২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মূর্তি ও ভাবমূর্তি

মূর্তি ও ভাবমূর্তি - ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বিগত ২৫ মে কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হত্যার জেরে সে দেশে এবং বাইরে চলছে স্বতঃস্ফূর্ত ও অভূতপূর্ব আন্দোলন। কালো-ধলো-মিশ্র বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষের এই নজিরবিহীন প্রতিবাদ বিক্ষোভের উপলক্ষ মার্কিন পুলিশের বর্বরতা : লক্ষ্য বর্ণবাদের অবশেষ উচ্ছেদের মাধ্যমে সামাজিক শোষণ-বৈষম্যের সার্বিক অবসান এবং সব নাগরিকের সমান অধিকার। আন্দোলনটির নাম ইষধপশ খরাবং গধঃঃবৎ. আর আন্দোলনকারীদের স্লোগানে-প্লাকার্ডে লেখা ও পধহ'ঃ নৎবধঃযব. এটা পুলিশের হাতে মিনিয়াপোলিসে নিহত জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকালীন অসহায় আকুতি। একজন পুলিশ তাকে আটক করতে গিয়ে প্রকাশ্যে দীর্ঘ ৮ মিনিট রাজপথে গলা চেপে ধরে তার নিঃশ্বাস আটকে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। অপর দিকে, এখন বিশ্বে প্রধানত শ্বাসকষ্টজনিত কোভিড-১৯ মহামারীতে সর্বাধিক সংক্রমণ আর মৃত্যু ঘটছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই। মৃতের সংখ্যা লাখের কোটা ছাড়িয়েছে বহু আগেই। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এর বেশ কয়েক গুণ মানুষ। তাদের সবার প্রধানত যে কষ্ট, তার তাৎপর্য 'ও পধহ'ঃ নৎবধঃযব.' এই অসহায় বনি আদমদের কেউ ভাগ্যজোরে বেঁচে উঠছেন; কেউ বা ভেন্টিলেটর থাকার পরও প্রাণ হারাচ্ছেন।

এদিকে, বর্ণবিদ্বেষের অবসানের দাবিতে এবং সব বর্ণের মানুষের সমানাধিকার কায়েমের লক্ষ্যে প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে অনেক ইতিহাস খ্যাত ব্যক্তির মূর্তি বা ভাস্কর্য ধ্বংসের নতুন ইতিহাস রচিত হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সমতাবলম্বীদের বক্তব্য, এভাবে নায়ক-মহানায়কদের মূর্তি ভেঙে কিংবা অপসারণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নস্যাৎ করা হচ্ছে। এর বিপরীতে, এসব মূর্তির সংহারকদের কথা হলো- এ লোকগুলো আসলে খলনায়ক ও দুর্বৃত্ত। এই বর্ণবিদ্বেষী, উপনিবেশবাদী, লুটেরা ও দাসপ্রথার প্রতিভূদের কোনো চিহ্নই আর না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি হবে উজ্জ্বল। কারণ এরা মানবজাতির জন্য গৌরব নয়, কলঙ্ক।’ ইতোমধ্যেই, ইতিহাসের অনেক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব এবং খ্যাতনামা যোদ্ধা, রাষ্ট্রনায়ক ও আবিষ্কারক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তির স্মারকচিহ্ন উৎপাটন করেছে কিংবা এর চেষ্টা করেছে বর্ণবাদবিরোধী উত্তেজিত জনতা। যুক্তরাষ্ট্রে তো বটেই, আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে তার প্রচণ্ড ধাক্কা এসে লেগেছে ইউরোপেও। আমেরিকার জেগে ওঠা মানুষদের কথা হলো, ‘কালো আর ধলো-বাহিরে সে কেবল, ভেতরে সবারই সমান রাঙ্গা।’ অতীতের কৃষ্ণাঙ্গ বিদ্বেষসহ বর্ণবাদের পুনরুত্থান মার্কিন মুলুুককে এক প্রকার ‘মগের মুল্লুক’ বানিয়ে ছাড়বে বলে তাদের শঙ্কা। অন্য দিকে, শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদের কাঁধে চেপে ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট ট্রা¤েপর প্রশাসন অভিযোগ করছে, প্রধানত উগ্র বামপন্থীরা কিছু ব্যক্তিত্বের মূর্তিকে টার্গেট করে ইতিহাসের জোরপূর্বক পরিবর্তনে সচেষ্ট। আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওদের সমুচিত জবাব দেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়েছে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের ‘নিউকন’ বা নব্য রক্ষণশীলদের তরফ থেকে।

কলম্বাস ও ভাস্কো দা গামা ছাড়াও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। শুধু তাদের ভাস্কর্য নয়, বাংলার ইতিহাসের অন্যতম প্রধান খলচরিত্র এবং পলাশীর প্রান্তরে ষড়যন্ত্রের জন্য কুখ্যাত রবার্ট ক্লাইভ এবং সেই সাথে জেফারসন ও বোল্টনসহ উপনিবেশবাদী ও দাস ব্যবসায়ী কয়েকজনের মূর্তি বা ভাস্কর্যও মানুষের ঘৃণা ও ক্রোধের আগুন থেকে নিস্তার পায়নি। এমনকি মার্কিন ‘জাতির পিতা’ জর্জ ওয়াশিংটন আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম দিকের একজন রাষ্ট্রপতি অ্যানড্রু জ্যাকসনেরও রেহাই মিলেনি প্রতিবাদী জনতার সমালোচনা থেকে। এর বিপরীতে অভিযোগ উঠেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কোনো কোনো দেশে শ্বেতাঙ্গবিদ্বেষী মনোভাব উসকে দিয়ে অন্যরকম বর্ণবাদের জন্ম দেয়া হচ্ছে। বিশেষত গান্ধীজির বিরুদ্ধে বর্ণবাদের বিস্ময়কর অভিযোগ আমাদের উপমহাদেশবাসীকে বিস্মিত করছে। প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রে যে আজো অনেক শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী মানসিকতা লালন করছেন, তা অনস্বীকার্য। একই সাথে ইতিহাসের পুনর্লিখন করে বর্ণবিদ্বেষের বিশদ বিবরণ দেয়া এবং মার্কিনসহ পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের বৈষম্যপন্থী ও দাস প্রথার অনুকূল স্বরূপ উদঘাটনের গণদাবি দিন দিন হচ্ছে জোরালো। এ কারণে ইষধপশ খরাবং গধঃঃবৎ আন্দোলন ক্রমশ প্রবল হয়ে উঠছে এবং এতবড় আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে খুব কমই। সবচেয়ে বড় কথা, এর মধ্য দিয়ে মূলত উবসড়পৎধপু ধহফ ঐঁসধহ উরমহরঃু গধঃঃবৎ (গণতন্ত্র ও মানবিক মর্যাদা গুরুত্বপূর্ণ) ধ্বনিই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

আমেরিকায় যা ঘটেছে তা চরম বর্ণবাদী আচরণ নিঃসন্দেহে। আর বর্ণবাদের মূল বিষয় হলোÑ মার্কিন সমাজ ও সরকারে সংখ্যাগরিষ্ঠ ও নিয়ন্ত্রক শক্তি যে শ্বেতাঙ্গরা, তাদের বর্ণবিদ্বেষ আজো অব্যাহত কৃষ্ণাঙ্গ এবং সেই সাথে মিশ্রবর্ণ, পীতবর্ণ ও হিস্পানিকসহ সব অশ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর প্রতি। অতীতে কৃষ্ণাঙ্গ (তখন হেয় করে বলা হতো ‘নিগ্রো’) বিরোধী এবং চরম বা উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী ঘৃণাবিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য বিশ্বে পরিচিত ও সমালোচিত ছিল যে সংগঠন, তার নাম কু ক্লাক্স ক্লান (কঁ কষধী কষধহ), অদৃষ্টের পরিহাস হলো, এরা প্রথমে ছিল রিপাবলিকানদের চরম বিরোধী। আর এখন তারা সে দলের চরম জাতীয়তাবাদী এবং কৃষ্ণাঙ্গবিদ্বেষী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আবার নিজেদের ফ্যাসিবাদী অপকর্ম সংক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। করোনা অণুজীব সংক্রমণের চেয়ে এটি কম মারাত্মক ও ভয়াবহ ব্যাপার নয়।

কু ক্লাক্স ক্লান আজকের নবীন প্রজন্মের কাছে অপরিচিত/কম পরিচিত হতে পারে। কিন্তু বিগত শতকের ষাটের দশকেও যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদী কর্মকাণ্ডের কারণে, এরা মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের দেশেও ছিল একটি পরিচিত নাম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ঐতিহাসিক গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমেরিকার ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কুখ্যাত দাসপ্রথার (দাসদের সবাই কৃষ্ণাঙ্গ) আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটে। আর সে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান নেতা, বিখ্যাত প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন। এ কারণে কু ক্লাক্স ক্লান’র জন্ম হয়েছিল রিপাবলিকান দলের ক্ষতিসাধনের ব্রত নিয়ে। অথচ আজ এ দলটিই চরম বর্ণবিদ্বেষী কার্যকলাপে লিপ্ত ক্ষমতাসীন হিসেবে এবং খোদ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে তা করা হচ্ছে।
১৮৬০ সাল থেকে ’৬৪ সাল পর্যন্ত মার্কিন গৃহযুদ্ধ অব্যাহত ছিল। আব্রাহাম লিঙ্কন এতে বিজয়ী হন এবং রাষ্ট্রীয় সংহতি ও দাসপ্রথার অবসান নিশ্চিত করেন। কিন্তু ১৮৬৫ সালেই ঘাতকের হাতে তার মৃত্যু ঘটে। এতে উল্লসিত হয়ে ওঠে উগ্র শ্বেতাঙ্গ গোষ্ঠী। কিছু দিনের মধ্যেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলে একটি গুপ্ত সশস্ত্র সংগঠন জন্ম নেয়। এরই নাম ‘কু ক্লাক্স ক্লান’।

বাহ্যিকভাবে এরা ‘সাবেক কনফেডারেট সেনাদের সামাজিক ক্লাব’ হিসেবে পরিচিত ছিল। তারা গৃহযুদ্ধে ছিল লিঙ্কনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যপন্থী বা ইউনিয়নিস্ট শক্তির প্রতিপক্ষ। দেশের দক্ষিণাংশের কিছু রাজ্যে এরা ছিল অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং তাদের জোর সমর্থন ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের দাস করে রাখার পক্ষে। কু ক্লাক্স ক্লান ডযরঃব ঝঁঢ়ৎবসবপরংঃ ঐধঃব এৎড়ঁঢ় হিসেবে ছিল কুখ্যাত। তাদের প্রাথমিক টার্গেট হতো আফ্রো-আমেরিকান বা কালো মানুষেরা। সংগঠনটির মধ্যে গ্রুপ ছিল দু’টি। তার একটির জন্ম ১৮৬৫ সালে টেনেসি রাজ্যের পুলাস্কিতে। রাজনৈতিক চিন্তাচেতনায় উগ্র দক্ষিণপন্থী এবং ধর্মীয়ভাবে কথিত ‘প্রোটেস্টান্ট’ ছিল কু ক্লাক্স ক্লান। তারা আমেরিকার কেন্দ্রীয় সরকারের উদার ‘পুনর্গঠন’ কর্মসূচির বিরুদ্ধে ছিল গৃহযুদ্ধ শেষে। তারা ১৮৭০ সালের মধ্যে দেশের দক্ষিণের প্রায় সব রাজ্যে শাখা খুলেছিল। মুক্ত হওয়া দাসদের নির্যাতন ও নিপীড়ন করার লক্ষ্যে কু ক্লাক্স ক্লান তার তৎপরতা চালিয়ে যায় দীর্ঘ দিন। 
এবার বর্ণবাদবিরোধী অভাবনীয় গণ-আন্দোলনের তোড়ে মার্কিন ‘জাতির পিতা’ জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-৯৯) এবং দেশের সপ্তম প্রেসিডেন্ট এন্ড্রু জ্যাকসনকেও (১৭৬৭-১৮৪৫) বর্ণবাদী হিসেবে তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে। ফলে বিপন্ন হলো তাদের মূর্তিও। 

গণতন্ত্রমনা ও মানবতাবাদী অসংখ্য মানুষের দৃঢ়বিশ্বাস, ‘জাতির পিতা’র অন্যায়-অসঙ্গত আচরণের বিরোধিতা করা উচিত জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই। ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সঙ্ঘটিত, আমেরিকার গৃহযুদ্ধের আগে দাসপ্রথা ছিল সভ্যতাদর্পী ও শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত মার্কিন সমাজের অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য। সে প্রেক্ষাপটে, ওয়াশিংটন ও জ্যাকসনসমেত অনেক বিশিষ্টজনই কৃষ্ণাঙ্গবিদ্বেষী বর্ণবাদী ছিলেন। তাদের অনেকে দাস প্রথার মতো জঘন্য রীতির পক্ষে ছিলেন সরব। জর্জ ওয়াশিংটন আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে মহাদেশীয় সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন ১৭৭৫ থেকে আট বছর। তিনি রাজনীতিতে ছিলেন ‘দলনিরপেক্ষ’। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন ১৭৮৯ থেকে ৯৭ পর্যন্ত। ‘জাতির পিতা’ হয়েও তিনি আমৃত্যু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আঁকড়ে রাখেননি। এটা গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ বটে।

এন্ড্রু জ্যাকসনও ছিলেন প্রথমে সৈন্য; পরে রাজনীতিক। তিনিই আজকের ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। টমাস জেফারসন ও আব্রাহাম লিঙ্কন- এই দুই বিখ্যাত প্রেসিডেন্টের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি ছিলেন সে দেশে সর্বাধিক প্রভাববিস্তারকারী রাজনীতিবিদ। ‘সাধারণ মানুষের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধি’ হওয়ার স্বপ্নে তিনি দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের জন্য ভালোবাসা এবং ব্যক্তির অধিকারের প্রতি জোরদার সমর্থনের প্রমাণ রেখেছিলেন। সামান্য একজন এতিম বালক থেকে জ্যাকসন হয়ে ওঠেন অসামান্য কিংবদন্তি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ঐক্যের পক্ষে সাহসী ভূমিকার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন অনেক ক্ষেত্রে। পাদটীকা : বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার উগ্র জাতীয়তাবাদী ধ্বনি হিসেবে প্রায়ই বলে থাকেন অসবৎরপধ ঋরৎংঃ (আমেরিকাই সর্বপ্রথম)। ইতোমধ্যে, করোনা মহামারীতে সর্বাধিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনাস্থল হয়ে উঠেছে আমেরিকা। অনেকে তাই ব্যঙ্গ করে বলছেন, ‘ট্রাম্পের উক্তিটি অন্যভাবে হলেও সত্য হয়েছে।’ 


আরো সংবাদ



premium cement