২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সিলেটে সলিড পারফরম্যান্স অপেক্ষা চট্টগ্রামের

-

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এক সিরিজে অনেক অর্জন। বলতে গেলে একের মাঝে সব। প্রথম ম্যাচে সর্বোচ্চ স্কোর ৩৩৮, দ্বিতীয় ম্যাচে সেই স্কোর টপকে সর্বোচ্চ ৩৪৯ স্কোরের রেকর্ড। সবচেয়ে বেশি ১৮৩ রানের ব্যবধানে এবং সবচেয়ে বেশি ১০ উইকেটে জয়ের ইতিহাসও রচিত হয়েছে এই সিরিজে। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে ৬০ বলে মুশফিকুরের দ্রুততম সেঞ্চুরিও দেখেছে বিশ্ব।
ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯২ ইনিংসের রেকর্ডটা করেছেন তৌহিদ হৃদয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে এক ম্যাচে ১০ উইকেটের সব ক’টি এই প্রথম পেয়েছেন পেস বোলাররা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৮ম ম্যাচে ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন হাসান মাহমুদ।
প্রথম দুই ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলায় মেতেছিলেন। সেটা মাথায় রেখেই হয়তো তৃতীয় ম্যাচে টস জিতে সিদ্ধান্ত বদলে ব্যাটিংয়ে নামেন আইরিশ অধিনায়ক এন্ডি বালবার্নি। মজার বিষয় হলো সিলেটের যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা পর পর দুই ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন, সেখানেই বল হাতে রেকর্ড গড়লেন পেসাররা। প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট তুলে নেয়ায় ১০১ রানে ধসে গেছে আয়ারল্যান্ড। এরপর তামিম ও লিটনের দাপটে প্রথমবারের মতো ১০ উইকেটের জয় টাইগারদের।
এমন জয়ের পর স্বভাবতই ভীষণ উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পেসারদের প্রশংসায় তামিম বলেন, ‘অবিশ্বাস্য! যেভাবে আমরা পুরো সিরিজ খেলেছি, সেটা ছিল দুর্দান্ত। সিলেটে হয়েছে পারফেক্ট সিরিজ। সলিড পারফরম্যান্স হয়েছে দলের। প্রথম দুই ম্যাচে আমরা ব্যাট হাতে পারফর্ম করেছি। আর শেষ ম্যাচে বল হাতে যা করেছি, অতীতে কখনই তা পারিনি। এখন আমি গৌরবের সাথে বলতে পারি আমাদের একটি সলিড, সলিড, সলিড ফাস্ট বোলিং বিভাগ আছে!’
তিনবার সলিড বলার মাঝেই ফুটে ওঠে তামিমের মুগ্ধতা, উচ্ছ্বাস ও আত্মবিশ্বাস। আসলে এমন ইতিহাস গড়া পারফরম্যান্স করার পর এই উচ্ছ্বাস খুবই স্বাভাবিক। যদি বলি তারা দারুণ বল করেছে, তাহলে সেটা ভুল হবে। মাঠের ভেতরে ও বাইরে তারা যে পরিমাণ পরিশ্রম করে এবং যন্ত্রণা সহ্য করে, এর ফসল এই সাফল্য। তাদের এই সাফল্য মোটেই ফ্লুক কিছু নয়।
তামিম যোগ করেন, এমন একটি ফাস্ট বোলিং আক্রমণ থাকলে জীবন ভীষণ সহজ হয়ে যায়। এমন পেস বোলিং ইউনিট নিয়ে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে যেকোনো দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। চার পেসারের বোলিং ইউনিট নিয়ে আমি গর্বিত।
অথচ ঘরের মাঠে বাংলাদেশ পুরোপুরি স্পিনের ওপর নির্ভরশীল। সেখান থেকে এই পরিবর্তন সত্যিই অনেক বড় চমক। ইংলিশ কন্ডিশনে অভ্যস্ত আইরিশদের বিপক্ষে সবুজ ঘাসের উইকেট বানানো সত্যিই ভীষণ সাহসের বিষয়। আগামী বিশ্বকাপ মাথায় রেখেই নাকি এমন উইকেট বানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তামিম। আর সে উইকেটে হাসান, এবাদত, তাসকিনরা ১৪৫ কিমি.র বেশি গতি তুলেছেন, বাউন্সে নাজেহাল করেছেন, আবার ইয়র্কারে স্ট্যাম্প উড়িয়েছেন। তবে সবচেয়ে অবাক করেছে বাংলাদেশী পেসারদের সুইং। তাদের সুইং দেখে রীতিমতো বোকা বনে গেছেন বালবার্নি-স্টার্লিংরা।
ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের দল বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারলেও বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজে রেকর্ড গড়ে জয় নিশ্চিত করেছে। তামিম গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন। এবার পালা সাকিব আল হাসানের টি-২০ দলের। ইতোমধ্যে দলও ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে সফরকারিদের বাংলাওয়াশ করে নিজেকে ও নিজেদের প্রমাণ করেছেন। আরো একবার ঝলসে উওঠার পালা চট্টগ্রামের সাগরিকায়। আগামী ২৭, ২৯ ৩১ মার্চ তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ আইরিশদের বিপক্ষে। আরো একবার কি বাংলাওয়াশের দিকেই ঝুঁকবে টাইগাররা! অপেক্ষা করতে হবে সে সময় পর্যন্ত।


আরো সংবাদ



premium cement