১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হারের ম্যাচে প্রাপ্তি জ্যোতির ফিফটি

হাফ সেঞ্চুরির পর টাইগ্রেস অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি : বিসিবি -

ধারহীন বোলিং, হতশ্রী ফিল্ডিং, আকর্ষণীয় হয়নি ব্যাটিং। তিন বিভাগেই যদি হয় ম্যাড়ম্যাড়ে তাহলে সে ম্যাচ জয়ের দুঃসাহস কিভাবে করবে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলীয় শতরান পার করতে পেরেছিল টাইগ্রেসরা। গতকালও পেরেছে। এই কৃতিত্বের হকদার অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। তার হাফসেঞ্চুরিতে ভর করেই ১০০ পার করেছে বাংলদেশ নারী ক্রিকেট দল। জবাব দিতে নেমে ৮ উইকেটে ১০১ রান করেছে বাংলাদেশ। তার আগে ভারত নারী দল করেছে ৭ উইকেটে ১৪৫। ফলে ৪৪ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে রইল হারমানপ্রীতের দল। আগামীকাল একই ভেনুতে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে উভয়দল।
টস হেরে বোলিং ও ফিল্ডিং এই দুইয়ে ইনিংসের শুরুর ১৩ ওভারে ভারতের কাছে খুব একটা পাত্তা পায়নি বাংলাদেশের মেয়েরা। ১২.৫ বলে দুই উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তুলে হারমানপ্রীতের দল। পরে শেষ দিকে রাবেয়া খানের ঘূর্ণিতে ম্যাচ কিছু সময়ের জন্য নিজেদের দিকে নিতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা। অবশ্য শুরুর সেই দাপট ধরে শেষে এসে ভালো সংগ্রহে পৌঁছে ভারত। সাত উইকেটে তাদের সংগ্রহ ১৪৫ রান। জয়ের জন্য সফরকারীদের ১৪৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছে ভারত।
শেষ সাত ওভারে স্রেফ বলের সমানই রান তুলতে পেরেছে ভারতের নারী ক্রিকেট দল। অর্থাৎ, ১৩ ওভারে ১০৩ রান থেকে শেষ ৪২ বলে ৪২ রান তুলতে পেরেছে সফরকারীরা। এর মধ্যে শেষ ওভারে স্রেফ ২ রান দিয়ে জোড়া উইকেট শিকার করেছেন মারুফা আক্তার।
সেই চাপ সামলে ইয়াস্তিকা ভাটিয়াকে নিয়ে ৪৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন শেফালি ভার্মা। অষ্টম ওভারে এবার শেফালিকে ফেরান রাবেয়া। পরে দারুণ ছন্দে ইয়াস্তিকাকেও ফিরিয়েছেন তিনি। চার ওভারে ২৩ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন রাবেয়া। মারুফা দু’টি, ফারিহা তৃষ্ণা ও ফাহিমা খাতুন একটি করে উইকেট নেন।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগতে হয়েছিল বাংলাদেশের নারী দলকে। ভারতের বিপক্ষেও তাদের সিরিজ শুরু হলো সেই একই ব্যর্থতা দিয়ে। টপ অর্ডার ব্যাটারদের দৈন্যতায় ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরু হলো হার দিয়ে। বিশেষ করে প্রথম পাওয়ার প্লে ঠিকমতো ব্যবহার করতে না পারার খেসারত দিয়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
জবাবে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ওপেনার দিলারা আক্তারকে হারায় বাংলাদেশ। দুইয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন লম্বা সময় ধরে অফ ফর্মে থাকা সোবাহানা মোস্তারি। গতকালও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। শুরুতে দৃষ্টিনন্দন একটি চার মারলেও রেনুকা সিংহের সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে ক্লিন বোল্ড হন টপ অর্ডার এই ব্যাটার। আউট হওয়ার আগে খেলেন ছয় রানের ইনিংস। দলীয় ২৯ রানের মাথায় মুর্শিদা খাতুন আউট হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লেতেই মূলত বাংলাদেশ দল হেরে যায়। ছয় ওভার তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩০ রান। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ফাহিমা আউট হলেও পুরোপুরিই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এক প্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা চালিয়ে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক। কিন্তু অপরপ্রান্তে কেউই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে পারেননি। নিগারের দারুণ একটি ইনিংস বৃথা যায় সতীর্থদের দায়িত্বহীনতায়। শেষ ওভার লম্বা শট খেলতে গিয়ে পূজার বলে বোল্ড হন জ্যোতি। তার আগে অবশ্য টি-২০ ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। আউট হওয়ার আগে খেলেন ৪৮ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৫১ রানের ইনিংস।
শেষ ওভারের প্রথম বলে নিগার আউট হওয়ার পর অতিরিক্ত খাত থেকে একটি রান এবং মারুফার ব্যাট থেকে আসে একটি রান। পূজার নো বলে পাওয়া ফ্রি হিটেও রান নিতে ব্যর্থ হন মারুফা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১০১ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। রেনুকা সিং চার ওভারে ১৮ রানে তিনটি উইকেট নেন। এ ছাড়া পূজা দু’টি, শ্রেয়াঙ্কা পাতিল, দীপ্তি শর্মা ও রাধা যাদব একটি করে উইকেট নেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement