২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইরাক কি বিভক্ত হবে?

মোক্তাদা আল সদর ও সার্গেই ল্যাভরভ - ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন, ইরাককে বিভক্ত করার যেকোনো প্রক্রিয়াকে রাশিয়া সমর্থন দেবে না; বরং প্রতিহত করবে। সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “ইরাককে শিয়া ও সুন্নি দু’টি অঞ্চলে বিভক্ত করা হবে এবং কুর্দিরা যা চায় তাই তারা পাবে।” রাশিয়া বলেছে, ‘ওরা কিভাবে থাকবে সেটি নিজেরাই নির্ধারণ করবে।’ দেখা যাচ্ছে, ইরাক বিভক্তির প্রকল্পটি যুক্তরাষ্ট্র ২০০৬ সালেই ঘটা করে জানান দিয়েছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমসেও ফলাও করে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ইউনিটের প্রধান জেনারেল রেমন্ড বলেছেন, ‘ইরাককে ভাগ করা হতে পারে।’ তিনি ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইরাকে সেনা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইরাকের ‘বদর’ সংস্থার প্রধান হাদি আল আমেরি তিরস্কার করে বলেন, ‘ইরাক, সিরিয়া বা যেকোনো আরব দেশ বিভাজন করা জিওনিস্ট বা ইহুদিবাদী পরিকল্পনা। এই প্রকল্প এজন্য হাতে নেয়া হয়েছে যেন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল আরো শক্তিধর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।’

বহু বছর ধরে ইরাকে বিভেদ লেগেই আছে। সেখানে বিভিন্ন উপজাতি, ধর্মীয় মতবাদে বিভক্ত দল-উপদল, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বিভক্তিকে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো কাজে লাগিয়েছে। বিভেদকে কাজে লাগিয়ে ‘রিসোর্স’কে হাত করার ফিকির করছে। আরবি একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করেছে, কিভাবে আমেরিকা ইরাককে খণ্ডিত করতে চায়। এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরোধকে ব্যবহার করে ইরাককে বিভক্ত করার নকশা করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ইরাকের আনবার প্রদেশে একটি সুন্নি স্টেট বানাতে চায়। জর্দানের আম্মানে আমেরিকা ও আনবার প্রদেশের নেতাদের মাঝে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা ও সামরিক ফোর্স নিয়ে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা: আলী জাবৌরী ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবু রাখিফ চমৎকার তথ্য দিয়েছেন। তাদের মতে, পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশল ও উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিতে নৃতাত্ত্বিক ‘ক্যান্টনমেন্ট’ তৈরির প্রয়োজনীয়তা বোধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকাশ্যে ইরাকের অখণ্ডতা বজায় রাখতে, যেকোনোভাবে ইরাকের সার্বভৌমত্বের ক্ষতি না করতে এবং আইএস দমনে সন্ত্রাসবিরোধী কোয়ালিশন করতে সব ‘ঠিকঠাকভাবে’ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। কুর্দির মতো যদি ‘সুন্নি রিজিওন’ বানানো হয়, তবে আইএসের বিরুদ্ধে আর যুদ্ধ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ তখন একটি রাজনৈতিক চাল হিসেবে ব্যবহৃত হবে এবং সুন্নি রিজিওনে আইএস পরিপুষ্ট হতে পারে। তখন শিয়া-সুন্নি বিরোধ রাজনীতির খোলস ছেড়ে যুদ্ধের ময়দানে ছুটে যাবে। সিরিয়ায় বিভিন্ন দল উপদলে যে যুদ্ধ হচ্ছে ইরাকে সেই দল-উপদলের নৃতাত্ত্বিক লড়াই তীব্রতর রূপ পরিগ্রহ করবে।

আল আনবার প্রদেশ সুন্নি সেনারা মুক্ত করেছিল। এরা ইরাকের নিয়মিত সেনা। তাদের পৃথক করা হলে ইরাকি সেনাবাহিনীও পৃথক হয়ে পড়বে। আবার সুন্নি সেনাদের ভেতরও কয়েকটি বিভক্তি রয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, আল হামজা ব্রিগেডের কথা বলা যায়। যারা ইরাককে বিভক্ত করতে চায় তারা ইরাকি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে না। তবে আল হামজা বা অনুরূপ কোনো দল-উপদল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আল আনবারে কোনো সুন্নি ফোর্স তৈরি করে ফেলার সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত এখনো পাওয়া যায়নি। অনুরূপভাবে ‘শিয়া ফোর্স’, ‘কুর্দি ফোর্স’- এসব বিষয়ও সংবাদপত্রের ‘লিকেজ’ বলে ইরাকি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে। সুন্নিদের সাথে বৈঠক প্রসঙ্গে বলা হচ্ছে আইএস বিদায় নেয়ার পর সুন্নি এলাকায় জনবসতিতে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেসব উন্নয়নের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অর্থ, নিরাপত্তা, উপকরণ ও কৌশল দরকার; সেজন্য বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে। এগুলো যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কোনো সুন্নি ফোর্সের কার্যক্রম নয়। প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ইরাককে তিন খণ্ডে ভাগ করার তুর্কি-মার্কিন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। আইএস নির্মূল করার পরই এই কাজ শুরু হবে। এখানে উল্লেখ্য, মার্কিন কোয়ালিশনের সাথে তুরস্ক কাজ করছে না। কুর্দি সৃষ্ট নিরাপত্তা বিষয়ে সুরাহা হলে তুরস্ক ইরাকের সার্বভৌমত্বে আঘাত করে এমন কোনো কাজ করবে না। তা ছাড়া ইরাকি জনগণের কাছে এমন বিষয়গুলো উঠে এসেছে এবং তারা অনেক সজাগ। তাই দেশ বিভক্ত হওয়াকে ইরাকি জনগণ প্রতিহত করবে বলেই মনে হয়। অবশ্য মনে রাখতে হবে, ইরাকি জনগণ সবাই ঐক্যবদ্ধ নয়। উপদলীয় বিরোধ চরমে। ইরাকের শিয়া, সুন্নি ও কুর্দিদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যদি বর্তমানের মতো ভিন্ন ভিন্ন পলিসি গ্রহণ করে তবে ইরাকি জনগণ তা সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এত দিনের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ইরাকি জনগণ এখন অনেক সোচ্চার। শুধু ইরাকে নয়, সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে বহু শিয়া রয়েছে, তুরস্কেও শিয়া রয়েছে অনেক। তাই ইরাকি শিয়াদের নিয়ে কোনো পৃথক পরিকল্পনা করা হলে তা সৌদি আরবসহ কয়েকটি পার্শ্ববর্তী দেশে ছড়াবে এবং খণ্ডিত প্রকল্প সোজা পথে এগোবে না।

কয়েক দিন আগে ইরাকের পার্লামেন্ট বিদেশী সেনাবাহিনীকে সে দেশ ছাড়তে বলেছে। ‘বিদেশী সৈন্য’ বলতে আমেরিকার সেনাবাহিনীকে বুঝানো হয়েছে। ইরাকি জনগণ বর্তমানে রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভরত। জনগণ ছাড়াও আরো কিছু শক্তিধর পক্ষ রয়ে গেছে- শিয়া, সুন্নি ও কুর্দিরা। ইরাকি আমজনতা এখন আমেরিকার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। কিছু সুন্নি নেতা ও কুর্দি ফ্রন্টলাইনার যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের বিরোধী।

সুন্নি মজহাবের একটি রাজনৈতিক বলয় রয়েছে : আল বান্না কোয়ালিশন। তারা কুর্দি অঞ্চলের কাছাকাছি একটি সুন্নি অঞ্চল গড়ে তুলতে চায়। এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে আরব আমিরাতে আমেরিকার ডেলিগেশনের সাথে বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠক প্রমাণ করে যে, পুরো বিষয়টি আমেরিকাই পরিচালনা করছে। কুর্দিদের মতো সুন্নি স্বায়ত্তশাসিত একটি অঞ্চল গড়ে তুললে, সুন্নিরা মনে করে এতে তাদের নিরাপত্তা থাকবে। সাদ্দাম হোসেনের করুণ পরিণতির পর ইরাকি সুন্নিরা বিভিন্ন পর্যায়ে নির্যাতন সয়েছে এবং দৃশ্যত দিশাহারা হয়ে পড়েছে। তবে এরকম স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তৈরি করা আদৌ সহজ কি না। ইরাকি সংবিধানে অবশ্য এ রকম ফেডারেল অঞ্চল করার বিধান রয়ে গেছে। সংবিধানের ১১২ ধারায় ফেডারেল সিস্টেম ও গণপ্রজাতন্ত্রী ইরাকের ধারণা দেয়া আছে। ১১৩ ধারায় নতুন আঞ্চলিক প্রশাসন গড়ে তোলার কথা বিধৃত হয়েছে। এর ভিত্তিতে কুর্দি রিজিওন তৈরি হয়েছে এবং স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুর্দি প্রকল্পে আমেরিকা ও ইসরাইল সমর্থন ও সাহায্য দিচ্ছে। ইরাকের সংবিধানের ১১৫ ধারায় নতুন অঞ্চল সৃষ্টি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। যেমন এক-তৃতীয়াংশ কাউন্সিল সদস্য নতুন রিজিওন গঠনের প্রস্তাব আনতে পারেন। ফেডারেল ব্যবস্থা বলবৎ থাকার জন্য সংবিধানের ধারাগুলো রয়েছে। তবে এসব সুযোগ রাখা হয়েছে ইরাকের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিরসনের জন্য; শিয়া, সুন্নি ও কুর্দি সমস্যার জন্য। বর্তমানে বাইরের কিছু শক্তি ফেডারেল ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ইরাককে আরো অস্থির ও ভঙ্গুর করার চেষ্টা করছে; যা বৃহত্তর জনগণ চায় না। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ‘সুন্নি রিজিওন’ প্রতিষ্ঠা করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইরাকি পার্লামেন্ট আমেরিকার সৈন্য বিতাড়নের লক্ষ্যে বিল পাস করেছে। এটা জানা কথা যে, ঐক্যবদ্ধ ইরাকিদের চেয়ে বিভক্ত ইরাকিদের শাসন করার পুরনো কৌশল প্রয়োগ করাই বিদেশীদের কাছে উত্তম। সুন্নি অঞ্চল গঠিত হলে আইন আল আসাদ বিমানবাহিনীর বন্দর পরিচালনা সহজ হবে। কাছেই আছে সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ আল আনবার প্রদেশ। এই কাজের ফলে আরব বিশ্বের সুন্নি দেশগুলোর সহায়তা ও সমর্থন আমেরিকা পাবে। অবশ্য আমেরিকার এই পথযাত্রায় অনেক অসুবিধাও রয়েছে। যেমন- বেশির ভাগ ইরাকি জনগণ কোনো প্রকার বিভক্তি চায় না। ইরাকে আমেরিকাবিরোধী বিক্ষোভ এখন তুঙ্গে। নেতারা কখনো সুন্নিদের জন্য পৃথক রাষ্ট্রের চিন্তাভাবনা করেননি। আমেরিকানরা ইরাকে থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এখন বাস্তবায়নের পালা। ইরানের কুদস ফোর্সের জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং ইরাক পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের ডেপুটি কমান্ডার আবু মাহদি আল মুহানদিসের হত্যার পর ইরাকের শিয়া নেতা মোক্তাদা আল সদর পরিষ্কার ভাষায় বলে দিয়েছেন, মাহদি ফোর্স বা জয়েশ আল মাহদি আমেরিকানদের যেখানে পাবে, সেখানে তাদের প্রতিরোধ করবে।

২৪ জানুয়ারি ২০২০ তারিখের বিক্ষোভ তাৎপর্যপূর্ণ। বহু দিন ধরে ইরাকি জনগণ বিক্ষোভ করে আসছে। বিক্ষোভে নানা ভাষা নানা দাবি। এবারের দাবি ছিল, আমেরিকার সৈন্যরা দেশ ছাড়ো। ওই বিক্ষোভে প্রচুর জনসমাগম হয়েছে। বলা হচ্ছে ‘মিলিয়ন ম্যান’-এর সমাবেশ। ইরাক ত্যাগের বিল পাস হওয়ার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেছিলেন, ‘আমেরিকার সেনারা ইরাক ছেড়ে যাবে না।’ এখানে জনগণের সমর্থন নেই আমেরিকার প্রতি। তাই এই বিক্ষোভ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কুর্দি রিজিওন কর্মকর্তারা যারা কুর্দি নেতা বারজানির সমর্থক, চেয়েছেন আমেরিকার সেনারা থাকুক। ইরাকে ও প্রধানত কুর্দিদের রাজধানী ইরবিলে।

তিন মাস ধরে ইরাকের রাজপথ অশান্ত। বিভিন্ন শহর-উপশহরে চলছে প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ। মনে হচ্ছে, ইরাকে যেন একধরনের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। ব্যাপক দুর্নীতি, জীবনযাপনের নিম্নমান, বেকারত্ব, নি¤œমানের সেবা খাত নিয়ে এই আন্দোলন শুরু হলেও তা ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটেছে। তা ছাড়া বাথ পার্টি, পশ্চিমা-ঘেঁষা দেশ সৌদি আরব, আমিরাতের নাক গলানো এসব বিষয়ও বিক্ষোভকারীদের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদেশী এজেন্টরা এই বিক্ষোভকে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করে লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে এবং বিদেশী সেনাদের অবস্থানে সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। তথাপি সাম্প্রতিক বড় বিক্ষোভ আমেরিকানদের জন্য বড় ধরনের আঘাত। গত দুই দশকে সে দেশে এমন জনরোষের কবলে তারা পতিত হয়নি।

শিয়া নেতা মোক্তাদা আল সদর আমেরিকান দূতাবাসের বিরুদ্ধে আবারো উত্তপ্ত ভাষণ দিয়েছেন। তিনি দেশপ্রেমিকদের একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মোক্তাদা ইরাকে বেশ জনপ্রিয় এবং তার কথা ও কাজকে ‘সদরি ভাষা’, ‘সদরি আন্দোলন’ নামে অভিহিত করা হয়। এই আন্দোলন ও বিক্ষোভে কয়েক লাখ মানুষ সমবেত হয়েছিল সম্প্রতি। সদর তার নতুন বক্তৃতায় ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের প্রধান আবু মাহদি ও ইরানের কাসেম সোলাইমানির হত্যার আরো প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ইরাকে আমেরিকান দূতাবাস বন্ধ করে দিতে বলেন। নতুবা ইরাকের আকাশ আমেরিকার জন্য বন্ধ করে দেয়ার জন্য সরকারকে চাপ দেবেন বলে জানান। হুঁশিয়ারি দিলেন, আমেরিকা কথা না শুনলে তাকে ‘দখলদার বাহিনী’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে এবং সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইরাকি সেন্টার ফর ওয়ার স্টাডিজের ডাইরেক্টর সাঈদ আল হাশমী জানান, তার ওই সমাবেশে ২.৫ মিলিয়ন নারী-পুরুষ সমবেত হয়েছিল। ওই জ্বালাময়ী ভাষণের পর আমেরিকার দূতাবাসে কয়েক দফা রকেট হামলা হয়েছে।

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আক্রমণ চালিয়েছিল। এই আক্রমণ সম্পর্কে ‘এশিয়া টাইম’স মন্তব্য করেছিল, This war is a self-destructive cancer growing inside US neo-imperialism. মার্কিন সিনেট কমিটির সিনিয়র স্টাফ মেম্বার ক্লিফোর্ড তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, বুশের আগ্রাসন যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধুছাড়া করবে। আমেরিকার নব্যরক্ষণশীল বা নিউকনদের হিটলারের নাৎসিদের সাথে অনেক সময় তুলনা করা হয়। আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও হোয়াইট হাউজের ওপর তাদের অনেক প্রভাব রয়েছে। রাশিয়া আমেরিকার ইরাক আগ্রাসনকে সমর্থন দেয়নি। এই যুদ্ধের কারণে ইরাকে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে এবং সন্ত্রাস ও মৌলবাদী শক্তির উত্থান হয়েছে। আলোচিত আইএস এমন এক উদাহরণ। এখন কোয়ালিশন ফোর্স ইরাকে আরো হামলা চালাতে পারে, সোলাইমানির মতো আরো কিছু নেতার চরম পরিণতি হতে পারে; একই সাথে, ইরাকি কুর্দি ও ইরাকি সুন্নিরা পৃথক রিজিওনের জন্য চাপ দিতে পারে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement