২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

নিরাপত্তা আছে কি কোথাও

- সংগৃহীত

রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় গোষ্ঠী। ঈসা আ:-এর অনুসারী বলে নিজেদের দাবি করে তারা। তাদের বিশ্বাসটা সহজে এমন, একজন স্রষ্টা রয়েছেন। তিনি মানবতার মুক্তির জন্য ঈসাকে পাঠিয়েছিলেন। তার পর ঈসা মানবতার সব পাপ নিয়ে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। কেউ যদি এই ধর্মে দীক্ষিত হন, তাহলে পাপ নিয়ে তার ‘কোনো ভাবনা নেই’। এ জন্য অবশ্য একজন যাজকের অধীনে তাকে কিছু নিয়ম-কানুন পালন করতে হবে। আর ঈসা নিজে ‘স্রষ্টার পুত্র’ এবং তাকে নিয়ে এসেছিলেন পবিত্র এক আত্মা। ‘পিতা পুত্র’ ও পবিত্র আত্মা মিলে মহাবিশ্বের সব কিছু পরিচালনা করে থাকেন। রোমান ক্যাথলিকদের প্রধান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ইউরোপের দেশ ইতালির ভ্যাটিকান।

দেশটির রাজধানী রোম শহরের ভেতর আরেকটি স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখণ্ড রয়েছে। ভ্যাটিকান সিটি নামের এ শহরের রক্ষক রোমান ক্যাথলিকদের প্রধান ধর্মীয় গুরু পোপ। তার রয়েছে একটি ‘স্বর্গীয় কর্তৃত্ব’। এ কর্তৃত্ব বা ক্ষমতাকে হোলি সি বলা হয়। বিশ্বের প্রায় ১৩০ কোটি রোমান ক্যাথলিকে নেতৃত্বে রয়েছেন ভ্যাটিকানের পোপ। তিনি তাদের জন্য পালনীয় কর্তব্য স্থির করেন। স্বর্গীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে তিনি প্রায়ই বিভিন্ন ইস্যুতে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। তার দিকনির্দেশনায় সারা বিশ্বের খ্রিষ্টান সম্প্রদায় দৈনন্দিন জীবনযাপন করেন। জনসাধারণ তার বক্তব্যকে পবিত্র বলে জ্ঞান মনে করেন। কারণ তিনি ‘স্বর্গীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সংযুক্ত’।

একটি দেশের ভেতর আলাদা আরেকটি স্বাধীন দেশের অস্তিত্ব পৃথিবীতে আর দেখা যায় না। রোম শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়ে ১১০ একর জমির ওপর ভ্যাটিকান সিটি অবস্থিত। এর জনসংখ্যা ৬১৮। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভ্যাটিকান সিটি ও এর দায়িত্বপ্রাপ্ত পোপের রয়েছে বিশ্বব্যাপী প্রভাব। ১৭২টি স্বাধীন দেশের সাথে ভ্যাটিকানের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথেও তারা নিবিড় সম্পর্ক রাখেন।

ভ্যাটিকান একটি সুরক্ষিত নগরী। করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর এর নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ৬১৮ জন মানুষের মধ্যে সেখানে সাতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে হোলি সির একজন কর্মকর্তাও রয়েছেন। খোদ পোপের নিরাপত্তা নিয়ে তারা শঙ্কা বোধ করছেন।

চীনের পরপরই ইতালিতে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটেছে এবার। সেখানে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৬ হাজার পাঁচ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময় সংক্রমণ ঘটেছে এক লাখ ৩২ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে। এ পর্যন্ত ক্যাথলিক কর্তৃপক্ষ করোনা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সাধারণ কোনো ঘোষণা প্রচার করেনি। করোনা মোকাবেলায় দিশেহারা, ইতালি সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশের করুণ অবস্থা নিয়ে পোপ বেনেডিক্টের সাথে বৈঠক করে আলোচনা করেছেন। ওই আলোচনায় ইতালির মানুষের জন্য কোনো সুসংবাদ রয়েছে কি না তা জানা যায়নি। তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তার অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে চোখ থেকে। তিনি বলছেন, ‘পরিস্থিতির ওপর আমরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছি।

শারীরিক ও মানসিকভাবে আমরা ভেঙে পড়েছি। বুঝতে পারছি না, আর কী কী করার আছে। ধরার পৃষ্ঠ থেকে আমরা প্রতিটি চেষ্টাই করেছি, হালে পানি পায়নি।’ আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা এখন আকাশে, স্রষ্টা আমাদের জনসাধারণকে রক্ষা করুন’। ঠিক এমন একটি প্রার্থনা ইতালির প্রধানমন্ত্রী আদৌ করেছেন কি না আমরা জানি না। তবে সাধারণ মানুষের ধারণা এ ধরনের প্রার্থনা পোপকে মানায়। কারণ তারা জানেন, স্রষ্টার সাথে তার রয়েছে গভীর সম্পর্ক। জগতে নানা সঙ্কটে এই ‘পবিত্র’ মানুষেরা স্রষ্টার সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে কল্যাণ নামিয়ে আনার কথা ধরার বুকে। আমরা দেখছি, ভ্যাটিকান সিটি যে দেশটিতে অবস্থিত সেখানে যেন করোনার মারটি বেশি করে পড়ল। তবে শেষ পর্যন্ত কোথায় মারটি সবচেয়ে বেশি পড়বে এখন পর্যন্ত তা নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি।

প্রতিবেশী স্পেন ও ফ্রান্স দ্রুততার সাথে ‘ইতালির পথে’ই রয়েছে। সোমবার পর্যন্ত স্পেনে মারা গেছেন ১৩ হাজার আট শতাধিক, আক্রান্ত এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি। একই সময়ে ফ্রান্সে মারা গেছেন আট হাজার শতাধিক, আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ হাজারের বেশি। আমেরিকার অবস্থা ইউরোপের চেয়ে ভালো হতে পারেÑ এমন বলা যাচ্ছে না। সে দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার অতি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। দেশটিতে একই সময়ে মারা গেছেন ১১ হাজার ৯ শতাধিক, আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ৭৮ হাজারের বেশি। ইউরোপ ও আমেরিকার মানুষের জীবনে ধর্ম এখনো প্রভাব রাখে। এসব দেশে রোমান ক্যাথলিকরাই সংখ্যাগুরু ধর্মীয় গোষ্ঠী।

নবী ইবরাহিম আ:-এর বংশধারায় সবার আগে রয়েছেন ইহুদিরা। তারা ইসহাক আ:-এর পুত্র ইয়াকুবের বংশধারা থেকে এসেছেন। ইয়াকুব আ:-এর ছিলেন ১২ পুত্র। ইয়াকুবের আরেক নাম ইসরাইল। তার পুত্ররা ‘বনি ইসরাইল’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন। স্রষ্টার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার ক্ষেত্রে তারা সবচেয়ে বড় দাবিদার। তারা মনে করেন, জগৎবাসীর মধ্যে তারাই স্রষ্টার সবচেয়ে আপন। একই ধরনের দাবি খ্রিষ্টানরাও করে থাকেন। ইহুদিদের এখন প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী বসবাস করেন ইসরাইলে। ছোট দেশটিতে ব্যাপক হারে করোনা ছড়াচ্ছে। বিশ্বের প্রথম সারির আক্রান্ত দেশের তালিকায় ইসরাইলও রয়েছে। তাদের ৮৭ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে আট হাজার ৯০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫৭ জন। বিশ্বে ইসরাইলই স্রষ্টার নামে প্রতিষ্ঠিত একমাত্র ধর্মীয় রাষ্ট্র।

মুসলমানদের মধ্যে সুন্নিরা সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। সৌদি আরব সুন্নি মুসলিমদের নেতৃস্থানীয় দেশ। এ দেশটির নেতৃত্ব অবশ্য আগের মতো নেই। তবে দেশটিতে মহান ‘স্রষ্টার ঘর’ রয়েছে। তাই এ দেশটির জন্য বিশ্বের বৃহৎ একটি অংশের জনগণের গভীর সম্মান শ্রদ্ধা রয়েছে। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ পবিত্র ঘরটি দর্শনে মক্কায় উপস্থিত হন। পৃথিবীতে অসংখ্য বিপদ বিপর্যয় গেছে। কিন্তু সাধারণত মক্কার হারাম শরিফ মানুষের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এবার প্রথম হারাম শরিফ সাধারণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হলো। শুধু তা-ই নয়, দেশটির মসজিদগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

স্রষ্টার ঘরের রক্ষক হিসেবে সৌদি আরবের কাছ থেকে অন্যান্য ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ যে ধরনের দৃঢ়তা প্রত্যাশা করে, সে রকম দৃঢ়তা দেশটি দেখাতে পারেনি। আসলে তাদের ধর্মীয় শ্রেষ্ঠত্ব আরো আগে থেকে ক্ষয়িষ্ণু হতে দেখা গেছে। এমনকি উপমহাদেশের মুসলমানরা যখন মসজিদ খোলা রেখে প্রার্থনা করার জন্য জমায়েত হয়েছেন, তখন তাদের মসজিদগুলো বন্ধ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশকে ‘ইসলাম’ অনুসরণের জন্য অনেকটা আদর্শস্থানীয় বলে বাকি বিশ্বের মুসলমানরা মনে করে। দেখা গেল, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আগেই মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও এসব দেশে কম নয়।

ইরানের ব্যাপারে অনেক মুসলমানের দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষ করে রাজতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়ে সেখানে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থা দুনিয়ার অনেককে আগ্রহী করে তোলে। ইরানের বর্তমান শাসকদের মধ্যে আমেরিকাকেন্দ্রিক বিশ্বকে কৌশলে মোকাবেলা করার যে পারদর্শিতা, সেটি অনেককে মোহিত করেছে। তারা শিয়া হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। তাদের দাবি হচ্ছে, তারা সৌদি আরবের চেয়ে ইসলামের চর্চায় বেশি শুদ্ধ। আমরা দেখলাম, ইতালিতে যখন করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ হয়েছে একই সময় ইরানে করোনার ব্যাপক সংক্রমণ দেখা দেয়। মুসলিম বিশ্বের মধ্যে করোনার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ইরানে দেখা গেছে। দেশটিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিন হাজার সাত শতাধিক এবং আক্রান্ত ৬০ হাজারের বেশি। সেখানে সরকার ও তাদের বিপ্লবী বাহিনীর নেতৃস্থানীয় অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন।

বাংলাদেশে করোনার অবাধ সংক্রমণ নিয়ে অনেক অসন্তুষ্টি রয়েছে। বলা হচ্ছে, যথেষ্ট সুযোগ ও সময় পাওয়ার পরও কাজে লাগানো হয়নি। এখন করোনার সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে। অনেক মানুষের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথম দিকে ঢাকার টোলারবাগে একজন মারা গেলেন, তখন তাকে নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে। এসব কথাবার্তা আত্মীয়স্বজনদের জন্য অনেক কষ্টকর হয়েছে। পরে ওই ব্যক্তির ছেলে ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট দিলেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, তাদের পরিবারের মধ্যে কেউ বিদেশফেরত ছিল না। করোনা সংক্রমণ হতে পারে এমন সম্ভাব্য জায়গার তার যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে তার বাবা মসজিদে গিয়েছিলেন।’ যা হোক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকার শেষ পর্যন্ত মসজিদে মানুষের আগমন সীমিত করার অনুরোধ রেখেছে।

দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাতের পূর্বনির্ধারিত দুটো সমাবেশ হয়েছে। প্রথমটি ৮ থেকে ১০ মার্চ, পরের জমায়েত হয় ১৩ থেকে ১৫ মার্চ। দেশ-বিদেশ থেকে দুই হাজার মুসলমান এতে অংশ নিয়েছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তেলেঙ্গানায় ছয়জন মারা গেছেন। ভারতীয় সূত্রে এ খবর দিয়েছে বাংলাদেশের একটি পত্রিকা। ভারত সরকার যতটুকু সম্ভব, জমায়েতে অংশ নেয়া একটা অংশকে আলাদা করতে পেরেছে। তাদের মধ্যে অনেকে করোনায় আক্রান্ত। বাকিরা কতটা করোনা ছড়াচ্ছেন, তা নিয়ে ভারত সরকার শঙ্কা প্রকাশ করেছে। তামিলনাড়–তে এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১১০ জন। রাজ্য সরকার তাবলিগ ফেরতের সাথে করোনা আক্রান্তের সম্পর্ক দেখছেন। সরকার নিজামুদ্দিনের জমায়েত নিয়ে উদ্বিগ্ন। হঠাৎ ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বাড়ছে। জমায়েত শেষে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছেন। তাদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকার।

২৪ মার্চ ১৩ সদস্যের একটি গ্রুপ তাবলিগ জামাত হিসেবে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে অবস্থান করছিলেন। তাদের মধ্যে একজনের জ্বর-সর্দির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। পরীক্ষা করে তার দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ‘প্রথম আলো’ ৬ এপ্রিল এ খবর দিয়েছে। মালয়েশিয়াতে দেখা গেছে একজন সম্ভাব্য করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন একটি বিশাল তাবলিগ জামাতে। ব্রুনাই থেকে আগত ওই রোগীর মাধ্যমে শতাধিক মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা দেখেছি, মসজিদে মানুষের আগমন বেড়েছে। অন্যান্যের মতো তারাও ভাবছেন, মসজিদ নিরাপদ জায়গা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে এমন ধারণা হতে পারে। দেখা গেছে, মানুষের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে গিয়েও মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ইতালিতে এমন ঘটনার নজির পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ভাইরাসটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে। এটি কোনো একটি বিশেষ স্থানে সীমিত নয় কিংবা কাউকে বিবেচনা করে সংক্রমণ রহিত করবে এমন আচরণ দেখাচ্ছে না।

গির্জা সিনাগগ মন্দির মঠের কার্যক্রম নিয়ে দ্বিধা সন্দেহ তৈরি হয়েছে। সরাসরি এর কার্যক্রম চলবে কি না সেই বিতর্কের দ্রুত সমাধানও পাওয়া গেল। কোথাও কোথাও এসব পবিত্র স্থানের রক্ষকরা এর নিয়মিত কার্যক্রম চালানোর জন্য সাফাই গাইলেও শেষ পর্যন্ত বাস্তবতা তাদের মানসিকতা পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। কারণ করোনা আপাতত কাউকে ‘মাফ করছে’ এমন দেখা যাচ্ছে না। উপাসনালয়গুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থাৎ যারা দাবি করেন- জনগণের পক্ষ থেকে স্রষ্টার সাথে তাদের সংযোগ রয়েছে, তারাও করোনা মোকাবেলায় কোনো নির্দিষ্ট দিশা দিতে পারছেন না জনগণকে। সাধারণত দেখা যায় যেকোনো সঙ্কটে রাজনৈতিক নেতারা মানুষকে নেতৃত্ব দেন। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বর্তমান মহামারীর সময় মানুষ ধর্মীয় নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখতে চায়। আমরা দেখলাম, স্রষ্টার পক্ষ থেকে কোনো গোষ্ঠীই আমাদের সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি। বরং ধর্মীয় গোষ্ঠী ও তাদের পবিত্র স্থানগুলো পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না। এ অবস্থায় আছে কি কোনো নিরাপদ স্থান? মানুষের ভাবনায় নিরাপদ স্থানটি কী হতে পারে! 

jjshim146@yahoo.com

 


আরো সংবাদ



premium cement