১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জিমন্যাস্টিক্সে এশিয়াডে পদকের স্বপ্ন

অনুশীলনের ফাঁকে ক্যামেরাবন্দী জিমন্যাস্টরা : নয়া দিগন্ত -

‘এখন আর আলী কাদের হকের সরাসরি ডাক পাওয়ার সুযোগ নেই বাংলাদেশ দলে। তাকে ট্রায়াল দিয়েই জাতীয় দলে আসতে হবে।’ এই বক্তব্য বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক আহমেদুর রহমান বাবলুর। গত বছরও বাংলাদেশ দলে অটো চয়েজ ছিলেন নিউজিল্যান্ড প্রবাসী জিমন্যাস্ট আলী কাদের হক। অথচ এখন তার যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড়িয়ে গেছে বাংলাদেশেই। জাতীয় দলের সহকারী কোচ ইমন মিয়া তথ্য দিলেন, ‘রাজীব চামকা তার সেরাটা দিতে পারলেই পেছনে ফেলতে পারবেন আলী কাদেরকে।’ নিউজিল্যান্ডে থেকে ব্রিটিশ কোচের অধীনে বড় হওয়া এই প্রবাসী বাংলাদেশীকে স্থানীয়দের টপকে যাওয়ার নেপথ্য দক্ষিণ কোরিয়ান কোচ চো সং ডং। তার এক বছরের কঠোর প্রশিক্ষণে নতুন নতুন প্রতিভা তৈরি হচ্ছে দেশের জিমন্যাস্টিক্সে। আর এদের নিয়েই ২০২৬ সালের এশিয়ান গেমসে পকদের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। জানান অপর সহকারী কোচ আবদুল্লাহ আল মাসুম। নতুন এই সম্ভাবনাদের নিয়েই বাংলাদেশ দল এখন অবস্থান করছে তুরস্কের আন্তালিয়াতে। সেখানে আজ থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব জুনিয়র জিমন্যাস্টিক্সে লড়বেন ম্যালটন টনি ও মং চিং ম্রো।
এই প্রথম জুনিয়র বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শিপে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ। এতে পোমেল হর্সে ম্যালটন টনির এবং হরিজন্টাল বারে মং চিং ম্রোর পদকের আশা করা হচ্ছে। এক বছর আগে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেন চো সং। তার কোচিংয়ে অন্য দেশের জিমন্যাস্টের অলিম্পিকে স্বর্ণ জেতার রেকর্ড আছে। এই কোরিয়ানের আগমনে রাতারাতি পাল্টে গেছে বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্সের চেহারা। ১৩-১৪ বছরের ১৮-২০ জন খেলোয়াড় নিয়ে তার ক্যাম্প শুরু হয়েছিল। এখন সেই সংখ্যা ১২তে নেমে এসেছে। এদের সবার পারফরম্যান্স কাছাকাছি। তুরস্ক থেকে ফেরার পর ফের বাছাই হবে। এরপর সিনিয়র দল সিঙ্গাপুরে এবং জুনিয়র দল জাপানে খেলতে যাবে। কোচ চো সং অবশ্য দুই বছর কোনো ধরনের প্রতিযোগিতায় পাঠানোর পক্ষে ছিলেন না দলকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে না খেললে নানা ঝামেলা। তাই ফেডারেশন পাঠাচ্ছে দল।
বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্সে বড় তারকা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাইক সিজার এবং নিউজিল্যান্ডে বড় হওয়া আলী কাদের। সাইক ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক আসরে স্বর্ণ এনে দেন। এরপর মাতান লন্ডন অলিম্পিক গেমস। যদিও নিজের উশৃঙ্খল আচরণের জন্য ২০১৪ সালে গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে দেশকে পদক বঞ্চিত করান। ফেডারেশন সূত্র মতে, কোচ না থাকায় সাইক সিজারকে খেলার আগের রাতে বিপথে নিয়ে যান ভারতীয় প্রতিপক্ষরা। এরপর আলী কাদের ২০১৯ সালে হাঙ্গেরী ওপেনে ভল্টিং টেবিল ও ফ্লোর এক্সারসাইজে স্বর্ণ জয় করেন। এরপর সিঙ্গাপুর ওপেনে জুনিয়র বিভাগে বাংলাদেশের পাওয়া ১৪ স্বর্ণের দু’টির মালিক ছিলেন তিনি। সর্বশেষ গত বছর তুরস্কের কোনিয়া ইসলামী সলিডারিটি গেমসে ভল্টিংয়ে ফাইনালে উঠে ষষ্ঠ হন আলী কাদের। কিন্তু এখন তার অবস্থান শিশির আহমেদ ও আবু সাঈদ রাফিদের চেয়ে খুব একাট ভালো নয়। উল্লেখ্য, এই তিনজন বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমস এবং কোনিয়া সলিডারিটি গেমসে অংশ নেন।
কোরিয়ান কোচ ট্রেনিংয়ে যেমন পরিরর্তন এনেছেন তেমনি খাবার-দাবারেও। সহকারী কোচ আবদুল্লাহ আল মাসুম জানালেন, ‘আমাদের ভাগ্য চো সংয়ের মতো বিশ্বমানের কোচ পেয়েছি। আগে টেকনিকে ঘাটতি ছিল আমাদের। এখন তা দূর হয়েছে। সাথে কোচ খাদ্য তালিকায় নতুন উপকরণ যোগ করেছেন। এখন কাঠবাদাম , মধু এবং খেজুর খাওয়ানো হচ্ছে খেলোয়াড়দের। চেষ্টা করা হচ্ছে আরো কিছু পরিবর্তনের।’ এই সবের যোগ ফলে যদি এশিয়াডে পদক পাই তাহলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শিপে কোয়ালিফাই করা যাবে। একই সাথে তুরস্কের যুব বিশ্বকাপে পদকের দেখা পেলে মিলবে যুব অলিম্পিকের ছাড়পত্র।


আরো সংবাদ



premium cement