনিক সেনেকা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। ফলে জ্ঞানী-গুণীদের আপ্তবাণী যে রাজার জীবনেও ব্যবহৃত হতে পারে এবং সেই সব আপ্তবাণীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একজন রাজা যে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন তা সম্রাট মার্কাস অরিলিয়সের জীবনে পর্যালোচনা করে আমি যখন বুঝতে পারলাম তখন তার লিখিত বই মেডিটেশনের বক্তব্য এবং তার জীবনীর মধ্যে অন্তমিল খুঁজতে গিয়ে আমি যে বিপত্তিতে পড়েছি তা এখন আপনাদের বলব। আপনারা যারা বাংলাদেশে বসবাস করেন এবং সকাল-সন্ধ্যা পরিশ্রম করে হালাল উপায়ে দু’মুঠো অন্ন পরিধানের জন্য সামান্য বস্ত্র এবং যার যার অবস্থানে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে গলদঘর্ম সময় পার করার মধ্যে দেশ-জাতি, রাজনীতি-অর্থনীতি, ধর্ম-কর্ম, আত্মীয়-পরিজন এবং অতি মানবতার জন্য কিছু করার চেষ্টা করেন তারা নিশ্চয়ই টের পাচ্ছেন কী দুর্বোধ্য একটি সময় আপনাকে অক্টোপাসের মতো আঁকড়ে ধরেছে।

আপনি যদি উল্লিখিত পরিস্থিতির মধ্যেও আপনার শরীর-মন ও মস্তিষ্ক কর্মক্ষম রাখতে চান তবে সম্রাট মার্কাস অরিলিয়সের জীবনী অর্থাৎ তার দৈনন্দিন কর্মপদ্ধতি আপনাকে সাহায্য করতে পারে। সে ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজদের রাক্ষুসে উল্লাস, অবৈধ পদ-পদবিধারীদের গগনবিদারী দাম্ভিকতা, রাজনীতিবিদের ইঁদুর-বিড়াল খেলা এবং অনাগত দিনের দুশ্চিন্তার মধ্যেও আপনি আপনার কর্মোদ্দীপনা বজায় রাখতে পারবেন। মার্কাস অরিলিয়সের যে সব সূত্র রয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটি হলো এমন- আমাদের সবার জীবনে দুই ধরনের সমস্যা রয়েছে। আমরা যদি সমস্যার অন্তঃমূলে প্রবেশ না করে সমস্যাকে ভয় পাই এবং সমস্যার জন্য সর্বদা অন্যকে দায়ী করি তবে রাগ-হিংসা-ঈর্ষা ইত্যাদি আমাদেরকে এমনভাবে গ্রাস করবে যা সমস্যাগুলো সমাধান না করে বরং বাড়িয়ে দেবে।

সম্রাট মার্কাস অরিলিয়সের মতে দুই ধরনের সমস্যার মধ্যে এক প্রকার হলো এমন যার সমাধান অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে বুদ্ধিমানের কাজ হলো সমস্যাটি মেনে নেয়া, সমস্যার ক্ষয়ক্ষতির জন্য আফসোস না করা এবং সমস্যার সাথে মানিয়ে নিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবন যাপন করা। দ্বিতীয় প্রকার সমস্যা যার সমাধান করা সম্ভব সেগুলো নিয়ে বিতর্ক না করে যত দ্রুত তা সমাধান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। মার্কাস অরিলিয়সের আপ্তবাণীর পাশাপাশি আপনি প্লেটোর উপদেশগুলোও অনুসরণ করতে পারেন। প্লেটো জ্ঞানী লোকদেরকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং এ ক্ষেত্রে প্লেটো আরো একধাপ এগিয়ে জ্ঞানীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, জ্ঞানীরা রাজনীতি না করলে দুর্জনের রাজনীতি অনিবার্য হয়ে পড়ে এবং জ্ঞানীদের ওপর তখন দুর্জনরা কর্তৃত্ব চালাতে থাকে।

