২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বোকো হারামের চেয়েও ভয়ঙ্কর!

বোকো হারামের চেয়েও ভয়ঙ্কর! - ছবি : নয়া দিগন্ত

নাইজেরিয়ায় এখন সকালের হৃদয়বিদারক কান্নার রোল মানুষকে স্তম্ভিত করে দেয়। অসহায়দের কান্নার প্রতিধ্বনি যেন কেউ শুনতে পায় না। অনেকটা পৌরাণিক কাহিনীর রাক্ষসদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে চায় না। রেডিওর সংবাদ শোনার জন্য নাইজেরিয়ার অধিবাসীরা কান পেতে রাখে। কোথায় রাক্ষসরা এসে কাদের লুণ্ঠন করল কতজনকে হত্যা করল ইত্যাদি। বাড়ি থেকে উঁকি দিয়ে দেখে কোথায় আগুন জ্বলছে আর কোথায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশ পানে উড়ছে আর কোথায় বা পোড়া গোশতের গন্ধ ভেসে আসছে। এরপর অন্য কাজ। দশক ধরে শান্তির অন্বেষায় অপেক্ষমাণ নাইজেরিয়ার লোকেরা মনে করে এটাই বুঝি তাদের ভাগ্য। এর ওপর যুক্ত হয়েছে অপহরণ, এটাও এখন এক বড় ব্যবসা! ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য ২০ ডলার থেকে ২ লাখ ডলার পর্যন্ত দিতে হয়। অর্থাৎ যাকে ধরেছে সে শেষ।

এই দৃশ্য যদি মাত্র চার মাস আগেও বলা হতো তখন দুনিয়ার সবাই মনে করত, এটি বোকো হারামের কাজ। এখন যারা এসব করছে তারা বোকো হারামের চেয়েও ভয়ঙ্কর, স্থানীয়ভাবে অনেকে ‘রাক্ষস’ও বলে, নানা ভীতিকর নামে এদের চিহ্নিত করা হয়। কাছাকাছি গিয়ে যারা প্রত্যক্ষ করেছেন তারা বলছেন এরা ‘মোটরসাইকেল ডাকাত!’

নাইজেরিয়ার কেরাওয়া ও মিন্দায় ১ মার্চ এরা ৫০ জনকে হত্যা করে। কাদুনার কৃষক পরিবারে দরিদ্র লোকেরা গরু মহিষ পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। ডাকাতরা এদের গরু ছাগল নিয়ে যায় এবং গৃহে অগ্নিসংযোগ করে। ২৮ মে সীমান্তবর্তী নাইজারের সোকোতোতে ৭০ জনকে হত্যা করে সব সম্পদ লুটে নেয়। একই দল ১৪ জুন ২০ জন নাইজেরিয়ার সেনা ও ৪০ জন সাধারণ লোককে হত্যা করে। অর্থাৎ গত তিন মাসে ৩০০ জনকে হত্যা করেছে।

গত ৭ বছরে ৯৭ টন সোনা পাচার করার সময় সরকার আটক করেছে। সোনার খনিতে অনেকে কাজ করে, সরকার বলেছে এটি তাদের কৃতিত্ব যে, এত সোনা খনিতে পেয়েছে। সোনার খনির কারণে দেশে দুই লাখ ৫০ হাজার বেকার কাজ পেয়েছে। দেশে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বার্ষিক রাজস্ব ও ট্যাক্স ওখান থেকে আসে।
অক্সফামের তালিকায় নাইজেরিয়ায় সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে গরিবের হিসাব দেখা যায়। উন্নয়নের কথা বলা হলেও মাঠে তা পরিলক্ষিত হয় না। লাগোস নাইজেরিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী অথচ রাস্তাঘাটের অবস্থা নাজুক, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আছে, নেই। পানীয় জলের সরবরাহ দেখা যায় না এবং জঞ্জাল আবর্জনা অপসারণের কোনো সিস্টেম নেই। লাগোসের লোকসংখ্যা ১৯৫০ সালে ছিল ৩ লাখ; আজকে সেখানে ২০ মিলিয়ন।

লোকজন হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, বিদ্যালয়, পানি সরবরাহ, উন্নত পয়ঃব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের দাবি করছে বহুদিন ধরে। জলাধারগুলো ভরাট করে হাউজিং প্রকল্প তৈরি করায় নৌকাগুলো সাগরে যেতে পারছে না; মহিলারা বিকেলে ধৃত মাছ বিক্রি করতে পারছে না। ছেলেপুলেদের স্কুলে পড়ানোর অর্থ সঙ্কুলান হচ্ছে না।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গোড়ার মৎস্যজীবীরা এখন বেকার ও দারিদ্র্যের গভীরে প্রোথিত। ‘অক্সফাম’ সম্প্রতি নাইজেরিয়ার ২৬ জন ধনী বিলিওনিয়ারের নাম প্রকাশ করেছে যাদের কাছে তৃতীয় বিশ্বের অর্ধেক সম্পদ রয়েছে। বিশ্বের দারিদ্র্য-ঘড়ি হিসাব করেছে, প্রতি মিনিটে ৬ জন নাইজেরিয়ান অতিদরিদ্রের খাদে পড়ছে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে নাইজেরিয়ার ৪৫.৫ শতাংশ জনসংখ্যা চরম দরিদ্রতায় পড়বে। এখন ৫ বছর বয়সী ছেলে মাথায় করে পানির জ্যারিকেন বহন করে অর্থ উপার্জন করে। এ কাজও করতে না পারলে কিছু বড় হয়ে সোজা ‘রাক্ষস বাহিনী’তে ঢুকবে। সমালোচকরা বলছেন, সামরিক সরকার দশকের পর দশক জনগণের তহবিল লুটছে। নির্বাচিত সরকার তেমন সুবিধা করতে পারছে না।’ নাইজেরিয়া ওপেকের সদস্য, প্রতিদিন ২ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উত্তোলন করে এবং বিশ্ববাজারে ছাড়ে। এমন একটি দেশ এরূপ দরিদ্র থাকতে পারে না। সিস্টেমে বড় গলদ। ১৯৬০-২০০৫ সালে ২০ ট্রিলিয়ন ডলার তেলের টাকা তছরুপ হয়েছে। অক্সফামের তদন্ত প্রতিবেদনে এমন অনেক চুরির বিবরণ রয়েছে। নাইজেরিয়ার সেরা পাঁচজন ধনী লোকের সম্পদ, ৩০ বিলিয়ন ডলার; এরা সহজেই চরম দরিদ্রতা দূর করার কর্মসূচি নিতে পারে। অথচ রাজনীতির তলোয়ার কোনো জঞ্জাল সাফ করতে পারছে না।

সন্ত্রাসীরা গত মাসে ২৫০ জনকে খুন করেছে, অপহরণ করেছে ১৭৮ জন। সরকারি তদন্তে দেখা যায়, পুলিশ অফিসারও অন্তত ১৮টি বিধিবহির্ভূত খুনের জন্য দায়ী। প্রায় সময় লক্ষ করা গেছে কিছু সেনাসদস্য ও পুলিশ বোকো হারামের হয়ে কাজ করেছে, এখন তারা রাক্ষস বাহিনীর হয়ে কাজ করছে! চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন মাসে হত্যাকাণ্ড সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে কাদুনা স্টেটে। কাদুনা অর্থনীতির দিক দিয়ে অনেকটা সমৃদ্ধ। কাদুনায় উৎপন্ন সুতা, পিনাট রফতানি করা হয়। কৃষকদের ঘরে কিছু মৌসুমি টাকাপয়সা চলে আসে। তখন তারা নবাগত দস্যুদের শিকার হয়। চামড়া ও চামড়ার ইনস্টিটিউট এখানে। সমস্যা হলো কাদুনায় ৬০টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে! মুসলমান ও খ্রিষ্টান ছাড়াও প্রকৃতিপূজারী রয়েছে অনেক। ধর্মহীন নাস্তিকদের সংখ্যাও উল্লেখ করার মতো। এরা ‘নাও খাও’ নীতিতে বিশ্বাসী। কিছু কিছু উপগোষ্ঠী বিরোধ যেমন হাউসা ও ফুলানির মধ্যকার হত্যাকাণ্ড কয়েক দশক ধরে রক্তের সাগর বইয়েছে। খ্রিষ্টান ও মুসলমানরা ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা নিয়ে দাঙ্গা করেছে ২০০১ থেকে ২০০২ পর্যন্ত। মুসলিম বিশ্বের ও নাইজেরিয়ার নামকরা ধর্মপ্রচারক ইবরাহিম জাকজাকি কাদুনায় কাজ করেন। কাদুনা বর্ণিল হলেও এখানেই দস্যুরা হত্যাকাণ্ড করে বেড়ায়। পত্রপত্রিকায় এদের বলা হয়, দস্যুবাহিনী, রাক্ষসবাহিনী, মোটরসাইকেল সন্ত্রাসী। যেকোনো বর্বরতাকে হার মানিয়েছে নবাগত এই ভয়ঙ্কর বাহিনী। এই সবই মাত্র গত চার মাসের কথা। বোকো হারাম যখন ঘটনা ঘটায়, তারা একটি যুক্তি দেখায়; রাক্ষসবাহিনীর তেমন কিছু নেই; স্রেফ লুটতরাজ।
আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের মতে গত এক দশকে ৮০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে নাইজেরিয়ার কাদুনা, কেবু, সোকোতো, নাইজার ও জামফারায়। সবার হাতে থাকে একে-৪৭ রাইফেল। এখন কোনো কোনো সময় ২০০ মোটরসাইকেল অপারেশনে বের হয়।

বিবিসি জানায়, নাইজেরিয়ার নিরাপত্তার জন্য এখন যেসব হুমকি কাজ করছে সেগুলো হলোÑ (১) রাক্ষস বাহিনী, (২) ইসলামী জঙ্গি দল, (৩) সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত ও লুটেরা, (৪) পশুপালক গোষ্ঠী, (৫) মহাসড়ক ও রাস্তার লুটপাট পার্টি, (৬) বায়াফ্রা বিছিন্নতাবাদী, (৭) ফাঁদে ফেলার মহিলা দল এবং (৮) তেললুটেরা বিদ্রোহী বাহিনী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম বিরাট এলাকা, যা যুক্তরাজ্যের সমান, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকেও অনেকে অপরাধ করার জন্য নাইজেরিয়ার সীমান্তে আসে। বিরাট বনভূমিতে ছোট ছোট লুকানোর অনেক পথঘাট আছে, দস্যুরা এসব ব্যবহার করে। এসব গহিন বন জঙ্গল তাদের অভয়ারণ্য। পুলিশ বলছে রাক্ষস বাহিনীর সাথে ফুলানি পশুপালকরাও দস্যুতা করে থাকে। ফুলানিরা বলে তাদের হাতে এখন অস্ত্র আছে, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য।

কাটসিনা স্টেটের গভর্নর আমিনু বিল্লু মাসারি জঙ্গলে গিয়ে রাক্ষসবাহিনীর সাথে চুক্তি ও আলোচনা করতে চেয়েছেন, যাতে এই দুর্যোগ বন্ধ হয়। তাদের সাথে ছবি প্রকাশ হয়ে পড়লে জনমানুষ ও মিডিয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে থাকে। ‘কিভাবে একজন স্টেট গভর্নর দস্যুদের সাথে চুক্তি করতে চায়, যাদের কোনো লেখাপড়া নেই, কোনো অনুভূতি ও সমবেদনাবোধ নেই, যারা পশুর মতো আচরণ করে।’

এসব রাক্ষসের বিষয়ে বেশি কিছু জানা যাচ্ছে না। নাইজেরিয়া ও আফ্রিকার মাটিতে এরা নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গরু মহিষ লুট করে, কোনো রাজনৈতিক দর্শন নেই। তবে পশুর মাঠে চরানো, জমি ও পানি নিয়ে বিরোধ প্রায় সময় খুনাখুনিতে শেষ হয়। অপহরণ করে চাঁদা আদায়ও করে এই দল। বোকো হারামের সদস্যরা হোস্টেল থেকে যেসব মহিলাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তারা অধিকাংশ খ্রিষ্টান ও মুসলিম যারা ধর্মকর্ম করে না। ওরা যখন ফিরে আসে দু-একজন ছাড়া কেউ বোকো হারামের বিপক্ষে বলেনি, বরং ওদের আচরণের প্রশংসা করেছে। কিন্তু এই দস্যুদের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে কেউ জানে না। মাত্র কয়েক মাসের ঘটনা এসব। তাই আরো অপেক্ষা করতে হবে।

১৯৬৭-৭০ সালের গৃহযুদ্ধে বুহারি একজন নামকরা যোদ্ধা ছিলেন। ১৯৮৩ সালে তিনি গণতান্ত্রিক সরকারকে সফট ক্যুর মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেন। তিনি সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বহু কাজ করেছেন একজন সাহসী যোদ্ধার মতো। তিনি মিলিটারি ডিকটেটর হিসেবে দেশ শাসন করেন। তাদের সেনারা নাইজেরিয়ায় সীমান্তে আক্রমণ করে কয়েকটি গ্রাম দখল করে নিলে বুহারি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং বিপক্ষ সেনাদের নির্মূল করেন। এতে তিনি দেশের প্রিয়পাত্র হন। ‘বুহারিকে নাইজেরিয়ার সেরা সন্তান’ বলা হয়। দ্য ন্যাশন পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বুহারি দুর্নীতিপরায়ণ নন, তিনি মদ খান না, ধূমপান করেন না, নারীঘটিত কোনো কেলেঙ্কারিতে বুহারি নেই।’ সবাই তার প্রতি অনুগত।

তবে এখন অবস্থা কিছুটা অয়োময় হয়ে গেছে। কিছু অযোগ্য লোক বড় পদে বসেছে, নিরাপত্তা প্রধানরা যাদের দুর্নীতির জন্য বরখাস্ত করা উচিত তারা পুরস্কৃত হয়েছে, অনেক পার্টি নেতাকে সরকারি সুযোগের আওতায় আনা হয়েছে। অস্ত্র কেনার সময় অনেকে সরকারি ফান্ড তসরুপ করেছেন, তাদের দুর্নীতি অভিযানে ধরা হয়নি। সেনাদের হাতে আধুনিক অস্ত্রের অভাব রয়েছে; অর্থেরও অভাব; দস্যুরা ও রাক্ষসবাহিনী ফুলানি গোত্রের। বুহারিও ফুলানি গোত্র থেকে এসেছেন তাই এখন রাক্ষসবাহিনী নিয়ে অনেক প্রশ্ন। এদেরকে কি তিনি আইএস ও বোকো হারামের বিরুদ্ধে দাঁড় করাবেন? তাহলে কেন এসব হত্যাকাণ্ড? মানুষের মনে নানা প্রশ্ন।

বুহারি সারা দেশের সবার সমর্থন পাচ্ছেন না। তিনি বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকে একত্র করতে ব্যর্থ হয়েছেন। অভিযোগ, তাদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিনিধি সরকারে নেই। আরো অভিযোগ, আত্মীয়স্বজনদের তিনি চাকরি ও বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছেন। দেশের নিরাপত্তা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা তার এলাকার। এবার তার বিরুদ্ধে পদত্যাগের ডাকও এসেছে- তরুণদের মিছিল থেকে। তবে দেশের এই দুর্যোগ মুহূর্তে এখনো তিনি সমস্যা আক্রান্ত দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও সাহসী নেতা।

কিছু লুটেরা রাক্ষস-জীবনকে পছন্দ করছে না। সরকার ঘোষণা দিয়েছে, তারা ফিরে এলে প্রত্যেককে একটি একে-৪৭ রাইফেলের বিনিময়ে দু’টি গরু দেয়া হবে। উত্তর-পশ্চিম জামফারার গভর্নর বেলো মাতাওয়ালি এমন ঘোষণা দেন, স্টেটে এরকম কিছু ঘটনা ঘটছে। অস্ত্রধারীরা জামফারায় কাটসিনা ও সোকোতো স্টেটের বাসিন্দাদেরও তছনছ করেছে। এরা প্রায়ই দোকানপাট লুট করে, গৃহপালিত পশু জোর করে নিয়ে যায়, মানুষজন ধরে নিয়ে চাঁদা দাবি করে। এলাকার লোকজন বাধা দিলে পাইকারি হারে হত্যা করে।

নাইজেরিয়ার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোনো শেষ নেই। নেতারা ভোটে যেতার জন্য যে বিষয়টি বড় করে বলে বেড়ান সেটি হলো, বোকো হারামকে শেষ করা। বোকো হারাম দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। এমনকি সেনাবাহিনীর জন্য প্রেরিত অস্ত্রসম্ভারও তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। সদ্য নতুন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ‘রাক্ষসবাহিনী’। আইএসের বড় ঘাঁটি রয়েছে আবুজা ও উত্তর নাইজেরিয়ায়। যেকোনো সময় তারা অপারেশন চালাতে পারে। এত সব বাহিনীর রক্তাক্ত আক্রমণে নাইজেরিয়ার সমাজ ধুঁকে ধুঁকে মরছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে নাইজেরিয়ায় বাইরের সহায়তা দরকার। কিন্তু সন্ত্রাস দমন ও শান্তি স্থাপন এত সহজ বিষয় নয়। বহু মত, বহু পথের মাঝে সরল রেখা টানা সোজা নয়। এসব চলতে থাকলে নাইজেরিয়ার অধিবাসীরা অন্যত্র অভিবাসী হবে এবং আঞ্চলিক যুদ্ধে সস্তায় ভাড়াটে সেনা হিসেবে বিক্রি হবে। এটি মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার জন্য সুখকর নয়। নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী দুর্নীতিপরায়ণ। সেনাদের ডিপো থেকে কিভাবে বোকো হারামের কাছে অস্ত্র যায় তা যেন ওপেন সিক্রেট। সেনাবাহিনীর মধ্যেও বিভিন্ন গোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে তাই ‘ইনটিগ্রেটেড’ সেনাবাহিনী গঠন করা প্রয়োজন। সেটিও সরকারের পক্ষে কঠিন কাজ। শান্তি রক্ষীবাহিনী দিয়ে দেশ চালানো কোনো কাজের কথা নয়।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement