১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আসছে করোনা-উত্তর মহামন্দা

-

গোটা বিশ্ব এখন করোনা-ভাইরাসবিরোধী অভিযানে ব্যস্ত। এটাই স্বাভাবিক। কারণ, এই ভাইরাসের সংক্রমণ এরই মধ্যে রূপ নিয়েছে একবিশ্ব-মহামারীতে। জাতিসঙ্ঘ যথার্থ কারণেই ইতোমধ্যে একে বিশ্ব-মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই লেখা যখন তৈরি করছি তখন ক্যালেন্ডারের পাতায় ১৮ মার্চ, ২০২০। এই সময় পর্যন্ত বিশ্বের ২১০টি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। সংক্রমিতদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৪, আর মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৫৬ হাজার ২৯৮। সংক্রমিতদের মধ্য থেকে চিকিৎসা শেষে সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে পাঁচ লাখ ৭১ হাজার ১৪৭ জনকে। এখনো অনেক দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এর সংক্রমণ। গোটা মানবজাতিকে প্রায় থামিয়ে দিয়ে এখন চলছে এই ভাইরাসের রীতিমতো দাপুটে বিচরণ। যেন করোনাভাইরাসই বিশ্বের একক নয়া শাসক।

এই ভাইরাসের দাপট এখনো অনেক দেশে বেশ প্রবল। তবে এটি ঠিক, এক দিন এই মহামারীর অবসান ঘটবে। তবে তা ঘটবে বিশ্বের বিপুল সংখ্যক মানুষের স্বজনহারানোর বুকভরা কান্না নিয়ে। সেই সাথে এটি বিশ্ব অর্থনীতিকে যেভাবে তছনছ করে দিয়েছে এবং আগামী দিনেও দিয়ে যাবে, তার গতিপ্রকৃতি কী হবে তা কেউ আন্দাজ করতে পারছে না। তবে এর পরিণতি যে ভয়াবহ হবে সে সম্পর্কে সবাই একমত। এর পরিণতিতে আমরা হারিয়ে ফেলব আমাদের চিরচেনা বিশ্ব অর্থনীতিকে। আমাদের হয়তো ভাবতে হবে নতুন ধারার কোনো বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কথা। এখন একটি দেশকে ভাবতে হবে, তার দেশ অন্য দেশের ওপর কতটুকু নির্ভরশীল থাকবে। কারণ, যখন বৃহত্তর খিঁচুনি সৃষ্টিকর অর্থনৈতিক ঘটনা ঘটে, তখন এর প্রভাব বিদ্যমান থাকে বছরের পর বছর ধরে। আবার এর প্রভাব ফিরে আসে কুণ্ডলী আকারে, যার গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে আগাম কিছু বলতে পারেন না অর্থনীতিবিদরা। আমরা জানি, ২০০৭ সালে আমেরিকান নগরপ্রান্তগুলোতে মর্টগেজ ডিফল্ট নিয়ে একটি অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। তখন কি কেউ ভেবেছিল, এ প্রভাবে ২০১০ সালে গ্রিসে দেখা দেবে এক ধরনের রাজস্ব-সঙ্কট? আবার ১৯২৯ সালে নিউ ইয়র্ক শেয়ারবাজারে নেমে এসেছিল ধস। তখন কেই কি ভেবেছিল, এই ধসই ১৯৩০-এর দশকে ফ্যাসিবাদী উত্থান ঘটাবে ইউরোপে?

আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ্ব-অর্থনীতি সীমাহীনভাবে মাকড়সার জালের মতো একে অপরের সাথে পরস্পর সংযুক্ত তথা ইন্টারকানেকটেড। স্পষ্টতই দেখতে পাই, একটি দেশের সাথে আরেকটি দেশের, একজন মানুষের সাথে আরেকজন মানুষের রয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক : আমরা দোকান থেকে কেনাকাটা করি, মালিকরা আমাদের বেতন দেন, ব্যাংক আমাদের বাড়ি তৈরির ঋণ দেয়Ñ এ সবই সরাসরি অর্থনৈতিক সম্পর্ক। কিন্তু একবার যদি এই সম্পর্কের জাল ছিন্ন হয়, তখন মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হয়। কী ভয়াবহভাবে তা নিয়ে আসে অর্থনৈতিক বিপর্যয়। করোনাভাইরাস মহামারী আজকের এই সময়ে আমাদের এক দেশের সাথে আরেক দেশের, এক মানুষের সাথে আরেক মানুষের সেই অর্থনৈতিক সম্পর্কের জাল ছিন্ন করে দিয়েছে। গোটা বিশ্বকে ঠেলে দিয়েছে অভাবনীয় ও ভয়াবহ অর্থনৈতিক মহামন্দার দিকে। চারদিক থেকে এরই মধ্যে যেসব অর্থনৈতিক দুঃসংবাদ আসছে, তা সেই মহামন্দারই ইঙ্গিত বহন করে। এই মহামন্দা যেমনি আমাদের জন্য ডেকে আনবে অভাবনীয় মাত্রার অর্থনৈতিক বিপর্যয়, তেমনি পাল্টে দেবে আমাদের চিরচেনা অর্থনীতিকেও।

বিশ্ব অর্থনীতি এরই মধ্যে মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে পতনমুখী পরিস্থিতির, যা কার্যত সেই ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ বা মহামন্দার চেয়েও ভয়াবহ। অর্থনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন ১৯৩০-এর দশকের বিশ্ব মহামন্দার কথা। এর শুরু হয়েছিল ১৯২৯ সালে, আর শেষ হয় ১৯৩০-এর দশকের শেষ দিকে। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর দীর্ঘতম অর্থনৈতিক মহামন্দা। এর প্রভাবও ছিল ব্যাপকতর। ১৯২৯ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ কমে যায়। কিছু দেশের অর্থনীতি ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি কিছুটা হলেও আগের অবস্থায় ফিরে এলেও বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতিতে এই মহামন্দার প্রভাব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু পর্যন্ত চলে। এই মহামন্দার সময়ে ধনী-গরিব সব দেশের ওপরই বিধ্বংসী প্রভাব পড়েছিল। তখন রফতানি আয়, কর, মুনাফা ও মূল্যমানের ব্যাপক পতন ঘটে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ৫০ শতাংশ কমে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। কিছু দেশে এই হার ছিল ৩ শতাংশেরও বেশি। শস্যের দাম ৬০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। সার্বিকভাবে বিশ্বের অর্থনীতিকে তছনছ করে দিয়েছিল এই মহামন্দা। বেশির ভাগ দেশ নির্ভরশীল হয়ে পড়ে ত্রাণ কর্মসূচির ওপর। অনেক দেশে ঘটে রাজনৈতিক বিপ্লব। ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকার অনেকে দেশে স্বৈরাচারী শাসনের কাছে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে। বিশেষ করে ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নাৎসি জার্মানি। বিশ্ব-সাহিত্যের বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে এই মহামন্দা। মহামন্দাভিত্তিক কোনো কোনো সাহিত্য লাভ করে নোবেল পুরস্কার ও পুলিৎজার পুরস্কার। আর আজ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাস এখন ডেকে আনছে বিশ্বব্যাপী এমন এক মহামন্দা, তার প্রভাব হবে ১৯৩০-এর দশকে ঘটে যাওয়া গ্রেট ডিপ্রেশনের চেয়েও ভয়াবহ। করোনাভাইরাস-উত্তর মহামন্দা হয়তো ইতিহাসে ঠাঁই পাবে একটি ‘অর্থনৈতিক মহামারী’ হিসেবে। এরই মধ্যে চার দিক থেকে করোনাভাইরাস প্রভাবিত অর্থনীতির যেসব খবর আসছে তা আমাদের আতঙ্কিত করে।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ‘ডব্লিউএফপি’র প্রধান ডেভিড বসেলে বলেছেন, করোনা সঙ্কটের কারণে যে অর্থনৈতিক সঙ্কট ধেয়ে আসছে তা খুবই ভয়াবহ। তিনি বলেছেন, জাতিসঙ্ঘ বিশ্বের গরিব জনগোষ্ঠীর মুখে খাদ্য তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করতে না পারলে কমপক্ষে তিন কোটি মানুষ অনাহারে মারা যেতে পারে। এসব গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্ব-ব্যবস্থার আওতায় একটি ব্যাপকভিত্তিক জাতিসঙ্ঘ তহবিল গঠন করা না হলে এ ভয়াবহ পরিণতি মেনে নিতে হবে বিশ্ববাসীকে। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন দেশের আর্থিক সহায়তায় বিশ্বের অন্তত ১০ কোটি মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয় ডব্লিউএফপি। এর মধ্যে কমপক্ষে তিন কোটি মানুষ খাবার না পেলে অনাহারে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতি এরই মধ্যে গ্রেট ডিপ্রেশনের চেয়েও খারাপ মন্দার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। তবে, বিশ্ব-অর্থনীতির এই পতনমুখিতা আরো খারাপের দিকে যাবে, এমন আশঙ্কা প্রবল। বিশ্বের নানা দেশের সরকার ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ নিয়ে নামছে, যাতে তাদের অর্থনীতির পতন ঠেকানো যায়। বিভিন্ন দেশ তাদের নিজ নিজ দেশের অর্থনীতি বাঁচানোর জন্য যেসব সার্বভৌম ঋণ ব্যবহার করছে, তা আবার আরেকটি দ্বিতীয় মন্দার জন্ম দিতে পারেÑ এমন সতর্কবার্তাই দিলো ইআইইউ।

এর আগে গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফ বলেছে, বিশ্ব-অর্থনীতি আগামী দিনে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে সঙ্কুচিত হবে। এর ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এই মন্দা হতে পারে ১৯৩০-এর মহামন্দা-পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে খারাপ মন্দা। এখন ইআইইউ বলেছে, এই মহামন্দা পরবর্তী সময়ে আরেকটি মন্দার সৃষ্টি করতে পারে। এর পেছনে কাজ করতে পারে দুর্বল ব্যালেন্সশিটের সরকারগুলোর ঋণ-সঙ্কট। ইতালি ও স্পেনের মতো যেসব দেশে করোনার সংক্রমণ ব্যাপক, সেসব দেশ এরই মধ্যে দুর্বল রাজস্ব পরিস্থিতিতে পড়েছে। এসব অনেক দেশেই দ্রুত ঋণ-সঙ্কট ছড়িয়ে পড়বে বলে ইআইইউ মনে করে। এর ফলে বিশ্ব-অর্থনীতিতে সৃষ্টি হতে পারে আরেকটি অর্থনৈতিক মন্দা। ইআইইউ মনে করে, এটাই মূল সমস্যা- পরিস্থিতি নয়, পশ্চিমা দেশগুলোতে তা দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব ফেলবে, তা এখনো অজানা। তা দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোনো মন্দা ডেকে আনলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য এখন যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল অবলম্বন করছে তার অবসান ঘটালে ও বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আবার খুললেই যে ভোক্তা-চাহিদা আগের পর্যায়ে ফিরে যাবে, সে সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া তখনো সরবরাহ-শৃঙ্খল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে মনে হয় না। তাই এই মন্দা থেকে উত্তরণ-প্রক্রিয়া চলবে ধীরলয়ে।

আইএমএফ আরো জানিয়েছে, ৬০ বছরের মধ্যে এই প্রথম এশিয়ার অর্থনীতি ফিরে যাবে শূন্য-প্রবৃদ্ধিতে। বিশেষ করে এশিয়ার সেবাখাত স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে প্রবল বেগ পেতে হবে। বিমান পরিবহন, কল-কারখানা, দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ সবচেয়ে জটিল পরিস্থিতিতে পড়বে জাতীয় পর্যায়ে ও লকডাউনের কারণে। ফলে এসব দেশের সরকারকে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ, বিগত গ্রেট ডিপ্রেশনের পরবর্তী সময়ে এই প্রথমবারের মতো উন্নত-অনুন্নত ও উন্নয়শীল সব দেশই অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অগ্রসর অর্থনীতির দেশগুলো ২০২২ সালের আগে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসতে পারবে না। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ৬ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে যেতে পারে। ১৯৪৬ সালের পর এটাই হবে দেশটির জন্য সবচেয়ে বড় আকারের অর্থনৈতিক সঙ্কোচন। আইএমএফ মনে করে, দীর্ঘতর লকডাউন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করবে। সে জন্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থামাতে ব্যাপক কর্মসূচি নিতে হবে।

এ দিকে বিশ্বব্যাংক বলছে, করোনাভাইরাসের আর্থিক প্রভাব পূর্ব-এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষের দারিদ্র্য থেকে মুক্তির পথ বন্ধ করে দেবে। বিশ্বব্যাংকের অভিমত, কোনো দেশই এর বিরূপ প্রভাব থেকে বাঁচতে পারবে না। এর ফলে ২০২০ সালে এ অঞ্চলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে তিন কোটি। এর মধ্যে রয়েছে চীনের আড়াই কোটি দরিদ্র মানুষ। বিশ্বব্যাংক তাদেরকেই দরিদ্র বলে চিহ্নিত করে যারা দিনে সাড়ে পাঁচ ডলার কিংবা তার চেয়ে কম উপার্জন দিয়ে জীবন নির্বাহ করে।

বিশ্বব্যাংক এও বলেছে, এই করোনাভাইরাসের প্রভাবে পূর্ব-এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতি গত চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে নেমে যাবে। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, পাকিস্তানসহ এ অঞ্চলের আরো কয়েকটি দেশে তুলনামূলকভাবে কম হারে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে। তবে এই অঞ্চল হতে পারে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী হটস্পট। তেমনটি ঘটলে, মোকাবেলার জন্য এখনই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

এমনটি ঘটলে বাংলাদেশের অর্থনীতি কতটুকু ক্ষতির মুখে পড়বে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাবের নানা খবর আসছে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে। এসব খবর আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের খবরে জানা যায়, করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের তথ্যপযুক্তি খাত প্রায় বন্ধের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। দেশের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার খাত আপাতত বন্ধ। কল সেন্টারের কাজ কমে গেছে ৩৫ শতাংশ। ই-কমার্স সীমিত হয়ে পড়েছে ঢাকার মধ্যে। অনলাইনে ফিল্যান্সিংয়ের কোনো সুখবর নেই। মোবাইলের ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবা এবং ব্রডব্যান্ড সেবা চালু থাকলেও শুধু মোবাইল ইন্টারনেটেই কিছুটা প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অন্য দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহার কমেছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ এখন এক সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। আর তা তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে একেবারে ধ্বংসের মুখোমুখি নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। সেখান থেকে উত্তরণের জন্য এ খাতে আপাতত দুই হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা প্রয়োজন। সরকার যদি এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা অনুদান বা প্রণোদনা দিয়ে সহায়তা করে, তবে হয়তো দেশের প্রযুক্তি খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

একই সাথে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কয়েকটি সংগঠন সরকারের কাছে ২ শতাংশ হারের সরল সুদে জামানতবিহীন দীর্ঘমেয়াদি ঋণ চেয়েছে। আমাদের মনে হয় এই ঋণ যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি দেয়ার ব্যাপারে সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ, এ ব্যাপারে যত দেরি করা হবে সঙ্কট তত বেশি জটিল আকার ধারণ করবে।
এভাবে অন্যান্য খাতেও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমাদের প্রয়োজন করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক মহামন্দা মোকাবেলার কর্মসূচি নিয়ে এখনই মাঠে নেমে পড়া।

ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান-সরকার ও সর্বমহলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ছাড়া এই নিশ্চিত অর্থনৈতিক মহামন্দা থেকে কোনো মতেই উত্তরণ সম্ভব নয়। এ মহামন্দার সময় সব দেশই নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকবে। মনে রাখতে হবে, এই মহামন্দা চলতে পারে দীর্ঘতর সময় ধরে। ব্যক্তি-পরিবার-সমাজ-প্রতিষ্ঠান ও সরকারি পর্যায়ে এখন থেকে অপরিহার্য নয়, এমন সব খরচ বন্ধ করতে হবে। আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করে তা মোকাবেলা করতে হবে নিজস্ব সম্পদ ও সক্ষমতা দিয়েই। 


আরো সংবাদ



premium cement
তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন সিরিয়ায় আইএস-এর হামলায় সরকার সমর্থক ২০ সেনা সদস্য নিহত ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু জনসমর্থনহীন সরকার জনগণের আওয়াজ নির্মমভাবে দমন করে : রিজভী

সকল