২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কোভিড টিকা বিজ্ঞানীরা কেন নোবেল পাননি

কোভিড টিকা বিজ্ঞানীরা কেন নোবেল পাননি - ছবি : সংগৃহীত

সাহসী দু’জন সাংবাদিক এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয় করেছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষায় অদম্য লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তারা এ পুরস্কার জেতেন। তাদের নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও টেকসই শান্তির অন্যতম শর্ত। নোবেলজয়ী এই দুই সাংবাদিকের একজন ফিলিপাইনের মারিয়া রেসা এবং অন্যজন রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতব। এর আগে ১৯৩৫ সালে আরেকজন সাংবাদিক নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন। তাদের এই পুরস্কার লাভ সাংবাদিক সমাজের জন্যই গৌরবের। আশা করি তাদের এ স্বীকৃতিতে দেশে দেশে সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবারিত হবে। সাংবাদিকরা সব বাধা ও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সত্য প্রকাশে এগিয়ে আসবেন।

এবারের নোবেল পুরস্কার ব্যতিক্রমধর্মী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। এরই মধ্যে সব বিষয়েই অর্থাৎ বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে পুরস্কার ঘোষিত হয়ে গেছে। সাহিত্যে এবার নোবেল জিতেছেন তাঞ্জানিয়ার বংশোদ্ভ‚ত যুক্তরাজ্যের ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ। নোবেল বিজয়ী হিসেবে তিনি পঞ্চম আফ্রিকান। ছেলেবেলায় তিনি দেখেছেন ঔপনিবেশিক শাসনের বেড়াজালে থাকা মানুষের দুর্বিষহ জীবন। আর বড় হয়ে সহ্য করেছেন শরণার্থী জীবনের নিদারুণ কষ্ট। সেই অভিজ্ঞতাই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন তার সাহিত্যে। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের সাবেক অধ্যাপক এই ঔপন্যাসিক ২২ বছর ধরে নিরলসভাবে লিখে চলেছেন। তার লেখা ‘প্যারাডাইস’ উপন্যাসটি জীবনের বাঁক বদলের স্মারক।

অবশ্য রসায়নের ছাত্র হিসেবে আমার বেশি আগ্রহ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার। প্রায় দুই বছর ধরেই সারা বিশ্ব করোনাভাইরাস মহামারীতে আক্রান্ত। এই প্রাণঘাতী ভাইরাস ৫০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি মানুষ। খুব অল্পসময়ে এর টিকা আবিষ্কার হয়েছে। এক বছরেরও কম সময়ে বিশ্ব কোভিড টিকা পাওয়ায় অগণিত মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। নতুন মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তিতে টিকা আবিষ্কারও বিশ্বব্যাপী একটি খুবই আলোচিত বিষয়। এ ছাড়া চলমান মহামারীর কারণে দুই বছর ধরে বিশ্বের বিজ্ঞানীরা এত বিজ্ঞান গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন যে, এর কোনো নজির নেই। ফলে সবার ধারণা ছিল কোভিড ভ্যাকসিন বা টিকার আবিষ্কারই চিকিৎসা ও রসায়নে নোবেল পুরস্কারের বিষয় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিজ্ঞানে অর্থাৎ চিকিৎসা, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানে ভিন্ন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে। কোভিড ভ্যাকসিন বা টিকা এবার নোবেল জেতেনি। নোবেল কমিটির সংশ্লিষ্টরা অবশ্য এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তারা সুস্পষ্টভাবে স্বীকার করেছেন এমআরএনএ টিকা আবিষ্কার একটি দুর্দান্ত সাফল্যের গল্প, যা মানবজাতির জন্য ব্যাপক সাফল্যের অবদান রেখেছে।

কোভিড টিকা নিয়ে নোবেল কমিটির পর্যবেক্ষণ
এবার কিছু বিজ্ঞানী বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছেন যে, মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনাভাইরাসের টিকার আবিষ্কারে জড়িতরা কেন চিকিৎসায় নোবেল পেলেন না। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারকে এ বিষয়ে কারণ ব্যাখ্যা করেছে নোবেল পুরস্কারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। নোবেল পুরস্কারের পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তিনটি বিষয় এ বছর টিকা আবিষ্কারে জড়িতদের এ পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করেছে। এগুলো হলো সময়, প্রযুক্তিগত বিবরণ ও রাজনীতি। তবে টিকা গবেষকরা ভবিষ্যতে এ মহামূল্যবান পুরস্কার পেতে পারেন।

স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের মহাসচিব গেরান হ্যানসন বলেন, এমআরএনএ টিকা আবিষ্কার একটি দুর্দান্ত সাফল্যের গল্প, যা মানবজাতির জন্য ব্যাপক অবদান রেখেছে। এটি এমন একধরনের আবিষ্কার, যা মনোনয়ন পাবে। কিন্তু আমাদের আরো সময় নিতে হবে।

করোনার টিকা আবিষ্কার এবার নোবেল পুরস্কার না পাওয়ার একটি কারণ ছিল সময়। এ বছরের পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হয়েছে। অন্য দিকে প্রথম এমআরএনএ টিকা দেয়ার পর তখন সবে দুই মাস কেটেছে। তখনো মহামারীর ওপর এর প্রভাব পুরোপুরি স্পষ্ট হয়নি। টিকা নিয়েও ছিল নানা সংশয়।

আবার এমআরএনএ নিয়ে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণা চলছে। এখন টিকা আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হলে কমিটি কাকে চূড়ান্ত করবে, তাও ছিল জটিল সিদ্ধান্ত; কারণ একাধিক কোম্পানি এমআরএনএ ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। তাই প্রাপক কে হওয়া উচিত, তা স্পষ্ট নয়। তাই বিতর্ক এড়াতেই নোবেল কমিটি হয়তো অন্য দিকে মুখ ফিরিয়েছে। হ্যানসন বলেছেন, ‘এসব কাজ করতে সময় লাগে। আমরা সঠিক মানুষকে কৃতিত্ব দিতে চাই, সঠিক আবিষ্কারের জন্য।’

উষ্ণতার অনুভূতি গবেষণায় চিকিৎসায় নোবেল
মানবদেহে উষ্ণতার (গরম, ঠাণ্ডা ও স্পর্শ) অনুভ‚তি কিভাবে ছড়ায় তা নিয়ে গবেষণা করে এবারে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ডেভিড জুলিয়াস ও আরডেম প্যাটাপুটিয়ান। সূর্যের উষ্ণতা কিংবা প্রিয়জনের স্পর্শ মানবদেহ কিভাবে অনুভব করে তার গবেষণায় এসব গবেষক আবিষ্কার করেছেন তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর। মানবদেহের যে নার্ভ সেন্সরের কারণে আমাদের ত্বক তাপ অনুভব করতে পারে, তা শনাক্ত করতে অবদান রেখেছেন জুলিয়াস। আর প্যাটাপুটিয়ান মানবদেহের কোষে আলাদা চাপ-সংবেদনশীল সেন্সর খুঁজে পেয়েছেন। এই সেন্সরের কারণে দেহ কোনো উদ্দীপনায় সাড়া দিতে পারে।

তাদের আবিষ্কার কাজে লাগিয়ে ক্রনিক ব্যথাসহ আরো নানা ধরনের রোগের চিকিৎসাপদ্ধতি বের করার চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া তাদের কাজের ওপর ভিত্তি করে আরো অনেক তাপ সেন্সরও আবিষ্কার করা হচ্ছে। জুলিয়াস ও প্যাটাপুটিয়ান ঠাণ্ডা শনাক্ত করার সেন্সরও খুঁজে পেয়েছেন। তাদের আবিষ্কার বাহ্যিক উদ্দীপনার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র প্রদান করে। যেমন তাপমাত্রা বা স্পর্শ ও বৈদ্যুতিক সঙ্কেত কিভাবে স্নায়ুতন্ত্রের প্রতিক্রিয়া ঘটায়। উদাহরণস্বরূপ ব্যথার প্রতিক্রিয়া ঘটানোর জন্য পরিচিত ছিল ক্যাপসাইসিন। কিন্তু কিভাবে তা ঘটে, তার স্পষ্ট ছিল না। নব্বইয়ের দশকে জুলিয়াস ও তার সহকর্মীরা ক্যাপসাইসিনের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ব্যথা, তাপ ও স্পর্শ সম্পর্কে জানতে জিন নিয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন। অনুসন্ধান তাদেরকে একটি জিনের দিকে পরিচালিত করে, যার কোড টিআরপিভি১। এটি একটি প্রোটিন, যা কোষের ঝিল্লিতে সংযোজিত চ্যানেল গঠন করে এবং যা সক্রিয় হলে আয়নগুলোকে যেতে দেয়।

এ দিকে প্যাটাপুটিয়ান ও তার সহযোগীরা এমন অণুর সন্ধান করছিলেন; যা যান্ত্রিক শক্তি দ্বারা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ দলটি এমন কোষ শনাক্ত করেছে, যা বৈদ্যুতিক সঙ্কেত নির্গত করে। এটি তার পর জিনের পিছু নেয় এবং বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এর ফলে পিজো১ ও পিজো২ নামে আরো দু’টি আয়ন চ্যানেল আবিষ্কৃত হয়, যা চাপ দ্বারা সক্রিয় হয়।

কোষগুলো ঠাণ্ডায় কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা অধ্যয়ন করতে জুলিয়াস ও প্যাটাপুটিয়ান স্বাধীনভাবে মেনথল ব্যবহার করেছিলেন। এটি একটি যৌগ, যা শীতল সংবেদন সৃষ্টি করে। এটি টিআরপিএম৮ নামে আরেকটি আয়ন চ্যানেল আবিষ্কার করে, যা ঠাণ্ডা দিয়ে সক্রিয় হয়।
দলটি দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, চিলি হিট সংবেদনশীল প্রোটিন তাপ থেকে বেদনাদায়ক অনুভ‚তি পৌঁছে দিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। টিআরপিভি১ ও অন্যান্য ব্যথা-সংবেদনশীল প্রোটিন শনাক্ত হওয়ায় গবেষকরা ব্যথার আণবিক ভিত্তি বুঝতে সক্ষম হন। এটি নতুন চিকিৎসা খুঁজতে সাহায্য করেছে। পুরস্কার ঘোষণা করে নোবেল কমিটি বলেছে- গরম, ঠাণ্ডা ও স্পর্শ বোঝার মতো ক্ষমতা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।

জৈব অনুঘটক আবিষ্কারে রসায়নে নোবেল ক্যাটালিস্ট বা অনুঘটক কেমিক্যাল রি-অ্যাকশন বা রাসায়নিক বিক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। সেই অনুঘটক নিয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কারের জন্যই এবার রসায়নে নোবেল জয় করেছেন দুই রসায়ন বিজ্ঞানী। তারা রাসায়নিক বিক্রিয়াকে গতিশীল ও নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল উদ্ভাবন করেছেন।

জার্মানির বেঞ্জামিন লিস্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড ম্যাকমিলান আলাদাভাবে নব্বইয়ের দশকে একটি নতুন ধরনের ক্যাটালাইসিস তৈরি করেছিলেন। অ্যাসিম্যাট্রিক অর্গানোক্যাটালাইসিস নামের কৌশল প্রয়োগে আজ ওষুধ ও সোলার সেল বা সৌরকোষে আলো ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অণু সবই বানানো যাচ্ছে দ্রুত ও কার্যকরভাবে। এ কৌশল অন্যান্য রাসায়নিক উৎপাদনের জন্যও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, তারা যে অনুঘটক তৈরি করেছিল তা বাম থেকে ডান পার্থক্য করতে পারে।

পুরস্কার ঘোষণার সময় রসায়নে নোবেল কমিটির সদস্য পার্নিলা উইটুং-স্টাফশেড বলেন, এই জুটি অণু তৈরির জন্য সত্যিই একটি মার্জিত হাতিয়ার তৈরি করেছে, যা আগে কল্পনাও করা যায়নি। ২০০০ সাল পর্যন্ত আমরা কেবল অনুঘটকগুলোর দু’টি রূপ সম্পর্কে জানতাম। কিন্তু তার পর সব কিছু বদলে গেল। বেঞ্জামিন লিস্ট ও ডেভিড ম্যাকমিলান জানান সুনির্দিষ্ট, সস্তা, দ্রুত ও পরিবেশবান্ধব বিক্রিয়ায় বড় উৎসেচক ও ধাতব অনুঘটক হিসেবে একই কাজ করতে ছোট জৈব অণু ব্যবহার করতে পারেন। অনুঘটক যেসব পদার্থ ব্যবহার না করে বিক্রিয়া ত্বরান্বিত করে, তা রসায়নবিদদের মৌলিক হাতিয়ার। বেঞ্জামিন এমন অনুঘটক তৈরি করেছেন, যা অ্যাসিম্যাট্রিক ক্যাটালাইসিস চালাতে পারে যা অণুর ক্ষেত্রে ডান-হাতিদের চেয়ে বাম-হাতিদের বেশি বিক্রিয়া তৈরি করে। আবার এর উল্টোটাও ঘটতে পারে।

জার্মানির বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ২০০০ সালে দেখান যে অ্যামিনো এসিড প্রোলিন অ্যালডল বিক্রিয়ায় অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে যেখানে দু’টি ভিন্ন অণু থেকে কার্বন পরমাণু একত্রে যুক্ত থাকে। প্রায় একই সময়ে ম্যাকমিলান ছোট জৈব অণুর রূপরেখা তৈরি করেছিলেন, যা ইলেকট্রন সরবরাহ করতে বা গ্রহণ করতে পারে এবং সে জন্য কার্যকরভাবে বিক্রিয়ার অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।

তাদের যুগান্তকারী আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত রসায়নবিদদের মধ্যে সাধারণ ধারণা ছিল যে, একটি অনুঘটক যা চিরকাল অণু সংশ্লেষণ করে তাকে একটি এনজাইম বা উৎসেচক হতে হবে অথবা লোহার মতো একটি রূপান্তর ধাতু থাকতে হবে। এটি ছিল যুগান্তকারী পরিবর্তন। এর আগে দীর্ঘ দিন ধরে মানুষ মনে করত যে ধাতু ও এনজাইম একই।

জলবায়ু ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে পদার্থে নোবেল পৃথিবীর জলবায়ু ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মডেলিং নিয়ে কাজ করেছেন সুকুরো মানাবে ও ক্লাউস হ্যাসেলম্যান ও জর্জিও পারিসি।

মানাবে ১৯৬০-এর দশকে দেখান যে কিভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি ভ‚পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে। তিনি জলবায়ুর প্রাথমিক গাণিতিক মডেল তৈরি করেন। এর প্রায় এক দশক পরে জার্মানির হামবুর্গে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর মেটিওরোলজিতে হ্যাসেলম্যান আবহাওয়া ও জলবায়ুর সংযোগকারী মডেল তৈরি করেন।

মানাবে আমাদের দেখান কিভাবে ও কেন কার্বন ডাই-অক্সাইড বেড়ে গিয়ে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটায়। আর হ্যাসেলম্যান দেখিয়েছেন এটি ঘটতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে আসন্ন জাতিসঙ্ঘের ২৬তম জাতিসঙ্ঘ জলবায়ু সম্মেলনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হলো। জলবায়ু আলোচনা প্রসঙ্গে পারিসি বলেছেন, এটি খুবই জরুরি যে আমরা যেন এ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং খুব জোরালো গতিতে এগিয়ে যাই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের এখন খুব দ্রুত কাজ করতে হবে।

সুকুরো মানাবে জাপানি বংশোদ্ভূত মার্কিন বিজ্ঞানী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রিস্টন ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ। ১৯৬০ সালে তার নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী প্রথম জলবায়ুর ভৌত মডেল গড়ে তোলেন। তিনি প্রথম তেজস্ক্রিয়তার ভারসাম্য ও বায়ুপুঞ্জের লম্বভাবে ওঠানামার মাধ্যমে মিথস্ক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করেন। তার কাজের ওপরই গড়ে উঠেছে প্রচলিত সব জলবায়ু মডেল।

ক্লাউস হ্যাসেলম্যান জার্মানির হামবুর্গে ম্যাকপ্লাঙ্ক ইউস্টিটিউট অব মেটেরোলজিংয়ের অধ্যাপক। তিনি আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে মডেল গড়ে তোলেন। অন্য দিকে পারমাণবিক ভৌত ব্যবস্থার বিশৃঙ্খল ও ফ্লাকচুয়েশন পরস্পরের ওপর কী প্রভাব ফেলে, সেই মডেল আবিষ্কার করে পুরস্কার পান ইতালির বিজ্ঞানী জর্জিও পারিসি। তার আবিষ্কার শুধু পদার্থবিজ্ঞানেই নয়, গণিত, জীববিজ্ঞান, স্নায়ু বিজ্ঞান ও মেশিন লার্নিংয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।


আরো সংবাদ



premium cement