২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংবিধান

করোনা বিপর্যয় কাটাতে ‘ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংক’ অপরিহার্য

-

কিছু দিন ধরে পত্রিকার পাতা খুললেই দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে না খেয়ে থাকা লোকজনের ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভের খবর দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বিশ্ব একটা মন্দার মধ্যে চলে গেছে। বহু গতানুগতিক অর্থনীতি পিছিয়ে পড়েছে এবং ইউরোপে নজিরবিহীন আঘাত লেগেছে। যুক্তরাষ্ট্রও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেলসহ বৈশ্বিক ভোক্তা চাহিদার ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি বিশেষভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হবে। এসব খবর বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক।

আমাদের রেমিট্যান্সনির্ভর, পশ্চিমামুখী রফতানি ও অবকাঠামোভিত্তিক অর্থনীতি একটা বড় সঙ্কটে পড়ে গেছে। সবচেয়ে বড় আঘাতটা লেগেছে শহরে ভিড় জমানো গ্রামীণ অভিবাসী শ্রমজীবী মানুষের ওপর, যাদের বেশির ভাগ নারী। এ রকম বিপর্যয়ে টিকে থাকার কোনো ব্যবস্থা তাদের নেই এবং কোনো সামাজিক ইন্স্যুরেন্সও নেই। তাদের ‘কাজ নেই তো আয় নেই’ পরিস্থিতিতে ছুড়ে ফেলা হয়েছে এবং এই পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা কেউ জানে না। জীবনের কোনো দিকই সঙ্কট থেকে মুক্ত থাকবে না। ফলে বাংলাদেশের অর্থব্যবস্থার অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।

অর্থনীতির একজন নগণ্য ছাত্র হিসেবে আমি সবসময় ভেবেছি কিভাবে এই বিশ্বকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দেয়া যায়। এর জন্য তাত্ত্বিক কিছু মডেলও আমি দেয়ার চেষ্টা করেছি। এই কলামের লেখাতেই আমি বলেছি, ১৯৬৩ সালে ময়মনসিংহে আমার কর্মজীবনের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাথে অনেকটা আকস্মিকভাবে দেখা হয়ে যায়। আমি ছাত্র অবস্থাতে যুক্তফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগের স্বাধিকার আন্দোলনের সমর্থক ছিলাম, সে কথাও বলেছি। আমার এক প্রশ্নের জবাবে তখন শেখ সাহেব বলেছিলেন ‘তোমাদের ভিশন তোমরাই ঠিক করবা’। যুবক বয়সে তার সেই কথাটি আমার মনে গেঁথে গিয়েছিল। তাই আমিও সেই ভিশন ঠিক করতে গিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির উপায় নিয়েই জীবনভর ভেবেছি। বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষ কিভাবে অর্থনৈতিক মুক্তি পেতে পারে সেই ভাবনা ছিল আমার। তবে ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন হয় প্রতিষ্ঠানের।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণের কাজ শুরু করে মূলত এনজিওরা। এটা আসলে ছিল নারীর ক্ষমতায়নের নামে সুদভিত্তিক অর্থনীতিকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার একটি উদ্যোগ। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের লালিত ইসলামী মূল্যবোধ, এমনকি আমাদের বহু দিনের লালিত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে উপেক্ষা করে কিছু এনজিওর আগ্রাসী পরিকল্পনায় দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই সমিতি ও সুদের ব্যবসা চালু হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, ব্র্যাকের মতো প্রতিষ্ঠান আমাদের সমাজে সুদকে এমনভাবে অনুপ্রবেশ করিয়েছে, যা ক্ষেত্রবিশেষে দাদন ব্যবসায়ীদের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি বাড়িতে সুদ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিস্তির নামে সুদি ব্যবসা চালু করা হয়েছে। এতে সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেতর থেকে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আমরা এমনভাবে সুদে জর্জরিত, যেখান থেকে বের হওয়া বেশ কঠিন। নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশে সুদ শেকড় গেড়ে বসেছে, অথচ পবিত্র কুরআনে সুদকে স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। যেকোনো কৌশলেই সুদ নেয়া হোক না কেন, তা হারাম।

ওআইসির সাবেক মহাসচিব ড. হামিদ আল গাবিদ ২০১২ সালে বাংলাদেশে সফরে আসার পর তার সঙ্গী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল। তারও অনেক আগে ১৯৯১ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধুর কন্যার সাথে আমার প্রথম সাক্ষাতে তিনি আমাকে নিজের লেখা ‘ওরা টোকাই কেন’ বইটি স্বাক্ষরসহ উপহার দিয়েছিলেন। বইটির নামের মধ্যেই এ দেশের নিপীড়িত মানুষের কথা বলা আছে। আমি সাথে করে বইটি নিয়ে যাই। প্রাথমিক কুশলাদি বিনিময়ের পর আমি প্রধানমন্ত্রীকে বইটি দেখাই। কিছুটা অবাক হয়ে তিনি বললেন, আপনি বইটি এখনো রেখেছেন। এই সুযোগে আমি তাকে বললাম, আজ আমি আপনার কাছে মহাসচিবকে নিয়ে এসেছি।

একটি আবদার রাখতে হবে। আপনি নারী ক্ষমতায়নের কথা বলেন। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আপনি নারীদের হাতে দিয়েছেন। কিন্তু এতে নারী ক্ষমতায়নের কাজটি পুরোপুরি হবে না। এনজিওদের কবলে পড়ে আমাদের গ্রামীণ নারীসমাজ মহাদুর্দশায় নিপতিত। এরা রক্তচোষা, ক্ষমতায়নের বদলে দানবীয়করণ করা হচ্ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, চার কোটি গ্রামীণ নারী এদের কাছে ঋণগ্রস্ত। এরা ঋণগ্রস্ত অবস্থায় জন্ম নিচ্ছে, জীবন কাটাচ্ছে এবং শেষ পর্যন্ত ঋণ নিয়েই মারা যাচ্ছে। চার কোটি নারী ঋণগ্রস্ত থাকা মানে দেশের জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ মানুষ ঋণগ্রস্ত থাকা।

প্রধানমন্ত্রীকে আমি বললাম, এসব নারীর ক্ষুদ্রঋণ আপনি মাফ করে দিন। এ কথা শুনে তিনি কিছুটা থমকে গেলেন বলে মনে হলো। পিতার মতো তারও তো একটি দরদি মন আছে। প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলেন, এটা কিভাবে সম্ভব? বললাম, স্বেচ্ছামূলক খাতকে পুনরুজ্জীবিত করে এটা করা যেতে পারে। আমি তখন ‘ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকে’র ধারণাটি তার কাছে তুলে ধরি। বলি, ক্যাশ ওয়াক্ফের মাধ্যমে এই ব্যাংকের তহবিল সৃষ্টি করা যায়। এই ক্যাশ ওয়াক্ফ এমন এক ধারণা, যে কেউ ১০০ টাকা দিয়েই এর অংশীদার হতে পারে। একজন ধনী ব্যক্তি যেমন এই ওয়াক্ফ করতে পারে, তেমনি তার বাসার কাজের লোকটিও এর অংশীদার হতে পারে। তাকে যদি বুঝানো হয় যে এই ব্যাংক শুধু দরিদ্র মানুষের আর্থিক মুক্তির জন্যই কাজ করবে তাহলে যে কেউ ১০০ টাকা দিয়ে ক্যাশ ওয়াক্ফ করতে রাজি হবে। প্রধানমন্ত্রী যদি জনগণের প্রতি ১০০ টাকা করে ক্যাশ ওয়াক্ফ করার আহ্বান জানান তাহলে কোটি কোটি টাকার তহবিল সৃষ্টি হতে পারে। ইউরোপ আমেরিকায় থাকা কোনো মুসলমানের জন্য এক ডলার ক্যাশ ওয়াক্ফ করা কোনো বিষয়ই নয়। বিভিন্ন সিমুলেশন মডেলে এটা করা যেতে পারে, বিভিন্ন এজাম্পশনের ভিত্তিতে করা যেতে পারে। ওয়াক্ফ হলো একটি চিরন্তন তহবিল। যা বিনষ্ট করা যাবে না, শুধু মুনাফা ব্যবহার করা যাবে। ওয়াক্ফের অর্থ অমুসলিমের জন্যও খরচ করা যায়। এটাই ওয়াক্ফের সৌন্দর্য। এটা ইসলামেরও সৌন্দর্য। এই সম্পদের আয় থেকে ওই চার কোটি নারীকে অনায়াসে ঋণমুক্ত করা যায়।

এটি কোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানও হবে না। এর সদস্য পদ হবে প্রাতিষ্ঠানিক। দেশের ইসলামিক ব্যাংকগুলো, মুসলিম বিশ্বের বড় বড় আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ট্রাস্ট, ফাউন্ডেশন, ইত্যাদি এর সদস্য হতে পারে। মুসলিম দেশগুলোর বাইরেও যেসব দেশে বড় মুসলিম কমিউনিটি আছে তাদের প্রতিষ্ঠান এর সদস্য হতে পারবে। যেমন : ভারতে বিশাল মুসলিম কমিউনিটি রয়েছে। তাদের বিভিন্ন সামাজিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল এনডাওমেন্ট ফান্ড আছে। এসব ফান্ড যদি ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকের সদস্য হয় তাহলে বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের দারিদ্র্য বিমোচনে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে।

এখানে আরেকটি কথা বলা প্রাসঙ্গিক হবে যে, আমরা যে ঋণ দিচ্ছি, সেই টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে তার কোনো তদারকি নেই। এটা বর্তমান ঋণদান প্রক্রিয়ার বড় ধরনের একটি ব্যর্থতা। তাই ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকের একটি বড় কাজই হবে ঋণের কনসিকোয়েন্স ম্যানেজ করা। এখন যেভাবে ঋণ দেয়া হচ্ছে তা গরিবকে আরো গরিব করছে। ধনী আরো ধনী হচ্ছে। তারা ধনী হতে হতে এক অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। শুধু স্থানীয় পর্যায়েই নয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এটা ঘটছে। বিশ্বের বেশির ভাগ সম্পদ এক-শতাংশেরও কম মানুষের হাতে চলে গেছে। এই অবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্যই ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংক প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠান সহজে হারিয়ে যাবে না। কিন্তু তাদের দিন গণনা শুরু হয়ে গেছে পদ্ধতিগত দুর্বলতা বা ব্যর্থতার দরুন। এসব শোষণমূলক ব্যবস্থাসংবলিত প্রতিষ্ঠানকে বিদায় করার জন্য বিকল্প কিছু ভাবারও সময় এসেছে।

তখন ড. গাবিদ প্রস্তাব দিয়ে বললেন, ঢাকায় এই ব্যাংকের হেডকোয়ার্টার করতে চাই। আমাদের একটি জায়গা দেন। সব কিছু শুনে প্রধানমন্ত্রীও বলেছিলেন, জায়গা দেবেন। আমাদের এগিয়ে যেতে বললেন। প্রধানমন্ত্রীর স্বতঃস্ফূর্ত কথায় আমরা তখন অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম তার এই উৎসাহ হয়তো স্বাভাবিক গতিতেই বাস্তবে রূপ নেবে। আমি অন্তর থেকে ভেবেছিলাম এটা ঢাকায় হোক। কিন্তু ব্যক্তি উদ্যোগে এটা তো হওয়া সম্ভব নয়। এরপর মহাসচিবের সাথে ২০১৫ সালে আমার দেখা হয়েছিল আমেরিকায়। তিনি কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। কারণ তিনি আমার ক্যাশ ওয়াক্ফ চিন্তাধারাকে উৎসাহের সাথে গ্রহণ করেছিলেন। এ বিষয়ে আমার একটি বই নিজে ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করে ছাপিয়ে বিলি করেছিলেন। তার এই আন্তরিকতা আমাকে বিস্মিত করেছিল। মহাসচিব আমাকে জিজ্ঞেস করলেন ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকের বিষয়টি আমি ফলোআপ করছি কি না। আমি বললাম, প্রধানমন্ত্রী হয়তো অন্যান্য কাজে ব্যস্ত আছেন, এ দিকে মনোযোগ দিতে পারেননি। তখন মহাসচিব বললেন, তাহলে আমি একটি চিঠি লিখি তাকে। আমি সম্মতি দেই। তিনি আমেরিকা থেকে নাইজারে ফিরে গিয়ে চিঠিটি লিখে আমাকে পাঠালেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরের জন্য।

আমি দেশে ফিরেই চিঠিটি পাই। ২০১৫ সালের ২৯ জুন তারিখে লেখা ওই চিঠি এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্র আমি আমার ব্যক্তিগত সচিবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠাই। চিঠিতে মহাসচিব লেখেন যে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ক্যাশ ওয়াক্ফের ধারণা একবিংশ শতকে পৃথিবীব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের বড় হাতিয়ার হতে পারে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে এ ধারণা গ্রহণ করা হয়েছে। মহাসচিব তার চিঠিতে ঢাকায় ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকের সদর দফতর স্থাপনে একখণ্ড জমি দিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন এবং এ ব্যাপারে তিনি যে রাজি হয়েছিলেন সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। সেই চিঠি এখনো প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনো জবাব দেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূর করার হাতিয়ার হিসেবে আমি দুই দশকের বেশি সময় ধরে ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকের এই ধারণা লালন করছি। বিভিন্ন ফোরামে এ নিয়ে কথাও বলেছি। ২০০২ সালের দিকে আমি যখন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলাম তখন ইন্দোনেশিয়ার একদল ব্যাংকার বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। তারা দারিদ্র্য বিমোচনের একটি বিকল্প চিন্তাধারার অনুসন্ধান করছিলেন। বিশ্বে আমরা যত ধরনের দারিদ্র্য বিমোচনের মডেল দেখছি, আসলে সেগুলো ব্যবসায় ছাড়া আর কিছু নয়। অনেকে দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বললেও কৌশলে তারা সেটাকে ব্যবসায়িক লাভ হাসিলের পথ হিসেবে গ্রহণ করেন। ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রেও আমরা এই একই অবস্থা দেখতে পাই। তাই বিকল্প হিসেবে ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকের কথা চিন্তা করা হয়েছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সফরে এসেছিলেন। তার কাছেও বিষয়টি আমি তুলে ধরেছিলাম। তিনি আইডিবিতে আমার জুনিয়র কলিগ ছিলেন। তিনি আমার আইডিয়াটির কথা জানতেন। তিনি বাংলাদেশে এসে জিজ্ঞেস করেছিলেন এটা কত দূর অগ্রসর হলো।

আজ যখন করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতি এবং দেশজুড়ে কর্মহীন ও ক্ষুধাকাতর মানুষের হাহাকার দেখছি, তখন ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংকের কথা খুব মনে পড়ছে। সম্ভবত আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার কারণেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার পর বিষয়টি আর এগোয়নি। আমি চেষ্টা করেছি বিষয়টি ফলোআপ করতে। কিন্তু এখনতো বয়সের কারণে আমাকে হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। এর পরও প্রধানমন্ত্রী যদি উদ্যোগী হন তাহলে আমি হুইল চেয়ারে বসেই তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী। ‘ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ব্যাংক’ কোনো কল্পনা বা অবাস্তব কিছু নয়, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য খুবই বাস্তব একটি পদক্ষেপ।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা

hmct2004@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement