১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শততম হারের রেকর্ডে প্রথম বাংলাদেশ

শততম হারের রেকর্ডে প্রথম বাংলাদেশ -

‘আমার মনে হয়, স্কিলে কোনো সমস্যা নেই। মানসিকতা ও মনোবৃত্তি বদলাতে হবে আমাদের। গত দুই ম্যাচে আমরা তা করতে পারিনি ও ভালো খেলতে পারিনি। আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক।’
-বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত


ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সহযোগী সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে যৌথ আয়োজক। আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরেছে বাংলাদেশ। হিউস্টনে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টাইগারদের হারিয়ে বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছিল বিশ্বকাপের স্বাগতিকরা। টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজও নিশ্চিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। দ্বিতীয় টি-২০তে গত পরশু হেরে শুধু সিরিজ হারের লজ্জাই পায়নি বাংলাদেশ, আরেকটি বড় লজ্জার রেকর্ডে নাম উঠিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্ত-সাকিব আল হাসানরা। টি-২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ১০০তম ম্যাচ হারের রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচ।
বাংলাদেশের ক্রিকেট কি দিন দিন এগোচ্ছে নাকি পেছাচ্ছে? সিরিজ হারের পর এই প্রশ্নটা আবারো জেগে উঠেছে নতুন করে। একটি ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যেতেই পারে। তাই বলে টানা দুই ম্যাচে এমন খর্বশক্তির দলের বিপক্ষে হার? ১৬৮টি টি-২০ ম্যাচ খেলে ১০০টিতেই হেরেছে টাইগার বাহিনী। ১৯৩ ম্যাচে ৯৯টি হেরে পরাজয়ের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ম্যাচ হিসেবে ক্যারিবীয়দের পরাজয়ের শতকরা হার কম। তারা হেরেছে ৫১.২৯ শতাংশ ম্যাচ, বাংলাদেশ সেখানে হেরেছে ৫৯.৫২ শতাংশ।

শ্রীলঙ্কা ১৮৯ টি-২০ খেলে হেরেছে ৯৮টি। নিউজিল্যান্ড ২১৬ ম্যাচে ৯০ হার (৪১.৬৬)। জিম্বাবুয়ে ১৪৫টির মধ্যে হেরেছে ৯৫টি। এই পাঁচ দলের শতাংশ হিসেবে হারের পরিসংখ্যানে একমাত্র জিম্বাবুয়ের ওপরে অবস্থান বাংলাদেশের।
হিউস্টনে দ্বিতীয় টি-২০তে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান সংগ্রহ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৯.৩ ওভারে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান করে বাংলাদেশ। ছয় রানে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি সিরিজও নিজেদের করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক টি-২০তে এর আগে কমপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ৯ বার হেরেছে বাংলাদেশ। যার কোনোটিই আইসিসির সহযোগী সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে সে অর্থে নতুন এক অভিজ্ঞতাও হলো বাংলাদেশের। আন্তর্জাতিক টি-২০তে টাইগারদের কোনো ম্যাচ হারানো ১৫তম দল যুক্তরাষ্ট্র। সহযোগী সদস্য হিসেবে বাংলাদেশকে হারানো পঞ্চম দল তারা। ২০০৯ টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে প্রথমবার সহযোগী সদস্য হিসেবে হারালেও এখন পূর্ণ সদস্য আয়ারল্যান্ড।

এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ পরাজয়ের পরও খুব ভালো সুযোগ আছে বলে মনে করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার মতে, এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ থেকে বাংলদেশের প্রাপ্তির সুযোগ ছিল কমই। অবশ্য এখনো ইতিবাচক কিছুর আশায় আছেন তিনি। সিরিজের শেষ ম্যাচে ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমে ভালো কিছু করতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
প্রথম ম্যাচে ১৫৩ রানের পুঁজি নিয়ে পাঁচ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের সেই জয়কে হয়তো ‘ফ্লুক’ বা ‘অঘটন’ বলা যেত। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ১৪৪ রানের পুঁজি নিয়েও জিতে যায় তারা। টি-২০তে বাংলাদেশ ঘাটতির জায়গা নিয়ে আলোচনা অবশ্য বহুদিনের। তবে শান্ত বরাবরের মতোই স্কিলের ঘাটতির ব্যাপারটি মানতে চাইলেন না ম্যাচ শেষে। দ্বিতীয় ম্যাচে হারের জন্য অধিনায়ক দায় দিচ্ছেন মাঝের সময়ের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে।
‘আমার মনে হয়, স্কিলে কোনো সমস্যা নেই। মানসিকতা ও মনোবৃত্তি বদলাতে হবে আমাদের। গত দুই ম্যাচে আমরা তা করতে পারিনি ও ভালো খেলতে পারিনি। আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক। মাঝের ওভারগুলোয় আমরা প্রায় প্রতি ওভারেই উইকেট হারিয়েছি। ম্যাচ হারার মূল কারণ এটিই।’
সিরিজ হারের পর এখন বাংলাদেশের সামনে ঝুলছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার খড়গ। বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য আয়োজিত সিরিজ এখন রূপ নিয়েছে দুঃস্বপ্নে। শান্ত অবশ্য শেষ তথা আজকের ম্যাচে ভালো কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন এখনো।
‘সত্যি বলতে, আমরা ভালো খেলতে পারিনি। তবে আমার মনে হয়, খুব ভালো সুযোগ আছে পরের ম্যাচে আমাদের। খুব ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে। আশা করি, আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব।’

 


আরো সংবাদ



premium cement