২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জাপানকে হারিয়ে ইতিহাসের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

-

এক স্বপ্নভঙ্গ। এবার বিকল্প হিসেবে আরেক ইতিহাস গড়ার হাতছানি। ওমানের সালালায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২১ হকি দলের আগমন ছিল বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার জন্য। গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ১-৩ গোলে হেরে সে আশায় গুড়ে বালি। এরপর ক্ল্যাসিফিকেশন ম্যাচে পরশু রাতে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয় মামুনুর রশীদের দলের। যা তাদের নিশ্চিত করেছে এই আসরে ন্যূনতম ষষ্ঠ স্থান। থ্যাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের তাহসীন, রকিবুল ইসলাম রকি, আমিরুল ইসলাম ও রামিম হোসেন একটি করে গোল করেন।
এশিয়া কাপ হকির সিনিয়র ও অনূর্ধ্ব-২১ আসরে বাংলাদেশের পঞ্চম হওয়াটা বহু পুরনো ঘটনা। ১৯৮২ সালের এশিয়া কাপ এবং ১৯৯২ সালের অনূর্ধ্ব-২১ আসরে পঞ্চম হওয়া লাল-সবুজদের। যুব হকিতে ২৩ বছর পর ফের পঞ্চম হওয়ার সুযোগ। এই কঠিন মিশনে আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় প্রিন্স লাল সামন্তদের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী জাপান। যাদের বিপক্ষে কোনো লেভেলেই জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশ দলের। তাই জাপানকে হারাতে পারলে যেমন ইতিহাস গড়া হবে বাংলাদেশের হকির তেমনি আবার সেরা পাঁচে আসা।
অবশ্য আবেগী গলায় জাপানের বিপক্ষে জয়ের আশার কথা শোনানোই যায়। বাস্তবতা সে আত্মবিশ্বাস জোগায় না। ওমানে আসা বাংলাদেশ দলের টিম লিডার এং জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় মাহবুব এহসান রানার মতে, ‘সত্যিকার অর্থে জাপানের বিপক্ষে জেতাটা বাংলাদেশ দলের জন্য খুবই কঠিন। জাপান অনেক শক্তিশালী দল।’ থাইল্যান্ডের বিপক্ষে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়া তাহসীন আলীর বক্তব্য, ‘জাপান বেশ টাফ টিম। তবে আমরা আমাদের সেরাটা দিয়েই তাদের হারাতে চাইবো।’ তিনি যোগ করেন, দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে আমাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়েছে। এখন জাপানকে হারিয়ে পঞ্চম হয়ে কষ্টটা ভুলতে চাই।
জাপান যে মোটেই সহজ প্রতিপক্ষ নয় তা এক বাক্যে স্বীকার করে নিলেন বাংলাদেশ কোচ মামুনুর রশীদ। তার জবাব, ‘যুব হকিতে কোরিয়ার চেয়েও শক্তিশালী জাপানিরা। তবে সিনিয়র লেভেলে কোরিয়া এগিয়ে।’ এরপরই কোচ দলের খেলোয়াড়দের জাপানের বিপক্ষে বাড়তি প্রেরণা নিয়ে খেলার উপলক্ষ সামনে নিয়ে আসেন। ‘ছেলেরা দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি খেলেছিল বাড়তি চাপ নিয়ে। সে ম্যাচে জিতলে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ মিলবে, এ চাপ ছিল। এখন জাপানের বিপক্ষে সে প্রেক্ষাপট নেই। ছেলেরা একেবারেই নির্ভার ম্যাচ খেলবে জাপানের সাথে। তাই আমার মনে হয় জাপান এত সহজে পার পাবে না।
পাঁচ ম্যাচে তিন জয় দুই হার। এতে জয়ের পাল্লা ভারী। এখন ষষ্ঠ ম্যাচে জিতলে যেমন জয় নিয়ে দেশে ফেরা যাবে তেমনি জুটবে আসরের পঞ্চম স্থান। যা হবে অনন্য ইতিহাস। কোচ মামুন তথ্য দেন, ‘আমরা জাপানের বিপক্ষে কখনই জিততে পারিনি। ড্র করেছি। এখন চেষ্টা করব, তাদের হারিয়ে পঞ্চম হতে।’ তবে এ কাজ যে বেশ কঠিন তা উল্লেখ করলেন জাতীয় দলের সাবেক এই ডিফেন্ডার। জানান, জাপান এই টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল। কপাল খারাপ বলে তাদের পক্ষে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা সম্ভব হয়নি। পড়েছিল শক্তিশালী গ্রুপে। এর পরও তাদের বিপক্ষে জয়ের জন্যই মাঠে নামব।’
এজন্য কোচ সব স্টিকধারীদের পজিটিভ বা আক্রমণাত্মক কৌশলে খেলতে নির্দেশনা দিয়েছেন। বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের বলেছি পজিটিভ খেলা খেলে ম্যাচ উপভোগ করতে।’ থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ গোলে জয় পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, এই ম্যাচে আরো গোল হতে পারতো। আমরা কিছু গোল মিস করেছি। এর পরও গোলের সংখ্যায় না গিয়ে ম্যাচের রেজাল্ট দেখা দরকার। আমরা ম্যাচটি জিতে এখন পঞ্চম/ষষ্ঠ স্থানের জন্য লড়ছি।’ জানালেন, কোরিয়ার কাছে হারের পর খেলোয়াড়রা বেশ ভেঙে পড়েছিল। সে অবস্থা থেকে তাদের ম্যাচে ফিরিয়ে আনাটা ছিল জরুরি। তা করতে পেরেছি। এখন জাপানকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ার টার্গেট।’ জাপানকে হারাতে ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে উঠা সামিন, ইনজুরির সাথে লড়াই করা আজিজার, প্রিন্স, রামিমদের খেলাবেন কোচ।


আরো সংবাদ



premium cement