১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নদীর পর এবার হারিয়ে যাচ্ছে সাগর

-

বাংলাদেশের অনেক নদী কয়েক দশকে সবার চোখের সামনেই হারিয়ে গেছে। এক সময়ের প্রমত্তা অনেক নদীতে এখন ধু ধু বালুচর। আরো কিছু নদী সঙ্কুচিত হতে হতে অস্তিত্ব হারানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নদীদূষণের মাত্রা দুঃসহ পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। একসময় আমাদের ছিল ৭০০টি নদী। সর্বশেষ হিসাবে, বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা এখন ৪০৫টি। নদীগুলোর এই হারিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুধু আমাদের দেশেই নয় বিশ্বের অনেক দেশেই সমভাবে সক্রিয়। নদীর পাশাপাশি এবার সাগরও শুকিয়ে যাচ্ছে। চলছে ভয়াবহ সমুদ্রদূষণ। এ ছাড়া সমুদ্র নিয়ে চার দিক থেকে আসছে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর। খবর আসছে, সাগরের মাছসহ নানা প্রাণী মরে ভেসে উঠছে। মারা যাচ্ছে সিল, তিমি, বড় আকারের শুশুক, সমুদ্র ঘোটক। ধ্বংস হচ্ছে নানা জলজ উদ্ভিদ। কারণ, মানুষ সমুদ্রদূষণ চালিয়ে যাচ্ছে অব্যাহতভাবে। তা ছাড়া মানুষ প্রকৃতির ওপর অবিবেচকের মতো যে ধরনের আচরণ করছে, প্রকৃতি তারই প্রতিশোধ এখন মানুষের ওপর নিতে শুরু করেছে। তবু মানুষ সচেতন হচ্ছে না। বরং প্রকৃতি ধ্বংসে এখন আরো বেশি সক্রিয়। প্রকৃতির ভারসাম্য নিয়ে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে নেই কোনো ঐকমত্য। বরং বিশ্বমোড়ল বলে পরিচিত দেশগুলো এ ব্যাপারে আগের চেয়ে আরো বেশি একগুঁয়ে।

এমনি পরিস্থিতিতে নানা প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, মানবজাতি কি শিগগিরই অস্তিত্ব হারাবে? বিষয়টি কি অত্যাসন্ন? বলা হচ্ছে, তেমনটি ঘটতে পারে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই। কেউ কেউ আরো আগবাড়িয়ে বলছেন, আমরা অস্তিত্ব হারাতে পারি চলতি এই ২০২০ সালেই। আরো বলা হচ্ছে, মানবজাতির অস্তিত্ব হারানো যে অত্যাসন্ন, তার সাক্ষ্য-প্রমাণ বিস্তর। আমরা এখন যাই করি না কেন, মানবজাতির এই অস্তিত্ব হারানো আর কখনোই ঠেকানো যাবে না।

যারা এমনটি মনে করছেন, তারা এ-ও বলছেন যে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মানবজাতির এই অস্তিত্ব হারানোর বিষয়টি ঘটতে পারে চারটি ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে : সম্ভবত আঞ্চলিকভাবে শুরু হওয়া পারমাণবিক যুদ্ধের মাধ্যমে, ইতোমধ্যেই সৃষ্টি হওয়া ও এগিয়ে চলা জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হওয়ার মাধ্যমে, সম্প্রতি চালু হওয়া ফাইভজি ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কারণে এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে। বলা বাহুল্য, এই চারটি পথের প্রতিটি আত্মপ্রকাশ করতে পারে বিভিন্নভাবে। এ ছাড়া আমাজান বনের ধ্বংস সাধন, বিশ্বকে নানাভাবে দূষিতকরণ ও সামরিক প্রয়োজনে সৃষ্ট ভূপ্রকৌশলও মানবজাতির অস্তিত্ব হারানোর নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে।

সে যা-ই হোক, আজকের এই লেখায় আলোকপাত সীমিত রাখতে চাই বিপন্ন সমুদ্র পরিস্থিতির ওপর। এ ক্ষেত্রে ঘটছে এমন সব ঘটনা, যা অবাক হওয়ার মতো এবং তা বিশ্বাস করতেও বাধে। কিন্তু এটিই বাস্তবতা। মাত্র ৫০ বছর আগে যেটিকে আমরা চিনতাম একটি সাগর হিসেবে। সেটি এখন শুকিয়ে গিয়ে রূপ নিয়েছে এক মরুভূমিতে। আগে নাম ছিল অরাল সাগর। এখন এটি পরিচিত আরালকুম মরুভূমি নামে। আসলে অরাল সাগর ছিল একটি হ্রদ। এর বিশালতর কারণে বলা হতো অরাল সাগর নামে। ১৯৬০ সালের দিকেও এটি ছিল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হ্রদ। এর বয়স ৫৫ লাখ বছর। আয়তন ছিল ৬৮ হাজার বর্গকিলোমিটার। উত্তর দিকে সির দরিয়া ও দক্ষিণ থেকে আমু দরিয়া নদী থেকে পানি এসে মিশত অরাল সাগরের বুকে। কিন্তু মানুষের দুর্বিনীত আচরণের ফলে ১৯৬০ সাল থেকে এটি শুকিয়ে যেতে শুরু করে। ২০০০ সালের দিকে এর ৯৫ শতাংশই শুকিয়ে যায়। এখন এর পুরোটাই শুকিয়ে মরুভূমিতে রূপ নিয়েছে। ১৯২৮ সালের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তুলাচাষের সেচকাজে এর পানি ব্যবহারের জন্য প্রকল্প হাতে নেয়। এর শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে এটি ছিল অন্যতম কারণ। তখন থেকে এর পানি কমে যেতে থাকায় পানিতে লবণের ঘনত্ব রাতারাতি অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যায়। ফলে এর জলজ প্রাণীর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এখান থেকেই অরাল সাগরের ধ্বংসের সূচনা ঘটে। লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া ও পানি কমে যাওয়ায় আবহাওয়ার ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ঝড়-তুফান বেড়ে যায়। স্থানীয়রা সেখানে এই বিরূপ পরিবেশে টিকতে না পেরে অন্য দেশে চলে যায়। অরাল সাগরের এই পরিবেশ বিপর্যয়কে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ এমন কী করছে, যার ফলে আজ আমরা সমুদ্রগুলোও ধ্বংস করে চলেছি, হারাতে বসেছি এগুলোকে?

মানুষ আজ এমন অনেক কর্মকাণ্ডই নির্বিচারে চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে সৃষ্টি হওয়া অতিরিক্ত পরিমাণ কাবর্ন ডাই-অক্সাইড গিয়ে মিশছে সাগর-মহাসাগরে। বিগত দুই দশকে মানবসৃষ্ট কার্বন ডাই-অক্সাইডের ২০-৩০ শতাংশই গিয়ে মিশেছে সাগর-মহাসাগরের পানিতে। এর ফলে সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বেড়ে চলেছে। এর পানিতে বাড়ছে অম্ল বা এসিডের পরিমাণ, কমছে অক্সিজেন। এমনটি বলা হয়েছে, ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এর এক বিশেষ রিপোর্টে। সমুদ্রের এই বিরূপ পরিবর্তন সৃষ্টি করছে নানা নেতিবাচক প্রভাব। তা ছাড়া কার্বন নির্গমনের বাইরে মানুষের আরো কিছু কর্মকাণ্ড রয়েছে, যেগুলো আমাদের সাগরগুলোকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ সম্পর্কে প্রকাশিত হয়েছে ও হচ্ছে অসংখ্য প্রতিবেদন। সার্বিক বিষয়টি যথাসম্ভব সংক্ষেপে তুলে ধরার প্রয়াস পাবো।

সমুদ্রগুলো উত্তপ্ত হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় আছে বেশ কয়েক দশক ধরেই। তবে, ২০০৫ সালের পর থেকে এই উত্তপ্ত হওয়া চলছে অবাধে। অধিকন্তু, উষ্ণায়ন চলছে মহাসাগরের অতল গভীরেও। এই উষ্ণায়ন প্রক্রিয়া সক্রিয় দুই হাজার মিটার গভীরেও। তা ছাড়া এই উষ্ণায়নের হারও বেড়ে চলছে। বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইডও গত দুই দশকে বেশি হারে মিশছে সাগরের পানিতে। কারণ, বায়ুমণ্ডলে ক্রমেই বেড়ে চলেছে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা। এর ফলে কমছে সমুদ্রের উপরিতলের পানির ঘনত্ব। সমুদ্রের এই তেতিয়ে ওঠার প্রভাবে কিছু ক্ষতিকর প্রজাতির প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ট্রপিক্যাল প্রজাতি। এর ফলে বেড়েছে প্রবাল প্রাচীর, প্রস্তরময় প্রাচীর ও সামুদ্রিক তৃণভূমি। এর ফলে পাল্টে যাচ্ছে সমুদ্রের পরিবেশ-প্রতিবেশ কাঠামো। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে সামুদ্রিক প্রাণী ও মাছ সম্পদে ওপর। ফলে আজ আমরা দেখছি সমুদ্রের মাছসহ নানা প্রাণী মরে ভেসে উঠতে। মেরিন হিটওয়েবের ফলে অনেক সামুদ্রিক প্রাণীকে তাদের বসবাসের স্থান পরিবর্তন করতে হচ্ছে বারবার। ফলে মানবজাতির খাদ্য উৎপাদনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

সমুদ্রে বেশি মাত্রায় কার্বন মিশে যাওয়ার ফলে এর পানি আরো বেশি মাত্রায় অম্লীয় বা এসিডিক হয়ে উঠছে। ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রাম অন দ্য স্টেট অব দ্য ওসেন’ (আইপিএসও)-এর বিজ্ঞানীরা ২০১৩ সালে সতর্কবার্তা দিয়েছেন- ৩০ কোটি বছরের মধ্যে এখন সাগর-মহাসাগর সবচেয়ে বেশি গতিতে এসিডিক হয়ে উঠছে। এর প্রভাব পড়ছে উন্মুক্ত মহাসাগরে উপরিতলের ৯৫ শতাংশ পানিতে। এই এসিডিফিকেশন মানুষের ইতিহাসে অভূতপূর্ব। আইপিএসও এর ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনে বলে : ‘মহাসাগরগুলো পৃথিবীর ৯৭ শতাংশ ‘লিভিং স্পেস’ দখল করে আছে। আমাদের পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য রাখায় মহাসাগরগুলো প্রধান ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সেগুলো এখন অতিরিক্ত মাত্রায় হয়ে উঠছে এসিডিক। সুদীর্ঘ সময় ধরে আমরা সমুদ্র ব্যবহার করে আসছি ভুল পথে। কিন্তু সে দিন আর নেই। এখন আমরা পৌঁছে গেছি এক বিপজ্জনক পর্যায়ে। আর ভুল করার সুযোগ নেই। এখন অতিরিক্ত মাত্রায় ফসিল জ্বালানি থেকে কার্বন নির্গমন কমানো অপরিহার্য। তবে শুধু কার্বন নির্গমনই এর একমাত্র সমাধান নয়।’

বায়ুতে ও পানিতে ভারসাম্যপূর্ণ অক্সিজেন থাকা জীবের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। দুর্ভাগ্য, সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সাগর-মহাসাগরগুলোর পানিতেও অক্সিজেনের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে কমে যাচ্ছে। এই অক্সিজেন কমে যাচ্ছে দুটি কারণে : ইউট্রফিকেশন এবং ফসিল জ্বালানি থেকে জমা হওয়া নাইট্রোজেন। ইউট্রফিকেশন হচ্ছে একটি জলাধার মিনারেল ও নিউট্রিয়েন্টসমৃদ্ধ হয়ে ওঠা। এর ফলে পানিতে অতিরিক্ত পরিমাণে শৈবাল জন্মে, যা অতিরিক্ত অক্সিজেন শোষণ করে নেয়। এর ফলে সমুদ্রের পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়, সামুদ্রিক প্রাণীগুলোর জন্য যা অপরিহার্য। মহাসাগরগুলোর ৯০০ ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় এই ইউট্রফিকেশন চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৭০০টি রয়েছে হাইপক্সিয়া (নিচু মাত্রার অক্সিজেন) অবস্থায়। কিন্তু, যেহেতু সমুদ্রের উষ্ণায়ন ডিঅক্সিজেনেশনে সরাসরি প্রভাব ফেলে, তাই তা এখন সাগর-মহাসাগরের ব্যাপক এলাকায় প্রভাব ফেলছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে তা পরিবেশের ওপর আরো ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।

পারমাণবিক বিকিরণের থাবাও সম্প্রসারিত সাগর-মহাসাগরগুলোর ওপর। জাপান সরকার, পারমাণবিক করপোরেশনগুলো ও আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা তথ্য গোপন করলেও বিপুল পরিমাণ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বায়ুমণ্ডলে ছাড়া হচ্ছে জাপানের ফুকুশিমার পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে। প্রশান্ত মহাসাগরেও ফেলা হচ্ছে এই পারমাণবিক বর্জ্য। এর ফলে মারা যাচ্ছে অসংখ্য মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী। এই বর্জ্য ক্রমপ্রসারমান এলাকায় সৃষ্টি করছে দূষণ। ফুকুশিমার তিনটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের আওতায় বলে যে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে, কিন্তু তা সত্য নয় বলে খবরে প্রকাশ। তা ছাড়া মার্শাল দ্বীপে ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পরিচালিত মারাত্মক পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট পারমাণবিক বর্জ্য এখন ফেলা হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরে, এমন অভিযোগও উঠেছে। এখন পর্যন্ত চালু ৭০টি পারমাণবিক অস্ত্র ও ওসেন ফ্লোরে থাকা ৯টি পারমাণবিক চুল্লি এবং সেই সাথে পারমাণবিক যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন দুর্ঘটনাও সাগরে পারমাণবিক দূষণ সৃষ্টি করছে। এগুলোর ফলে সাগরগুলো কী পরিমাণ পারমাণবিক দূষণের শিকার হচ্ছে, তা আমাদের অজানা।

সমুদ্রে ঘটছে নাইট্রোজেন দূষণও। সুস্থ সমুদ্র রাখায় নাইট্রোজেন এক অপরিহার্য উপাদান। সমুদ্রের পানিতে নাইট্রোজেন থাকা চাই ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায়। এই ভারসাম্য নষ্ট হলেই বিপদ। তবে সমুদ্রগুলো এখন এই ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এর কারণ শিল্পকারখানা ও কৃষিকাজের ফলে নাইট্রোজেন দূষণ ঘটছে সমুদ্রের পানিতে। আর এই দূষণই উপরে বর্ণিত ইউট্রফিকেশনের জন্য দায়ী, যা সমুদ্রে সৃষ্টি করছে অসংখ্য ডেড জোন বা হাইপোক্সিয়া। এসব ডেড জোনের সামুদ্রিক প্রাণী এখন বিলুপ্তির পথে। নাইট্রোজেন বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে নাইট্রাস অক্সাইড (N20)। এটি একটি গ্রিনহাউজ গ্যাস, যা কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়েও ক্ষতিকর।

সমুদ্র উপকূলে ও সেই সাথে গভীর সমুদ্রে ব্যাপকভাবে চলছে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ। এর ফলেও সমুদ্রদূষণ চলছে। সেই সাথে তেলের জাহাজ ডুবে কিংবা ছিদ্র হয়ে তেল সমুদ্রের পানি দূষিত করছে। তা ছাড়া তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের কাজে ব্যবহার হচ্ছে জটিল ও অযথাযথ প্রযুক্তি। এসব কাজে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে পরিবেশগত নানা চ্যালেঞ্জ। এর একটি বড় উদাহরণ হচ্ছে বিপির ‘ডিপ ওয়াটার হরাইজনস’ নামের তেল উত্তোলনের তামাশা। এই ওয়েল রিগ ২০১০ সালের ২০ এপ্রিল মেক্সিকো উপসাগরে বিস্ফোরিত হয়। এর ফলে সাগরের পানিতে মিশে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়।

আজ সাগর-মহাসাগর দূষিত হচ্ছে এসবের বাইরে আরো নানা প্রক্রিয়ায়। শিল্প-কারখানা ও কৃষিবর্জ্য, কীটনাশক ও রাসায়নিক দূষণ সমুদ্রে সৃষ্টি করছে হাজারও ডেড জোন। যুদ্ধজাহাজ, বাণিজ্যিক জাহাজ, প্রমোদ তরীও আছে এই দূষণ সৃষ্টিকারীর তালিকায়। সমুদ্রে অতিমাত্রায় মাছ ধরা সৃষ্টি করছে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা। বটম ট্রলিং, ব্লাস্ট ফিশিং, সায়োনাইড ফিশিং, গোস্ট ফিশিং ও একুয়া কালচার প্রক্রিয়া চলছে পরিবেশ ধ্বংস করে। সমুদ্রে ব্যাপকভাবে রাবিশ ডাম্পিং জন্ম দিয়েছে ‘গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ’ প্রপঞ্চের। সমুদ্রগুলোর বিনাশ সাধন করা হচ্ছে স্যান্ড মাইনিংয়ের মাধ্যমে। বন্দর ও পোতাশ্রয় ড্রেজিংয়ের নামে ধ্বংস করা হচ্ছে সমুদ্র। ক্রমবর্ধমান শব্দদূষণও বিনষ্ট করছে সমুদ্রের স্বাভাবিক পরিবেশ। আজকের দিনের দাবানলও সমুদ্রের জন্য ক্ষতিকর। এসবের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে গেলে রচিত হতে পারে সমুদ্রদূষণ বা বিনাশ সম্পর্কিত এক সমুদ্রকাব্য। সমুদ্র হারিয়ে গেলে নিশ্চিত এই পৃথিবী হারাবে মানুষের বসবাসযোগ্যতা। অতএব মানবজাতির সবাইকে এ নিয়ে নতুন করে ভাবার ও কাজে নামার এখনই চরম মুহূর্ত।


আরো সংবাদ



premium cement
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের ট্রাকচাপায় নিহত ১৪ : তদন্ত কমিটি গঠন, চালক-হেলপার গ্রেফতার নেতানিয়াহুর একগুঁয়েমির কারণে মধ্যস্তকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাবে কাতার! আফ্রিদির সাথে বিবাদের বিষয়ে কথা বললেন বাবর বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত অধ্যাপক মাযহারুল ইসলামের বাসভবনে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইউক্রেনের ২০টি ড্রোন, ২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্কিৃয় করল রাশিয়া তালেবানকে আফগান মাটি অন্যদের ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের। গত দুই দিনের রেকর্ডের পর চুয়াডাঙ্গায় আজও বইছে তীব্র তাপদাহ

সকল