উল্লিখিত অবস্থায় বাংলাদেশে জ্ঞানীরা রাজনীতি করছে নাকি দুর্জনের রাজনীতি চলছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে সম্রাট মার্কাস অরিলিয়সের প্রসঙ্গটির ইতি টানতে চাই। তার জীবনী পাঠ অন্তে আমার বারবার মনে হচ্ছিল এই মানুষটি না জানি কতটা সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য-প্রেম-ভালোবাসায় হাবুডুবু খেতে খেতে ইহলোক ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু যখন জানলাম, তিনি তার কুপুত্র কামাভাস কর্তৃক নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন এবং তার সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে হলিউডে একটি সিনেমাও নির্মিত হয়েছে। দ্য গ্লাডিয়েটর নামের সেই ব্লক বাস্টার সিনেমাটি দেখলে আপনি কিছুতেই চোখের পানি আটকিয়ে রাখতে পারবেন না। আমি যখন মার্কাস অরিলিয়সের জ্ঞান-গরিমা-চরিত্রের মাধুর্য এবং শাসক হিসেবে সর্বকালের শ্রেষ্ঠত্বের সাথে তার কুপুত্রের দুষ্কর্ম সম্পর্কে জানলাম তখন রীতিমতো হোঁচট খেলাম।

মার্কাস অরিলিয়সের মতো আমি সক্রেটিসের জীবনচক্র দ্বারাও হোঁচট খাই। তার জ্ঞান-গরিমা, দর্শন, সাহস এবং অবিচলতা দেখে যেমন মুগ্ধ হই তেমনি তার দারিদ্র্য, দাম্পত্যকলহ এবং অপরিচ্ছন্ন জীবন যাপন আমাকে আহত করে। ফলে আমি জ্ঞানী-গুণী-পণ্ডিতদের দর্শন, উপদেশ এবং বাণীসমূহে যেমন আপ্লুত হই তেমনি তাদের ব্যক্তিগত দৈনন্দিন জীবনের নানামুখী বিপর্যয়, ব্যর্থতা এবং হতাশা দেখে বিভ্রান্ত হই। ফলে বাংলাদেশের চলমান সঙ্কটের মধ্যে যেন আমার শরীর-মন-মস্তিষ্ক উজ্জীবিত সে জন্য জ্ঞানী-গুণীদের পরামর্শ ধ্যান করতে করতে যখন প্রায় সিদ্ধিলাভের পর্যায়ে চলে যাই তখন হঠাৎ করে এমন খবর কানে আসে যে, ওমুকের মার্কিন ভিসা বাতিল হয়েছে, তমুকের পাচার করা অর্থ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া চলছে, তখন মনের অজান্তে সিদ্ধি ভঙ্গ হয়ে যায় ও শিশুসুলভ চপলতায় আক্রান্ত হয়ে পড়ি এবং শিশুতোষ ছড়া কবিতা মনে পড়ে যায়।

প্রতিটি মানুষের মধ্যে একটি শিশু সর্বদা লুকিয়ে থাকে। মানুষের অজান্তে শিশুটি বের হয়ে মাঝে মধ্যে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকে। ফলে শিশুর কবলে পড়ে সিংহাসনে বসে রাজা নির্বোধ বালখিল্য করে বেড়ায় মন্ত্রীরা সেই বালখিল্যকে আরো হাস্যকর কৌতুকে পরিণত করার জন্য উদ্দাম নৃত্য আরম্ভ করে-প্রহরীরা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি দেয়- আমির, ওমরাহ-পাইক পেয়াদারা নিজ নিজ কর্ম ভুলে বালখিল্যে যোগ দেয়ার জন্য বাদ্যযন্ত্র নিয়ে লাফালাফি আরম্ভ করে দেয়। আর সেই সব দৃশ্য দেখার পর আপনি যতই মেডিটেশন করুন না কেন, কোন ফাঁকে যে আপনার মুখ দিয়ে বের হবে- ক্রিং ক্রিং টেলিফোন! হ্যালো হ্যালো হ্যালো! কে তুমি কাকে চাও- বলো বলো বলো! আমি ম্যাও হুলো ক্যাট! ইঁদুরকে চাই!

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরো সংবাদ



premium cement