২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফুটবল মাঠে সংঘর্ষে নিহতের আরো যত ঘটনা

-

ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলে দর্শকদের উগ্রতার কথা পুরনোই। বেশ কয়েক বছর আগে খেলা চলাকালীন সময়ে গ্যালারিতে এক মহিলা দর্শক যৌন হয়রানির শিকার হলে সমর্থকরা এই বিচার চায়। কিন্তু বিচার না পেয়ে তারা ওই ক্লাবের খেলা দেখাই বন্ধ করে দেয় মাঠে গিয়ে। এবার সেই ইন্দোনেশিয়ান লিগে গত পরশু পূর্ব জাভার আমেরা এফসি এবং সুরাবায়ার পার্সিবায়ার ম্যাচে ঘটে গেল বিশ্ব ফুটবলে মাঠে মারামারিতে দর্শক নিহত হওয়ার অন্যতম দুঃখজনক ঘটনা। দর্শকদের মারামারি আর পুলিশের ছোড়া টিয়ারগ্যাসে দম বন্ধ হয়ে সর্বশেষ রিপোর্ট পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ১৭৪ জন। ম্যাচে হোম টিম আমেরা এফসি ২-৩ গোলে হারের পরই এই ঘটনা। ২৩ বছর পর নিজ মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হার আমেরার। এতেই ক্ষুব্ধ সমর্থকরা তাদের ফুটবলার এবং কর্মকর্তাদের দিকে বোতলসহ অন্যান্য বস্তু ছুড়তে থাকে। তা থামাতে পুলিশের হস্তক্ষেপেই নারকীয় কাণ্ড। ফুটবল মাঠে মারামারিতে দর্শকদের অকাতরে প্রাণ হারানোর ঘটনা আরো আছে। সেটাই তুলে ধরা হলো :
আর্জেন্টিনা-পেরু ম্যাচে নিহত ৩২০
১৯৬৪ সালে অলিম্পিক গেসম বাছাই ফুটবলে খেলা চলছিল আর্জেন্টিনা ও পেরুর মধ্যে। খেলাটি ছিল পেরুর রাজধানী লিমাতে। ম্যাচে গ্যালারিতে বিপর্যয় সৃষ্টি হলে ৩২০ জন ফুটবল সমর্থক মারা যান। আহত হয় আরো এক হাজার জন। কোয়ালিফাই করার জন্য আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ড্র দরকার ছিল পেরুর। এই সময় রেফারি পেরুর একটি গোল বাতিল করলেই মাঠে ঢুকে পড়ে দুই সমর্থক। একজন রেফারির ওপর হামলা চালাতে না পারলেও অপর জন রেফারিকে মারধর করার পরই লঙ্কা কাণ্ড এবং তিন শতাধিক লোকের প্রাণহানি।
লিভারপুর-জুভেন্টাস ম্যাচে নিহত ৩৯
১৯৮৫ সালের ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনাল। বেলজিয়ামের ব্রাসেলস মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ইতালির জুভেন্টাস সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় লিভারপুলের সমর্থরা। এই সংঘর্ষে প্রাণ হারায় ৩৯ জন ফুটবলপ্রেমী। পরে ফিফা লিভারপুলকে পাঁচ বছরের জন্য ইউরোপিয়ান কাপে নিষিদ্ধ করে।
লিভারপুলের ৯৭ সমর্থক নিহত
১৯৮৯ সালের এফ এ কাপের সেমিফাইনাল। লিভারপুলের প্রতিপক্ষ নটিংহাম ফরেস্ট। শেফিল্ডের হিলসবরগ স্টেডিয়ামে দুই দলের সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত ৯৭ লিভারপুর দর্শক।
লুজনিকি স্টেডিয়াম ট্র্যাজেডি
১৯৮২ সালের ২০ অক্টোবর। রাশিয়ার ২০১৮ বিশ্বকাপের মূল ভেনু লুজনিকি স্টেডিয়ামে উয়েফা কাপের ম্যাচ চলছিল সাবেক সোভিয়ত ইউনিয়নের ক্লাব স্পার্টাক মস্কো ও নেদারল্যান্ডসের হারলেমের মধ্যে। এই ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে হওয়া মারামারিতে কত জন মারা গেছে তা আজও রহস্য। অফিসিয়ালি বলা হয়েছিল মোট ৬৬ জন মারা গেছে। এর মধ্যে টিনএজার ছিল ৪৫ জন। তবে স্থানীয় দৈনিক সোভিয়েতস্কি স্পোর্টস তথ্য দেয় সে ঘটনায় ৩৪০ জন প্রাণ হারান।
ঘানার দুই ক্লাবের সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত ১২৬
ঘানার রাজধানী আক্রায় ম্যাচ ছিল হার্ট অব ওকস এবং কুমাসি ক্লাবের। ম্যাচের পরাজয় মেনে নিতে না পারা কুমাসি সমর্থকরা গ্যালারিতে ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশের অ্যাকশনে নিহত ১২৬ জন।
গুয়াতেমালায় নিহত ৮০ জন
১৯৯৮-এর বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ চলছিল গুয়াতেমালা ও কোস্টারিয়ার মধ্যে। গুয়াতেমালায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে মারা যায় ৮০ জন ফুটবল সমর্থক।
ব্রাডফোর্ড- লিনকোলন সিটি ম্যাচ ট্র্যাজেডি
১৯৮৫ সালে ইংল্যান্ডে ব্রাড ফোর্ড ও লিনকোলন সিটি ম্যাচে গ্যালারি ভেঙে পড়লে প্রাণ হারায় ৫৬ জন।
স্কটল্যান্ডে নিহত ৬৬
১৯৭১ সালের ২ জানুয়ারি স্কটল্যান্ডের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল সেলটিক ও রেঞ্জার্সের ডার্বিতে গ্যালারি ধসে পড়লে নিহত হয় ৬৬ জন। এটি ছিল ইব্রক্স স্টেডিয়ামের গ্যালারি দ্বিতীয় দফা ভেঙে পড়ার কাহিনী। ১৯০২ সালে মারা গিয়েছিল ২৬ জন।
মিশরের দুই ক্লাবের সংঘর্ষে নিহত ৭৪
২০১২ সালে পোর্ট সৈয়দে অনুষ্ঠিত মিসরের দুই ক্লাব আল আহলি এবং আল মাসরি ক্লাবের ম্যাচে দুই দলের সমর্থকদের মারামারিতে প্রাণ যায় ৭৪ জনের। ১৯৭৪ সালে মিসরে নিহত ৪৪ জন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই দফা নিহত ৮৩ জন
দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০১ ও ১৯৯১ সালে অরলান্ডো পিরাটেস ও কাইজার চিপস এর খেলায় সমর্থকদের মারামারিতে যথাক্রমে ৪৩ ও ৪০ জন মারা যায়।


আরো সংবাদ



premium cement