২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হকিতে খেলার চেয়ে চেয়ার বড়

-

কর্মকর্তাদের রেষারেষি, অসহযোগিতা, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে হকি তার গণ্ডি থেকে বেরোতে পারছে না। কে কাকে দোষ দিবে, কে কার চেয়ে বড়। পরস্পরের কাদা ছোড়াছুড়িতে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের নীল টার্ফের অশ্রু কেউ দেখতে পায়নি। টার্ফে থাকবে খেলা, আনন্দে থাকবেন খেলোয়াড়রা। লিগের ব্যবস্থা না করে ফের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারের দিকে নজর কিছু হীনমনা কর্মকর্তাদের। যাদের কাছে খেলার চেয়ে চেয়ার বড়।
অনেক বছর ধরেই সেক্রেটারির চেয়ার কাঙাল ছিলেন সাজেদ এ এ আদেল, প্রয়াত খাজা রহমতউল্লাহ, শফিউল্লাহ আল মুনীর, আব্দুর রশিদ সিকদার, আব্দুস সাদেক, মুমিনুল হক সাঈদ, মাহবুব এহসান রানা। খাজা রহমতউল্লাহ বেঁচে থাকতে সাজেদ এ এ আদেলও ছিলেন সেক্রেটারি প্রার্থী। পরে শফিউল্লাহ মুনিরকে সাপোর্ট করে সাজেদ প্রার্থী হন সহ-সভাপতি পদে। মুনির পুরো প্যানেল দিতে না পারায় খাজা সেক্রেটারি হয়ে যান।
পরে তাকে নিয়ে আন্দোলন শুরু হলে আব্দুস সাদেককে সহ-সভাপতি থেকে সেক্রেটারি আর খাজাকে সেক্রেটারি থেকে সহ-সভাপতি করা হয়। নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হলে খাজার প্রতিপক্ষ হন আব্দুর রশিদ সিকদার। পরে খাজার মৃত্যুর পর সেক্রেটারিই থাকতে চান আব্দুস সাদেক। আবাহনী ঘরানার লোকজন সাদেককেই সেক্রেটারি পদে দেখতে চান। তখন রশিদ সিকদার সেক্রেটারি প্রার্থী থেকে সরে গিয়ে মুমিনুল হক সাঈদকে সাপোর্ট করেন। ১৩ বছর পর ২০১৯ সালে ২৯ এপ্রিল নির্বাচনে সেক্রেটারি পদে জয়ী হন সাঈদ। এরপর ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে সাঈদের নাম জড়িয়ে গেলে যুগ্ম সম্পাদক চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফ হন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। চট্টগ্রাম থেকে এসে ঢাকায় বাহফে কর্তা হয়ে গেলেন এটিই মানতে পারছিলেন না ঢাকার কর্মকর্তারা। এখন তাকে সরানোর পাঁয়তারা।
প্রধানমন্ত্রীর এক কোটি টাকা অনুদান প্রাপ্তির দীর্ঘ আড়াই বছর পর যখন প্রিমিয়ার হকি লিগ শুরুর প্রস্তুতি চলছে ঠিক তখনই শুরু হয়েছে পুরনো রাজনীতি ও নোংরামি। সাত ক্লাবের বিভিন্ন পদের কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত চিঠি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধূ¤্রজাল। বিশেষ করে বড় দুটি দল আবাহনী ও মোহামেডানই নাকি কলকাঠি নাড়াচ্ছে। নাম উঠে আসছে আবাহনীর জাকি আহমেদ রিপন ও মাহবুব এহসান রানা। মোহামেডানের আরিফুল হক প্রিন্স ও আবু সাঈদ শাহীন।
২০ জনু সাত ক্লাবের বিভিন্ন পদের কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত চিঠি গেল ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বরাবর। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইউসুফের অধীনে লিগ খেলতে আপত্তি তাদের। পরে সেটি রূপ নেয় ভিন্ন আবহে। নির্বাচিত কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি করারও প্রস্তাব দেয়া হয়। মোহামেডানের পক্ষে স্বাক্ষর করা আবু সাঈদ শাহীন আগের মেয়াদে কমিটির সাথে ছিলেন যুক্ত ছিলেন। ক্লাবটির নতুন পরিচালনা পর্ষদ গতকালই সাজেদ এ এ আদেলকে সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে। এছাড়া চিঠির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে নিশ্চিত করেছেন ওয়ারী ও ভিক্টোরিয়া ক্লাবের কর্মকর্তারা।
বিষয়টি নিয়ে ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘যেহেতু কোনো কপি পাইনি, তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর টাকা বণ্টন হবে, লিগ হবে, ক্লাবগুলো অংশ নিবে, খেলোয়াড়রা টাকা পাবে। এখানে আমাকে নিয়ে কেন তাদের যন্ত্রণা। আসলে তারা লিগ খেলতে চাচ্ছে না। আসলে আমাকে কাজ করতে দিচ্ছে না। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সায় দেই না বলে মূল্যায়ন করে না। সভা ছাড়াও নানাভাবে ব্যঙ্গবিদ্রƒপ করে। অথচ আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।’


আরো সংবাদ



premium cement