১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লেগ স্পিনারের গুরুত্ব বোঝালেন রিশাদ

-

বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটার অঙ্কুরেই বিনাশ হয়েছেন। প্রতিভার আবির্ভাব দেখিয়ে ঝড়ে পড়েছেন শুকনো পাতার মতো। রিশাদ যেন হারিয়ে না যান সেই প্রত্যাশাতেই থাকবেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা। বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বাকি আরো তিনটি ম্যাচ। সব বাধা পেরিয়ে সুপার এইটে যেতে রিশাদকেই রাখতে হবে বড় ভূমিকা। টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রাখলে দলের জন্য একজন লেগ-স্পিনার কতটা মূল্যবান হতে পারে, সে প্রমাণ দিয়েছেন রিশাদ হোসেন। লেগ-স্পিন শেখাটা একটা কঠিন শিল্প। তবে প্রায় সব দেশই লেগ-স্পিনারদের সমর্থন করে। এই ধরনের স্পিনাররা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট শিকারে অবদান রাখতে পারেন।
একজন বিশেষজ্ঞ লেগ স্পিনারের জন্য বাংলাদেশের হাহাকার অনেক দিনের। জুবায়ের হোসেন লিখন থেকে শুরু করে, তানবির হায়দার ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে দিয়েও সেই শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশ। তবে সেই চেষ্টা সফল হয়নি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর রিশাদ হোসেনের মতো একজনকে পেয়েছে বাংলাদেশ। তিনিই জাতীয় দলের লেগ স্পিনারের চাহিদা মেটাচ্ছেন। এক সময় ঘরোয়া ক্রিকেটেও তার একাদশে জায়গা হয়নি। তবে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে বিশ্বকাপ দলেও জায়গা করে নিয়েছেন। বোলিংয়ের সাথে যোগ করেছেন বোলিংও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক রিশাদই। শ্রীলঙ্কাকে ১২৪ রানে আটকে ফেলতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। বল হাতে ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন রিশাদ। ম্যাচ শেষে তার হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
রিশাদ একটি স্পেলেই মূলত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। ইনিংসের ১৫তম ওভারে এসে প্রথম বলেই নিয়েছেন চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট। পরের বলে রিশাদের শিকার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। তবে হ্যাটট্রিক না হলেও এরপর আর বড় স্কোর গড়ার সুযোগ পায়নি শ্রীলঙ্কা। ১৭তম ওভারে এসে তিনি আউট করেন আক্রমণের অপেক্ষায় থাকা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে। ফলে শেষের দিকেও ঝড় তোলার সুযোগ হাতছাড়া হয় শ্রীলঙ্কার।
ম্যাচ শেষে রিশাদ বলেছেন নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছেন। টানা দুই উইকেট নিয়েও স্নায়ুচাপ ধরে রেখেছিলেন। রিশাদ বলেছেন, ‘পিচ ভালো ছিল। আমি নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করেছি। নিজের শক্তির জায়গায় অটুট থেকেছি।’ হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনার বল করা নিয়ে বলেন,‘স্বাভাবিক বলই করার চেষ্টা ছিল, সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়েছি।’
ক্রিজে দুই শ্রীলঙ্কান দুই সেট ব্যাটার থাকায় রান দেয়ার সম্ভাবনা ছিল রিশাদের। কিন্তু রিশাদের উপর আস্থা রেখেছিলেন অধিনায়ক শান্ত। তিনি জানতেন, সব সময়ই লেগ স্পিনারদের উইকেট শিকারের সুযোগ থাকে। শান্ত বলেন, ‘সে আমাদের উইকেট শিকারি বোলার। আমাদের ঐ সময় উইকেট দরকার ছিল। এ জন্য তাকে আক্রমণে এনেছি এবং সে প্রত্যাশা পূরণ করেছে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সে ভালো করছে। আশা করি সে এই পারফরম্যান্স অব্যাহত রাখবে। তেমনটা হলে, সে হবে আমাদের দলের জন্য বড় সম্পদ। কারণ একজন লেগ-স্পিনার যে কোনো পরিস্থিতিতে আপনাকে উইকেট এনে দিতে পারে।’
রিশাদ বলেন, প্রতিপক্ষ কে এবং ব্যাটার কে, সেসব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমি সব সময় দলের জন্য অবদান রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা এবং সঠিক লাইনে বল করি। আমি জানি, আমি যদি ভালো বল করি তাহলে ডান-হাতি বা বাঁ-হাতি, যেমন ব্যাটার হোক না কেন উইকেট পাওয়া আমার জন্য সম্ভব হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement