২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুযোগ নষ্ট করতে চাইবে না বাংলাদেশ

হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশন ভারতের
ভারতকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষে নিজেদের ব্যাট ঝালিয়ে নিয়েছেন ইয়াসির, নাইমুর ও আফিফ : ইন্টারনেট -

দু’টি রোমাঞ্চকর জয়ের পর প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে ভারতকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যে আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। শেষ লড়াইটি শুরু হবে দুপুর ১২টায়। টি-স্পোর্টস ও গাজী টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করবে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারত ৩৮বার মুখোমুখি হয়েছে। বাংলাদেশ জিতেছে সাতটিতে। আর ভারতের ৩০টিতে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত।
তৃতীয় ওয়ানডের জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। প্রস্তুত লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রস্তুত চট্টগ্রামের দর্শক, যারা মিস করেছেন মিরপুরে মিরাজ-মাহমুদুল্লাহ-মোস্তাফিজ শো। দু’দিন আগেই মিরপুরে সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়েছে। এবার হোয়াইটওয়াশের মিশন। আর ভারতের জন্য লজ্জা এড়ানোর। চলতি বছরের মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের পর এই স্টেডিয়ামে কোনো ওয়ানডে ম্যাচ হয়নি।
লম্বা বিরতির পর আরো একবার ওয়ানডে ক্রিকেট ফিরছে সাগরিকায়। সেটাও ভারতকে ধবলধোলাইয়ের উপলক্ষ হয়ে। আর এতটাই সাড়া ফেলেছে যে টিকিটের জন্য হাপিত্তেস চার দিকে। পরিচিত-পরিজন-বন্ধু-আত্মীয় স্বজনের কাছে একটি টিকিট পাওয়ার ব্যকুলতা। চট্টগ্রামের বিটাক মোড়ের কাছে সাগরিকা টিকিট কাউন্টার ও এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের কাউন্টারে বিশাল লম্বা লাইন এক কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। সবার একটাই লক্ষ্য, ভারতকে ৩-০ ব্যবধানে হারানোর সাক্ষী হওয়া।
তবে গতকাল বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে দর্শকদের মতো সে আমেজটা পাওয়া গেল না। ঐচ্ছিক অনুশীলন থাকায় সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেন ও অধিনায়ক লিটন দাস মাঠে আসেননি। মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ, ইয়াসির আলী, আফিফ হোসেন, এনামুল হক, নাজমুল হোসেনরাও সাদামাটা অনুশীলন করেছেন হালকা মেজাজে।
প্রথম ওয়ানডেতে ১ উইকেটের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ রানে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। দুই জয়েই নায়ক ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। হারের মুখ থেকে দুই ম্যাচেই বাংলাদেশকে জয় এনে দেন মিরাজ। প্রথম ম্যাচে মোস্তাফিজকে নিয়ে শেষ উইকেটে ৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে অবিশ^াস্য জয় এনে দেন মিরাজ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৬৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আট নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ইনিংসের শেষ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিরাজ। ৮৩ বলে অপরাজিত ১০০ রান করেন তিনি। মিরাজের সেঞ্চুরিতেই ৭ উইকেটে ২৭১ রান পায় বাংলাদেশ। এর আগে মাহমুদুল্লাহ সাথে জুটি গড়ে যেকোনো উইকেটে রেকর্ডও করেন।
বাঁ-হাতের বুড়ো আঙুলে ইনজুরির কারণে ভারতের ইনিংস শুরু করতে পারেননি অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শেষ দিকে ইনজুরি নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ২৮ বলে অপরাজিত ৫১ রান করে ভারতকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছিলেন রোহিত। তবে শেষ পর্যন্ত পারেননি।
কঠিন পরিস্থিতি থেকে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে ভারতকে পরপর দুই ম্যাচে হারানোয় আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশ দল। এবার টিম ইন্ডিয়াকে হোয়াইটওয়াশের মিশনে বাড়তি সুবিধাও পাবে তারা। ইনজুরির কারণে সিরিজের শেষ ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন রোহিতসহ তিনজন খেলোয়াড়। অতিরিক্ত ক্রিকেট খেলার মাশুল দিতে হয়েছে ভারতকে। রোহিতের পরিবর্তে শেষ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিবেন লোকেশ রাহুল। রোহিতের সাথে দেশে ফিরেছেন দুই পেসার দীপক চাহার ও কুলদীপ সেন। দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র তিন ওভার বল করেছেন চাহার। তার অনুপস্থিতিতে অন্যান্য বোলারদের ব্যর্থতায় ডেথ ওভারে ভারতের বিপদ বাড়ে। শেষ পাঁচ ওভারে বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে ৬৮ রান। ওয়ানডের পর এমনকি টেস্ট সিরিজও মিস করতে পারেন রোহিত।
প্রতিপক্ষের ইনজুরি, উদ্বেগ বা ঠাসা সূচি নিয়ে ভাবতে চায় না বাংলাদেশ। এবার আর এই সুযোগ হারাতে চায় না তারা। এর আগে ২০১৫ সালে সিরিজের শেষ ম্যাচে হেরে ভারতকে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ হারায় টাইগাররা। বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমট বলেন, ‘আমাদের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এই দলটি কখনোই ভারতকে ৩-০ ব্যবধানে হারায়নি। এটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। এর আগে আমরা পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছি। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার খুব কাছাকাছি গিয়েছিলাম। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে আমরা এখন চাপে জিততে শুরু করছি। সিরিজ জয়ের পর ছেলেরা আরো একটি ম্যাচ জিততে মুুখিয়ে আছে।’
তিন খেলোয়াড় দেশে ফেরায় স্পিনার কুলদীপ যাদবকে যোগ করেছে ভারত। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে মরিয়া ভারত। চট্টগ্রামের উইকেট সাধারণত বাউন্সি থাকে। বিদেশী দলগুলোর জন্য এটি বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। কিন্তু এবারের উইকেটে স্বাগতিকরা সুবিধা পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement