২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ড্রেসিংরুমে বদল এনেছেন হাথুরু

প্র্যাকটিসে দুই পেসার মোস্তাফিজ ও হাসান মাহমুদের সাথে হাথুরুসিংহে : নয়া দিগন্ত -

গত ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় হাথুরুসিংহের নতুন অধ্যায়। ২০ ফেব্রুয়ারি কাজে যোগ দিয়ে পরদিন থেকেই মাঠে নেমে পড়েন তিনি। এরপর থেকে তার উপস্থিতি প্রবল। দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশ এসে এক মাসের কিছু বেশি সময় পার করেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সময়টা অল্প তবে এর মধ্যেই ড্রেসিংরুমের পরিবেশে একটা ইতিবাচক বদল আনার দাবি করলেন। খেলোয়াড়দের নির্ভার রেখে সেরাটা বের করে আনার উপায় নাকি তিনি ধরে ফেলেছেন।
ওয়ানডে ও টি-২০ দুই দলেই কিছু কাঠামোগত বদল এনেছেন। কিছু খেলোয়াড় বাদ পড়েছেন, নতুন এসেছেন কেউ কেউ। গতকাল চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তার এবারে অবস্থানকালে কী কী বদল এলো ? একটু ভেবে বের করলেন উত্তর, যাতে মিশে থাকল ভাবনার খোরাক, ‘একই ক্রিকেটার, স্কিলও তো একই। মনে হয় না কোনো বদল হয়েছে। শুধু ড্রেসিংরুমের পরিবেশ বদলেছে। আমরা এখন যেভাবে কথা বলি, যা নিয়ে আলাপ করি। তাতে দলের মধ্যে সাইকোলজিক্যাল সেফটি (মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা) আনার চেষ্টা করছি।’
সাইকোলজিক্যাল সেফটি ব্যাপারটা পরে ব্যাখ্যা করলেন, ‘তাদেরকে বলছি খেলার ফল যাই হোক, ভালো করুক বা ব্যর্থ হোক। সবাই একই ক্রিকেটার, সবাইকে একই চোখে দেখি। তারা আমার কাছে মূল্যবান, স্কিলসেটের কারণেই তাদের দলে নিয়েছি। এর বাইরে কিছু বদলেছে বলে মনে হয় না, স্কিল একই আছে।’
পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী আগ্রাসী ক্রিকেট খেলা, আড়ষ্ট না থেকে নিজেদের মেলে ধরা। এবং মাঠে নেমে একটি অভিপ্রায় দেখানোর ওপর জোর দেন তিনি। নিবেদনের জায়গা ঠিক থাকলে কেউ ব্যর্থ হলেও দোষারোপ করবেন না এই কোচ। ‘সাইকোলজিক্যাল সেফটি। ভারী শব্দ এটি। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারেন যেখানে খেলোয়াড়রা ফলাফল ও তার প্রভাব নিয়ে না ভেবে নির্ভার হয়ে নিজেদের উজাড় করে দিতে পারল। তারা যদি খোলা মনে চেষ্টা করে ব্যর্থও হয় তবু ঠিক আছে। তারা আমার কাছে আগের মতনই থাকবে, আস্থা থাকবে তাদের ওপর।’
দায়িত্বের নতুন মেয়াদে হাথুরুসিংহের পারফরম্যান্স বেশ ভালোই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারলেও টি-২০তে জস বাটলারদের হোয়াইটওয়াশ করে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জয় এসেছে অনায়াশে। ‘আমি মনে করি সাম্প্রতিক সময়ে এটাই সবচেয়ে বড় বদল। অন্য কোচরাও আমাকে বলেছেন এটিই আসল পরিবর্তন। আমি জানি একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তারা সেরাটা দিতে পারবে।’
দল থেকে বাদ পড়ার ভয় না থাকলে মাঠের ক্রিকেটটা রোমাঞ্চকরই হওয়ার কথা। যা নতুন যুগের শুরুও বলা যায়। যদিও এই কথায় আপত্তি আছে তার। সাথে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার ব্যাখাও দিয়েছেন হাথুরুসিংহে, ‘আগ্রাসী ক্রিকেট মানে এই নয় যে, আমরা গেলাম আর জোরে জোরে মারলাম। সবদিক থেকেই আগ্রাসী হয়ে ওঠা। দল নির্বাচন, ফিল্ড সাজানো, আমাদের শরীরী ভাষা, ফিল্ডিং, ব্যাটিং। কৌশলগত দিক দিয়েও আগ্রাসী হব, ফল কী হবে, তা নিয়ে ভাবব না। নিজেদের সেরাটাই খেলতে চাই। যখনই আমরা এমন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলি, মুক্তভাবে খেলেছি- এ দল তখনই ভালো করেছে।’
জাতীয় দলকে প্রাধান্য হাথুরুর
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, আইপিএলের ১৬তম আসরে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের অংশ নিয়ে সমালোচনা এখন তুঙ্গে। সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মোস্তাফিজুর রহমানদের বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের পুরো আসরের খেলতে দিতে চায় না বিসিবি।
এবার আলোচিত এই ইস্যুটি নিয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সাবেক লঙ্কান ক্রিকেটারও বিসিবির সাথে সুর মিলিয়েছেন। আইপিএল নয়, জাতীয় দলকেই প্রাধান্য দিয়েছেন টাইগারদের হেড মাস্টার।
এবারের আইপিএলে সাকিব ও লিটনকে দলে ভিড়িয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। অন্য দিকে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলবেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ। আগামী ৩১ মার্চ শুরু হবে কোটি টাকার টুর্নামেন্টের নতুন আসর।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে হাথুরু বলেন, ‘আমার মনে ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্ত হলো তুমি আগে তোমার দেশের জন্য খেল। এটা ক্রিকেটারদের নিলামে নাম দেয়ার আগেই জানানো হয়েছে। সে সিদ্ধান্ত এখনো বহাল আছে।’
প্রধান কোচ আরো বলেন, ‘আইপিএলে খেললে ক্রিকেটারদের স্কিলে অনেক উন্নতি হবে তাতে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়। কারণ আইপিএল অনেক বড় একটা টুর্নামেন্ট। কিন্তু ক্রিকেটারদের প্রথম প্রাধান্য হচ্ছে দেশের জন্য খেলা।’


আরো সংবাদ



premium cement