১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিচারের বাণী ও ন্যায্যতা

- ছবি : সংগৃহীত

প্রায় ৯ দশক আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘প্রশ্ন’ কবিতায় লিখেছিলেন, ‘বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে’। মূলত বিচারপ্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রতা বা অবিচারের বিষয়ে তিনি এ কথা লিখেছিলেন। এ থেকে প্রমাণিত হয়, বিচার নিয়ে অনিয়ম তখনো ছিল; এখনো আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সে অবস্থার কি ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে? উত্তরটা অবশ্য নেতিবাচকই হওয়ার কথা। কারণ পরিস্থিতির বেশ অবনতিই হয়েছে। আমাদের দেশে বিচারে প্রশ্নবিদ্ধ নিরপেক্ষতা ও দীর্ঘসূত্রতা পুরো বিচার প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ডি এইচ লরেন্স বলেছেন, নীতিশাস্ত্র, ন্যায় ও ন্যায়বিচারের মূল নীতি ও উপাদান ক্যালেন্ডারের সাথে পরিবর্তিত হয় না। এটি চিরকালের জন্যই একই এবং অপরিবর্তনীয়।

বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া আমাদের দেশে বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার বিষয়টি প্রমাণিত। কিন্তু বিশেষায়িত কোনো মামলা নয়, বরং ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য সব মামলার দ্রুততার সাথে নিষ্পত্তি হওয়া আইন ও সংবিধানের দাবি। প্রতিবেশী ভারতে কোনো কোনো মামলার নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত বিচার অর্থাৎ ফাস্ট-ট্র্যাক আদালতের ব্যবস্থা রয়েছে। বিষয়টিকে সুনজরে দেখেননি দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এক রায়ে বলেছেন, বিশেষ ধরনের মামলা নয়, গোটা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকেই দ্রুততর করতে জন্য কাঠামোগত সংস্কার দরকার।

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের এ আদেশ খুবই যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত। কারণ গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিশেষাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য স্বতন্ত্র বিচার প্রক্রিয়া সমর্থন করে না। যদি দ্রুত বিচার সবার প্রাপ্য হয়, তা হলে বিশেষ ক্ষেত্রে রুজু হওয়া ফৌজদারি মামলাগুলোকে আলাদা করে সবার আগে নিষ্পত্তি করার যৌক্তিকতা থাকে না। বিষয়টি সংবিধান, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের সাথে সাংঘর্ষিক।

মূলত বিচারে দীর্ঘসূত্রতা আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থার অন্যতম প্রধান দুর্বলতা। আর বিলম্বিত বিচার অবিচারের নামান্তর। বিচারপ্রক্রিয়া যত বিলম্বিত হয়, ন্যায়বিচারের সম্ভাবনা ততই কমতে থাকে। উইলিয়াম গ্লাডস্টোনের ভাষায়, Justice delayed is justice denied. তাই বিচারকাজে অহেতুক বিলম্ব কোনোভাবেই কাম্য নয়, বরং যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই সর্ব প্রকার বিচার সম্পন্ন হওয়া ন্যায়বিচারের দাবি। আমাদের দেশে বিশেষ বিশেষ মামলার ক্ষেত্রে দ্রুত বিচারসংক্রান্ত আইন ও নির্দেশ রয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়, দেশে বিচারপ্রাপ্তির অধিকার সব নাগরিকের জন্য সমান নয়।

আমাদের সংবিধানের ১৯(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবে।’ রাষ্ট্রনায়ক আলেকজান্ডার হ্যামিল্টনের বক্তব্য হলো- ‘The first duty of society is justice.’ মূলত সমাজ তথা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হলো, মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আর ন্যায়বিচার ও সমতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সুবিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি সমতল ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়। একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সমাজের সব শ্রেণীর নাগরিকের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকারগুলোর নিশ্চয়তা বিধান করা।

সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে একমাত্র আইন-আদালতের মাধ্যমেই মানুষ তার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে অপরাধ তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণে মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ অপরাধ তদন্তে রাজনৈতিক প্রভাব, তদন্ত কর্মকর্তার উদাসীনতা, গাফিলতি ও অনৈতিকতায় ভিকটিমরা যথাযথ প্রতিকার পাচ্ছেন না। ফলে বিচারপ্রক্রিয়া অপ্রত্যাশিতভাবে বিলম্বিত হচ্ছে। এমনকি তদন্তে অহেতুক বিলম্বের কারণে অনেক মামলার বিচারকাজই শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। অবস্থার এত অবনতি হয়েছে যে, অনেক ক্ষেত্রেই বিচার পাওয়ার ন্যূনতম সম্ভাবনাও থাকছে না।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে একটি উদ্বেগজনক খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- দীর্ঘ সময়েও সারা দেশের বিপুলসংখ্যক চাঞ্চল্যকর খুনের মামলার রহস্য উদঘাটিত হচ্ছে না বা করা যাচ্ছে না। ফলে মামলাগুলোর তদন্তের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এক যুগ বা তারও অধিক সময় ধরে রহস্য উদঘাটিত হয়নি এমন হত্যা মামলার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তাদের মধ্যে খুন হয়েছেন শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ। তদন্তকারী কর্মকর্তারা খুনের রহস্য উদঘাটন তো দূরের কথা, ক্লু পর্যন্ত খুঁজে বের করতে পারছেন না।

এসব খুনের মামলায় তদন্ত হিমাগারে চলে যাওয়ায় খুনের আসামিদের বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অপরাধীরা সব ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অপরাধ। ভুক্তভোগী পরিবার-পরিজন বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। পুলিশ সদর দফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ফলে দেশে আইনের শাসন নিয়ে নানাবিধ প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে; অবনমন ঘটছে বৈশ্বিক সূচকেও।

পুলিশ, র‌্যাব, সিআইডি, ডিবি ও থানা পুলিশ সারা দেশের চাঞ্চল্যকর খুনের মামলাগুলো তদন্ত করে থাকে। বছরের পর বছর ধরে তদন্তাধীন কোনো কোনো খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আদালতের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বারবার সময় চেয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু তারা খুনের মামলাগুলোর কোনো ক‚লকিনারা করতে পারছেন না। একশ্রেণীর তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপেশাদারিত্ব, দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও উদাসীনতার জোরালো অভিযোগ রয়েছে। ফলে খুনসহ বিভিন্ন অপরাধের রহস্যগুলো রহস্যই থেকে যাচ্ছে। চাঞ্চল্যকর খুনের মামলার তদন্তেরই এমন অবস্থায় অন্যান্য খুনের মামলার তদন্তের হাল কী হতে পারে, তা নিয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা সন্দিহান। ক্লুলেস খুনের ঘটনাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তা বারবার বদল করা হয়েছে বা হচ্ছে। ফলে অনেক খুনের ঘটনার রহস্য উন্মোচনে অনাকাক্সিক্ষতভাবে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। আবার কিছু চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা প্রকৃত আসামিদের বাঁচানোর জন্য তদন্তের গতি কমিয়ে রহস্যাবৃত করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ সেসব ক্লুলেস খুনের ঘটনা তদন্তের একপর্যায়ে এসে হাল ছেড়ে দিচ্ছে। এমনও হয়েছে, যিনি একটি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা তদন্ত করছেন তার ওপর আরো চাঞ্চল্যকর খুনের মামলার তদন্ত চাপিয়ে দেয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা আর ক‚লকিনারা করতে পারছেন না। ফলে বিপুলসংখ্যক হত্যা মামলার তদন্ত বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু খুন রহস্যের কোনো ক‚লকিনারা করতে পারছে না। এতে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হচ্ছেন ভিকটিমদের স্বজনরা।

চাঞ্চল্যকর খুনের মামলার তদন্তে তদারকি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। র‌্যাব, সিআইডি, ডিবি ও থানা পুলিশ চাঞ্চল্যকর ওই সব হত্যা মামলার তদন্ত করে থাকে। চাঞ্চল্যকর হত্যার মধ্যে কয়েকটি মামলা এক যুগেরও বেশি ধরে ঝুলে রয়েছে। পাঁচ বছরেও হত্যাকাণ্ডের মোটিভই উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি এমন মামলার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। আর তদন্ত চলছে, শিগগিরই অগ্রগতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে- এমন ধরনের ছেলেভোলানো বক্তব্য দিয়েই পুলিশের তদন্ত সংস্থা দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। মামলার বাদি ও সাক্ষীরা তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা মামলার চার্জশিট দিতেও অনাকাক্সিক্ষতভাবে বিলম্ব করছেন। মামলা প্রত্যাহার করতে বাদিদের হুমকি দেয়ার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।

ফলে মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ছেন বিচারপ্রার্থীরা। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের বাদ দিয়ে নিরপরাধদের আসামি করে চার্জশিট দেয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে কোনো কোনো তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির হাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর ভাগ্য ঝুলে আছে। বেশির ভাগ মামলার তদন্তেই অগ্রগতি নেই। শিগগিরই কোনো অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, তদন্ত কর্মকর্তার অদক্ষতা এবং কিছু পুলিশের অপেশাদারিত্ব ও স্বেচ্ছাচারিতায়ই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য অনুদঘাটিত থেকে যাচ্ছে। ফলে অপরাধীদের চিহ্নিত করা যায় না। কেউ কেউ অপরাধ তদন্তে প্রযুক্তির ব্যবহারের কথা বললেও সৎ ও যোগ্য তদন্ত কর্মকর্তার অভাবে তাও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তদন্ত কর্মকর্তার আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের অভাব থাকলে শুধু প্রযুক্তি দিয়ে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় পুলিশের মধ্যে মূল্যবোধ, পেশাদারিত্ব সৃষ্টি করতে এবং দক্ষতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়ার প্রয়োজনের তাগিদ এসেছে বিভিন্ন মহল থেকেই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের এখন পর্যন্ত তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র বলছে, মনিটরিং সেলে যেসব মামলা রয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে তদন্ত ব্যাহত হচ্ছে। ঢাকার বাইরে যেসব মামলা আছে, সেখানেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি হত্যা মামলার সাথে সরকারদলীয় এমপি, সন্ত্রাসী, নেতাকর্মী জড়িত থাকায় তদন্তে দলীয় প্রভাব এবং তদন্ত কর্মকর্তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণেও বেশ কিছু মামলার তদন্ত হিমাগারে চলে গেছে, যা দ্রুত তদন্ত ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তা কোনো গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজে মোটেই কাক্সিক্ষত নয়।

মামলা তদন্তে অনাকাক্সিক্ষতভাবে কালক্ষেপণ ও বিচারহীনতার ‘সংস্কৃতি’র কারণেই দেশে মামলার জট বাড়তে বাড়তে এখন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সাল শেষে সারা দেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৩১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৮। পুরনো পরিসংখ্যান থেকেও এটি স্পষ্ট যে, বহু বছর ধরে দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তি করা মামলার চেয়ে অন্তত কয়েক লাখ বেশি থাকে। প্রতি বছরই বিচারাধীন মামলার তালিকায় যোগ হচ্ছে অসংখ্য নতুন মামলা। অথচ আগের মামলাই নিষ্পত্তি করতে পারছে না আমাদের বিচার বিভাগ। আর অনিবার্য পরিণতি হিসেবে বিচারাঙ্গনে সৃষ্টি হচ্ছে মামলাজট। মামলার বিচার ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থায় বর্তমানে প্রচলিত সেকেলে ধারা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা আবশ্যক। কিন্তু বিষয়টি যাদের দেখভাল করার দায়িত্ব, তারা বিষয়টি নিয়ে রহস্যজনকভাবে উদাসীন। ফলে বিচারের বাণী নিভৃতেই কাঁদছে।

যে কারণেই হোক, বিলম্বিত বিচার ন্যায়বিচার অস্বীকারের শামিল। রাশিয়ান কবি ণবামবহু Yevgeny Yevthushenko বলেছেন, ‘Justice is like a train that is nearly always late.’ কিন্তু আমাদের দেশের বিচার প্রক্রিয়া এতটাই মন্থর যে, মামলা চালানোর মোট ব্যয়, বহু ক্ষেত্রে মামলার মোট মূল্যমানকেও অতিক্রম করছে। বছরের পর বছর মামলার বোঝা টানতে গিয়ে মামলার পক্ষরা এক দিকে নিঃস্ব হচ্ছে, অন্য দিকে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা কমতে কমতে এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে; যা রাষ্ট্রের স্বাধীন সত্তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি ওয়ারেন বার্জার ওয়ার্ল্ডনেট এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘সম্ভাব্য ন্যূনতম ব্যয়ে, ন্যূনতম সময়ে ও পক্ষদের ওপর সামান্য চাপ রেখে ন্যায়বিচার সাধন করাই হবে বিচার বিভাগীয় পদ্ধতির কাজ।’ কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান ও দুর্বলতা রীতিমতো উদ্বেগের।

আমাদের দেশে শুধু বিচারে দীর্ঘসূত্রতাই নয়, বরং যথাসময়ে অপরাধের তদন্ত না হওয়াও বড় সমস্যা। ফলে এক দিকে বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, আর বিচারহীনতার কারণে অপরাধ প্রবণতাও ক্রমেই বাড়ছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদেরকে এই অশুভ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আর বিচারে ন্যায্যতায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো যাতে সন্তুষ্ট থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে রাষ্ট্রকে। ইলিয়েনোর রুজভেল্টের ভাষায়, ‘ন্যায়বিচার কখনোই এক পক্ষের জন্য হতে পারে না। তখনই এটি ন্যায়বিচার হিসেবে গণ্য হবে; যখন তা সব পক্ষের জন্যই প্রতিষ্ঠা করা হবে।’ এটি খুবই প্রাসঙ্গিক ও যৌক্তিক।

smmjoy@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement