২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দ্রাবিড় থেকে বাংলাদেশের দীপু

ব্যাটার শাহাদাত হোসেন দীপু -

টেস্ট ফরম্যাটে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকে থাকার কারণে ভারতে রাহুল দ্রাবিড়ের নামটি হয়ে গিয়েছিল ‘দ্রাবিড় দ্য ওয়াল’। টি-২০তে যেমন চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটালে অটোমেটিক ক্রিস গেইল কিংবা আন্দ্রে রাসেলের নাম চলে আসে। নিখুঁত ব্যাটিংয়ের কৌশল, ব্যাটিং টেম্পারমেন্ট আর উইকেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকার কারণে দ্রাবিড় ছিলেন বিশেষায়িত। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামের ইস্পাহানি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হয়েছিলেন সদ্যই টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পাওয়া শাহাদাত হোসেন দীপু। নিখুঁত ব্যাটিংয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছিল অ্যাকাডেমির পুরোটা জুড়ে। যে কারণে অনেকে দীপুকে অনেকেই রাহুল দ্রাবিড় বলে ডাকতেন। বিগড়ে যাননি তিনি। নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়ে গেছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে। অ্যাকাডেমির দ্রাবিড় থেকে বাংলাদেশের দীপু।
৯ বছর বয়সে বাবা আবদুস সবুরকে হারিয়েছেন দীপু। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাড়িচালক সবুর ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। বাবার মৃত্যুতে অভাব অনটনের সংসারে তাকে সর্বোচ্চ সহায়তা করেছেন তার বড় ভাই। এলাকায় ভালো খেলার সুবাদে ২০১৩ সালে বিকেএসপিতে ট্রায়াল দিয়েও সুযোগটা পাওয়া হয়নি। হতাশ দীপুকে বের করে এনেছিলেন সুদীপ্ত দেব নামের চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার লিগের এক ক্রিকেটার। তার হাত ধরে ইম্পাহানি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে পথচলা শুরু। অনূর্ধ্ব -১৬ বিজয় দিবস টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে চট্টগ্রাম অনূর্ধ্ব -১৪ বিভাগীয় দলে ডাক পান। এরপর অনেকটা পথ পেরিয়ে ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে জায়গা করে নেন, জিতেছেন যুব বিশ্বকাপও। দীপুর কথায়, ‘সুদীপ্ত ভাই ছিল, সে ক্রিকেটে অনেক হেল্প করছিল। জিনিসপত্র থেকে শুরু করে সবকিছু দিয়ে। মূলত ওখান থেকেই আস্তে ধীরে অগ্রসর।’
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট, বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়েও নিয়মিত পারফর্ম করেছেন। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে ছিলেন। নিখুঁত ব্যাটিংয়ের সাথে ধৈর্যের পরীক্ষায়ও পাস করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২০ ম্যাচে ৩৬.১৪ গড়ে করেছেন এক হাজার ২৬৫ রান। যেখানে ১০ হাফ সেঞ্চুরির সাথে রয়েছে দুটি সেঞ্চুরিও। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সমান তিনটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি করা দীপুর রান এক হাজার ১৫০। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা ৭৩ রানের ইনিংস মনে ধরেছিল হাবিবুল বাশার সুমনের। সিরিজ শেষ হওয়ার পর সেই বাশারের কাছ থেকেই পেয়েছেন জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর। টেস্ট দলে সুযোগ পেয়ে বেশ খুশি দীপু, ‘সবারই স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে খেলার। ডে বাই ডে আরো যাতে ইম্প্রুভ করতে পারি, সে চিন্তা আছে। মানসিকভাবে আরো স্ট্রং হওয়ার চেষ্টা করব। এটাই আমার কাজ। যতই, ইম্প্রুভ করব, আমার জন্য খেলাটা ইজি হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement