২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নাগরিকদের জানতে দিন

-

ব্যাংকের এক কর্মকর্তা রাতে দাওয়াত থেকে ফিরছিলেন। রাস্তায় তাকে পুলিশ আটকায়। রিকশা থামিয়ে তাকে নিয়ে যেতে চায়। তিনি জানতে চান, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো পরোয়ানা আছে কি না’। পুলিশ জানায়, ‘কোনো পরোয়ানার দরকার নেই।’ এখন জেলখানার ৯৮ শতাংশ কয়েদির বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ নেই। পুলিশ তাকে জোর করে নিয়ে যেতে চায়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তিনি মাটিতে পড়ে যান। পুলিশের উপপরিদর্শক মর্যাদার একজন তাকে বেধড়ক মারতে থাকেন। আশপাশে মানুষ জমে গেলে পুলিশ একটু ভড়কে যায়। এবার একটু নরম সুর। তবে ছেড়ে দেবেন ব্যাপারটা এমন নয়। কিছুটা ছাড় দেবেন। ওই কর্মকর্তার সাথে থাকা সাথীকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে ২০ হাজার টাকা চায়। তিনি এক হাজার টাকা দিয়ে জানান, বাকি টাকা ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। পুলিশ তার মোবাইল নম্বর নেয়। তাকে সময়মতো হাজিরা দিতে বলে; অন্যথায় কিছু করলে ঝামেলা হওয়ার হুমকি দেয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন ব্যক্তি এভাবে তার ওপর চালানো পুলিশি নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। এরপর তার পেছন থেকে সামনে আসেন তার আইনজীবী। তিনি জানান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। কোনো প্রতিকার না মেলায় রিট করেছেন। এই ভিডিওটি দেখেছেন প্রায় তিন মিলিয়ন বা ৩০ লাখ মানুষ। সমাজের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি যখন এভাবে অপমান লাঞ্ছনার শিকার হন, আবার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় প্রতিকার না পান; তখন তারা সামাজিক মাধ্যমের ওপর নির্ভর করছেন। রক্ষক যখন ভক্ষক হচ্ছে, অপরাধ যখন গুরুতর, প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম যখন এ ধরনের খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করতে পারছে না; তখন মানুষের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেন শেষ ভরসার স্থল হয়ে উঠছে।

মানুষ গুম হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি আমাদের দেশে এখন সাধারণ ঘটনা। এ ব্যাপারটি সবার গা সওয়া হয়ে গেছে। ভুক্তভোগীদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই নীরবে এই সন্ত্রাসের কাছে নতি স্বীকার করা ছাড়া। এক আদেশে উচ্চ আদালত সাদা পোশাকে গ্রেফতার নিষিদ্ধ করেছে। গ্রেফতার করতে হলে একটা সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি পুলিশকে মেনে চলতে হবে। তাকে গ্রেফতারনামা দেখাতে হবে। সেখানে ওয়ারেন্ট ইস্যুকারী কর্মকর্তার নাম পরিচয় ও ফোন নম্বর থাকবে। কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে আটক করা যাবে না।

আমরা কয়েক দিন আগে দেখলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের এক নেতাকে সাদা পোশাকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। পরিষদের নেতাকর্মীরা তাদের নেতাকে উদ্ধার করার জন্য ডিবি কার্যালয় এবং রাজধানীর সম্ভাব্য থানায় হানা দেয়। ডিবি অফিস থেকে জানানো হয়, তারা তারেক রহমান নামের কাউকে গ্রেফতার করেনি। সম্ভাব্য থানাগুলো থেকেও একই কথা তাদের জানিয়ে দেয়া হয়। ছাত্র অধিকার পরিষদের ছাত্রদের সাহসী কর্মকাণ্ড সবাই প্রত্যক্ষ করেছেন। তারা নাছোড়বান্দা। নিজেদের সহযোগী বন্ধুকে না নিয়ে তারা বাসায় ফিরবে না। এ ধরনের মনোভাব তাদের নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য কাজে আসছে। আমরা এর আগে দেখেছি, বিরোধী নেতাদের যখন গড়পড়তা ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, খুব বেশি কিছু তারা করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ভয় পেয়ে তারা পিছিয়ে গেল। তখন তাদের ওপর গুম-খুনের নিপীড়ন আরো বেড়ে যায়। সাদা পোশাকে বেপরোয়া গ্রেফতার গুমের শিকার হয়ে বিরোধী দল দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে বিদায় হয়ে যায়। ‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ’ হিসেবে সংবাদমাধ্যম এসব নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রচনা করে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি।

ছাত্র অধিকার পরিষদের যাত্রার সূচনা হয়েছে কিছু ছাত্রের সাহসিকতা ও দৃঢ়চেতা মনোভাবকে পুঁজি করে। এর আহ্বায়ক নুরুল হক নুরু এমন অনন্য সাহসিকতার নজির স্থাপন করেছেন। তাকে কতবার যে মারা হয়েছে তার হিসাব নেই। এখনো তিনি মারা যাননি কিংবা নিদেনপক্ষে পঙ্গু হয়ে যাননি। তবে তার হাড়ে ফ্রাকচার হয়েছে। এই দলের নেতারা তাদের সহকর্মীকে গুম করে দেয়ার পর ভয় পাননি। তারা পুলিশের মধ্যে থেকে খবর বের করতে সক্ষম হন যে, তারেককে রাখা হয়েছে একটি থানায়। তারা সেখানে হানা দিলেন। শেষ পর্যন্ত এই ছাত্রনেতাকে গুম করে রাখা সম্ভব হয়নি।

আমরা বিগত এক যুগে বহু গুম দেখেছি। বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম ও ইলিয়াস আলীর মতো নেতারা আর ফিরে আসেননি। অথচ তারা প্রকাশ্যে রাজধানীর রাস্তা থেকে একদিন ‘হারিয়ে যান’। তাদের সহযোদ্ধারা কিছু দিন চেষ্টা তদবির করে গুমকারী রহস্যময় গোষ্ঠীর সাথে পেরে ওঠেননি। পরিস্থিতি যখন সুনসান নীরবতা, রহস্যময় গুমচক্র আরো শক্তিশালী হয়েছে। ফলে বড় বড় পার্সোনালিটিদের চিরতরে ‘নাই’ করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। যারা আমাদের দেশের মানুষকে নাই করে দিচ্ছে এরা এ দেশেরই মানুষ। তারা আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কি না, সে সন্দেহ রয়েছে। ছাত্র পরিষদের নেতাদের গুম এব তার পর চাপের মুখে ফিরে পাওয়ার ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজটি করছে।

তারেককে একটি মাইক্রো বাসে তুলে নেয় সাদা পোশাকের কিছু লোক। অন্যায়কারী কোনো পক্ষ যদি চাইত তাকে দীর্ঘ দিন আটক করে রাখতে পারত। কিংবা শেষ পর্যন্ত তাকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে দিলেও আগের ঘটনাগুলোর মতো একটা কাহিনী হয়েই থাকত এ ঘটনা। তারেক ফিরে এসে ওই ঘটনার পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন করেছেন। তারেককে আরো একবার এভাবে গুম করা হয়েছিল। সেবার তার ওপর চালানো হয়েছিল বর্বর নির্যাতন। তিনি ভয় পেয়ে যাননি। তিনি এবারো ছাড়া পাওয়ার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশ কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানছে না, তা নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। কেন দেশের সাধারণ মানুষকে বেআইনিভাবে গোপনে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে তার প্রতিবাদ করতে চাইছিলেন।

তারেককে গুম করার ঘটনাটি আমাদের প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যমে খবর হিসেবে দেখা যায়নি। অথচ এর কিছু দিন আগে তারেকের সংগঠনটি ভেঙে যাওয়ার খবর প্রায় সব সংবাদমাধ্যম ফলাও করে প্রকাশ করেছে। ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরটি যখন চড়া হয়েছে, তখন তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের আক্রমণও আমরা দেখতে পাচ্ছি। এর অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে এক ছাত্রী ‘ধর্ষণ সহযোগিতা’র অভিযোগ এনেছেন। বাংলাদেশে জোরপূর্বক ধর্ষণ মহামারী হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এ ধর্ষকদের অপরাধের ব্যাপারে শতভাগ তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতগতিতে বিচার করতে পারছে না সরকার। সেখানে একজন নারী নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ‘সহযোগিতা’র অভিযোগ এনেছেন। যার বিরুদ্ধে মেয়েটির মূল অভিযোগ তিনিও কাজটি জোরপূর্বক করেছেন বলে প্রমাণ নেই। বরং প্রমাণ রয়েছে, দু’জন মিলে যথেষ্ট আগ্রহের সাথে মেলামেশা করেছেন। সেসব ঘটনার বহু সাক্ষী প্রমাণ ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ঘটনাটিকে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে নুরের বিরুদ্ধে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা থেকে মিডিয়া নিজেকে বিরত করতে পারেনি। এই প্রচারণার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে মিডিয়া পার্ট হয়ে গেছে। মেয়েটির দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা না থাকলেও তার পক্ষে অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে নুরের গ্রেফতারের দাবি ওঠানো হচ্ছে। এসব ব্যাপারেও প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যমে কোনো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন নেই। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, একজন ব্যক্তি নুরের জন্য কেন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন মিডিয়া করবে? এটি একটি যুক্তি হতে পারত নুরের বিরুদ্ধে যায় এমন ভিত্তিহীন সংবাদ ও প্রচারণাকে মিডিয়া যদি এড়িয়ে যেতে পারত। সেটি কিন্তু মিডিয়া এড়িয়ে যেতে পারেনি।

একদল লোক হঠাৎ করে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা করলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদ ভেঙে গেছে। তারা নুরের বিরুদ্ধে একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনলেন। আর নুর ও তার সহপাঠীরা বললেন, এরা প্রকৃতপক্ষে তাদের সংগঠনের কেউ নন। যিনি এ ভাঙনের প্রধান উদ্যোক্তা, তাকে অনৈতিকতার জন্য আগেই দল থেকে নুর বহিষ্কার করেছিলেন। নুরের দলটি ভেঙে যাওয়ার খবর মিডিয়া ঠিকই প্রচার করল। কিন্তু যারা ভাঙছে বলে ঘোষণা দিলো, তাদের ব্যাপারে নুর ও তার সহকর্মীদের প্রকাশ করা তথ্যপ্রমাণ আর বিস্তারিত প্রকাশ করল না। মেয়েটির অভিযোগ নিয়ে নুর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। সেই কমিটি বিস্তারিত তদন্ত শেষে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। তাতে খোলাসা হয়ে গেছে ঘটনার মূল কারণ ও পক্ষগুলো। কিন্তু প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যমে এসব খবর আসেনি। তারেকের গুম হওয়া এবং তার ছাড়া পাওয়া গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ঘটনা। যেমন- এর আগে শত শত গুমের ঘটনা ঘটেছিল। তারেকের গুম হওয়ার সাথে সাথে নুর বাহিনী মাইক্রো বাসটির নম্বরসহ তার গুমের ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়। তারেককে ছেড়ে দিতে বাধ্য হওয়ার জন্য এটি ছিল একটি গ্রাউন্ড। প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যমে এ খবরটি আসেনি।

মানুষের অধিকার যখন গণহারে লঙ্ঘিত হচ্ছে তখন রাষ্ট্র্রব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন মানুষের কাছে এসেছে। এ রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে সাম্য, মৈত্রী ও মানবাধিকারের বাণীকে উচ্চকিত করে। জনসাধারণের অধিকার রক্ষা করবে রাষ্ট্র। এ জন্য দেশের পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ যতগুলো অর্গান আছে প্রতিটি জনগণের এসব অধিকার রক্ষার করার জন্য সক্রিয় থাকবে। রাস্তায় নেমে যদি পুলিশের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়, কিংবা খোদ রাস্তায় পুলিশই গুলি করে নাগরিক হত্যা করে, কিংবা ফাঁড়িতে ডেকে নিয়ে সামান্য কিছু টাকার জন্য জঘন্য নির্যাতন করে মানুষ মেরে ফেলে, তা হলে এ বিশাল পুলিশ বাহিনীর কী দরকার? কেন জনগণ বিপুল কর দিয়ে তাদের পালন করবে? রাষ্ট্র্রের অন্যান্য অর্গানও জনগণের করের টাকায় পরিচালিত, তারাও যদি জনগণের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করতে না পারে তা হলে কেন রাষ্ট্র্রের পক্ষ থেকে তাদের পালন করা হবে?

দেশে বড় অন্যায়ের প্রায় সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুবাদে প্রকাশ পাচ্ছে। একজন প্রদীপের কথাই ধরা যাক। তিনি ২০৪টি খুন করেছেন বা করিয়েছেন, তার অধীনে ধর্ষিত হয়েছেন অনেকে, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এ কাজ তিনি এক দিনে করেননি। কক্সবাজারকে একটি ‘আলাদা রাষ্ট্র্র’-এর মতো বানিয়ে সিন্ডিকেট করে এ কাজ তিনি দীর্ঘ দিন ধরে করেছেন। একজন স্থানীয় অখ্যাত সাংবাদিক এ কথাগুলো সংবাদ হিসেবে প্রকাশ করতে গিয়ে প্রদীপের নির্মম নির্যাতনে প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছেন। দেশের আইন আদালত জেনে না জেনে সব প্রদীপের পক্ষে কাজ করেছে। প্রতিকার পাওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও সে সাংবাদিক দেখা করেছিলেন। ওই সাংবাদিক শেষ পর্যন্ত কারাগারে পচে মরছিলেন। মেজর (অব:) সিনহাকে যখন হত্যা করা হলো, সেই ঘটনাও ধামাচাপা দেয়ার পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু মানুষ তার হত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়া সম্ভব হয়নি। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, দেশের এ বিশাল মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির ভূমিকা কী? সংবাদমাধ্যমের প্রধান কাজ খবর জানানো। প্রদীপের এমন ভয়াবহ অপরাধ দেশের ৫০টি টেলিভিশনের কেউই দেখতে পেল না? আরো রয়েছে শত শত স্থানীয়, জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টাল। সবাই তাদের স্লোগান নির্ধারণ করেছে, দেশের স্বার্থে তারা শতভাগ নিবেদিত। যখন একজন সাংবাদিক প্রদীপের নির্মমতার শিকার হলেন তখনো কি তারা এ ব্যাপারে কোনো খবর পায়নি? কেউ কি এ সাংবাদিকের ভয়াবহ নির্যাতনের খবরটি প্রকাশের তাগিদ অনুভব করল না? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তারা নিশ্চয়ই ভাবতে পারেন, আমাদের মিডিয়ার হাজার হাজার সাংবাদিকের চোখ পেছনের দিকে ফিরিয়ে রাখা হয়েছে।

যা হোক, নুরের মতো সাহসী মানুষদের উত্থান আশাব্যঞ্জক। যে কথাগুলো প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম নাগরিকদের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে, তারা সে কথাগুলো বলে উঠেছেন। সে জন্য তারা জনগণের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ পেতে পারেন। এ জন্য তারা ব্যবহার করছেন বিকল্প মাধ্যম। বিকল্প মাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বিকল্প মাধ্যমে গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদ একেবারে গায়েব হওয়ার চেয়ে গুজবের পাশাপাশি সত্য সংবাদটি জানতে পারা সৌভাগ্যের ব্যাপার। প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম ‘ঝেড়ে কেশে’ যে দিন প্রয়োজনীয় কথাগুলো প্রকাশ করতে পারবে, সে দিন পর্যন্ত বিকল্প মাধ্যম অন্যতম বড় ভরসা হয়ে থাকবে। খবর গুম হয়ে যাওয়ার চেয়ে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে যতটুকু জানা যায় ততটুকুই কাজে আসবে।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement