২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মুমিনুলের সোনার হরিণ

-

শ্রীলঙ্কায় খেলা সর্বথশেষ টেথস্টে চার উইথকেথটে জিথতেথছে বাংলাথদেশ। সেথটি ছিল বাংলাথদেথশের শততম টেস্ট! ২০১৭ সাথলে কলথম্বোর ওই ম্যাথচে হাথুরুথসিংথহের কারণে উথপেথক্ষিত মুথমিনুল হক কালের বিবর্তনে এখন দথলের অথধিনায়ক। ক্যান্ডি টেস্টে সোনার হরিণ খ্যাত মুমিনুলের সেঞ্চুরি হাথুরুসিংহকে উৎসর্গ করলেও অবাক হওয়ার তেমন কিছু থাকবে না।
সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে একটু যেন ছটফট করছিলেন মুমিনুল হক। শরীরী ভাষায় ফুটে উঠল অস্থিরতা। মাইলফলকের দুয়ারে দাঁড়িয়ে হয়তো অনুভব করছিলেন অনেক কিছু। অতীত স্মৃতি, বর্তমান কিংবা ভবিষ্যৎ। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ঠিকঠাক পারলেন না। তবে বিপদও হলো না। পরের বলেই এই অফ স্পিনারকে চার মেরে তিনি পেয়ে গেলেন বহুল কাক্সিক্ষত অনির্বচনীয় স্বাদ। দেশের বাইরে প্রথম সেঞ্চুরি! ক্যান্ডিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করেন মুমিনুল হক। এই টেস্টের আগে তার পরিসংখ্যান ছিল, ৪২ টেস্টে ১০টি সেঞ্চুরি। এই ১০টি শতরানের সবগুলো ঘরের মাঠে করেছেন তিনি। তন্মধ্যে সাতটি চট্টগ্রামে এবং তিনটি ঢাকায়।
ঘরের মাঠে মুমিনুল খেলেছেন ২৫টি ম্যাচে। আর বিদেশের মাটিতে ১৮টি। বিদেশের মাটিতে তার ব্যাট কার্যকর না থাকায় উপাধি মিলেছিল ‘নিষ্প্রভ’। এ জন্য বিদেশের মাটিতে টেস্ট সেঞ্চুরি তার জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘সোনার হরিণ’। অবশেষে সেই সোনার হরিণের দেখা পেলেন। ২২৪ বলে বিদেশের মাটিতে প্রথম ও টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন এই লিটল মাস্টার। আগের ১০টি সেঞ্চুরির মধ্যে শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটি করে, নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দু’টি করে সেঞ্চুরি করেন তিনি।
বিদেশের মাটিতে তিন অঙ্কের কোটা অতিক্রম করতে না পারা শুধু মুমিনুলই ছিলেন না। তার পাশে আছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ তিনবার দু’শতাধিক রান করা ভারতের রোহিত শর্মা। আছেন ভারতের চান্দু বোর্দে, অস্ট্রেলিয়ার মার্নাস লাবুশেন ও ইংল্যান্ডের স্যানলি জ্যাকসন। রোহিত ও লাবুশেন, এখনো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলছেন। আর বোর্দে ও জ্যাকসনের ক্যারিয়ার বহু আগেই শেষ হয়েছে। বিদেশের মাটিতে এত দিন সেঞ্চুরি না পেলেও, ছয়টি হাফ-সেঞ্চুরি রয়েছে তার নামের পাশে। ঘরের মাঠে হাফ-সেঞ্চুরি সাতটি। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড আগে থেকেই মুমিনুলের।
৬৪ রান নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দিন শেষ করেছিলেন মুমিনুল। গতকাল লাঞ্চের আগে শতরানের বহু কাক্সিক্ষত সেই মাইলফলকে পা রাখেন ২২৪ বল খেলে। অনায়াসেই এটি মুমিনুলের মন্থরতম টেস্ট শতক। আগের সবচেয়ে ধীরগতির সেঞ্চুরিটি ছিল ১৭৩ বলে। দেশের মাঠে বাঁ হাতি এই ব্যাটসম্যানের গড় ৫৬.৩৯। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে গড় মাত্র ২২.৩০। এই টেস্টের আগে দেশের বাইরে মুমিনুলের সর্বোচ্চ রান ছিল ৭৭। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই ইনিংস খেলার পর ১৭ ইনিংসে পাননি কোনো ফিফটি, এর মধ্যে চল্লিশ ছুঁতে পারেন কেবল একবার। শূন্য হাতে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে পাঁচবার। যদিও দেশের বাইরে শুরুটা হয়েছিল জমজমাট। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কাতেই প্রথম টেস্টে করেন ৫৫, পরের টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৪। কিন্তু সেই ধারা আর ধরে রাখতে পারেননি। অবশেষে দেশের বাইরে ১৭ টেস্ট ও ৩৩ ইনিংসের অপেক্ষা অবসান ঘটিয়ে সেঞ্চুরিতে রাঙালেন নিজের ক্যারিয়ার।
এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ২০১৭ সালের সফরে গলে আউট হন কেবল ৭ ও ৫ রান করে। তাতে জায়গা হারান কলম্বো টেস্টে।

 


আরো সংবাদ



premium cement