২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আলজেরিয়ায় ‘বালতাগুইয়া’ ও রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি

আলজেরিয়ায় ‘বালতাগুইয়া’ ও রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি - ছবি : সংগৃহীত

আলজেরিয়ার ব্যাপারে এখন অনেক দেশ উৎসাহী, বিশেষ করে রাশিয়া। ১৯৬০ সাল থেকে রাশিয়ার আলজেরিয়ায় বিভিন্ন বিষয়ে অংশীদারিত্ব রয়েছে। রাশিয়ার কৌশলগত ও সামরিক বন্ধন রয়েছে শাসক শ্রেণীর সাথে। আলজেরিয়া স্বাধীন হওয়ার পর রাশিয়া আলজেরিয়ার সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। সে কারণে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা মজবুতকরণে এবং একনায়ক শাসন কায়েমে রাশিয়া উদ্যোগী ছিল। ১৯৬২ থেকে ১৯৮৯ সময়ে রাশিয়া ১১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম আলজেরিয়ার সেনাবাহিনীকে দিয়েছে।

জনগণের বিক্ষোভ কখনো রাাশিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল না। রাশিয়ার পররাষ্ট্র দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ‘এটা তাদের ঘরোয়া ব্যাপার’। কিন্তু জনগণ যখন মাসের পর মাস বিক্ষোভ করে নানা ইস্যু তৈরি করছিল তখন বালতাগুইয়ারা কাজে নেমে পড়ে। আমরা জানি আলজেরিয়ার সেনাবাহিনী ও ইসলামপন্থীদের মধ্যে বিরোধে দুই লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল, তখন ন্যাটোতে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও ক্রেমলিন ও আলজিয়ার্সের মধ্যে রাজনৈতিক টেনশন শুরু হয়। বুতাফ্লেকা ১৯৯৯ সালে এবং পুতিন ২০০০ সালে ক্ষমতায় গেলে সম্পর্ক উন্নত ও মজবুত হয়।

রয়টার পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, আলজেরিয়ানরা পুতিনের ওপর বিরক্ত। তাদের ভাষ্য, পুতিন ক্রীড়ার জন্য মহিলা ও শিশুদের হত্যা করে রাশিয়াকে মিকি মাউস জাতিতে পরিণত করেছে এখন তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই ল্যাভরভকে আলজেরিয়ায় পাঠিয়েছিলেন এই বলে যে, বুতাফ্লিকাই একমাত্র সমাধান। এতে জনগণ রাশিয়ার ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়। সূত্র আরো জানায়, বুতাফ্লিকা দেশের বিত্ত-সম্পদ বাইরে পাঠিয়েছেন। অনেক রাশিয়ানের এক প্যাকেট দুধ জোগাড় করতে কষ্ট হয় অথচ পুতিন অনেক সম্পদ মোনাকো, লন্ডন ও সুইজারল্যান্ডে পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ। পুতিনের সমালোচনা করলে তার শাস্তির বিধান রেখে সম্প্রতি আইন তৈরি করা হয়েছে। বুতাফ্লিকাও তাই করেছিলেন। আলজেরিয়ায় প্রচুর তেল সম্পদ। দেশের ব্যবসায়ী ও ক্ষমতায় যারা আছেন তারা বিত্তবান কিন্তু দেশের মানুষ হতদরিদ্র। এ জন্য দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বিক্ষোভ আর বিক্ষোভ সব শেষে নির্বাচন। তথাপি বালতাগুইয়ারা থেমে নেই।

‘বালতাগুইয়া’ শব্দটি মিসরেও ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। মোবারক শাসনামলে শব্দটি বেশ জনপ্রিয় ছিল। যেসব দুর্বৃত্ত অর্থের বিনিময়ে বিক্ষোভ-মিছিলে অংশ নিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব ও ধ্বংস সাধন করত তাদের এই নামে ডাকা হতো। এসব দুর্বৃত্ত সাধারণত যুবক শ্রেণীর, প্রচুর অর্থ, বিত্ত ও ড্রাগসের বিনিময়ে তাদের কাজে লাগানো হয়। এসব প্ররোচনাকারীরা দলবদ্ধ হয়ে কোনো কাজ সাধন করে যাতে কোনো একজনের ওপর সব দোষ আপতিত না হয়। প্রায় সময় এরা কোনো ঘটনা করে এলাকা ছেড়ে উধাও হয়ে যায়। গোয়েন্দারা বালতাগুইয়াদের কোনো জনরোষ বা বিপ্লব ঠেকাতে ব্যবহার করেন ও কিছু কৌশল অবলম্বন করেন। রাশিয়ার পুতিনের সংবিধানবহির্ভূত ফোর্স হিসেবে বালতাগুইয়া ও কোসাকরা ব্যবহৃত হয়। এই দলে ছদ্মবেশে যুবক, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও কাজ করে। কোসাকরা ১৫ শতকে স্বাধীনতার আন্দোলন করে, তারা শুধু রাশিয়ান জারের বশ্যতা স্বীকার করেছিল। এরা গোঁয়াড় ও দুর্দান্ত যোদ্ধা সম্প্রদায় হিসেবেও পরিচিত।

এক হিসাবে মিসরে পাঁচ লাখ বালতাগুইয়া আছে। আলজেরিয়ার এই সংখ্যা কম হলেও ভীতি ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। এরা নীরবে আলজেরিয়ায় কাজ করে যাচ্ছে। কোনো নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করা হলে ৫০০ পাউন্ড থেকে ৮০০ পাউন্ড সমপরিমাণ পুরস্কার পেয়ে থাকে এবং ‘সোসিয়াল হাউজিং’-এ বাড়ি পাওয়ার জন্য প্রাধান্য পায়। গত বছর ৫ এপ্রিলে শুক্রবারের বিক্ষোভে বালতাগুইয়ারা পরিকল্পিতভাবে মহিলাদের ওপর চড়াও হয় এবং আক্রমণ করে, হইচই শুরু হলে সাধারণ বিক্ষোভকারীদের ডাণ্ডা পেটার কাজ শুরু হয়। কয়েকজন যুবতীকে যখন বালতাগুইয়ারা তাড়া করেছিল তখন পুলিশরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিল। এটি একটি উদাহরণ মাত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এদের ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হয়ে পড়ে। জানা যায়, এরা বুতাফ্লিকা রিজিমের অতি কাছের প্রোডাক্ট। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের সময় এ রকম খণ্ড খণ্ড অনেক উদাহরণ রয়েছে, যা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

আলজেরিয়ার রিজিম এদের কাজে লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজারো ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করে, পেজ ও গ্রুপ তৈরি করে শত শত ভুয়া ও অসঙ্গত মেটেরিয়াল প্রকাশ করে। এসবের মাধ্যমে বিশেষ ব্যক্তি, গোষ্ঠীকে অপমান করা হয়। কখনো ব্যবহার হয় ‘ইহুদিদের পক্ষে’। কখনো ‘আলকায়দার অনুসারী’ বা ‘আইএসকে নিয়মিত অর্থদান করে’ নতুবা ‘নাস্তিক ও পরকাল বিশ্বাস করে না।’ বা ‘মদ ও নারী নিয়ে সময় কাটে’।
আরো একটি উদাহরণ দেয়া যাক, সালাহ দাবুজ, একজন মানবাধিকার কর্মী তাকে লাঞ্চের সময় তুলে ৫০০ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহ্নী অভিযোগ দিয়ে মামলা করা হয়। এসব বালতাগুইয়াদের রুটিন কাজ। গোয়েন্দা বইতে এ রকম প্রচুর কৌশল রয়েছে। এখানে দু-একটি মাত্র ধারণার জন্য বলা হলো। বিভিন্ন দেশে শাসকরা সুবিধানুযায়ী বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে থাকে। বিভিন্ন দেশে বালতাগুইয়া না থাকলেও শাসকদের ছত্রছায়ায় অনেক অঘোষিত বাহিনী গড়ে ওঠে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য অনেক সময় বালতাগুইয়া ছাড়াও সরাসরি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকেও নিয়োগ করা হয়।

রাশিয়া নতুন আন্দোলনের পক্ষে নয়, পুরাতন ‘রিজিম’কে তাদের পছন্দ। রাশিয়ার পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মিসেস মারিয়া জাখারভ তার প্রতিধ্বনি করেছেন। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য, আলজেরিয়া রাশিয়ার অস্ত্র-গোলাবারুদের ওপর নির্ভরশীল। রাশিয়াও তাই চায়। ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত আলজেরিয়ার ৬৬ শতাংশ অস্ত্রের জোগান দিয়েছে মস্কো, আলজেরিয়া আফ্রিকায় রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রেতা। এ রকম একটি ক্লায়েন্ট রাশিয়া হাতছাড়া করতে চায় না। তা ছাড়া আফ্রিকায়, লিবিয়ায় ও সাহেল অঞ্চলে রাশিয়ার আরো কৌশল কাজ করছে। রাশিয়ার জায়ান্ট কোম্পানি Gazprom ও Transneft আলজেরিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হাইড্রোকার্বন Sonatrach কোম্পানির সাথে কাজ করে। তা ছাড়া রাশিয়ার লাডা অটোমোবাইলসও আলজেরিয়ায় অংশীদারভিত্তিক কাজ করছে। কে আলজেরিয়া শাসন করছে সেটা বড় কিছু নয়।

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ গণরোষ ফুঁসে ওঠে যখন বুতাফ্লিকা পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। রাশিয়ার সমালোচকরা তখন বলেছিল, এটা আরব বসন্তের অনুরূপ কোনো বিক্ষোভ হচ্ছে না। রাশিয়া মনে করে আন্দোলন সফল হলে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে, আলজেরিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নত হবে। তবে বিক্ষোভের এই চাপাচাপিতে ইসলামী দল মঞ্চের অনেক সম্মুখভাগে এসে গেছে। ইসলামপন্থীরা বিজয়ী হলে সেটি রাশিয়ার জন্য মোটেই অনুকূল হবে না। সেজন্য বালতাগুইয়ারা নির্বাচনের পরও তৎপর রয়েছে।

আমরা জানি যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল মজিদ তেবউন জয়ী হয়েছেন। বুতাফ্লিকার অধীনে আবাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তেবউন।
সমস্যা হলো আবদুল আজিজ বুতাফ্লিকার ঘনিষ্ঠ উত্তরসূরিদের কাছে ক্ষমতা থাকা পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না বলে অঙ্গীকার করেছে বিক্ষোভকারীরা। অর্ধেকেরও বেশি ভোট পাওয়ায়

দ্বিতীয় দফায় আর ভোটের প্রয়োজন হয়নি। ইসলামপন্থী প্রার্থী আবদুল কাদের বেংগ্রিনা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। নির্বাচনের পরও বিক্ষোভকারীরা নতুন প্রজন্মের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি করেছেন। কয়েক স্থানে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের এবং বালতাগুইয়ার সাথে সাধারণ বিক্ষোভকারীদের ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে দাঙ্গা হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা বলছে, দেশে পরিবর্তনের জন্য তারাই যথেষ্ট। এই বিষয়টিকে অনেকে ষড়যন্ত্র হিসেবে নেতিবাচক আবার অনেকে ইতিবাচক দেখছেন। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, আমরা রাজপথ ছাড়ব না। জন অসন্তোষের জন্য আলজেরিয়ার দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক মন্দা দায়ী। এত সম্পদ সত্ত্বেও আলজেরিয়া দরিদ্র। এ জন্য জনগণ প্রশাসন বা নেতাদের ওপর বিরক্ত। প্রশাসন উন্নয়নের চাকায় আলজেরিয়াকে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে। দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও ক্ষমতালোভী এর মূল কারণ।

লিবিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আলজেরিয়ায় প্রভাব ফেলবে এটা আলজেরিয়ার নেতাকর্মীরা বিশ্বাস করেন। ব্রাদারহুডসহ ইসলামপন্থী নেতাকর্মীরা মিসর ও সিনাই থেকে লিবিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে, যোদ্ধারা লিবিয়া সরকারের সাথে কাজ করেছে হাফতার ত্রিপলির কাছাকাছি এলে এরা আলজেরিয়ায় ঢুকে পড়ে। লিবিয়া সঙ্কট আলজেরিয়াতে রাজনৈতিক বিবর্তনে ইন্ধন বা শক্তি জোগাবে সন্দেহ নেই, এমনকি অনেকের বাড়িঘরও লিবিয়ায়। অনেক লম্বা সীমান্ত রয়েছে উভয় দেশের সাথে। ২০১১ লিবিয়া সঙ্কটের পর আলজেরিয়া বেশি প্রভাবিত হয়। তখন মালি, নাইজার, তিউনিসিয়া এমনকি মৌরিতানিয়ায়ও রাজনৈতিক ও সামরিক সঙ্কট মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আলজেরিয়ার সেনাবাহিনী নতুনভাবে ক্ষমতার জন্য প্রলুব্ধ হয়ে ওঠে। রাশিয়া সামরিক অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ও সামরিক উপদেষ্টা সহায়তা বাড়িয়ে দেয়। ফ্রান্স লিবিয়া ও আলজেরিয়া থেকে তেল নিচ্ছিল, রাশিয়া সেগুলো দখল করার কাজ শুরু করে এবং সফলতা লাভ করে।

ফলে একই রাজনৈতিক লক্ষ্য থাকা সত্ত্বেও ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে তেল-বিরোধ সৃষ্টি হয়। আলজেরিয়ার সেনাবাহিনী ১৯৬৭ ও ১৯৭৩ যুদ্ধে ইসরাইলের বিপক্ষে আরব বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছে। মালিতে শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবেও কাজ করেছে এই সেনাবাহিনী। অ্যাঙ্গোলা থেকে কিউবান সেনা প্রত্যাহার তদারক করেছে। সীমান্তে কোনো সমস্যা হলে আলজেরিয়ার সেনাবাহিনী চুপ বসে থাকবে না সে বার্তাও নতুন প্রেসিডেন্ট দিয়েছেন, বিশেষ করে লিবিয়া ও মালির বিষয়ে। তাবেউন পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হওয়া রিজিমের রাজনৈতিক আবর্তের একটি স্তর, সেনারা আসলে এখনো আলজেরিয়ায় ডিপ স্টেটের ভূমিকা পালন করছে। জনগণের কাছে এসব কোনো নতুন বিষয় নয়। নতুন সংবিধান রচনা বড় এক পদক্ষেপ, মনে করা হচ্ছে জনগণের মৌলিক বিষয়গুলো প্রতিপালনের চেষ্টা করা হবে, ন্যূনপক্ষে এসব বিষয় জনগণের দাবি হিসেবে সংবিধানে থাকবে। আলজেরিয়ায় সেমি-প্রেসিডেন্সিয়াল রিপাবলিক সিস্টেম চালু রয়েছে। রাষ্ট্রের প্রধান প্রেসিডেন্ট অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান। সরকার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ-পরিচালনা করে। জনগণ আশা করে একটি তৃতীয় ধারার রিপাবলিক হিসেবে আলজেরিয়া পরিচিত হয়ে উঠবে।
বিরাট ভূখণ্ডের আলজেরিয়ার আরেকটি সমস্যা হলো, অধিকাংশ জায়গা সাহারা মরুভূমি। তবে মাটির নিচে রয়েছে তেল ও গ্যাস। কিন্তু ওদিকে কোনো লোকালয় নেই, সবাই থাকে উত্তর দিকে। ১৯৫০ সালে তেলসম্পদ আবিষ্কার হয়। ফ্রান্সের কোম্পানি এসব উত্তোলন ও ভোগদখল করে। ফ্রান্সের উন্নত সেনারা সাহারা মরুভূমি চষে বেড়ায়। এখন রাশিয়া ওই সম্পদ আহরণে ঢুকে পড়েছে।

শাসকরা অনেক চেষ্টা করার পরও জনরোষ ও বিক্ষোভ বন্ধ করতে পারেনি। করোনা মহামারীর দোহাই দিয়ে বিভিন্ন স্থানে লকডাউন করা হয়েছে এবং বালতাগুইয়াদের সহায়তায় বিক্ষোভকারী নেতাদের ধড়পাকড় করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিক্ষোভের আগুন আবার ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় প্রেসিডেন্ট তেবউন অভিযুক্ত বিক্ষোভকারী, যারা হীরক বিক্ষোভকারী হিসেবেও পরিচিত তাদের ও নেতাদের সাথে কথা বলে সব নেতাকর্মীকে জুন মাসের শুরুর দিকে ছেড়ে দিয়েছেন, তা না হলে জনগণের সাথে সেনাবাহিনীর বড় সঙ্ঘাত শুরু হতো। সংসদ সদস্যদের অনেক ক্ষমতা দেয়া, স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতাশালী করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করা এসব বিষয় নিয়ে পরিবর্তিত সংবিধান জনগণের মতামতের জন্য চলতি বছরের শেষের দিকে গণভোটের জন্য ছেড়ে দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট তেবউন ধারালো তলোয়ারের ওপর দিয়ে হাঁটছেন। সংবিধানে জনগণের আশা ও প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে আলজেরিয়ার বিক্ষোভ গৃহযুদ্ধে রূপ নিতে পারে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার

 


আরো সংবাদ



premium cement