১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রেঞ্জে ফিরতে মরিয়া বাকী-শাকিলরা

-

‘এমন পরিস্থিতির মুখে আগে পরিনি। ঈদ এবং অন্য ছুটি মিলিয়ে সর্বোচ্চ ২০-২৫ দিন ছুটি কাটিয়েছি। কিন্তু এবার করোনার কারণে প্রায় তিন মাস ধরে রেঞ্জের বাইরে। অনুশীলনে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেল।’ হতাশ কন্ঠে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে গেলেন শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকী। একই মন্তব্য অপর শুটার শাকিল আহমেদেরও। সেনাবাহিনীর শুটার শাকিলের অবশ্য আর্মি শুটিং রেঞ্জে কিছুদিন অনুশীলনের সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু গাজীপুর থাকায় তার আর হয়নি নৌবাহিনীর শুটার বাকীর। বাংলাদেশের এই দুই তারকা ছটপট করছেন ফের রাইফেল আর গুলি নিয়ে রেঞ্জে অনুশীলনের জন্য।
নিয়মিত অনুশীলনে পারফরম্যান্সের উন্নতি হতো বাকী-শাকিলদের। তবে তাদের এই প্র্যাকটিস হতো স্রেফই লক্ষ্যহীন। কারণ করোনা মহামারীর কারণে দেশ বিদেশে শুটিংয়ের সব আসরই বন্ধ। তারপরও অনুশীলন খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। পারফরম্যান্সের উন্নতি বা অবনতি আরো তৎপর হতে সহায়তা করে।
করোনা পিছিয়ে দিয়েছে এই বছরের টোকিও অলিম্পিক গেমসকে। সেই সূত্র ধরে অলিম্পিক গেমসের কোয়ালিফাইং রাউন্ড কয়েকটি বিশ্বকাপও স্থগিত হয়ে গেছে। টোকিও অলিম্পিক গেমস শুটিং রেঞ্জের পরীক্ষামূলক আসরও হয়নি। জার্মানি বিশ্বকাপ, দিল্লি বিশ্বকাপ, কাতারের এশিয়ান এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপও একই পথে হেঁটেছে। অবশ্য এই সব আসরের ভালো করে অলিম্পিক গেমসের জন্য কোটা প্লেসের সুযোগ আগেই নষ্ট করেন বাংলাদেশের শুটাররা। কারণ তাদের পক্ষে কোটা প্লেস করার মতো স্কোর করা সম্ভব হয়নি। ফলে এই সব আসর স্রেফই তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য। জানিয়ে দিতো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাদের অবস্থান।
তা ছাড়া অন্য ডিসিপ্লিনের খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলনের সুযোগ থাকে। যেমন ফুটবলাররা ব্যক্তিগতভাবে বল নিয়ে অনুশীলন করতে পারেন। ক্রিকেটাররা ব্যাটবলের সাহায্যে। কিন্তু বাংলাদেশী শুটারদের নেই সেই সুযোগ। জাতীয় দল বা নিজস্ব ক্লাবের অধীনে তাদের যে অনুশীলন সেটাই ভরসা। এর বাইরে রাইফেল গুলির চর্চার কোনো সুযোগই নেই। আবদুল্লাহ হেল বাকীর মতে, ‘বিদেশে এমনকি ভারতেও শুটারদের ব্যক্তিগত রেঞ্জ আছে। ছোট সেই রেঞ্জে তাদের ব্যক্তিগত অনুশীলন চলে। কিন্তু আমাদের নেই সেই সুযোগ। আবার রাইফেল নিয়ে বাড়ি যাবো তাতেও অনেক ঝামেলা।’ এরপরও ফিট থাকতে হয় শুটারদের। বাকী জানান, ‘ফিটনেস ধরে রাখতে প্রতিদিন আট-দশ মিনিট রানিং করি। সাথে অন্যান্য ট্রেনিং।’ ২০১৪ সালে গ্লাসগো এবং ২০১৮ সালে গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য জয়ী এই শুটার যোগ করেন তিন মাস অনুশীলনের বাইরে থেকে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আবার রেঞ্জে ফিরতে।
পাঁচ মাস পর বাড়ি যাওয়ার ছুটি পেয়েছেন ২০১৬ এস এ গেমসে স্বর্ণ এবং ২০১৮ গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য জয়ী শুটার শাকিল আহমেদ। এবারের টোকিও অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন এমনটা আশা ছিল শাকিলের। তবে আগামীবার হলেও তিনি যাবেন এই দৃঢ় বিশ্বাস। তবে তিন মাস ফেডারেশন আয়োজিত ক্যাম্প বন্ধ থাকলেও আর্মিতে ইলেকট্রনিক্স মনিটর থাকায় সেখানে অনুশীলন করেছেন শাকিল। সাথে আতকিয়া হাসান দিশা, আনোয়ার হোসেন এবং আবদুর রাজ্জাকরা। অলিম্পিয়ান হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী শাকিল বলেন, আমার কমনওয়েল গেমস পদক আছে। ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়েও অবস্থান ভালো। তাই আত্মবিশ্বাসী টোকিও অলিম্পিকে খেলা হবে আমার।’
এর পরেই জানান, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের রেঞ্জে ফিরতে হবে। আশাকরি তাতে অল্প ক’দিনেই পুরনো ফর্মে ফিরতে পারবো। তার মতে,আসলে আমাদের মতো অন্য দেশের শুটাররাও করোনার কারণে নিয়মিত অনুশীলন করতে পারেনি।’ এই গ্যাপে শাকিলও ফিটনেস ধরে রাখতে ওয়েট ট্রেনিং করেছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement