মেঘনার চরে মোস্তাকের অনুশীলন
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ০৬ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
ক্যারিয়ারের উঠতি সোনালী সময়েই ইনজুরির ছোবল। জীবনের গুরুত্বপূর্ন সময় বসে থাকতে হয়েছে হাসপাতালের বিছানায় বা বাড়িতে। তিন দফা হাঁটুতে অপারেশন। বাম হাঁটুতে দুই বার। একবার ডান হাঁটুতে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক ফুটবলারের ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যেত কিন্তু ইনজুরির কাছে হার মানেননি মাসুদুর রহমান মোস্তাক। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া এই গোলরক্ষক তাই ফিট হতে চালিয়ে যাচ্ছেন সংগ্রাম। তাই করোনায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ থাকলেও বন্ধ হয়নি মোস্তাকের অনুশীলন। আবারো পোস্টের নিচে আস্থাশীল হতে তাই নিরিবিলি তার অনুশীলন চলছে মেঘনা নদীর চরে। বসুন্ধরা কিংসের এই কিপার এভাবেই নিজেকে তৈরি করছেন মাঠে নামতে।
দেশের গোলরক্ষক সঙ্কটে আস্থাশীল হয়ে উঠছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই গোলরক্ষক। ২০১৩ সালে তিনি ডাক পান জাতীয় দলে। কোচ সাইফুল বারী টিটুর অধীনে নেপাল এবং থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টি প্রীতি ম্যাচে ছিলেন বাংলাদেশ দলের পোস্টের নিচে। এর আগে বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে খেলেছেন। ২০১৩ সালে তিনি যোগ দেন লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। কপালটা পুড়েছে তখনই। বাম হাঁটুতে মারাত্মক চোট পান। ভারতে গিয়ে অপারেশন কারিয়ে আনলেও পরে ইনফেকশন ধরা পড়ে। তাই ফের ভারত গিয়ে আবার অপারেশন। এরপর চলছিল ভালোই।
সাধারণত এ ধরনের ইনজুরিতে পড়লে যে পায়ে চোট সে পায়ে একটু কম জোর দেয়া হয়। তা সুস্থ হওয়ার পরও। মোস্তাকেরও হয়েছে তা। বাম পায়ে কম জোর দিতে গিয়ে ডান পায়ের ওপর চাপটা বেশি দিয়ে ফেলেন। ফলে ২০১৭ সালে শেখ রাসেলে কাটানোর পর ডান হাঁটুতে শুরু হয় ব্যথা। বাধ্য হয়ে আবার ডাক্তারের শরণাপন্ন। আবারো ডাক্তারের পরামর্শ, অস্ত্রপচার করতে হবে হাঁটুতে। ফলে কী আর করা, আবার আশ্রয় নিতে হলো হাসপাতালের বিছানায়। সুস্থ হয়ে ২০১৮-১৯ মওসুমে যোগ দেন বসুন্ধরা কিংসে। তিন দফা অপারেশন এবং সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়ায় ১২-১৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়ে গেছে মোস্তাকের। অবশ্য টাকা নিয়ে আফসোস নেই তার বরং দফায় দফায় ইনজুরিতে পড়ে চারটা বছর যে মাঠের বাইরে থাকতে হলো এতেই কষ্টটা এই গোলরক্ষকের।
এখন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলার তিনি। করোনার কারনে লিগ বন্ধ হওয়ার পরই চলে চান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। সেখানেই ভৈরব ব্রিজের কাছে মেঘনা নদীর চরে চলছে তার অনুশীলন। মোস্তাক জানান, ‘একটু নিরিবিলিতে অনুশীলন করার জন্যই মেঘনার চরে গিয়ে অনুশীলন করি। সাথে কাউকে নেই না। তা ছাড়া বাড়িতেও চলে ফিটনেস ট্রেনিং। নদীর মাঝখানে থাকা চরেই রানিং করি।’ জানান, অশুগঞ্জের পাওয়ার হাউজ কলোনি মাঠে এখন খেলা বন্ধ। তা করোনার কারণে। তাই চরে যান একদিন পর পর। অন্য দিন বাড়ির পাশের বালুর মাঠে প্র্যাকটিস পর্ব।
বসুন্ধরা কিংসে এখনো খেলা হয়নি মোস্তাকের। আনিসুর রহমান জিকোই কোচ অস্কার ব্রুজনের প্রথম পছন্দ। এরপর আছেন মিতুল হাসান। তবে কোচের আস্থা অর্জনে নিজেকে প্রস্তুত করছেন তিনি। তাই অনুশীলনে সিরিয়াস।
২০০৮ সালে জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার সাইফুর রহমান মনির হাত ধরে পেশাদার লিগে খেলা। সেবার ছিলেন মুক্তিযোদ্ধায়। বিকেএসপির এই ছাত্র ২০১২ সালে ছিলেন দলটির এক নাম্বার কিপার। তার বাবা এবং বড় ভাই খেলোয়াড় ছিলেন। তাই বারবার ইনজুরি সত্ত্বেও পরিবার থেকে খেলা ছেড়ে দেয়ার চাপ আসেনি। মোস্তাক জানালেন, ‘আমি শেষ দেখতে চাই। আবার খেলতে চাই গোলরক্ষক পজিশনে। তাই চালিয়ে যাচ্ছি চেষ্টা। ফিটনেসের যে ঘাটতি ছিল তা পূরণে এই করোনাজনিত ছুটি দারুণ কাজে লাগছে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা