২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ওরা চান না দানের প্রচারণা

-

করোনার ভয়াবহতায় দেশে চলছে সাধারণ ছুটি। সব প্রতিষ্ঠানই বলতে গেলে বন্ধ। এতে একেবারেই অসহায় নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে পড়ায় বেঁচে থাকাই দায়। এই অসহায় মানুষদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছেন দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। যে যেভাবে পারছেন সহযোগিতা করছেন। গরিব মানুষের জীবন চলার জন্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। ক্রীড়াঙ্গনের মানুষও এই কাতারে। তারাও যে যার মতো সহায়তা করছেন। কেউ করছেন ব্যাপক আয়োজনে। দানের এই চিত্র ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আবার কেউ করছেন গোপনে। পারত পক্ষে যতটুকু সম্ভব প্রচারণা এড়িয়ে যাচ্ছেন। এই দলে পাওয়া গেল জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলারদের। তারা যে যার মতো গরিব অসহায়দের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। কিন্তু সে চিত্র আর ছড়িয়ে দিচ্ছেন না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
১৯৯৯ এর এস এ গেসম এবং ২০০৩ সাফ এর চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সদস্য বিপ্লব ভট্টাচার্য্য। ক্যারিয়ারের একেবারে শেষ পর্যায়ে এই গোলরক্ষক। এবারে লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে যোগ দিয়েছেন। গোলরক্ষক কোচ কাম খেলোয়াড় হিসেবে। তিনিও বিপদে পড়া লোকদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। তবে কোনোভাবেই তা জানান দিয়ে নয়। তার মতে, আমি ঢাকা মোহাম্মদপুরে থাকি। আমি আমার এলাকায় বিভিন্ন রিকশাওয়ালা এবং খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করেছি। তবে আমি এর কোনো প্রচারণা চাই না। এমন প্রচারণা আমার পছন্দেরও নয়।’ জানান, আগামীতে আরো খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করব আমার সাধ্যমতো।
২০০৩ সাফে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের আরেক সদস্য ফিরোজ মাহমুদ হোসেন টিটু। এই রাইট ব্যাক কয়েক বছর আগেও ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের ম্যানেজার। থাকেন ঢাকার উত্তরায়। এখানে তিনি কিছু সাহায্য করেছেন। তবে নিজ জেলা বরগুনাতে তিনি প্রায় দেড়শ’র মতো লোককে চাল, ডাল, তেল, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দিয়েছেন। তার পক্ষ থেকে স্থানীয়রা এ গুলো বিতরণ করেছেন। টিটুর বক্তব্য, ‘আমি ভাই এই সব দানের প্রচারণার বিরোধী। দান করে তার প্রচার করলে দানের আসল উদ্দেশ্যই নষ্ট হয়, যা ইসলাম সম্মতও নয়।’ জানান, আমার এলাকায় আমি প্রতি বছরই কিছু না কিছু দান করি। জাকাত দেই। কিন্তু আমি কখনই সেখানে যাই না। আমার পক্ষ থেকে দেয়া হয়।
জাতীয় দলের সাবেক আরেক ফুটবলার মিডফিল্ডার ইমন বাবু আর্থিক সহায়তা দিলেও উপস্থিত ছিলেন না গেণ্ডারিয়ায় গরিবদের মধ্যে খাদ্য বিতরণের সময়।
২০০৩ সাফের আগের সদস্য হাসান আল মামুন এখন শেখ জামালের সহকারী কোচ। তিনি অবশ্য দানের প্রচারণার পক্ষে এবং বিপক্ষেই কথা বললেন। তার মতে, দেখানোর উদ্দেশ্যে দান করলে জনপ্রিয়তা মেলে। সওয়াব কতটুকু পাওয়া যাবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আবার প্রচারণারও দরকার আছে। তাহলে এটা দেখে অন্যরাও এগিয়ে আসবেন।’ জানান , আমাদের শেখ জামালের ফুটবলারদেরও পরিকল্পনায় আছে অসহায় মানুষের জন্য সাহায্য করা। কথা বার্তা শুরু হয়েছে সবার মধ্যে।
ফুটবলরাররা এখনো ঐক্যবদ্ধভাবে গরিবদের সহায়তায় নামেননি। যে যার মতো করে যার যার এলাকায় গরিবদের সহায়তা করছেন। জাতীয় দলের ফুটবলার বিপলু এবং আরিফুর রহমানরা তাদের জেলাতে এই কাজে নেমেছেন। জাতীয় দলের তিন সাবেক ফুটবরার কাজী মোফাজ্জল হোসেন সৈকত, আশরাফ মাহমুদ লিংকন এবং আকবর হোসেন রিদনসহ নোয়াখালীর অন্য ফুটবলাররাও বিপদগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করছেন।
ফুটবল খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি এখনো মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তবে সমিতির সভাপতি এবং বাফুফের সদস্য ইকবাল হোসেন জানান, আমরা আগামী শুক্রবার সহায়তায় নামব গরিব মানুষের জন্য। সদস্য যারা আছেন তারা যে যা পারেন টাকা-পয়সা দেবেন।


আরো সংবাদ



premium cement