২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাজেট : রাজনীতির অর্থনীতি

বাজেট : রাজনীতির অর্থনীতি - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাজেটটা আসলেই খটকা। আবার বুঝলে সোজা। না বুঝলে বোঝা। ঠিক অঙ্কের মতো। স্কুলে দোতালা, তিনতালা সরল অঙ্ক দেখে গরলে ভুগতাম। আমার মতো যারা অঙ্কভীতিতে ভোগে, তাদের জন্য বাজেট কঠিন। যারা অঙ্কের জাহাজ, তারা মুখে মুখে অঙ্ক করে। তাদের জন্য বাজেট সহজ। পড়ালেখা না পারলে বলতাম, ‘কে জিনিস আবিষ্কার করল’! এখন বাজেট সম্পর্কে প্রশ্ন- কারা এটা শুরু করল, কেনইবা শুরু করল? বই-খাতা ঘেঁটে এর সূচনাপর্ব জানতে পারলাম। অনেক বিদ্যা-বুদ্ধির মতো এরও উৎস ইউরোপে। না, গ্রিসে নয়, ফ্রান্সে।

১৮১৫ সালের দিকের ঘটনা। ১৭৮৯ সালের ফরাসি বিপ্লবের অনেক সুফল-কুফলের পর এ সময়ে ফরাসিরা নতুন করে রাজতন্ত্র গ্রহণ করে। অস্থিরচিত্ত বলে ফরাসিদের সুনাম! আছে। এখনো তাই। সে আরেক গল্প। ওই সময়ে, অসময়ে আরোপিত অথবা আকস্মিকভাবে ধার্যকৃত করব্যবস্থাকে সুবিন্যস্ত ও সুপরিকল্পিত করার স্বার্থে বাজেট ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ১৮৫০ সালের দিকে গ্লাডস্টোন ইংল্যান্ডে বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিকতা দেন। এখন যেমন বাজেট মানেই রাজনীতি, তখন তেমন ছিল না। রাষ্ট্রের প্রয়োজন এবং জনগণের আয়োজন দেখেই প্রণীত হতো বাজেট। দলাদলি-ঝগড়াঝাঁটি হতো না। সময়ের আবর্তনে বাজেট ব্যবস্থা গ্রহীত হয়েছে দেশে দেশে। রাজনৈতিক সরকার এসেছে রাজনৈতিক দলের লেবাসে। পরিবর্তিত হয়েছে এর চেহারা সুরত। আমাদের এ সব দেশেও বাজেট এর সূচনা ব্রিটিশ প্রভুর হুকুমে। এখন বাজেট পেশ করা হয়। তখন বাজেট ঘোষণা করা হতো। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর উপমহাদেশে পার্লামেন্টে বা জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ হয়ে আসছে। পাল্টে গেছে এর ধরন ধারণ। অর্থমন্ত্রী ব্রিফকেসে ধারণ করেন বাজেট। প্রধানমন্ত্রীও প্রবেশ করেন একসাথে। বাজেট ব্রিফকেসে থাকে, পেশ করার আগে তেমন জানে না কেউই। এ যেন ওপর থেকে আরোপ করার বিষয়। বিষয়টি বিতর্কের- নিচ থেকে ওপরে যাবে নাকি ওপর থেকে নিচে? উন্নত দেশগুলোতে বাজেট আসে অবরোহ পদ্ধতিতে। তৃণমূল থেকে হিসাব-নিকাশ করে বাজেট ক্রমেই উপরি কাঠামোর দিকে ধায়। ধরুন ইউনিয়ন কাউন্সিল তার রাস্তাঘাট, সমাজ কল্যাণের কাজ এবং অন্যান্য পরিকল্পনা পেশ করবে উপজেলায়। উপজেলা একইভাবে তাদের ভবিষ্যৎ ব্যয় বরাদ্দ চাইবে জেলার কাছে। সব জেলা পরিষদ রাজধানীতে তাদের বাজেট পাঠাবে। কেন্দ্র বা মন্ত্রণালয় সব জেলার বাজেট একত্র করে সমন্বয় করবে। অপর দিকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পরিপূরক বাজেট তৈরি করবে। সব মিলে হবে রাষ্ট্রীয় বাজেট। আমাদের দেশে কিছুকাল আগে থেকে জেলাভিত্তিক বাজেটের কথা শোনা গেছে। কিন্তু এখন আর সাড়াশব্দ নেই। অবশ্য এ বছরের কথা ভিন্ন। সবাই দুর্যোগের মধ্যে আছে।

বাজেট হচ্ছে অর্থনীতির বিষয়। আর অর্থনীতি হচ্ছে রাজনীতির অধীন। সেই পুরনো কাল থেকে একটি বড় বিতর্কÑ রাজনীতি অর্থনীতির অধীন, নাকি অর্থনীতি রাজনীতির আজ্ঞাবহ।

বিতর্কটি ‘ডিম আগে না মুরগি আগে’-এ রকম। বড় বড় পণ্ডিত ব্যক্তিরা এ বিষয়ে অনেক অনেক কথা বলে গেছেন। অবশেষে একটি ‘টার্ম’ দিয়ে এর প্রকাশ ঘটে। আর তা হচ্ছে- ‘পলিটিক্যাল ইকোনমি’। বলা হয় অর্থনীতির যে অংশ রাজনীতিকদের হাতে তাই হচ্ছে রাজনীতির অর্থনীতি। অনেকে অবশ্য অর্থনীতির বিষয়বস্তুকে ভিন্ন করে দেখতে নারাজ। তারা বলেন, এটা হচ্ছে ‘হাউজ হোল্ড ম্যানেজমেন্ট’। আমাদের গৃহস্থালি বা ঘরসংসারের বিষয়াদি যেমন তেমনি রাষ্ট্রের যাবতীয় ব্যবস্থাপনা। সুতরাং এটিকে পৃথক করে দেখার অবকাশ কম।

অর্থনীতির আদি গুরু এডাম স্মিথ অবশ্য এটি সরকারের ধরন ধারণের ওপর নির্ভরশীল মনে করেন। তিনি বলেন, অর্থনীতি রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করবে, নাকি রাজনীতি অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করবে তা দুটো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। প্রথমত, ‘ব্রান্ড অব পলিটিক্স’ বা সরকারের আদর্শ-উদ্দেশ্য ও গতি-প্রকৃতির সাথে এটি সংশ্লিষ্ট। দ্বিতীয়ত, সরকার যে ‘লেজিসলেশন’ : আইন-কানুন বা ব্যবস্থাপনা নির্ধারণ করে, তাই বলে দেবে নিয়ন্ত্রণের সীমা-পরিসীমা। অপর দিকে সীমা-পরিসীমা মানেন না মার্কসবাদীরা। তারা অর্থনীতির আবর্তে ব্যাখা করেন রাষ্ট্রকে।

‘ইকোনমিক ডিটারমিনইজম’ বা অর্থনৈতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব দেন তারা। এ তত্ত্বে বলা হয়- একটি রাষ্ট্র বা সমাজের সবকিছু নিয়ন্তিত হয় অর্থনীতি দিয়ে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন বা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতিই ছিল রাজনীতি। সুতরাং জাতীয় বাজেটও ছিল তার প্রতিচ্ছবি। এখন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোতে অর্থনীতি প্রবল ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে রাষ্ট্রের মালিকানায় রয়েছে সমগ্র জাতীয় সম্পদ। উৎপাদন, বণ্টন ও বিনিময়ে রয়েছে দলীয় সরকারের সার্বিক কর্তৃত্ব। সরকারের ধরন-ধারণ যাই হোক না কেন, অর্থনৈতিক পরাক্রমের কাছে পরাজিত সবাই। সুতরাং বাজেট হচ্ছে রাজনৈতিক সরকারের মতলব হাসিলের বাহন। আর আজকাল রাজনীতির নতুন সংজ্ঞা শোনা যাচ্ছে : ‘সম্পদের কর্তৃত্বপূর্ণ বণ্টন’ এর নামই হচ্ছে রাজনীতি। শুধু দেশ নয়, বিশ^ায়নের ঠেলায় দেশজ বাজেটে শোনা যায় বিশ^পুঁজির প্রতিধ্বনি। আজকাল ‘ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্যাল ইকোনমি’ একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিত বিষয়। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো দেশ, সরকার, রাজা-রাজ্য-রাজধানী ওলটপালট করে দেয়। মধ্যে আমেরিকায় ‘বানানা স্টেট’ এর নমুনা আছে।

তবে রাজনীতির অর্থনৈতিক রূপান্তর নতুন নয়। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ‘কল্যাণরাষ্ট্রের’ আদলে এর প্রকাশ ঘটে। ১৯৪০-এর পর থেকে নয়া উদারতাবাদের নামে রাজনৈতিক দলগুলো বাজেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। যথার্থতার পরিবর্তে ‘নির্বাচন’ ও ‘জনতুষ্টি’ বাজেটের উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাত্ত্বিকরা মনে করেন, ১৯৬০ সালের পর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো বিষয়ে সমাজ অগ্রগতির অনিবার্যতায় বাজেটে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এরা আরো মনে করেন এই ব্যয়বৃদ্ধির সাথে সাথে বাজেটের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ‘বেপরোয়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়, বাণিজ্য ও ঠিকাদারিতে সরকারের কর্তৃত্ব দৃশ্যমান। আরো সুনির্দিষ্ট করে সরকারের বদলে ‘দল’ সবটি ব্যবহার করা যায়। কোনো কোনো অথনীতিবিদ এ ব্যবস্থাকে ‘কমান্ড ইকোনমিকস’ বা নির্দেশিত অর্থনীতি বলতে চান।

আমাদের দেশটিও পৃথিবীর বাইরের কোনো কিছু নয়। এই গ্রহেই আমাদের বসবাস। এ বিশ^ভুবনেই আমাদের বাঁচা-মরা। সুতরাং বাজেট বা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এই পৃথিবীর আলো বাতাসের সাথে সম্পর্কিত। বিগত ৫০ বছর ধরে গতানুগতিক ধারায় ‘নির্দেশিত অর্থনীতি’ চালু রয়েছে। অথচ এমটি হওয়ার কথা ছিল না। ‘বাংলাদেশ পাকিস্তানি শাসকদের বন্ধন ছিন্ন করেছে ঠিকই, কিন্তু পুঁজিবাদের শাসন ছিন্ন করতে পারেনি। ওই বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে।’ (সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী: ২০১৭ : ১৮) পাকিস্তানের শোষক ২২ পরিবারের পরিবর্তে এখানে সৃষ্টি হয়েছে ২২ শ’ পরিবার। একটি হিসাব মোতাবেক এ দেশে এখন কোটিপতির সংখ্যা এক লাখ ৭৬ হাজার ৭৫৬ (বাংলাদেশ ব্যাংক, জুন ২০১৯)। এরা পাকিস্তানিদের চেয়েও ভয়ঙ্কর। প্রত্যক্ষ শোষক ও নির্মম নিপীড়ক। এদের নির্দয় পুঁজির দাপটে গরিব আরো গরিব হচ্ছে। বড়লোক আরো বড়লোক হচ্ছে। শুধু রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন হয়নি, রাজনীতির বাণিজ্যিকরণও ঘটেছে। জাতীয় সংসদ অভিহিত হচ্ছে ‘কোটিপতিদের ক্লাব’ বলে। আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় খবর এসেছেÑ এ দেশ দ্রুততম সময়ে ধনী হওয়ার প্রথম দেশ।

এত কথা বলা এবারের বাজেট পর্যালোচনার প্রেক্ষাপটে। তত্ত্ব কথার জটিল-কুটিল বিষয় আমাদের লক্ষ্য নয়। অতটুকু আমাদের আলোচনার বিষয়- যতটুকু রাজনীতির। ২০২০-২১ সালের এই বাজেট অভিহিত হচ্ছে, ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে। এই কঠিন সময়ে ‘আশাবাদী’ বাজেট দেয়ার জন্য নন্দিত হতে পারেন অর্থমন্ত্রী। সম্পদের কঠিন সীমাবদ্ধতার মধ্যে দুর্যোগ মাথায় নিয়ে প্রণীত হয়েছে এ বাজেট। এ কথা সত্য। এরপরও ‘করোনা ক্ষান্ত করতে পারেনি অর্থমন্ত্রীর উচ্চাশা’। অপ্রিয় সত্য কথা হচ্ছে- ‘এটি রাজনীতির অর্থনৈতিক বাজেট’। জিডিপির কাক্সিক্ষত ৮.২ প্রবৃদ্ধি অবাস্তব। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা অমূলক। করোনা মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকা যথেষ্ট নয়। ৩০.৫ শতাংশ মোবাইল কর অন্যায়। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ একধরনের প্রতারণা। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিরাট ব্যবধান। এসব কথা বিজ্ঞজনরা বলেছেন। আমাদের কথা মূলত নীতিগত প্রশ্নে। আরো আছে কিছু প্রয়োগিক বিষয়।
সবাই বলছেন গতানুগতিক বাজেট। ‘পুঁজিবাদের জন্য, পুঁজিবাদের লক্ষ্যে এবং পুঁজিপতিদের দ্বারা’। এটি দুঃসময়ের বাজেট হলেও, দুঃখী মানুষের নয়। আমাদের কাছে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ তা হলো-

১. প্রথমত জীবন ও জীবিকা রক্ষার পদক্ষেপগুলো স্পষ্ট নয়। এর মধ্যে ভারসাম্য বিধানের কৌশল অব্যক্ত।
২. সঙ্কট মোকাবেলার জন্য জাতীয় সমন্বিত কৌশলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন জাতীয় নেতারা। বাজেটের বরাদ্দ ও কৌশলে এর কোনো প্রতিফলন নেই।
৩. ভর্তুকি ও প্রণোদনার প্রস্তাব যথার্থ। কিন্তু এর বরাদ্দ, বিতরণ, অপচয় ও দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান বাজেটে নেই। ইতোমধ্যে যেভাবে দুর্নীতির যে সয়লাব লক্ষ করা যাচ্ছেÑ প্রতিনিধি ও পার্টি পর্যায়ে তা ভয়াবহ। এই প্রবণতা রোধ করা না গেলে বাজেটের কোনো সুফলই সাধারণ মানুষের ঘরে পৌঁছবে না।
৪. প্রকৃতপক্ষে প্রতিনিধিত্বশীল ও বিশ^াসযোগ্য একটি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা দেশে কার্যকর নয়। বিকল্প প্রস্তাব হিসেবেÑ সিভিল সোসাইটি, নিরপেক্ষ লোকজন ও পেশাজীবীদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা বাস্তবসম্মত। এ ছাড়া এলাকার নিরপেক্ষ সৎ ও অভিজ্ঞ লোকদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
৫. অর্থবরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে ইতঃপূর্বে কখনো ব্যয় সঙ্কোচ, সংযম, মিতব্যয়িতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি। বর্তমান বাজেটেও এরকম কোনো প্রস্তাবনা নেই।
৬. অর্থপাচারের মতো অপরাধকে ৫০ শতাংশ করের মাধ্যমে বৈধতা দেয়ার প্রস্তাব সৎ মানুষের প্রতি চপেটাঘাত। এটি নৈতিকতা, আইনের শাসন ও আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী।
৭. অর্থমন্ত্রী বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘অস্বাভাবিক সময়ে ভিন্ন পথের অবস্থান থেকে এবার বাজেট করতে হয়েছে। টাকা কোথা থেকে আসবে সে টা পরে দেখা যাবে। আগে খরচ করতে চাই। পরে আয় করব। টাকা কোথা থেকে আসবে সে চিন্তা আমরা করিনি।’ অর্থমন্ত্রীর এ মন্তব্য বাস্তবসম্মত নয়। আয় বুঝে ব্যয় করার নীতি সারা পৃথিবীতে স্বীকৃত। এমনভাবে ‘ধার করে ঘি খাওয়া’ পরিণতি হতে পারে অভাবনীয়।

৮. প্রণোদনা প্যাকেজের পাশাপাশি ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৯ শত কোটি টাকার ঋণ নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো ফতুর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। এমনিতেই এখন ব্যাংকে তারল্যসঙ্কট রয়েছে। এর ফলে জনসাধারণের ঋণ গ্রহণ ও বিনিয়োগ ব্যাহত হবে।

পেশকৃত বাজেটকে ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’-সিপিডি, ‘নজিরবিহীন গতানুগতিক’ বলে অভিহিত করেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে বিনিয়োগ, রাজস্ব আদায় ও জিপিডির বিরাট লক্ষ্য আছে। কিন্তু এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ নেই। ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’- টিআইবি এই বাজেটকে ‘সুশাসন, দুর্নীতি প্রতিরোধ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিপরীতে সরাসরি দুর্নীতিসহায়ক ও হতাশাব্যঞ্জক’ বলে অভিহিত করেছে। সিপিডি এবং টিআইবির এই নিরপেক্ষ ও বাস্তবধর্মী সমীক্ষা এই নিবন্ধে উত্থাপিত প্রপঞ্চের সমার্থক। আমরা অনাদি-অনন্তকাল ধরে ধনিক-বণিক শ্রেণীর রাজনৈতিক অর্থনীতি দেখতে চাই না। আমরা কবি গুরুর ভাষায় চিত্তের ও বিত্তের মঙ্গলময় পরিবর্তন আশা করিÑ ‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তর হে।/ নির্মল করো উজ্জ্বল করো, সুন্দর করো হে।/ জাগ্রত করো, উদ্যত করো,/ নির্ভয় করো হে।/ মঙ্গল করো, নিরলস নিঃসংশয় করো হে।’ হ
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement