২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিশ্বকাপই বদলে দিয়েছে কাতারকে

-

বাংলাদেশের সাথে একটি জায়গায় মিল কাতারের। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি বাংলাদেশের মতোই স্বাধীনতা অর্জন করেছে ১৯৭১ সালে। তিন পাশে পারস্য উপসাগর আর দক্ষিণে সৌদি আরব বেষ্টিত এই দেশটি এখন আরব এবং মুসলিম বিশ্বের গর্ব। প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে কাতারই ফুটবল বিশ্বকাপের স্বাগতিক, যা চারবার চেষ্টা করেও পায়নি পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম দেশ মরক্কো। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়াকে পরাস্ত করে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক হয় কাতার। তেল আর গ্যাস-সম্মৃদ্ধ এই দেশটিতে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন এই বিশ্বকাপের স্বাগতিক হওয়ার পর থেকেই। জানান কাতার প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
তেলক্ষেত্র ও প্রাকৃতিক গ্যাস এই দুই জ্বালানির কারণেই দেশটিতে উন্নতির ছোঁয়া লাগে এবং প্রবাসীদের কাজের সুযোগ করে দেয়। ব্যাপক হারে উন্নয়ন হয় ২০১০ সালের পর থেকে। বাংলাদেশী ব্যবসায়ী নরসিংদীর মকবুল হোসেন সিআইপি (কমার্শিয়ালি ইম্পর্টেন্ট পারসন) জানান, ‘নব্বইয়ের দশকে কাতারে পাঁচ তারকা হোটেল ছিল তিনটি। আর এখন ১০০-এর উপরে। আছে দু’টি সাত তারকা হোটেলও।’ কাতার বিএনপির এই সহসভাপতি আরো তথ্য দেন, বর্তমান আমিরের বাবা ক্ষমতায় থাকার সময় শুরু হয় উন্নয়নকাজ। আর বর্তমান আমির এই উন্নয়নকে উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যান।’ উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে ক্ষমতায় আসেন শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি। ২০১৩ সালে নতুন আমির হিসেবে দায়িত্ব নেন বর্তমান আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
কাতারের রাজধানী দোহার দাফনা এলাকায় গড়ে উঠছে বিশাল বিশাল সব অট্টালিকা। সাগরপাড়ের এই এলাকায় কাতার অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ভবন, কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ভবন, দোহা টাওয়ার, টর্নেডো টাওয়ার অবস্থিত। সাথে কিছু দূর পরপর পাঁচ তারকা হোটেল। বিশ্বকাপ উপলক্ষে আরো সাতটি স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। বিশ্বকাপ দেখতে আসা ফুটবলপ্রেমীদের সহজ যাতায়াতের জন্য দোহাজুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে স্থাপন করা হয়েছে মেট্রোরেল। প্রচুর পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের নেপথ্যও বিশ্বকাপ।
অগণিত ফ্লাইওভার এখন এই দেশে। এক বাংলাদেশী জানান, আগে রাস্তা ছিল সরু। জ্যামে পড়ে থাকতে হতো। বিশ্বকাপ উপলক্ষে রাস্তাগুলো ছয়-সাত লেনের হয়েছে। হয়েছে প্রচুর ফ্লাইওভার। সাথে যোগ হয়েছে মেট্রোরেল। পাঁচ তারকা হোটেল ছাড়াও প্রচুর ভবন নির্মাণ হয়েছে বিশ্বকাপের সময় আগতদের থাকার জন্য। এই নির্মাণকাজে দারুণ লাভ হয়েছে বাংলাদেশীদের। তারা ব্যাপক হারে কাজ করছে এই স্থাপনাগুলোতে।
নির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই কাতার এখন বিশ্বকাপের আয়োজক। ২০০৬ সালে রাজধানী দোহাতে হয় এশিয়ান গেমস। ১৯৮৮ এবং ১৯১১ সালের এএফসি এশিয়ান কাপের হোস্ট তারা। ২০১৯ ও ২০২২ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপও এই দেশে। ২০১৯ সালে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ ছাড়াও এই দেশে হয়েছে ওয়ার্ল্ড রেসলিং, বক্সিং ও হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপ। গত বছর এখানে অনুষ্ঠিত হয় ওয়ার্ল্ড বিচ গেমস।
সব কিছু ছাড়িয়ে গেছে ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল। অবশ্য বিশ্বকাপের পর কিছু স্থাপনা সরিয়ে ফেলা হবে। কর্মহীনও হয়ে পড়বে বাংলাদেশী শ্রমিকরা।


আরো সংবাদ



premium cement