বাংলাদেশে উপেক্ষিতই গাম্বিয়ায় নায়ক
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
বাফুফের ন্যাশনাল টিমস কমিটি আপাতত ব্যস্ত হাভিয়ার কাবরেরাকে নিয়ে। ভালো রেজাল্ট দিতে না পারলে তাকেও বিদায় নিতে হবে অন্য কোচদের মতো। বাফুফে কর্তৃক বরখাস্ত হওয়া বিদেশী কোচদের মধ্যে একজন টম সেইন্টফিট। ২০১৬ সালে ভুটানের কাছে হারের পর তাকে আর লাল-সবুজদের দায়িত্বে রাখেননি কাজী সালাহউদ্দিন। এই বেলজিয়ানকে বলীর পাঠা বানানো হলেও যাদের কারণে ভুটানলজ্জা সেই ফুটবলাররা এরপরও জাতীয় দলে ছিলেন। গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা এখনো বাংলাদেশ দলে। ঢাকায় স্ট্রাইকার সাখাওয়াত হোসেন রনি এবং থিম্পুতে মামুন মিয়া, আশরাফুল রানা ও জাহিদ হাসান এমিলিদের ভুলেই ভুটানের সাথে গোলশূন্য ড্র এবং ১-৩ গোলে বিপর্যয়। সেইন্টফিটের দলে প্রস্তুতি ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ০-৫ গোলেও হারের নেপথ্যেও খেলোয়াড়দের বাজে পারফরম্যান্স। সেই সেইন্টফিটই এখন চলমান আফ্রিকান নেশনস কাপের তারকা কোচ বনে গেছেন। তার কোচিংয়ে এবারই প্রথম আফ্রিকান নেশনস কাপের চূড়ান্ত পর্বে ওঠে গাম্বিয়ার। এরপর অভিষেকেই তারা জায়গা করে নিয়েছে শেষ ১৬তে।
২০১৮ সালে গাম্বিয়ার দায়িত্ব নেন সেইন্টফিট। আফ্রিকান ফুটবলে পরিচিত মুখ তিনি। এর আগে তিনি ছিলেন নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, ইথিওপিয়া, মালাউই, ইয়েমেন, টোগোর কোচ। বাংলাদেশের দায়িত্ব হারানোর পর ত্রিনিদান টোবাগো, মাল্টার পর এখন তিনি গাম্বিয়ার কোচ। এই দলগুলোর মধ্যে টোগো ও ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো বিশ্বকাপে খেলেছে। ২০১৭ সালের মার্চে ফিফা র্যাংকিংয়ে ১৭৯তে ছিল গাম্বিয়া। টম সেইন্টফিট দায়িত্ব নেয়ার পর তার এখন ১৫০ উন্নীত হয়েছে। নিশ্চিত আগামী র্যাংকিং ঘোষণায় তারা বড়সড় উন্নতি হবে। এবারের আফ্রিকান নেশনস কাপে হারিয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা এবং এই আসরের ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন তিউনিসিয়া ও মৌরিতানিয়াকে। আগামীকাল তাদের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ গিনির সাথে। অথচ বাংলাদেশে যখন আসেন টম সেইন্টফিট তখনই তাকে পেতে চেয়েছিল নাইজেরিয়া জাতীয় দল। তাই বাফুফের সাথে চুক্তি করতে একটু বিলম্ব করেন তিনি। যদিও নাইজেরিয়া তাকে কোচ করতে চায় এটা বিশ্বাসই হচ্ছিল না তখনকার সহসভাপতি প্রয়াত বাদল রায়ের। আবার ভুটানের কাছে হারের পর তাকে ঘিরে বাংলাদেশ ম্যানেজার ইকবাল হোসেনের তীর্যক মন্তব্য ‘প্রফেসর হিসেবে ভালো’। জার্মান কোচ অটো ফিস্টার ঘানাকে যুব ফুটবলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন। বিশ্বকাপে নিয়ে গেছেন সৌদি আরব ও টোগোকে। অথচ ১৯৯৭ সালের সাফ ফুটবলে বাংলাদেশে বাজে ফলের পর বাফুফের তখনকার সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, ফিস্টারের মতো কোচ বাংলাদেশে চলে না।
যে সেইন্টফিট ১৭৯ র্যাংকিংয়ে থেকে একটি দলকে টেনে তুলতে পারেন জেতাতে পারেন বিশ্বকাপে খেলা দলের বিপক্ষে, নিয়ে যেতে পারেন আফ্রিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তিনি কেন সাফল্য পেলেন না বাংলাদেশে। পাবেন কিভাবে? লাল-সবুজ জার্সিধারীদের হাস্যকর ভুলেইতো একের পর এক ব্যর্থ আন্তর্জাতিক ফুটবলে। সর্বশেষ দুই আসর সাফ ফুটবল এবং শ্রীলঙ্কার চার জাতি ফুটবলে বাংলাদেশের ফাইনালে উঠতে না পারাটা ফুটবলারদের অবিবেচকের মতো পেনাল্টির জন্ম আর ভুলের খেসারতে। এই ফুটবলারদের কারণেই ব্যর্থতার কাতারে জেমি ডে, নিকোলা ইলিভেস্কি. অস্কার ব্রুজন, মারিও লেমস ও মারুফুল হকরা। ভুটানের কাছে হারের পর সেইন্টফিট বলেছিলেন, কিছু ফুটবলার চায়নি বাংলাদেশের জয়।
ভুটানের কাছে হারের পর ফুটবলের অতি উৎসাহী একটি পক্ষ সমস্যার মূলে না গিয়ে সালাহউদ্দিনকে হটানোর জন্য আন্দোলন শুরু করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য। এই চরম নেতিবাচক ফুটবল সংশ্লিষ্টরাও কম দায়ী নন সেইন্টফিটকে বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে। এদের আন্দোলনের কারণে সে বছর এএফসি সলিডারিটি কাপেও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। অবশ্য পরে বাফুফের নির্বাচনে তাদের ছুড়ে ফেলেছে কাউন্সিলাররাও।
গতকাল ক্যামেরুন থেকে সেইন্টফিট জানান, বাংলাদেশ দলে অতীতে কাজ করার বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমি তেমন লোক নই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা