২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঊষার আলো কি আর ফুটবে না

-

দীর্ঘ তিন বছর আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে প্রিমিয়ার হকির কাক্সিক্ষত দলবদল। মোহামেডান, আবাহনী, মেরিনার্সসহ মোট ১২টি ক্লাব দলবদলে থাকলেও হ্যাটট্রিক শিরোপাসহ মোট পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন এবং আরো বহু শিরোপা জেতা ঊষা ক্রীড়া চক্র অংশ নিতে পারছে না। অন্যরা যখন নিজেদের তাঁবু গোছাতে ব্যস্ত ঊষা তখন স্মৃতি রোমান্থনে মনের গহিনে চাপা কষ্ট নিয়ে উদাস দৃষ্টিতে দেখছে অন্যের দল গোছানো।
২০১৭ সালে ৭ এপ্রিল সর্বশেষ লিগের দলবদল হয়েছিল। ১২টি ক্লাব অংশ নিলেও পুরনো ঢাকার ঊষা ক্রীড়া চক্র দলবদলে অংশ নেয়নি। ২০১৮ সালে হকি প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেয়নি বলে ঊষাকে নামিয়ে দেয়া হয় প্রথম বিভাগে। ২০২০ সালে ২ নভেম্বরের সভায় বাহফে সভাপতি ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মশিহুজ্জামান সেরনিয়াবত এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।
পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলেন ঊষা ক্রীড়া চক্রের যুগ্ম সম্পাদক সাফায়াত হোসেন ডালিম। ‘বাইলজ অনুযায়ী মেরিনার্স মোহামেডানের চার কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ ও আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। সেটি সংবিধান অনুযায়ী করা হয়নি। তারা আবার ক্ষমাও পেয়েছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে বাইলজ অনুযায়ী যদি তারা ক্ষমা পায় তাহলে ঊষা কেন নয়। এক জায়গায় দুই নিয়ম তো হতে পারে না।’
হকিতে ঊষা ক্রীড়া চক্রের আলাদা মর্যাদা আছে। কারণ শুধু হকিই খেলে থাকে ক্লাবটি। দীর্ঘ দিন পর লিগ অনুষ্ঠিত হলেও একসময়ের শক্তিশালী পারছে না মাঠে নামতে। ঊষাকে প্রথম বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরে নাম লিখাতে হবে প্রিমিয়ারে। যারা সবসময় কোটি টাকার দল গড়ে তাদের প্রতি এ সিদ্ধান্তে কমপক্ষে ২০ জন খেলোয়াড় ভালো সম্মানী থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
দেশের সাবেক তারকা খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম কামাল একটা সময় ঊষাতেই সুনামের সাথে খেলেছেন। তার সাথে সাদেক, মামুন, গুড্ডু, টিটু, প্রিন্স, শুভ, সাবিত, ইছা, মুসা, ফয়সালরাও ছিলেন। বর্তমানের সারোয়ার, মাহবুব, নিলয়, চয়ন, শিটুল, অসীম, নিপ্পনরাও ঊষার আলোয় আলোকিত ছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে কামাল জানালেন, হকির দু-একজন ছাড়া সবারই মন খারাপ। যাদের সাথে দেখা হয় তারাই বলেন হকিতে ঊষা না থাকাটা দুর্ভাগ্য। তার মতে, তিন বছর পর লিগ। ঊষা না থাকায় প্লেয়াররাই ভুক্তভোগী। ঊষা ভালো মানের প্লেয়ার নিতো, ভালো বিদেশীও আনত। প্লেয়ারদের চাহিদা পূরণ। এখন কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটেছে। ঊষার মতো দল না থাকা লজ্জাজনক-দুর্ভাগ্য।
১৯৮৪ সালে মাহুতটুলি স্পোর্টিংয়ের নতুন নামকরণ হয় ঊষা ক্রীড়া চক্র। ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা ও ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবার নজরে আসে। ঊষার সফল সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ সিকদার জানালেন, বহুবারের চ্যাম্পিয়ন ঊষা দলবদলে থাকলে আকর্ষণীয় হতো। জৌলুস থাকত। স্বাভাবিকভাবেই ভক্ত ও কর্মকর্তাদের মন খারাপ। ঊষা কতটুকু অন্যায় করেছে সেটি না হয় হকিপ্রেমীদের উপর ছেড়ে দিলাম। সবার সন্দেহ ঊষার আলো কি আর ফুটবে না!

 


আরো সংবাদ



premium cement