২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মেটাভার্স, নতুন বিপ্লবের হাতছানি

মেটাভার্স, নতুন বিপ্লবের হাতছানি - ছবি : সংগৃহীত

বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনী পড়ে মজা পান না এমন মানুষ বিরল। বড় ছোট সবার কাছেই বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী খুবই আকর্ষণীয়। বিশ্বে এমন অনেক লেখক বিভিন্ন সময় জন্ম নিয়েছেন যারা তাদের কল্পনাশক্তির জন্য অমর হয়ে আছেন। তারা তাদের কাহিনীতে এমন সব কাল্পনিক বিষয়ের অবতারণা করেন যেগুলো সমকালের সবচেয়ে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের পক্ষেও ছিল অচিন্ত্যনীয়। বিজ্ঞান যখন শৈশবকালে ছিল তখন কল্পকাহিনীর লেখকদের অনেক কল্পনাকেই মানুষ হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে, ব্যঙ্গবিদ্রূপও করেছে। কিন্তু বিজ্ঞান যতই সামনের দিকে এগিয়ে গেছে ততই কল্পনায় বলে যাওয়া একেকটি বিষয় বাস্তবের রূপ পেয়েছে।

এইচজি ওয়েলস-এর ‘দি টাইম মেশিন’ (১৮৯৫), ‘দি আইল্যান্ড অব ডক্টর মরো’ (১৮৯৬), ‘দি ইনভিজিবল ম্যান’ (১৮৯৭), ‘দি ওয়ার অব্ দি ওয়ার্ল্ডস’ (১৮৯৮), ‘দি ফার্স্ট ম্যান ইন দি মুনস’ ইত্যাদি বই পড়েননি এমন শিক্ষিত মানুষ কমই আছেন বলে আমাদের ধারণা। জুল ভার্নের ‘টুয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি’ (১৮৭০), ‘আ জার্নি টু দ্য সেন্টার অফ দ্য আর্থ’ (১৮৬৪), ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ডস ইন এইটটি ডেজ’ (১৮৭৩) এ দেশের অনেক শিশুর কল্পনাকে আকাশচারী করেছে।

কল্পবিজ্ঞান লেখক হিসেবে এইচজি ওয়েলস, জুল ভার্ন ছাড়াও আইজ্যাক আসিমভ, আর্থার সি. ক্লার্ক, রবার্ট এ. হেইনলেন এমন বহু নাম আমাদের অনেকেরই হয়তো পরিচিত। তাদের বইও আমরা অনেকে পড়েছি। কিন্তু তাদের কল্পনার কোন কোন জিনিস পরে বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে, আর আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো সচেতন নই।

তবে সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে আমরা যে ক’জন বিখ্যাত লেখকের নাম করেছি তাদের কীর্তির সঙ্গে সামান্য পরিচয় করে নিই। স্যার আর্থার চার্লস ক্লার্ক হলেন একজন সায়েন্স ফিকশন লেখক, আবিষ্কারক এবং ভবিষ্যৎ স্বপ্নদ্রষ্টা। সায়েন্স ফিকশনের জগতে তিনি প্রবেশ করেন ১৯৪৬ সালে। বাণিজ্যিকভাবে তার প্রথম প্রকাশ ‘অ্যাসটাউন্ডিং সায়েন্স ফিকশন’ (১৯৪৬) ম্যাগাজিন দিয়ে। ওই বছরই ‘লুপহোল’ নামে একটি কল্পবিজ্ঞান কাহিনী লিখে সাড়া ফেলেন। ১৯৭৯ সালে লেখেন ‘দ্য ফাউন্টেনস অব প্যারাডাইজ’, ‘দ্য সেন্টিনেল’ (১৯৪৮), ‘রঁদেভু উইথ রাম’ (১৯৭২), ‘দ্য স্পেস ওডেসি’ (২০০১) তার সেরা লেখা। ইংরেজ এই লেখক জীবনের শেষ দিনগুলো কাটান শ্রীলঙ্কায়। স্কুবা ড্রাইভিংয়ের নেশা ছিল তার এবং সেই করতে গিয়ে সাগরের নিচে আবিষ্কার করেন প্রাচীন মন্দির। ২০০৮ সালে তিনি মারা যান।

রুশ বংশোদ্ভূত মার্কিন লেখক আইজ্যাক আসিমভ গত বছর মারা গেছেন। তাকে বলা যেতে পারে ‘বর্তমান সময়ের শ্রেষ্ঠ কল্পবিজ্ঞান লেখক’। তার লেখা ‘কসমিক কর্ক স্ক্রু’, বিখ্যাত সিরিজ লেখা ‘ফাউন্ডেশন’, ‘রোবট’, ‘গ্যালাক্টিক এম্পায়ার’ ইত্যাদি অতুলনীয়। তার লেখা ছোটগল্প ‘নাইটফল’কে ‘সায়েন্স ফিকশন রাইটারস অন আমেরিকা’ ১৯৬৪ সালে সর্বকালের সেরা সায়েন্স ফিকশন হিসেবে নির্বাচন করে। বিখ্যাত হলিউড মুভি ‘আই-রোবট’ (২০০৪) এর গল্প তার রোবট সিরিজের গল্প নিয়ে তৈরি করা।

রবার্ট এ. হেইনলেন সেই লেখক যিনি কল্পবিজ্ঞানের বিজ্ঞানের সত্যকে নিষ্ঠার সাথে কাহিনীতে রূপ দেন। ১৯৬১ সালে প্রকাশিত তার নভেল ‘স্ট্রেঞ্জার ইন অ্যা স্ট্রেঞ্জ ল্যান্ড’ অনেকের বিবেচনায় এক মাস্টারপিস। সর্বকালের সেরা সায়েন্স ফিকশন লেখকের তালিকাতেও এর নাম প্রথম কাতারে। মার্কিন এই লেখকের সেরা রচনার মধ্যে আরো আছে ‘টাইম এনাফ ফর লাভ’ ও ‘টু সেইল বিয়ন্ড দ্য সানসেট’, ‘দ্য মুন ইজ আ হার্শ মিস্ট্রেস’, ‘স্টারশিপ ট্রুপারস’ ইত্যাদি।

উপরে যেসব লেখকের কথা বলা হলো, তারা তাদের রচনায় এমন অনেক জিনিসের বর্ণনা করে গেছেন যেগুলো সে সময় অসম্ভব ও অলীক কল্পনা বলে মনে হলেও পরে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং আমাদের জীবনযাত্রার অংশ হয়ে উঠেছে। এই যে কল্পনার বিষয়গুলো বাস্তবায়িত হয়ে উঠছে তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, মানুষের কল্পনার যেমন সীমা-পরিসীমা নেই, তেমনি তার উদ্ভাবনী ক্ষমতাও কোনো সীমারেখা টেনে চিহ্নিত করার উপায় নেই। এখানে আমরা বিভিন্ন সাইটের সাহায্য নিয়ে সে রকমই কিছু বিষয় পাঠকের জন্য তুলে ধরতে চাই।

২০০২ সালে হলিউডে একটি মুভি তৈরি হয় ‘মাইনোরিটি রিপোর্ট’ নামে। ছবিতে প্রি-ক্রাইম নামে পুলিশের একটি বিশেষ শাখার কথা বলা হয় যারা অপরাধ করার আগেই অপরাধীকে পাকড়াও করতে পারে। এটি সম্ভব হয় একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে। ওই ছবিতে দেখানো অনেক কাল্পনিক বিষয় এখন বাস্তবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। যেমন, ছবিতে এমন এক ইলেকট্রিক বিলবোর্ড দেখানো হয় যেটি পাশ দিয়ে যাওয়া যেকোনো মানুষের চোখ স্ক্যান করে তাদের শনাক্ত করতে এবং ঠিক ওই লোকটিকে উদ্দেশ করে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে তাকে আকৃষ্ট করতে পারে। এই বিষয়টি কিন্তু বাস্তবে ঘটে গেছে। উন্নত বিশ্বে এমন ডিজিটাল বিলবোর্ড পথেঘাটে আছে যেগুলো পাশ দিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে।

দেখবেন যে, অনলাইনে ঢুকে আপনি যদি কোনো বিশেষ বিজ্ঞাপন একবার দেখেন, তাহলে পরে সেই একটি বিষয়ের অনেক বিজ্ঞাপন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার দৃষ্টিগোচরে আসবে। এমনকি অনলাইনে কোনো বন্ধুর সঙ্গে চ্যাটিং করতে গিয়ে কোনো একটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন এমন জিনিসও আপনার গোচরে আনতে শুরু করবে অনলাইনের সাইটগুলো। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে টার্গেট করে ব্যবসার বিজ্ঞাপন ইত্যাদি পরিচালনা করা, এই ধারণাটি এসেছে ওই মাইনোরিটি রিপোর্ট মুভি থেকে। মাইনোরিটি রিপোর্টে স্বচালিত গাড়ি, কণ্ঠস্বর দিয়ে চালানো যায় (ভয়েস কন্ট্রোল) এমন স্মার্ট বাড়ি, মুখ ও চোখ দেখে চিনতে পারার প্রযুক্তি, ইশারায় চলা কম্পিউটার ইত্যাদি বিষয় দেখানো হয়। এর সব ক’টিই এখন চরম বাস্তব।

‘স্পেস ট্রাভেল’ নামে আরেকটি মুভির কথা আমরা জানি (মূল ফরাসি নাম ‘লে ভয়েজ ড্যানস লা লুনে’ বা চন্দ্রভ্রমণ)। ১৯০২ সালের এই ছবিতে চাঁদে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়। তখন ক্যামেরা সদ্যই আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু মানুষ চাঁদে গেছে ১৯৬৯ সালে ওই ছবি মুক্তি পাওয়ার ৬৭ বছর পর।

আজকের দিনে রোবট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এক নিরেট বাস্তব। কিন্তু ১৯২৭ সালে কল্পবিজ্ঞানভিত্তিক মুভি বা সাইফাই মুভির অগ্রপথিক জার্মানির ‘মেট্রোপলিস’-এ যখন রোবটের ধারণা তুলে ধরা হয় তখন এটি ছিল রূপকথার কাহিনীর চেয়েও অলীক।

হলিউডের সাইফাই মুভি ‘দ্য টার্মিনেটর’ (১৯৮৪) যখন ড্রোন বা মানুষবিহীন বিমান প্রদর্শন করে তখন এটি অবাস্তব কল্পনা বলেই মনে হতো। সেই ড্রোন সৈন্যদের ওপর গুলি করত। আজ আফগানিস্তানে কত নিরীহ মানুষ যে, মার্কিন ড্রোনের হামলায় হতাহত হয়েছে তার কোনো নিশ্চিত হিসাব বোধ হয় কখনো পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া আরেকটি মুভি আছে। নাম ছিল ‘স্টার ট্রেক’। ১৯৬৬ সালের এই ছবি ও টিভি সিরিজ প্রথম দেখানো হয় কানাডার সিবিএস টিভিতে। এরপর সারা বিশ্বের কত মানুষ যে, এটি দেখেছে তার ইয়ত্তা নেই। এখনো অনেকে এই ছবির কথা মনে রেখেছেন। এটিই সেই ছবি যাতে মোবাইল ফোনের ধারণা উঠে এসেছিল। ছবিতে যোগাযোগের একটি পোর্টেবল যন্ত্র দেখানো হয়। কমিউনিকেটর নামের এই যন্ত্র দিয়ে দু’জন মানুষ পরস্পরের মধ্যে সরাসরি অথবা জাহাজের যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে সংযুক্ত হতে পারত। স্টার ট্রেকের বিভিন্ন পর্বে এই কমিউনিকেটরের ভিন্ন ভিন্ন আকৃতি দেখানো হয়েছে। এটি থেকেই পরে মটরোলার যোগাযোগ প্রযুক্তির ধারণা আসে। আজকের স্মার্ট ফোন এমন এক যন্ত্র হয়ে উঠেছে যা ছাড়া আমরা একটি মুহূর্তও কল্পনা করতে পারি না।

বর্তমান সময়ের আলোচিত ঔপন্যাসিক ডিন কুঞ্জ (Dean Koontz)। তার একটি কল্পকাহিনীর ভিত্তিতে ১৯৭৭ সালে তৈরি হয় মুভি ‘ডেমন সিড’। এতে একজন চিকিৎসক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবন করেন এবং এর মাধ্যমে লিউকেমিয়া রোগ সারাতে সক্ষম হন। পরে প্রযুক্তির ভক্ত সেই ডাক্তার নিজের বাড়িটি এমনভাবে সাজান যাতে সেটি কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে চালিত একটি কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ছবিটির কাহিনীতে অনেক মজার বিষয় আছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, আজকের দিনে কীভাবে সেই মুভির কাল্পনিক জিনিসগুলো বাস্তবে ব্যবহার করছি। এখন আমাদের স্মার্টফোন দিয়ে ঘরের কম্পিউটারসহ প্রায় সব যন্ত্রের সাথেই সংযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে। লাইট ফ্যান অন অফ করা, নিরাপত্তা ক্যামেরা বা অ্যালার্ম সিস্টেম চালানো, দরজা খোলা বা বন্ধ করা - সবই করতে পারছি ফোন থেকে। এই স্মার্ট বাড়ির ধারণা প্রথম দেন ডিন কুঞ্জ।

স্বয়ংচালিত গাড়ির কথা আমরা বলেছি ২০০২ সালের মাইনোরিটি রিপোর্ট ছবির প্রসঙ্গে। তবে তারও এক যুগ আগে ১৯৯০ সালে ‘টোটাল রিকল’ মুভিতে স্বয়ংচালিত গাড়ির বিষয়টি এসেছে। এখন শুধু স্বয়ংচালিত গাড়ি নয়, উড়ন্ত গাড়িও আমাদের আর অবাক করে না।

এই লেখায় আমরা মানবজাতির চাঁদে যাওয়া, বিমান, মহাশূন্যযান, সাবমেরিন ইত্যাদি আবিষ্কারের বিষয় নিয়ে বলছি না। কারণ এগুলো যাদের মস্তিষ্ক থেকে বিজ্ঞানীদের ধারণায় এসেছে তাদের বিষয়ে অনেকেই জানেন।

আমরা দেখলাম, কিভাবে লেখক-সাহিত্যিকের বিপুল কল্পনাশক্তি মানুষের তথা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় প্রভাব রাখে। এখন প্রযুক্তিবিদদের কল্পনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। গত সপ্তাহে বিশ্বে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার সূত্রপাত করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রধান মার্ক জাকারবার্গ তার মেটাভার্সের ধারণা প্রকাশ করে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তিজগতে আলোড়ন চলছে। মেটাভার্সের ধারণা এখন এমন কোনো অবিশ্বাস্য বিষয় নয় যা নিয়ে হাসাহাসি করা যায়। কারণ মেটাভার্স যে লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে তার অনেক কিছুই এখন আমাদের হাতের তালুতে। মেটাভার্স প্রযুক্তি তৈরির জন্য ফেসবুক সম্প্রতি ইউরোপে ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে। বিনিয়োগ করছে বিপুল অর্থ।

কী করতে চাচ্ছেন জাকারবার্গ? খুব নতুন কিছু নয়। এখন আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ করি সেটাই জীবন্ত হয়ে উঠবে যদি মেটাভার্স প্রযুক্তি বাস্তবে অর্জন করা যায়।

আমরা মোবাইল ফোন থেকে পৃথিবীর অন্য প্রান্তে যেকোনো মানুষের সাথে কথা বলতে এবং ছবি দেখতে পারছি। কয়েকজন একসঙ্গে চ্যাটিং করতে পারছি। এগুলো হচ্ছে টু-ডাইমেনশনাল উপায়ে বা দ্বি-মাত্রিকভাবে। এতে যে ছবি দেখতে পারছি সেটি চলমান নয়, স্থির। মেটাভার্স প্রযুক্তি এই বিষয়টিকে বাস্তবের মতো করে তুলতে চায়। অর্থাৎ কারো সাথে কথা বলার সময় মনে হবে, আপনি তার মুখোমুখি বসে কথা বলছেন। এ জন্য ফেসবুকে কোনো অ্যাকাউন্টও থাকার দরকার হবে না। একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) হেডসেট শুধু পরে নিতে হবে। এ জন্য ফেসবুক কোম্পানি, যেটির নাম এখন মেটা, তৈরি করেছে অকুলাস হেডসেট যা প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর সেটের তুলনায় দামে সস্তা।

মনে করুন, আপনার ছেলে বা মেয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডার কোনো শহরে। আপনি মেটাভার্স প্রযুক্তির মাধ্যমে ছেলে বা মেয়ে অথবা নাতি-নাতনীদের সাথে যখন কথা বলবেন, তখন মনে হবে আপনি নিজেই তাদের ঘরে উপস্থিত আছেন বা তারাও আপনার সাথেই আছে। অর্থাৎ বাস্তবের মতো অনুভূতি সৃষ্টি করা। মনে হবে, আপনি তাদের ঘরে তাদের মধ্যেই উপস্থিত আছেন। হয়তো ইচ্ছে হলে প্রিয় নাতনীর সাথে মজা করে একপাক নেচেও নিতে পারেন। এই কাজটিই করতে চায় মেটাভার্স। কাজটা হবে থ্রি-ডি বা থ্রি ডাইমেনশনাল ছবিতে। বাংলাদেশী তথ্যপ্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপন বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সাধারণভাবে মেটাভার্স প্রযুক্তিকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর-এর কোনো সংস্করণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এটি আসলে তার চেয়েও অনেক বেশি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাথে মেটাভার্সের তুলনা করা আসলে এখনকার স্মার্টফোনের সাথে আশির দশকের মোবাইল ফোনের তুলনা করার শামিল।

অফিসের সব কাজ থেকে শুরু করে খেলা, কনসার্ট, সিনেমা, এমনকি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার মতো বিষয়গুলোর সব কিছুতেই মেটাভার্সের প্রয়োগ হবে। ফেসবুক প্রধান বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই তার প্রতিষ্ঠান মেটাভার্স প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। পাশাপাশি মাইক্রোসফট, অ্যাপল, গুগল, ফোর্টনাইট নির্মাতা এপিক গেইমস কোম্পানিও মেটাভার্স তৈরিতে কাজ করছে। বিনিয়োগ করেছে প্রচুর অর্থ।

জাকারিয়া স্বপনের ভাষায়, মেটাভার্স প্রযুক্তির ব্যবহার এক অর্থে শুরু হয়েই গেছে। আমাদের দেশেও অনেকেই জুমে বা অনলাইনে ক্লাস করেছেন। আগামী তিন-চার বছরে এই প্রযুক্তি দিয়ে ঢাকায় বসে ইংল্যান্ডে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করলে সেটা একজন শিক্ষকের সামনে বসে ক্লাস করার মতোই মনে হবে। ইন্টারনেটের গতি আরো দ্রুত হবে। বিশেষ করে ফাইভ-জি বাজারে আসার পর মেটাভার্সের সুফল পাওয়া যাবে। এই মেটাভার্স হবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এরই মধ্যে তার অঙ্কুর মাথা তুলেছে।

ইমেইল: mujta42@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি!

সকল