২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হার্ড ইমিউনিটি ও নিউ নরমাল

হার্ড ইমিউনিটি ও নিউ নরমাল - ছবি : নয়া দিগন্ত

‘যা গিয়ে যা থাকে বা যা মরে আর যা বাঁচে’, এ ধরনের মনোভাবের অর্থ, ‘জীবন নিয়ে জুয়া’ খেলা। এখন করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপটে অনেক দেশের সরকার বোধহয় এমন মনোভাব পোষণ করতে বাধ্য হচ্ছে। এ কারণেই লকডাউন, কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন আর সেই সাথে সোস্যাল ডিস্ট্যান্সসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠছে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ কথাটা।

করোনাভাইরাস যদিও ধরা পড়ে চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এবং সেই সুবাদে সংশ্লিষ্ট ব্যাধির নাম দেয়া হয়েছে ‘নোভেল কোভিড-১৯’ (নতুন করোনা ভাইরাসজনিত রোগ-২০১৯), আসলে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এই ভয়াবহ জীবাণুর আগ্রাসন টের পাচ্ছে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে। আমাদের বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮ মার্চ। সে মোতাবেক করোনাকাল কার্যত শুরু মার্চ থেকে যা কখন শেষ হবে আর কত দিন চলবে তা একমাত্র করোনার মতো সব জীবাণুসহ জীবজগৎ তথা এই বিশ্বজগতের একমাত্র স্রষ্টা ও অধিপতি হিসেবে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার জানা।

এ অবস্থায় বিভিন্ন দেশের সরকার মনে করছেন মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোই সমধিক গুরুত্ববহ বিষয়। তাই লকডাউন করে সব কিছু অচল করে রাখার চেয়ে নাগরিকদের সচল থাকতে দেয়াই উত্তম। বিশেষ করে অতি জনবহুল দরিদ্র দেশগুলোতে লকডাউন এবং আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন মানানো কঠিন। দেশের বিশাল একটা জনগোষ্ঠীর ‘হোম’ বা আবাসই নেই, তাদের আবার হোম কোয়ারেন্টিন কিসের? যাদের প্রতিনিয়ত দুশ্চিন্তা পরের বেলার খাবার জোটানো নিয়ে, দিনে দুবেলা খাওয়াই যাদের কাছে মুখ্য, ‘সামাজিক দূরত্ব’ বিষয়টা তাদের দৃষ্টিতে অসামাজিক কাজের মতো গর্হিত। তাদেরকে ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে মৃত্যুঝুঁকি আছে’ কথাটা বললেও কাজ হয় না। তারা বলে, ‘আমরা লকডাউনে মরতে বসি খাবারের অভাবে। এখন না হয় কোভিড হলে মরব, তবু তো না খেয়ে মারা যেতে হবে না।’ অপর দিকে, দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকারের পক্ষে কোটি কোটি বেকার দেশবাসীকে খাওয়ানো কিংবা তাদের বেকারভাতা দেয়া সম্ভব নয়। অতএব নিয়তির ওপর নাগরিকদের সঁপে দেয়া ছাড়া কি-ইবা করার আছে?

এই পরিপ্রেক্ষিতে Hard Immunity কথাটা বেশি শোনা যাচ্ছে এখন। কিন্তু এই Immunity অর্জন করা সত্যিই Very Hard. কারণ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, দেশের অন্তত ৪০ শতাংশ মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারে এই ইমিউনিটি অর্জন করতে গিয়ে। মারা যেতে পারে তাদের মধ্যে অনির্দিষ্ট সংখ্যক নাগরিক। এতবড় ঝুঁকি নেয়ার চেয়ে যত বেশি সম্ভব, মানুষকে টেস্ট বা পরীক্ষা করানো উত্তম। কিন্তু আজও ক’টি দেশের পক্ষে এর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা সম্ভব?

আমাদের দেশের দিকে তাকালে বাস্তবতা উপলব্ধি করা যায়। করোনা টেস্ট করার নমুনা সর্বত্র সংগ্রহ করার সুযোগ নেই; তা থাকলে নমুনা পরীক্ষা করে দেখার উপায় নেই। নমুনা পরীক্ষা করা গেলে সুচিকিৎসার প্রতিষ্ঠান নেই। তা ছাড়া নমুনা প্রদান আর পরীক্ষা করার ব্যয় বহনের সামর্থ্য আছে ক’জনের? তদুপরি, করোনা চিকিৎসার খরচ এর চেয়ে অনেক বেশি। সর্বোপরি, আজ পর্যন্ত কোভিড মহামারীর কোনো স্বীকৃত ওষুধ বা টিকা পাওয়া যায়নি। এ দিকে, এ দেশে ‘নেগেটিভ-পজিটিভ’ বাণিজ্য করছে এক শ্রেণীর অসৎ লোক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার তাগিদ দিয়ে বলছে, টেস্ট, টেস্ট, অ্যান্ড টেস্ট তাদের আইডিয়া হলো বেশি টেস্ট মানে ‘বেশি শনাক্ত’। আর যত অধিক শনাক্ত হবে করোনা রোগী, তত বেশি লোককে চিকিৎসা দিতে হবে সুস্থ করার জন্য। কিন্তু সুস্থ হয়ে ওঠা দূরে থাক, চিকিৎসার ব্যবস্থা ও সামর্থ্য আছে ক’জনের? আমেরিকার মতো উন্নত দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা যেখানে ব্যর্থ, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কথা না বলাই ভালো। এ দেশে তো মিঠু-রাজ্জাক-সাহেদ-সাবরিনাদের দৌরাত্ম্য!

দুই.
সম্ভবত গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে যখন করোনাভাইরাস কোনো কোনো দেশে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখনো বাংলাদেশে করোনাকে ‘দিল্লি হনুজ দূর অস্ত’ হিসেবে ‘দূরবর্তী কিছু’ মনে করা হচ্ছিল। ওই সময়ে একজন জাঁদরেল মন্ত্রী বললেন, ‘করোনা নিয়ে বড় ক্রাইসিস সৃষ্টি হবার আশঙ্কা এখনো নেই। অবশ্য মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত যদি এই জীবাণু সংক্রমণ অব্যাহত থাকে, তাহলে চীনা সাহায্যে নির্মীয়মাণ পদ্মা সেতুর কাজ বিঘ্নিত হতে পারে। কারণ যেসব চীনা কর্মী ও কর্মকর্তা বাড়ি গেছেন, তাদের ফেরা নাও সম্ভব হতে পারে।”

মন্ত্রীর এহেন উক্তি শুনে দেশের অনেকে এমন কথার পেছনে যুক্তি কী, তা নিয়ে ভাবলেন। অথচ সেই মার্চ গিয়ে এপ্রিল, মে, জুন, জুলাই শেষ হয়ে আগস্ট এসে গেলেও করোনাভীতি শেষ হওয়ার লক্ষণ বা কারণ এখনো দেখা যায়নি। এর মধ্যে মার্চে বাংলাদেশে ঘোষিত ‘সাধারণ ছুটি’ নামের প্রচ্ছন্ন লকডাউন গোটা জাতির জীবনযাত্রাকে আচ্ছন্ন করে রাখল অন্তত তিন মাস। এরপর ‘লকডাউন’ দৃশ্যত শেষ হলেও দু’মাসের বেশি সময় ধরে দেশের যে বেহাল দশা, তা লকআপ-এর শ্বাসরুদ্ধকর অনিশ্চিত অবস্থা থেকে অভিন্ন।
সরকারপ্রধান পরিস্থিতির ভয়াবহতা টের পেয়ে আপাতত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আভাস দিয়ে রেখেছেন। শোনা যাচ্ছে, তা আরো পেছাতে পারে। করোনার তাণ্ডব সৌদি আরবের মতো ধনী দেশেও এমন শঙ্কা জাগিয়েছে যে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস বা পরীক্ষা ছাড়াই আগে ভাগে এক শিক্ষাবর্ষ অটোপ্রমোশান দিয়ে দেয়া হলো। আর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নগর নিউ ইয়র্কের মেয়র লকডাউনের সূচনাতেই জানিয়ে দিয়েছেন, করোনার প্রকোপে এক বছর বন্ধ থাকবে সব শিক্ষালয়। অর্থাৎ চলতি বছরে আর স্বাভাবিকতা ফেরার সম্ভাবনা নেই। সামনের বছর ‘স্বাভাবিক’ অবস্থার প্রত্যাবর্তন ঘটলে তা হবে ‘নয়া স্বাভাবিক’ (New Normal) যার হালচাল হবে ভিন্ন ও নতুন।

ক্রীড়া ও বিনোদন জগতের অনেকেই মাঠ বা সেটে যেতে অনাগ্রহী। তাদের কথা হলো, ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম।’ আগে জান, পরে মান। বলিউডের প্রখ্যাত নায়ক অক্ষয়ের সাফ কথা : জান বাঁচলে জাহান (দুনিয়া) বাঁচবে।’ আমাদের ঢাকার একটি টেলিনাটকের সবে শুটিং শুরু হয়েছিল, এর মধ্যে সেখানে দুই শিল্পীর করোনা পজিটিভ। আতঙ্কে সাথে সাথে সেটা গুটিয়ে সবার প্রস্থান। এরপর শুটিং বন্ধ। একজন বিশিষ্ট অভিনয় শিল্পীর বক্তব্য, ‘আগে অভিনয়ের বিরতিতে সবাই মিলে আড্ডা মারতাম আর একত্রে খেতাম। এখন যার যার খাবার বাড়ি থেকে আনতে হয় আর সাথে গরম পানি থাকা বাধ্যতামূলক।’ এ না হলে কি সাধে বলে, ‘ঠেলার নাম বাবাজি!’ এমন অবস্থায় নিজেদের মানিয়ে নিতে হয়। ‘সামাজিক দূরত্ব’ বহাল রেখে নাটক ও সিনেমা করতে হচ্ছে। ওদিকে টোকিও অলিম্পিক স্থগিত হয়ে গেছে সেই কবে। ১৯৬৪ সালের ৫৬ বছর পরে এবারই প্রথম জাপানের রাজধানী নগরীটি মেজবান হয়েছিল বিশ্বের বৃহত্তম ক্রীড়া উৎসবের। করোনা ক্রাইসিস অলিম্পিককে ধাক্কা দিয়ে ২০২১ সালে নিয়ে গেছে। তবে আগামী বছরেও এ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কিনা কেউ নিশ্চিত নন। কারণ এ সময়ের মধ্যে কোভিড রোগের ওষুধ উদ্ভাবনের গ্যারান্টি নেই।

কিছু দিন আগে মিডিয়ার খবরে মনে হচ্ছিল, ‘করোনাভাইরাস পালিয়ে গেল বলে। কেননা এর মোক্ষম দাওয়াই বের হয়ে যাচ্ছে। আমেরিকা, চীন, ব্রিটেন, রাশিয়াসহ উন্নত ও বড় দেশগুলো এর ওষুধ নিয়ে গবেষণায় অনেক দূর এগিয়েছে।’ মানুষের আশায় বসতি হলেও কয়েক মাস পরে এখন মনে হচ্ছে আশা কুহকিনী।

খুব সম্ভবত ২০২০-এ কোভিডের ওষুধ দেখা সম্ভব হবে না। বরং সামনের শীতে নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে খোদ আমেরিকা-ইউরোপে কোভিড নব উদ্যমে মারাত্মক হানা দিতে পারে। সম্ভাব্য সে মহামারীর খবরে ডেমোক্র্যাট থেকে টেকনোক্র্যাট, রিপাবলিকানসহ আমেরিকান সবাই নিদারুণ ভীত ও উদ্বিগ্ন। চলতি বছর করোনার প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। খুব আশাবাদীরাও বলছেন, আগামী বছরের মাঝামাঝির আগে এটা পাওয়া নাও যেতে পারে।
কয়েক দিন পরপরই খবর শোনা যায়, অমুক রাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা কোভিড নিয়ে গবেষণায় সফল, তমুক দেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়ে গেছে। কোথাও সে ওষুধ মানবসন্তান বা মানবেতর প্রাণীর দেহেও সাফল্যের সাথে পরীক্ষায় উতরে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু কৃপাহীন করোনা তার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে আগের মতোই। প্রতিদিন হাজার হাজার বনি আদম হচ্ছে সংক্রমিত, ঢলে পড়ছে মৃত্যুর মুখে। কোনো কোনো দেশে করোনা ফিরে এসেছে এবং ভয়াল তাণ্ডবের জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্পের টোটকা কিংবা মার্কিন মেডিসিন অথবা পাশ্চাত্যের প্রেসক্রিপশনে কোনো কাজ হচ্ছে না।

তিন.
একটি ইংরেজি দৈনিক বিখ্যাত জুতা পাদুকা শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘বাটা’র ওপর একটা সচিত্র প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। এ দেশে ৫৮ বছরের ব্যবসার ইতিহাসে তারা প্রথমবারের মতো লোকসান গুনছেন এবার, সেটিই প্রতিপাদ্য। এ বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বাটার বিক্রি কমে যায় ৮৫.৩৭ শতাংশ। এতে বাটাকে ক্ষতির শিকার হতে হলো ৭৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার। এ দেশে তাদের জুতা-স্যান্ডেল বিক্রির একটা বড় মৌসুম ঈদুল ফিতর। নরমাল বা স্বাভাবিক সময়ে ঈদে তাদের বিক্রি হয় যা, এবার লকডাউনের মধ্যে ঈদে বাটার বিক্রির পরিমাণ আগের মাত্র ১৫ ভাগের একভাগ। এখন তারা বলছেন, কয়েক দিন পরে বুঝা যাবে আমরা নরমাল বা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরব কি না।

ইতোমধ্যে ধুয়া উঠেছে নিউ নরমাল বা নতুন স্বাভাবিক অবস্থার। এটা হলো, করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট নতুন বাস্তবতা। যেহেতু একে মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিই হচ্ছে নয়া স্বাভাবিকতা। দেশের পোশাক ব্র্যান্ডসহ অনেকেই নিরুপায় হয়ে এভাবে ভাগ্যের কাছে আত্মসমর্পণ করছেন। বিনোদন ও ক্রীড়া জগতের জন্যও এটা সত্যি।

পত্রিকায় দেশের একটি ফ্যাশনওয়্যার ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর বক্তব্য দেখলাম। দেশের বড় বড় শহরে তাদের ২৪টি আউটলেট রয়েছে। ওই নির্বাহীর ভাষায়- ‘মাঝে মাঝে আমাদের তৈরি করা পোশাকের বিকিকিনি এত বেশি হয় যে, তা রকেটগতির বিক্রি বাট্টা। কিন্তু পরদিনই প্রপাত ধরণীতল। ব্যবসার তলানি দশা দেখে তখন হতাশ হতে হয়। হয়তো এরই নাম নিউ নরমাল (নতুন স্বাভাবিক অবস্থা)।’

হ্যাঁ, ঘরে ঘরে এখন শিক্ষার্থীদের অনলাইন পড়ার ধুম। দুপুর বিকেল সন্ধ্যায় স্মার্টফোন/ ইন্টারনেটে চোখ কান লাগিয়ে মাথা গুঁজে ক্লাস করা আর নোট নেয়ার ব্যস্ততা। যেহেতু প্রাইমারি সেকেন্ডারি ইন্টার-অনার্স-মাস্টার্স সব ক্লাসই বন্ধ; কোনো পরীক্ষার নেই খবর, অতএব অনলাইনই আপাতত ভরসা। তবে এই নব্য বাস্তবতা হয়তো রাজধানীসহ শহরাঞ্চলে ‘নতুন স্বাভাবিক’। কিন্তু এর বাইরে দেশের যে বিস্তীর্ণ জনপদ, সেখানে এটা স্বাভাবিক হবে কত দিনে?

পাদটীকা
এক.
কোয়ারেন্টিন ক’দিন বলবৎ থাকে? এ প্রশ্ন করতে হলো একেক ক্ষেত্রে একেক রকম হিসাব দেখে। Quarantine (সঙ্গ নিরোধ) শব্দটা ল্যাটিন ভাষার, যার মূল অর্থ ৪০ (চল্লিশ)। মধ্যযুগে বারবার প্রধানত প্লেগ মহামারীর জের ধরে বাস্তবে এখন কোয়ারেন্টিন নেমে এসেছে ১৪-তে অর্থাৎ দু’সপ্তাহে। সোজা কথায়, ফর্টি থেকে মাত্র ফর্টিনে। এমনকি ইদানীং তা কারো কারো বেলায় ১০ দিন হতেও দেখা যায়। এর কারণ নাকি করোনা পজিটিভ থেকে নেগেটিভ হয়ে যাওয়া। কিন্তু মনে রাখা চাই, ‘সাবধানের মার নাই।’

দুই.
নিউ নরমাল ও হার্ড রিয়ালিটির বাস্তব নমুনা দেখা গেল এবারে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে। সরকার এবার প্রথম অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থা করেছিল। তবে এখানেও মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্যে বেচারা বিক্রেতা তথা খামারি ও চাষিরা ছিলেন বিপন্ন। এ দিকে বেশির ভাগ বিক্রেতা বলেছেন, অনলাইনে আমরা প্রচুর সাড়া পেয়েছি গরু ছাগল ক্রেতাদের। তবে যে দাম তারা দিতে চেয়েছেন, তা শুনে হতাশ হতে হয়। অতএব, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাটে পশু নিয়ে আসতে হলো। সুদূর ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম থেকে তারা ঢাকায় এসেছিলেন গরু নিয়ে। তবে অনেকেই বিক্রি করতে পারেননি। সত্যিই, নরমাল যতই নতুন হোক্, বাস্তবতা বড়ই কঠিন।

 


আরো সংবাদ



premium cement