১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গণমাধ্যম কি বিচার করে ফেলছে?

- ফাইল ছবি

২০১৫ সালের আগস্টের ঘটনা। দিল্লির জনৈক নারী এক শিখ যুবকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে যুবকের ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করেন। রাজধানীর একটি হিন্দু মেয়ে এভাবে শিখ যুবকের হাতে হয়রানির শিকার হবেন, তা কেউ মানতে পারেনি। পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। নয়াদিল্লিসহ পুরো ভারতবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওই ঘটনা। রাজনীতিবিদ ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সেলিব্রেটিরা ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড়ো আওয়াজ তোলেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল তার সমর্থনে টুইট করেন। সাথে সাথে ওই শিখ যুবককে গ্রেফতার করা হয়। জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো উৎসাহী হয়ে তাকে ‘দিল্লি কা ডারিন্ডা’ বা দিল্লিস প্রিডেটর বা দিল্লির শিকারি লেবেল সেঁটে দিয়ে সংবাদ কাভারেজ দেয়।

একজন ব্যক্তিকে তারা যখন সরাসরি অভিযুক্ত করে ফেলছিলেন তার পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণের ধার তারা ধারেননি। পুরো জাতি যখন ‘কান নিয়ে গেছে’ বলে চিৎকার করছে, তখন কেউ একটুও কান আছে কি না মাথার পাশে হাত দিয়ে দেখতে চায়নি। ক’দিন পর প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য দেয়, শিখ যুবক নির্দোষ। ওই নারীকে যৌন হয়রানি বা লাঞ্ছিত করার মতো কোনো কিছু তিনি করেননি। প্রত্যক্ষদর্শীর ওই বর্ণনা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। অর্থাৎ সেটি ছিল অকাট্য প্রমাণ। এ দিকে ওই নারী কিছু দিন পর কানাডা পাড়ি জমালেন। তিন বছর ধরে তিনি আর আদালতের সামনে হাজির হননি। আদালত শিখ যুবককে শেষ পর্যন্ত সব অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি দিয়েছে।

ওই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যম ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংস্কারাচ্ছন্ন মনের পরিচয় পাওয়া যায়। প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম তাদের সেই কুসংস্কারে পা দিয়েছে মাত্র। তারা খুব একটা আগ বাড়িয়ে করেছে, এমন কিছু নয়। ঘটনাটির ভুক্তভোগী একজন মাত্র ব্যক্তি। এ কারণে তার ব্যক্তিগত জীবনে কিছু দিনের জন্য অপমান লাঞ্ছনা নেমে আসে। যে অপরাধ তিনি করেননি একজন নারীর অভিযোগে সেটি বয়ে বেড়াতে হয়েছে তাকে কয়েক বছর। তার পর তার মুক্তি মিলেছে। বাংলাদেশে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ শব্দযুগলের এখন বেশ প্রচার দেখা যাচ্ছে। এমন একসময় এটি আলোচনার বিষয় হলো, যখন অন্ধকার জগতের কিছু অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাদের ধরা হচ্ছে এবং যাদের নামে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হচ্ছে এসব অপরাধ তারা করেছেন কি; করেননি নিশ্চিতভাবে সমাজের মানুষের জানা নেই। তারা অসামাজিক কার্যকলাপ, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইলিং করেও থাকতে পারেন। মানুষ এমন ধারণা করে মাত্র। নায়িকা, মডেল ও ফটকা রাজনীতিবিদদের ধরা হচ্ছে। কোনো একজন ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর মামলা করার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ধরা হচ্ছে- এমনটি দেখা যাচ্ছে না।

‘গায়েবি’ নির্দেশে নির্ধারিত ব্যক্তিদের ধরা হচ্ছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একই ধরনের অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানের পর তাদের বাসায় মদের বোতল ‘আবিষ্কৃত’ হচ্ছে। আর তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল করেছেন বলে মোবাইল ঘেঁটে তদন্তকারীরা আবিষ্কার করছেন। আর রয়েছে যৌনতা অনাচারসংক্রান্ত সব বিষয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে যা যা করছে মিডিয়া তা হুবহু প্রকাশ করছে। জিজ্ঞাসাবাদে সব রহস্যজনক উত্তেজনাকর খবর পাওয়া যাচ্ছে। মিডিয়া তা রগরগে বর্ণনা করছে। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া কোনো মিডিয়ায় নিজস্ব কোনো সংবাদ এসব ব্যাপারে দেখা যায় না। এ ধরনের সাংবাদিকতা মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্রিফিং-কেন্দ্রিক। তারা যতটুকু বড় করে ধৃতদের অপরাধ দেখাতে চাচ্ছেন, তত বড় করেই মিডিয়ায় সেটি আসছে। সংস্কৃতি অঙ্গনের কিছু ব্যক্তি এখন বলছেন, মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। তাদের মতে, এসব অভিযোগ মাত্র, আদালতে প্রমাণিত নয়। যদিও মিডিয়ার এ ধরনের আচরণ নতুন নয়। এখন কয়েকজন মডেল, নায়িকা আর ফটকা রাজনীতিবিদদের নিয়ে যা রচিত হচ্ছে, বিগত এক যুগ ধরে সেটি বহু দেখা গেছে। বাংলাদেশে মিডিয়া ট্রায়ালের প্রভাব ছিল বিস্তৃত। দিল্লির ঘটনার মতো একজন মানুষ মাত্র এর ভুক্তভোগী ছিলেন না। এর ফলে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। যদিও শিখ যুবকের বিরুদ্ধে মিডিয়া শুধু অন্যদের অনুসরণ করেছিল। অন্য দিকে বাংলাদেশের মিডিয়া সামনের কাতারে থেকে একেবারে অ্যাক্টিভিস্ট হয়ে কাজ করেছে।

বাংলাদেশের মিডিয়া রাজনৈতিক নেতাদের বিপুল উৎসাহে চরিত্র হনন করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে এককাঠি এগিয়ে এতে তারা লিপ্ত হয়। তখন সমাজের কোনো একটি অংশ থেকেও জোরালো আওয়াজ ওঠেনি ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ নিয়ে। অনেক ব্যক্তির চরিত্র হনন করা হয়েছিল, যাদের ব্যাপারে জনসমাজে ধারণা ছিল তারা নির্দোষ। জেনেশুনে তখন মিডিয়া এ কাজটি করেছে। বিশেষ করে প্রথমে ধর্মীয় রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে এটি হয়েছে। এরপর সেটি নেমে এসেছিল সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতাকর্মীদের ওপরও। রাজনৈতিক নেতাদের কুৎসা রটিয়ে সরকারের দমন অভিযানকে সফল হতে দিয়েছে মিডিয়া। অপছন্দের রাজনৈতিক আদর্শকে মুছে দিতে সরকারের দমনকাণ্ডে তারা সহযোগী হয়েছিল। দুর্ভাগ্য, এই মিডিয়াও শেষে আর স্বাধীন থাকেনি। যেই পথে তারা সরকারের সহযোগী হয়েছে, ওই পথেই সরকার তাদের বাক্সবন্দী করেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মিডিয়ার কার্যক্রমের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সাধারণত নিরাপত্তাবাহিনী যখন কাউকে ‘অপরাধী’ তকমা দিয়ে অভিযান চালায় এর পশ্চাতে মিডিয়া নিরাপত্তাবাহিনীর সে অভিযোগকে মোটামুটি সত্য বলে ধারণা তৈরি করে দেয়। ‘জঙ্গিবাদ’ ও ‘জিহাদি বই’ সংক্রান্ত অসংখ্য অভিযান অত্যন্ত সফলভাবে চালানো হয়েছে। এগুলোর মধ্যে খুব সামান্য কিছু ঘটনায় সত্যতা থাকতে পারে। বেশির ভাগ ঘটনাই ছিল রাজনৈতিক ও আদর্শগত কারণে পরিচালিত। ওই সব প্রতিটি অভিযানে সরকার লাভবান হয়েছে। কারণ জঙ্গি দমনের জন্য পাওয়া সরকারের ‘বৈধ’ অভিযানগুলো কোন ফাঁকে ব্যবহার হয়ে গেছে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে, কেউ ঠাওর করে উঠতে পারেনি। কেউ কিছু বোঝার আগেই অনন্ত যুদ্ধের আমেরিকার সমর্থনে পরিচালিত এসব অভিযানে এ দেশের বিরোধী দল ‘হাওয়া’ হয়ে গেছে।

‘জঙ্গিবাদ’ বলতে কী বোঝায় মানুষ স্পষ্ট করে তা বোঝে না। তবে তারা দেখেছে দাড়ি টুপিওয়ালারা গ্রেফতার হচ্ছেন। সরকারি বাহিনী তাদের ধরে এনে চোর-ডাকাতের মতো পিঠমোড়া করে বেঁধেছে। এখনকার নায়িকা, মডেল ও ফটকা রাজনীতিবিদরা সে হিসেবে পুলিশের কাছ থেকে অনেক বেশি মর্যাদা পাচ্ছেন। কারণ তাদের কাউকে এমনভাবে অসম্মানিত লাঞ্ছিত করে পিঠমোড়া করে বাঁধা হয় না। ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয় না। ‘অস্ত্রশস্ত্র ও জিহাদি বই’ টেবিলে সাজিয়ে ‘হুজুর’দের প্রদর্শনী করে মিডিয়া তখন খুব স্বস্তি পেয়েছে। সেখানে দেখা গেছে দা, ছুরি, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র এবং বিভিন্ন ইসলামী স্কলারের লেখা বই ও নির্দোষ পাঠ্যবই। সংবাদমাধ্যম ‘ইসলামী পোশাকে’-এর লোকদের চালিয়ে দিয়েছে ‘জঙ্গি’ বলে। তাদের সাথে পাওয়া গৃহস্থালি কাজের ব্যবহারের আসবাবপত্রকে বানিয়ে দেয়া হয়েছে ‘মারণাস্ত্র’। অন্য দিকে ইসলামী সাহিত্যকে বানিয়ে দিয়েছে ‘জিহাদি বই’। অথচ সরকারি দলের আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তিদের কাছে পাওয়া গেছে প্রকৃত মারণাস্ত্র ও জঙ্গিসৃষ্টির কারখানা। পুরান ঢাকার এক কমিশনারের বাসায় অস্ত্রশস্ত্রসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জাম পাওয়া যায়। পাওয়া গিয়েছিল নিরাপত্তাবাহিনীর মতো জননিয়ন্ত্রণকারী ওয়াকিটকি সিস্টেম। এমনকি মানুষকে নির্যাতন করার চেম্বার। নিরাপত্তাবাহিনী কল্পিত গল্পগুলো মিডিয়া সাপোর্ট দিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়। ফলে রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় নেতা ও সাধারণ মানুষ হয়ে যায় অপরাধী। অন্য দিকে সরকার সমর্থক প্রকৃত অপরাধীরা হয়ে যায় নির্দোষ। এমন ঘটনা এ দেশে অসংখ্য ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মিডিয়ার এসব আচরণ সম্পর্কে মানুষ এখন সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। এ কারণে দেশের প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম জনপ্রিয়তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। এক গবেষণা থেকে জানা যায়, খবর জানার জন্য দেশের মাত্র ২ শতাংশ মানুষ দৈনিক পত্রিকার ওপর নির্ভর করে।

জঙ্গি আস্তানায় রীতিমতো সামরিক কায়দায় অভিযান চালানো হয়েছে। অনেক সময় জানা গেছে, জঙ্গিদের সাথে বিশেষ বাহিনীর শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের কথা। সেসব অভিযানে জঙ্গিরা সরকারি বাহিনীর ওপর কিভাবে চড়াও হয়েছে তার নাটকীয় বর্ণনা এসেছে যে, জঙ্গিরা নিজের সন্তান, স্ত্রী ও নিকটাত্মীয়কে ঢাল বানিয়েছে। তারা নিজেরাই নিজেদের বাসাবাড়ি তছনছ করেছে এবং নিজেরাও মরেছে, স্ত্রী-সন্তানদেরও মারছে। জঙ্গিরা অমানবিক ও পাশবিক এমনটি প্রমাণ করতে হবে, তাই এসবের জ্বলজ্বলে বর্ণনা। আর ছিল নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির বহু ঘটনা। ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থক-কর্মীদের যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিকে নাশকতা করার প্রস্তুতির তকমা দেয়া হয়েছে, হচ্ছে। সরকার আর মিডিয়া মিলে পরে প্রধান বিরোধী দলগুলোকেও একই ফাঁদে ফেলেছে।
সংবাদমাধ্যম সরকারি বাহিনীর বক্তব্য হুবহু প্রচার করেছে। বাহিনীগুলোর অফিসে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিং হয়েছে প্রধান খবর। মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের জন্য এটিই সাংবাদিকতা হয়ে গেছে। এসব ঘটনা মিডিয়া সামান্য তদন্ত করার প্রয়োজনও মনে করেনি। এ কারণে নিরাপত্তাবাহিনীগুলো যখনই কোনো ঘটনার বয়ান পরিবর্তন করেছে, মিডিয়াকেও তা পরিবর্তন করতে হয়েছে। তাই অনেক ঘটনার ক্ষেত্রে মিডিয়াকে কয়েক ধরনের বর্ণনা দিতে হয়েছে। চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনার ক্ষেত্রেও বিপরীতধর্মী সংবাদ দিতে হয়েছে। পুলিশের বরখাস্ত হওয়া এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী খুনের ঘটনার বর্ণনা এখন পুরোপুরি বিপরীত দিকে মোড় নিয়েছে। এ জন্য দেশের সাংবাদিকতাকে ‘প্রেস রিলিজ সাংবাদিকতা’ নামে উপহাস করা হচ্ছে।

একটি দেশের প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম যদি সরকারি বাহিনীর সাথে হাত ধরাধরি করে চলে, তাতে সংবাদ প্রকাশের দায়িত্ব পালিত হয় না। নীতি রক্ষা হয় না। পাঠকের জানার অধিকার মার খায়। এখানেই শেষ নয়। সঠিক খবর প্রকাশ না পাওয়ায় ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিটি গোষ্ঠী হয় ক্ষতিগ্রস্ত। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় অপরাধ না করেও যারা অভিযুক্ত হয়ে লাঞ্ছিত অপমানিত হয়ে যান তারা। তারা আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়ার আগে জেল জরিমানার শিকার হয়ে যান। এক দশক ধরে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো ত্রিমুখী আক্রমণের শিকার হয়ে প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছে। তার সূত্র ধরে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এতে কিন্তু কেউ লাভবান হয়নি। নানা শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ, সরকারি বাহিনীর মধ্যে থাকা সুযোগসন্ধানীরা এটিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করেছে। মিডিয়ার ওয়াচডগ রোলটি তাদের প্রসঙ্গে হয়নি। উল্টো মিডিয়া হয়ে গেছে তাদের প্রচারণার সহযোগী। এর বহুমাত্রিক প্রভাবে প্রতারক দুর্নীতিবাজে ছেয়ে গেছে পুরো দেশ। অন্য দিকে এককভাবে সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতটাই ক্ষমতা সরকার এখন অর্জন করেছে যে, মিডিয়াও সত্য উচ্চারণ করতে পারে না। এমনকি তাদের অস্তিত্ব নিয়েও প্রায় টানাটানি শুরু হয়ে যায়।

সংবাদমাধ্যমের কাজ হচ্ছে খবর জানানো। কোনো একটি ঘটনার হুবহু পাঠক শ্রোতার কাছে পৌঁছানো। এটিই একটি পেশাদার সংবাদমাধ্যমের পণ্য। বিগত এক যুগে দেশের গণমাধ্যম তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেনি। বলতে গেলে বিপুল সংবাদ বঞ্চনা তারা তৈরি করেছে। এর ফল হিসেবে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিকল্প মাধ্যমের ওপর। আমাদের দেশে যতটা দ্রুত মানুষ সামাজিক মাধ্যমে ঝুঁকেছে, সেটি অনেক দেশে হয়নি। এর কারণ মানুষের সঠিক খবর জানার আগ্রহ। মূল ধারার সংবাদমাধ্যম যা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম এখন মূল ধারার সংবাদমাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করছে। এদের চাপে অনেক খবর আর মূল ধারার গণমাধ্যম গোপন রাখতে পারছে না। এ তো গেল সাদামাটা সংবাদ প্রকাশের কথা। এর সাথে যদি ‘নৈতিকতা’ শব্দটি যোগ করা হয়, তা হলে এ দেশের সংবাদমাধ্যম এর ধারেকাছেও হাঁটেনি। কেউ কেউ পুরো মিথ্যা ভুয়া সংবাদ প্রচারে উৎসাহী হয়েছে কেবল আদর্শিকভাবে শত্রুতার কারণে। ‘তারা আমাদের শত্রু’ তাই তাদের ইতিবাচক খবরকে সম্পূর্ণ নেতিবাচক করে ছাপিয়ে দেয়া হয়েছে। অনেকগুলো সংবাদ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণসহ এমন বহু অভিযোগ আনা যাবে।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement