২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাহাড়ে কিসের কান্না, কিসের উত্তাপ!

-

সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে পুরো এলাকা যে অমন ঘুটঘুটে অন্ধকারে পরিণত হতে পারে তা আমার আগে জানা ছিল না। এমনিতেই পাহাড়-অরণ্য সম্পর্কে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। তার ওপর বাংলাদেশী পাহাড়ি অঞ্চল সম্পর্কে হাজারো গুজব এবং সেখানকার বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী, সেনাবাহিনীর কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসী এবং বাঙালিদের মধ্যকার নানা দ্ব›দ্ব সঙ্ঘাতের খবরে আমি সর্বদা আতঙ্কিত ছিলাম। ফলে বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোর অপার নৈসর্গিক দৃশ্য, সেখানকার জীববৈচিত্র এবং সহজ-সরল মানুষের আতিথেয়তা সংবলিত পর্যটন সুখ লাভ করার সাহস আমার কখনোই হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ইদানীং সম্ভবত আমার সাহস একটু বেড়ে গেছে। জীবনের দেনা-পাওনা আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং চাহিদা কেন যেন শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। ফলে বেঁচে থাকার প্রবল ইচ্ছা অথবা মরে যাওয়ার অসীম ভয় ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এসে ডিজিটাল উন্নয়নের চাপে এমন এক বিন্দুতে এসে মিলিত হয়েছে, যেখানে কোনো মানবিক আবেদন আবেগ-অনুভূতি ইত্যাদির কার্যকারণ বুঝতে পারছি না।

এর আগের একটি নিবন্ধে নিজের শ্বাসকষ্টের কথা লিখেছিলাম। সেই কষ্ট লাঘবের জন্য আপনজনদের পরামর্শে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গেলাম। রাজ্যের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক বললেন, আপনার শ্বাসযন্ত্রে কোনো সমস্যা নেই বরং স্বাভাবিকের চেয়ে ভালো আছে। ডাক্তারের কথা শুনে আনন্দিত হওয়ার পরিবর্তে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। কারণ রোগ শনাক্ত হলে চিকিৎসা এবং নিরাময় সম্ভব। অন্য দিকে কষ্ট হচ্ছে অথচ রোগ নেই এমন বালাই মানুষের জীবন জটিল থেকে জটিলতর করে তোলে। আমি ডা: সাহেবের ভিজিট, রিপোর্ট দেখানোর জন্য আলাদা ফি এবং প্রায় অর্ধলাখ টাকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ খয়-খরচা এবং সেখান থেকে প্রাপ্য ডাক্তার সাহেবের কমিশনের হিসাব মেলাতে গিয়ে ভাবলাম - এত অল্প কথায় আমি বিদায় হবো না। আমি ডাক্তার সাহেবের পরামর্শ চাইলাম। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন যে, যেহেতু তিনি কোনো সমস্যা দেখতে পাচ্ছেন না সেহেতু কোনো পরামর্শের প্রসঙ্গ অবান্তর। তারপর তিনি আমার করুণ মুখাবয়ব দেখে দয়া পরবশ হয়ে বললেন, বায়ু পরিবর্তন করুন, ধ্যান করুন, যোগ ব্যায়াম করুন।

ডাক্তারের পরামর্শে বাক্সপেটরা নিয়ে বায়ু পরিবর্তনের জন্য সস্ত্রীক বের হয়ে পড়লাম। এই প্রথম ছেলে-মেয়ে ছাড়া কেবল জীবন সঙ্গিনীকে নিয়ে ঢাকার বাইরে রওয়ানা দিলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম কয়েক দিন চট্টগ্রাম র‌্যাডিসনে থাকব এবং হোটেলটির সামনে রেলের জায়গায় যে উঁচু-নিচু টিলা এবং শত বছরের বিশাল সব বৃক্ষবাজি রয়েছে সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটাহাঁটি করে বিশুদ্ধ বাতাস দিয়ে দেহ-মন জুড়িয়ে নেবো। কিন্তু বাস্তবে গিয়ে দেখলাম, ওখানকার পরিবেশ ঢাকার চেয়েও খারাপ। ফলে তিন দিন থাকার পর শরীর আরো দুর্বল হয়ে পড়ল। সিদ্ধান্ত নিলাম বান্দরবান যাবো। কিন্তু সমস্যা হলো - ইন্টারনেটে বান্দরবানের সেসব হোটেলের তথ্য দেয়া আছে সেগুলোর মধ্যে ভালো মানের একটিতেও কোনো সিট খালি পাওয়া যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বিএনপির ত্যাগী নেতা ডা: শাহাদাতের সঙ্গে যখন র‌্যাডিসনের হেলথ ক্লাবে দেখা হলো তখন তিনি তার পরিচিত এবং বিশ্বস্ত হোটেল রিসোর্ট ব্যবসায়ীর কথা বললেন, নিজে উদ্যোগী হয়ে সেই ব্যবসায়ীকে অনুরোধ করলেন আমাকে বান্দরবানে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ডা: শাহাদাতের আচরণে আমি মুগ্ধ হলাম এবং তার ব্যক্তিত্ব-অভিব্যক্তি এবং নির্ভীক মুখচ্ছবি দেখে অবাক না হয়ে পারলাম না। শত শত মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে এবং শরীর মনে জেল-জুলুম-রিমান্ডের অত্যাচারের ক্ষতচিহ্ন ধারণ করে তিনি যেভাবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বুক উঁচু করে চট্টগ্রামের মাটিতে বিচরণ করেন তা নিজের চোখে না দেখলে আমার পক্ষে বিশ্বাস করা সম্ভব ছিল না।

ডা: শাহাদাতের কথা মতো রাশেদ নামে এক ব্যবসায়ী হোটেল র‌্যাডিসন থেকে আমাদের বান্দরবানের দিকে নিয়ে চললেন। রাশেদ সফল ব্যবসায়ী এবং প্রচণ্ড রাজনীতিসচেতন ব্যক্তি। ঢাকা-বান্দরবান-কক্সবাজার ছাড়াও তার আরো বেশ কয়েকটি হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়িসহ অন্যান্য এলাকায়। ফলে যাত্রাপথের পুরোটা সময় তার কাছ থেকে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলাগুলোর রাজনীতি-অর্থনীতি এবং সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে জেনে নিলাম। কথা বলতে বলতে আমরা বিকাল ৩টা নাগাদ রাশেদের মালিকানাধীন রিভারভিউ রিসোর্টে গিয়ে পৌঁছলাম। শহরের মধ্যখানে সাঙ্গু নদীর তীরে রিভারভিউ রিসোর্টটি বেশ পুরনে। তবে রাশেদ সেটি কিনেছেন মাত্র এক বছর আগে। হোটেলটির সবচেয়ে ভালো রুমটিতে আমাদের থাকার বন্দোবস্ত করে দেয়ার পর বহুবিধ উপাদেয় খাবারে আমাদের মধ্যাহ্ন ভোজনে আপ্যায়িত করলেন। এরপর আমাদের সেবা-পরিষেবার জন্য তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিকনির্দেশনা দিয়ে চট্টগ্রাম ফিরে গেলেন।

আমি রাশেদকে আগেই বলেছিলাম, আমার বান্দরবান অবস্থানের খবর যেন কেউ না জানে। কারণ বিএনপি-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও আমার নির্বাচনী এলাকার প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ রয়েছে বান্দরবানে। এর বাইরে নয়া দিগন্তের পাঠক, টেলিভিশন ও ইউটিউবের দর্শক ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোয়েন্দা সদস্যরা যদি আমার উপস্থিতি টের পায় তবে আমার পক্ষে নির্বাক থেকে প্রকৃতির নির্মল বায়ু সেবন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। রাশেদ আমাকে আশ্বস্ত করলেন বটে কিন্তু ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই অনেকে হোটেল রিভারভিউতে হাজির হয়ে সাক্ষাৎপ্রার্থী হলেন। আমি খুব ক্লান্ত ছিলাম। তাই কয়েকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দরজা বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু মাগরিব সমাগত হওয়ার কারণে ঘুম এলো না। কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করে মাগরিবের নামাজ পড়লাম। তারপর রুমের সাথে সংযুক্ত বিশাল টেরেসে গিয়ে দাঁড়ালাম। নিচে প্রবহমান সাঙ্গু নদী। তিন দিকে সুউচ্চ পাহাড়। মেঘলা আকাশ। নদীর ওপারে সেনা ক্যাম্পের বাহারি বাতি। বান্দরবান শহরের ছোট-বড় বাড়ি এবং পাহাড়ের পাদদেশে ছোট ছোট বস্তি। সব কিছু মিলিয়ে সন্ধ্যার আলোতে পরিবেশটি এতটা মোহময় মনে হলো যে, সব কিছু ভুলে গিন্নিকে নিয়ে হেঁটে শহর দেখতে বের হলাম।

হোটেল থেকে নেমে প্রথমে পশ্চিম দিকের একটি নির্জন রাস্তা দিয়ে মাইলখানেক হাঁটলাম। সাঙ্গুর তীরে গড়ে ওঠা বস্তির ভেতর দিয়ে কাঁচাপাকা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে লক্ষ করলাম পুরো এলাকা বলতে গেলে নীরব-নিস্তব্ধ এবং জনমানবহীন। সবাই ঘরের দরজা বন্ধ করে নিজ নিজ কর্মে ব্যস্ত। ঘরের মধ্যকার ফিসফিসানি এবং আলোর হালকা বিচ্ছুরণের সাথে আকাশের অর্ধচন্দ্রের আলো যা কিনা বারবার মেঘমালার সাথে লুকোচুরি খেলছিল এবং পাহাড়ি কীট-পতঙ্গের শব্দে এমন একটি পরিবেশ বিরাজ করছিল যার ফলে মনে হচ্ছিল পাহাড়ি পথ ধরে অজানায় হারিয়ে যাই। কিন্তু কিছু দূর এগোনোর পর দেখলাম - পথ শেষ হয়ে গেছে। ফলে হোটেলের সামনে ফিরে এলাম এবং মিজান নামক একজন সমাজকর্মীকে পেয়ে গেলাম। তিনি আমাদের ইচ্ছানুযায়ী বান্দরবান মূল শহরের বাজার এলাকায় নিয়ে গেলেন এবং বাজারের দুটি অংশ বাঙালিপাড়া এবং আদিবাসীদের পাড়া ঘুরে ঘুরে দেখাতে আরম্ভ করলেন।

আমার ধারণা ছিল, অন্ধকারের মধ্যে আমি যেভাবে জগিংয়ের পোশাক পরে হাঁটছিলাম তাতে লোকজন হয়তো আমাকে চিনবে না। কিন্তু বাস্তবে ঘটল উল্টো। প্রথম যিনি আমাকে শনাক্ত করলেন তার নাম আনোয়ার। বয়স্ক মানুষ। নিজেকে নয়া দিগন্তের একনিষ্ঠ পাঠক বলে পরিচয় দিলেন। জনাব আনোয়ার যখন আমার সাথে কথা বলছিলেন তখন আরো কয়েকজন সেখানে ভিড় করলেন এবং ভিড় দেখে টহলরত পুলিশ এগিয়ে এলো। কিন্তু আমাকে চেনার পর পেছনে ফিরে গেল। আমি স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে স্থান ত্যাগ করার জন্য ইঙ্গিত দিলাম এবং আনোয়ারের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার চেষ্টা করলাম। আনোয়ার আমাকে কিছু উপহার দিতে চাইলেন এবং বলতে গেলে জোর করে দুষ্প্রাপ্য সূর্যমুখী কলা কিনে দিলেন। আমি তাড়াহুড়ো করে তার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। কারণ লক্ষ্য করলাম, বেশ কিছু লোক দূর থেকে আমাকে অনুসরণ করতে শুরু করেছে, যাদের চেহারা-সুরত দেখে স্পষ্ট যে, তারা কোনো বিশেষ সংস্থার লোক হবেন।

উল্লিখিত অবস্থায় আমরা ভিন্ন একটি অন্ধকার গলিতে ঢুকলাম এবং আমাদের সঙ্গী মিজানকে বললাম, তাড়াতাড়ি হোটেলে চলেন। মিজান সম্ভবত পরিস্থিতি টের পেলেন এবং দ্রুত পা চালাতে লাগলেন। আমি আশপাশের দোকানপাট, ভবন ও অফিসগুলোর সাইনবোর্ড দেখতে দেখতে যখন একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকারময় একটি জায়গা অতিক্রম করছিলাম তখন হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল এসে আমার সামনে থামল এবং এক সুঠামদেহী যুবক মোটরসাইকেল থেকে নেমে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। তিনি নিজের নাম লিটন বলে উল্লেখ করলেন এবং নয়া দিগন্তের পাঠকরূপে নিজেকে পরিচয় দিলেন। লিটন বলতে গেলে জোর করে একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকালেন এবং সাধ্যমতো আপ্যায়ন করালেন। আমি লক্ষ্য করলাম, আমাদেরকে অনুসরণকারীরা রেস্টুরেন্টে ঢুকেছেন এবং আমাদের পাশের টেবিলে বসেছেন।

আমি এবং আমার পরিবার বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং অভ্যস্ত। সুতরাং আমরা নির্ধিদ্বায় লিটনের আপ্যায়ন উপভোগ করে হোটেলে পৌঁছলাম। সেখানে যাওয়ার পর কয়েকজনের সাথে সাক্ষাৎ হলো, যারা নিজেদের এসবি এবং ডিজিএফআইয়ের সদস্য বলে পরিচয় দিলেন। তাদের একজন বললেন, এসপি সাহেবা তাকে পাঠিয়েছেন আমার বান্দরবান অবস্থানকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। অন্যজন বললেন ভিন্ন কথা, তিনি জানালেন যে, তিনি আমার নিদারুণ ভক্ত। বাড়ি বাউফল জেলায়। আমাকে দেখার জন্য এসেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে ভাববিনিময়ের পর হোটেলে আমার সঙ্গে যেসব সাধারণ মানুষ দেখা করতে এসেছিলেন যাদের বেশির ভাগই আমার নির্বাচনী এলাকা গলাচিপা-দশমিনার মানুষ। তাদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিতে শুরু করলাম।

আমি বান্দরবান ছিলাম মোট তিন দিন। এই সময়ে যাদের সাথেই দেখা হয়েছে তারা প্রায় সবাই অভিযোগ করেছেন, সরকার পার্বত্য জেলাগুলোর অধিবাসীদের কান্না শুনতে পারছে না। তিনটি পার্বত্য জেলার দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় যে বিভেদের আগুন জ্বলছে এবং পাহাড়ের পাদদেশের গহীন অরণ্যে যে ভয়ঙ্কর দেশী-বিদেশী চক্রান্ত দানা বাঁধছে তা বোঝার মতো প্রাজ্ঞ লোক সরকারে রয়েছে কিনা এ ব্যাপারে স্থানীয় সুধীজনের যথেষ্ট সন্দেহ। তাদের মতে, ঢাকাকেন্দ্রিক কিছু বুদ্ধিজীবী নিরীহ আদিবাসীদের নিয়ে রীতিমতো ব্যবসা জমিয়ে বসেছে। অন্য দিকে, পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসের জন্য যেসব দরিদ্র ও অসহায় লোকজনকে বিভিন্ন সময়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আনা হয়েছে তাদের বেশির ভাগের অবস্থা এখন রোহিঙ্গাদের চেয়েও করুণ।

আপাতদৃষ্টিতে বান্দরবানে পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে চমৎকার সৌহার্দ্র্য রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদরা তাদের ক্ষমতার বিষবাষ্প দিয়ে পুরো অঞ্চলে এমন বিভেদ-বিসম্বাদ সৃষ্টি করে চলেছেন, যা অতিক্রম করার সাধ্য স্থানীয় লোকজনের নেই। পার্বত্য জেলাগুলোর দুর্গম ভারত সীমান্তে আরাকান আর্মি ছাড়াও ভারতীয় অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ম্য, শান্তিবাহিনীসহ অসংখ্য ছোট-বড় স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, অপহরণ, গুম-হত্যা ইত্যাদি কুকর্মের মাধ্যমে পাহাড়ে দাবানলের পরিধি বাড়িয়ে চলেছে। এসব প্রতিহত করার জন্য যে রাজনৈতিক ঐক্য, জনমত সৃষ্টি এবং সামরিক অভিযান দরকার তার কোনোটাই হচ্ছে না।

উল্লিখিত অবস্থা মোকাবেলার জন্য যে জাতীয় নীতিমালা, উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপক সরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন সেভাবে না করে যা করা হচ্ছে তা প্রায়ই উল্টো ফল বয়ে আনছে। ফলে উত্তপ্ত হচ্ছে পাহাড় এবং পাহাড়সংলগ্ন অরণ্যে দাবানল সৃষ্টির ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। বান্দরবানে পা রেখে আপনি যদি মাত্র কয়েক ঘণ্টা ঘোরাফেরা করেন তবে পাহাড়ের উত্তাপ, জনগণের কান্না এবং পাহাড়সংলগ্ন অরণ্যে দাবানলের পূর্বাভাস আন্দাজ করা আপনার জন্য কঠিন হবে না। ফলে আপনি যখন পার্বত্য অঞ্চলের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য যাবেন তখন এক ধরনের হতাশা-আতঙ্ক এবং আফসোস নিয়ে আপনাকে ফিরতে হবে।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরো সংবাদ



premium cement