২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বার্সেলোনার লজ্জার রাত

-

বড় টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার দুঃখ জার্মানি। লিগ শিরোপায় বার্সেলোনার দুঃখ হয়তোবা বায়ার্ন মিউনিখ। ছয় হারের বিপরীতে বার্সার জয় মাত্র দু’টি। শুক্রবার রাতে লিসবনের এস্তাদিও দা লুজে চাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে যার শেষ নজির দেখল ফুটবল বিশ্ব। তবে, জার্মান জায়ান্টদের বিপক্ষে বার্সা হেরেছে অনেকটা ২০১৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিল যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল জার্মানির কাছে, অনেকটা সেরূপে। এ ক্ষেত্রে এক গোল বেশি হজম করে, ৮-২ গোলে পরাজয়ের বিস্বাদ গ্রহণ করল কিকে সেতিয়েনের শিষ্যরা।
চ্যাম্পিয়ন লিগের ইতিহাসে এত গোল ইতঃপূর্বে হজম করেনি বার্সা। বায়ার্নও এত গোল দেয়নি এর আগে। তবে সর্বশেষ ১৯৪৬ কোপা দেল রে’তে দুই হালি গোল বার্সার জালে ঢুকিয়েছিল সেভিয়া। ম্যাচের আগে সব পরিসংখ্যান আর ফর্ম বলছিল ম্যাচটা বায়ার্ন মিউনিখের পক্ষে। হারেরও ধরন আছে, এই হার কোনো কিছুই মানল না! গুনে গুনে বার্সাকে ৮ গোল দিলো বায়ার্ন! বার্সা পেল ইউরোপে সব চেয়ে বড় হারের লজ্জা। অ্যানফিল্ডের পর লিসবনেও কাতালানদের গল্পটা লেখা হলো হাহাকারের। বার্সেলোনায় যার মূল্যায়ন করা হয়নি, সেই ফিলিপ কৌতিনহো যখন অষ্টম গোল করলেন, তখন বায়ার্নও আর উদযাপন করতে চাইলো না। দুর্দান্ত বায়ার্ন মিউনিখের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর উপায় থাকল না মেসি বাহিনীর। বায়ার্নের আক্রমণের পর আক্রমণ শুরু থেকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিল বার্সাকে। প্রাণ বাঁচানোর কোনো উপায়ই জানা ছিল না কাতালান ক্লাবটির।
কিকে সেতিয়েনের দলের দুঃস্বপ্নের শুরু ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে। ইভান পেরিসিচ বাম পাশ থেকে ডি-বক্সে ক্রস করেছিলেন। টমাস মুলার নিজেকে ফাঁকা রাখার কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন শুরু থেকেই থেকে। বল পেয়ে রবার্ট লেভানদোস্কিকে পাস বাড়ালেন তিনি, ফিরতি পাসে বক্সের ভেতর ঢুকে মুলারের গোল (১-০)।
তবে ৩ মিনিট বাদেই ভাগ্য খুলে গেল বার্সার। শুরু থেকেই হাইডিফেন্সিভ লাইনে খেলছিল বায়ার্ন। লং পাস থেকে বাম পাশে বল পেয়েছিলেন বার্সার জর্দি আলবা। তার ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়েই বায়ার্নের ডেভিড আলাবা নিজের জালেই গোল দিয়ে বসেন (১-১)।
বার্সা এরপর খানিকক্ষণের জন্য ম্যাচে ফিরেছিল। ডান পাশ থেকে করা মেসির অন্তত দুইটি ক্রস থেকে গোল হতে পারত। তবে দুইবারের একবারও বক্সে থাকা খেলোয়াড়রা মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ক্রসে। লুইস সুয়ারেজও এর মধ্যে একবার ম্যানুয়েল নায়ারের সাথে ওয়ান অন ওয়ানে চলে গিয়েছিলেন; কিন্তু নায়ার তখন দারুণ সেভে আটকে দিয়েছেন তাকে। বার্সার দৌড় সেখানেই শেষ। এই গল্পের তুলনা হবে ২০১৪ বিশ্বকাপের জার্মানি-ব্রাজিল ম্যাচের। ২৭ মিনিটে পেরিসিচের গোলে ২-১ এগিয়ে যায় বাভারিয়ান্সরা। ২৮ মিনিটে গ্যানাব্রি করলেন তৃতীয় গোল। বার্সার রক্ষণভাগ শুধু দর্শকের হয়েই থাকল। ৩১ মিনিটে ডান পাশ থেকে কিমিচের ক্রস কাছের পোস্টে দৌড়ে গিয়ে পা ছুঁয়ে দিলেন মুলার। বার্সেলোনা ১-৪ বায়ার্ন। সুয়ারেজ ৫৭ মিনিটে ব্যবধান করলেন ৪-২। নিভু নিভু আশার আলো তখনো ছিল বার্সার।
শুরু থেকে দুর্দান্ত খেলা ডিফেন্ডার ডেভিসের পাস থেকে ৬৩ মিনিটে জশুয়া কিমিচ গোল করলে ব্যবধান হয় (৫-২)। ২০১৪-এর জার্মানি দ্বিতীয়ার্ধে একটা সময় ক্ষান্ত দিয়েছিল। এই বায়ার্ন তেমন কিছু করল না। এত জন গোল করলেন, রবার্ট লেভানদোস্কি কেন বাদ যাবেন! ৮২ মিনিটে লেভানদোস্কি গোল করলেন হেডে। বার্সার শেষটা আরো মর্মান্তিক করলেন কৌতিনহো। ৮৫ ও ৮৯ মিনিটে বার্সার জালে দুইবার বল পাঠালেন ব্রাজিলিয়ান মিডল্ডিার। ইউরোপে এর আগে এক ম্যাচে পাঁচের বেশি গোল খায়নি বার্সা। লিসবনে এসব কিছু লেখা হলো নতুন করে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল