২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মেটাভার্স প্রযুক্তি ও ফেসবুকের নাম বদল

-

প্রযুক্তি দুনিয়ায় এখন বড় খবর ‘মেটাভার্স প্রযুক্তি’। বলা হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মেটাভার্স প্রযুক্তির মাধ্যমে আশ্চর্য এক দুনিয়া উপভোগ করবে মানুষ। মেটাভার্স প্রযুক্তি হলো ইন্টারনেটের পরবর্তী সংস্করণ। এই প্রযুক্তিতে ইন্টারনেটের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে বাস্তব জগতের মতো, যেখানে মানুষের যোগাযোগ হবে বহুমাত্রিক। এর মাধ্যমে শুধু দেখাই যাবে না, নিজেকে এর সঙ্গে জড়িয়ে ফেলাও সক্ষম হবে। ১০ বছর আগে মেটাভার্স প্রযুক্তি একটা ধারণা হিসেবেই ছিল।

২৮ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে অনুষ্ঠিত ‘কানেক্ট সম্মেলনে’ ফেসবুকের নাম বদলে ‘মেটা’ রাখা এবং প্রতিষ্ঠানটিকে মেটাভার্স কোম্পানিতে পরিণত করার ঘোষণায় ‘মেটাভার্স প্রযুক্তি’র বিষয়টি বিশ্বব্যাপী সবার দৃষ্টিআকর্ষণ করে। এ সম্মেলনে ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ বলেন, মেটাভার্স নামের ভার্চুয়াল জগতে মনোনিবেশ করতেই এমন নামকরণ করা হয়েছে। এ সময় ফেসবুক সদর দফতরে থাম্বশ আপ ‘লাইক’ লোগোটির পরিবর্তে সেখানে নীল রঙের ‘ইনফিনিটির চিহ্ন প্রতিস্থাপন করা হয়। মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘নতুন নাম ‘মেটা’ এটাই প্রতিফলিত করে যে, আমরা সময়ের সঙ্গেই আছি।’ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ফেসবুক পুরোপুরি মেটাভার্স কোম্পানিতে পরিণত হবে।

অবশ্য ফেসবুকের এই নাম পরিবর্তন শুধু নতুন প্রযুক্তিতে রূপান্তরের উদ্দেশ্যেই নয়। প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে ফেসবুক ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান সরকারি তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক এবং রিপাবলিকান উভয় দলের আইন প্রণেতারা এর ব্যাপক সমালোচনা করছেন ও নানা প্রশ্ন তুলছেন। এতে করে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিষয়টি সামনে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিভিন্ন দেশেও ফেসবুক নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক রয়েছে। তাছাড়া নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর চাপের মুখে রয়েছে ফেসবুক।

সিলিকন ভ্যালির টেক কোম্পানিগুলোর নাম পরিবর্তনের ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। কোনো কোম্পানি বিতর্কিত, সমালোচিত, ইমেজ ক্ষুণ্ণ কিংবা আর্থিক সমস্যায় পড়লে এভাবে নাম পরিবর্তন করে থাকে। এর আগে ২০১৫ সালে গুগলকে আমরা দেখেছি মূল কোম্পানির নাম ‘অ্যালফাবেট রাখতে। কোম্পানিগুলো তাদের নেতিবাচক বিষয়কে আড়ালে রেখে ‘সেবার পরিসর বাড়ানো’ কিংবা ‘নতুন প্রযুক্তিতে রূপান্তর’-এর কথা বলে নিজেদের পরিবর্তন করে থাকে। ফেসবুকের ক্ষেত্রেও আংশিক হলেও ওই কারণগুলো রয়েছে। ২৭ অক্টোবর কানাডাভিত্তিক প্রযুক্তিবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট তাদের বিশ্লেষণে বলেছে, ফেসবুক তার নাম পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্রান্ডটির কেলেঙ্কারি ও নেতিবাচক প্রভাব। যার সঙ্গে স্বয়ং জাকারবার্গের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সাম্প্রতিক বিভ্রাট ও হুইসেল ব্লোয়িং কেলেঙ্কারির আগে থেকেই ফেসবুক এই সময়ের সবচেয়ে কম বিশ্বস্ত প্রযুক্তি সংস্থা ছিল। জাকারবার্গ একসময় সিলিকন ভ্যালির সবচেয়ে প্রশংসিত সিইও ছিলেন। কিন্তু ফেসবুকের নানা কেলেঙ্কারির পর থেকে তার প্রভাব কমেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানের ইমেজ ফিরিয়ে আনতেও নাম বদল প্রয়োজন ছিল।

ফেসবুকের সাবেক প্রোডাক্ট ম্যানেজার ফ্রান্সেস হাউগেন প্রতিষ্ঠানটির অনেক গোপন নথি প্রকাশ করে দিয়েছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা এ নিয়ে ধারাবাহিক রিপোর্ট করেছে। সম্প্রতি ক্যাপিটাল হিলে সিনেট কমিটির সামনে শুনানিতে ফেসবুকের ব্যাপক সমালোচনা করেন তিনি। সিনেটে দেয়া বক্তব্যে হাউগেন বলেন, ফেসবুক এবং তাদের অ্যাপগুলো শিশুদের ক্ষতি করছে, বিভেদ বাড়াচ্ছে এবং গণতন্ত্রক দুর্বল করে দিচ্ছে। হাউগেন ফেসবুকের গোপন তথ্য এমন সময়ে সামনে নিয়ে আসেন, যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বড় এই প্রতিষ্ঠানটি দিয়ে সমালোচনা তো আছেই, এর ওপর নজরদারি বাড়ানোরও দাবি তোলা হচ্ছে। ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে ব্যর্থতা থেকে শুরু করে ভুয়া তথ্য ছড়ানো বন্ধে যথেষ্ট ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে। ফেসবুকে পরিবর্তন দরকার এ সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটিক উভয় দলের সিনেটররা একমত হয়েছেন। অবশ্য হাউগেনের অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছে ফেসবুক। মার্ক জাকারবার্গ এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাদের বিষয়ে যেসব তথ্যপ্রমাণ প্রচার করা হচ্ছে, তাতে ফেসবুকের কাজ এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যেভাবে কোম্পানিকে তুলে ধরা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমরা সব সময়ই নিরাপত্তা, মঙ্গল এবং মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেই। আমরা মুনাফার প্রতি বেশি মনোযোগ দেই বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। শিশুরা যাতে নিরাপদ থাকে, তাদের জন্য ক্ষতিকর না হয় এটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে এটা ঠিক ফেসবুক মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে খুব সিরিয়াস। অনেক আগে থেকেই তারা এ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোম্পানির মূল নাম বদলের অনেক আগেই ফেসবুকে ঘোষণা করে তারা ইউরোপে ১০ হাজারের বেশি কর্মী নিয়োগ করবে মেটাভার্স গড়ে তোলার কাজ করতে। অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) সমর্থিত চশমার মতো হার্ডওয়্যার তৈরি করার ঘোষণা দেয় তারা। যাতে এর মাধ্যমে স্মার্টফোনের বিকল্প নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করা যায়। গত সেপ্টেম্বরে মেটাভার্স নির্মাণে বিপুল বিনিয়োগেরও ঘোষণা দেয় ফেসবুক।

বার্ষিক কানেক্ট সম্মেলনে মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, একটি বড় রি-ব্র্যান্ডের অংশ হিসেবে এতদিনের করপোরেট পরিবর্তন করে ‘ মেটা’ করা হয়েছে। এটির পরিসর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাইরেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির (ভিআর) মতো ক্ষেত্রগুলোতে বাড়ানো হয়েছে। ফলে এখন একটি জায়গায় সব কিছু আরো ভালোভাবে ‘অন্তর্ভুক্ত’ করা যাবে। তবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ম্যাসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো স্বতন্ত্র প্লাটফর্মগুলোর নাম পরিবর্তন হচ্ছে না। ফেসবুক ইনকরপোরেটেড হলো মূল কোম্পানি। সেটাই ‘মেটা’ হলো। আর ১৭ বছর পর মার্ক জাকারবার্গের পদে পরিবর্তন হলো। এখন তিনি মেটার সিইও এবং চেয়ারম্যান।

মেটাভার্স প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখেন জাকারবার্গ
জাকারবার্গ বলেন, আমরা ইন্টারনেটের পরবর্তী অধ্যায়ের শুরুতে আছি এবং এটি আমাদের কোম্পানির জন্যও পরবর্তী অধ্যায়। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে প্রযুক্তি মানুষকে আরো স্বাভাবিকভাবে যোগাযোগ করার এবং নিজেদের প্রকাশ করার শক্তি দিয়েছে। আমি যখন ফেসবুক শুরু করি, তখন আমরা শুধু ওয়েবসাইটে টেক্সট টাইপ করতাম। আমরা যখন ক্যামেরাসহ ফোন পেয়েছি, তখন ইন্টারনেট আরো ভিজ্যুয়াল এবং মোবাইল হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেটের গতি বাড়ার ফলে অভিজ্ঞতা শেয়ার করার একটি সমৃদ্ধ উপায় হয়ে উঠেছে ভিডিও। এভাবে ডেস্কটপ থেকে ওয়েভে, ওয়েব থেকে মোবাইলে চলে এসেছে। টেক্সট থেকে ছবিতে এবং ছবি থেকে ভিডিও পর্যন্ত এসেছি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পরবর্তী প্লাটফর্মটি আরো বেশি গভীর হবে, যা হবে এক জীবন্ত ইন্টারনেট। যেখানে আপনি শুধু এর দিকে তাকাবেনই নয়, বরং অভিজ্ঞতার মধ্যে থাকবেন। আমরা এর নামই দিয়েছি মেটাভার্স এবং এটি আমাদের তৈরি প্রতিটি পণ্যকে স্পর্শ করবে। মেটাভার্সের বৈশিষ্ট্য হবে উপস্থিতির অনুভূতিÑ যেন আপনি বাস্তবেই অন্য ব্যক্তির সঙ্গে বা অন্য জায়গায় হাজির আছেন। এই বোধই সামাজিক প্রযুক্তির চূড়ান্ত স্বপ্ন। এ কারণেই আমরা মেটাভার্স নির্মাণে এগিয়ে এসেছি। মেটাভার্সে আপনি কল্পনা করতে পারেন এমন প্রায় সব কিছুই করতে পারবেন। যেমন বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে একত্র হওয়া, কাজ করা, শেখা, খেলা, কেনাকাটা করা, সৃষ্টি করা, সেই সঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা যা সত্যিই আজ আমরা কম্পিউটার বা ফোন সম্পর্কে যেভাবে চিন্তা করি তার সঙ্গে খাপ খায় না। ভবিষ্যতে আপনি রাস্তা দিয়ে যাতায়াত ছাড়াই অফিস, বন্ধুদের সঙ্গে কনসার্টে বা আপনার মায়ের বসার ঘরে হলোগ্রাম হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে হাজির হতে সক্ষম হবেন। এখন থেকে আমরা মেটাভার্স-ফার্স্ট হবো, ফেসবুক ফার্স্ট নয় অর্থাৎ মেটাভার্সই আমাদের প্রধান কাজ।

সিলিকনভ্যালির অন্যান্য কোম্পানি
শুধু ফেসবুকই নয়, মেটাভার্স নিয়ে সিলিকনভ্যালির অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিও কাজ করছে। কাজ করছে মাইক্রোসফট এবং চিপ উৎপাদনকারী কোম্পানি এনভিডিয়া করপোরেশন। এনভিডিয়ার ওমনিভার্স প্লাটফর্মের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রিচার্ড কেরিস বলেন, আমরা মনে করি মেটাভার্সে ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড এবং পরিবেশ তৈরি করার জন্য প্রচুর কোম্পানি হতে চলেছে, ঠিক যেভাবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে অনেক কোম্পানি কাজ করছে। ভিডিও গেম কোম্পানিগুলোও এতে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। জনপ্রিয় ফোর্টনাইট ভিডিও গেমের সংস্থা এপিক গেমস মেটাভার্স তৈরির উদ্দেশ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। গেম প্লাটফর্ম রোব্লক্স মেটাভার্সকে কল্পনা করছে এমন একটি জায়গা হিসেবে যেখানে লোকে শিখতে, কাজ করতে, খেলতে, সৃষ্টি করতে এবং সামাজিক যোগাযোগে লাখ লাখ থ্রিডি অভিজ্ঞতার মধ্যে একত্র হতে পারবে। ইতালীয় ফ্যাশন হাউজ গুচি ডিজিটাল যন্ত্রপাতি বিক্রি করার জন্য রোব্লক্সের সঙ্গে সহযোগিতা গড়েছে।

মেটাভার্স প্রযুক্তি আসলে কী
মেটা শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ থেকে। এর অর্থ ‘গণ্ডির বাইরে’। সায়েন্স ফিকশন লেখক নীল স্টিফেনসন তার ১৯৯২ সালের উপন্যাস ‘সেøা-ক্র্যাশে সর্বপ্রথম মেটাভার্স শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। এর আগে উইলিয়াম গিবসন ১৯৮৪ সালে ‘নিউ রোমান্সসার’ উপন্যাসে একটি ভার্চুয়াল যৌথ ‘সাইবারস্পেস’ ধারণা চালু করেছিলেন। এ থেকেই মার্কিন লেখক নীল ‘মেটাভার্স’ নাম দেন। এরপর আর্নেস্ট ক্লাইনের উপন্যাস ‘রেডি প্লেয়ার ওয়ান’-এর মরুদ্যান হিসেবে এটা পুনর্গঠিত হয়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ উপলব্ধি যা ডিজিটাল বিশ্বকে বোঝায়। সেøা-ক্র্যাশ উপন্যাসে বাস্তব দুনিয়া ধ্বংসের মুখে পৌঁছে গেলে মানুষ নিজ নিজ ডিভাইস থেকে ভার্চুয়াল এক জগতে প্রবেশ করে। সেই কল্পনার জগতই যেন আজ বাস্তব জগত হয়ে দেখা দিচ্ছে। কল্পবিজ্ঞানই ধরা দিচ্ছে বাস্তববিজ্ঞান হয়ে। প্রযুক্তিবিদদের মতে এটি এমন এক ত্রিমাত্রিক (থ্রি-ডি) ভার্চুয়াল দুনিয়া, যেখানে অনেক মানুষ একসঙ্গে ইন্টারনেটের সাহায্য যুক্ত মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবেন।

রয়টার্স ও এবিসি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটাভার্স প্রযুক্তি হচ্ছে ইন্টারনেটের পরবর্তী সংস্করণ। সিলিকন ভ্যালির কয়েকজন টেক সিইও বলেন, শিগগিরই একদিন আমরা সবাই একটি ইন্টারেক্টিভ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ওয়ার্ল্ডে আড্ডা দেবো। সেটিকেই ‘ওয়াসিস’-এর পরিবর্তে ‘মেটাভার্স’ বলছি। টেক কোম্পানিগুলো ইন্টারনেটের এই পরবর্তী সংস্করণ তৈরি করতে দৌড়াচ্ছেন। অগমেন্টেড রিয়েলিটি এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে একত্রে সংযুক্ত করে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করবে আগামী দুনিয়া। মেটাভার্স ইতোমধ্যে প্রযুক্তি শিল্পে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বিখ্যাত ইন্টারনেট প্লাটফর্মগুলো একে ধরার জন্য নিজেদের রি-ব্র্যান্ডিং করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

প্রযুক্তি ওয়েবসাইট ভার্জ-ই প্রথম ফেসবুকের নাম মেটা হচ্ছে এবং মেটাভার্স প্রযুক্তির সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট করে। ভার্জের প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটাভার্স প্রযুক্তি হচ্ছে ইন্টারনেটকে জীবন্ত করে তোলা বা অন্ততপক্ষে থ্রিডিতে রূপান্তর করা হিসেবে বোঝাতে পারেন। আপনি শুধু স্ক্রিনে দেখার পরিবর্তে এর ভেতরেও ঢুকে যেতে পারবেন। এটি মূলত এক অন্তহীন আন্তঃসংযোগ ভার্চুয়াল কমিউনিটির বিশ্ব, যেখানে লোকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট, অগমেন্টেড রিয়েলিটি চশমা, স্মার্টফোন অ্যাপ বা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করে দেখা করতে, নানা কাজ করতে এবং খেলতে পারবে। এটাকে থ্রি-ডি ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড বলা যায়। স্ক্রিনে এখন বেশির ভাগ স্পেস হচ্ছে টু-ডি বা দ্বিমাত্রিক। কিন্তু মেটাভার্স জগতে আমাদের অভিজ্ঞতা হবে, থ্রি-ডির মতো। টেলিফোনে কারো সঙ্গে কথা বললে মনে হবে, সামনাসামনি দু’জনের মধ্যে কথা হচ্ছে। ঢাকায় বসে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করলে সেটি একটি শিক্ষকের সামনে বসে ক্লাস করার মতোই মনে হবে। প্রযুক্তি বিশ্লেষক ভিক্টোরিয়া পেট্রোকের মতে, এতে অনলাইন জীবনের অন্যান্য দিক যেমন শপিং এবং সোশ্যাল মিডিয়াও থাকবে। এটি যোগাযোগ প্রযুক্তির বিবর্তনের পরবর্তী ধাপ। আগামী ৭-৮ বছরের মধ্যে আমরা পুরোপুরি এই প্রযুক্তি জগতে পৌঁছে যাবো।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক


আরো সংবাদ



premium cement

সকল