২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সাবিনাদের অনুশীলনে নেই ছোটন

পদত্যাগ বিষয়ে জানেন না বাফুফে সভাপতি
-

কোচের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন গোলাম রব্বানী ছোটন। নিজের অবস্থানে অনড় জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের এই কোচ। ফলে গতকাল সাবিনা খাতুনদের অনুশীলনে দেখা যায়নি তাকে। এমনকি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তাদের ডাকেও সাড়া দিচ্ছেন না গোলাম রব্বানী।
আচমকা অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাফজয়ী নারী ফুটবলার সিরাত জাহান স্বপ্না। সেই বিস্ময়কর খবরের রেশ কাটতে না কাটতেই বয়সভিত্তিক ও সিনিয়র পর্যায়ের জাতীয় নারী দলগুলোর কোচ ছোটন সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একদিন পেরিয়ে গেলেও তাদের সাথে আলোচনা হয়নি বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের। গণমাধ্যমে যা প্রকাশিত হয়েছে, এর চেয়ে বেশি কিছু নাকি জানা নেই তার।
গত এক যুগ ধরেই সিনিয়র ও জুনিয়র নারী দলের অনুশীলনে সব সময় উপস্থিত ছিলেন তিনি। তার হাত ধরেই বদলে গেছে দেশের নারী ফুটবলের চিত্র। তাই মেয়েদের অনুশীলনে সেই কোচ না থাকায় তার অভাব সবাই অনুভব করছেন প্রকটভাবে। ছোটনের অনুপস্থিতিতে সাবিনাদের কোচিং করান মাহবুবুর রহমান লিটু ও তার স্ত্রী অনন্যা। অনুশীলনের ফাঁকে লিটু বলেন, ‘খেলোয়াড়ী জীবনে সবার আগে ছোটন স্যারকে পেয়েছি। কোচিং স্টাফে আসার পরও উনাকে সবার আগে মাঠে দেখেছি। এমনো দিন গেছে যে, শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও মাঠে এসেছিলেন তিনি। অথচ আজ তিনি মাঠে নেই। এই প্রথম উনার অভাব প্রকটভাবে অনুভব করছি।’
জানা গেছে, ৩১ মে পর্যন্ত বাফুফের সাথে থাকলেও অনুশীলনে যাবেন না ছোটন। দু’-এক দিনের মধ্যেই কোচের পদ থেকে নিজের পদত্যাগের চিঠি বাফুফেতে দেবেন তিনি। সূত্রমতে, বাফুফের ব্রিটিশ টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি কয়েক দফা বিদায়ের কথা বলেছেন। অথচ খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েও, বেতন নিয়ে দর-কষাকষি করে আবার থেকে যাচ্ছেন। ছোটনের অধীনে গত ১৪ বছরে আটটি শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী দল। এ ছাড়া রানার্সআপ হয়েছে আরো পাঁচবার। এত কিছুর পরও এক লাখ টাকা বেতন পান ছোটন। তাতেও আছে নানা গড়িমসি। বোনাস কিংবা উৎসব ভাতা দেয়া হয় না কাবে। বিপরীতে স্মলিকে ১৬ লাখ টাকা বেতন দেয় বাফুফে। জোর গুঞ্জন, সঠিক মূল্যায়ন না পাওয়া এবং স্মলির অযাচিত হস্তক্ষেপেই দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ছোটন।
সব মিলিয়ে দুঃসময় পার করছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল। তবে ভক্ত-সমর্থকদের আশ্বস্ত করার মতো কোনো বার্তা এখনই দিতে পারছেন না কাজী সালাউদ্দিন। স্বপ্নার অবসর ও ছোটনের কোচের পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেন, ‘আমি কেবল মিডিয়ার কাছ থেকে তাদের (ছোটন ও স্বপ্না) ব্যাপারে শুনেছি। আমি কোনো চিঠি বা অফিসিয়ালি কিছু এখনো পাইনি। বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলে আপনাদের জানাব।’
বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন অনেক দিন ধরেই করে আসছেন বাফুফের তত্ত্বাবধানে থাকা নারী ফুটবলাররা। এই প্রসঙ্গে গত ফেব্রুয়ারিতে সালাউদ্দিন জানিয়েছিলেন যে তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়ায় বাফুফে প্রধানের আশ্বাসের আগে-পরে দুই দফা অনুশীলন বর্জনের মতো কঠোর সিদ্ধান্তও নেন খেলোয়াড়রা। সালাউদ্দিনের দেয়া আশ্বাসের তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো বেতন-ভাতা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। ফের আশার বাণী শোনান বাফুফে সভাপতি, ‘এ বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। কয়েক দিনের ভেতরে আপনাদের জানিয়ে দিবো।’


আরো সংবাদ



premium cement