২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

অর্ধেক বেতন দিলেন ক্রিকেটাররা

করোনা মহামারী
-

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্রিকেটাররা। এক মাসের বেতনের অর্ধেক সরকারি তহবিলে অনুদান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম-মুশফিক-মাশরাফিরা। সর্বমোট ২৭ জন খেলোয়াড় তাদের মাসিক বেতনের অর্ধেক অনুদান দিচ্ছেন। এই ২৭ জনের মধ্যে ১৭ জন বিসিবি চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়। বাকি ১০ জন সম্প্রতি জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন।
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের মাসিক বেতন ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মাসিক বেতনের ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছেন তিনি। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের মাসিক বেতন ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। মাসিক বেতনের ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। নতুন চুক্তিতে না থাকলেও জাতীয় দলের হয়ে খেলা ২৭ খেলোয়াড়ের মধ্যে ছিলেন মাশরাফি। আগের চুক্তিতে মাশরাফির মাসিক বেতন ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার। নিয়মানুযায়ী, সম্প্রতি জাতীয় দলের হয়ে খেলার কারণে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা অনুদান দিবেন তিনি।
এ বিষয়টি জানাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের শরাণাপন্ন হন তামিম-মুশফিকদের মতো জাতীয় দলের সিনিয়র খেলোয়াড়রা। ফেসবুকের মাধ্যমে তারা অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর সাথে আমাদেরও অনেক কিছু করার আছে। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ১৭ জন খেলোয়াড় ও আরো ১০ জন খেলোয়াড় যারা সম্প্রতি জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন, সর্বমোট ২৭ জন খেলোয়াড় করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে মাসিক বেতনের অর্ধেক দিচ্ছি। কর দেয়ার পর আর্থিক সহায়তার পরিমাণ হবে প্রায় ২৬ লাখ।’
মুশফিক জানান, ‘তহবিলে জমা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো। কর কেটে থাকবে ২৬ লাখ টাকা। করোনার বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের এই উদ্যোগ হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাদের সামর্থ্য আছে তারা সবাই যদি একসাথে এগিয়ে আসেন কিংবা ১০ জনও যদিও এগিয়ে আসেন, এই লড়াইয়ে আমরা অনেক এগিয়ে যাব। হ্যাঁ, ইতোমধ্যে করোনা মোকাবেলায় অনেকে এগিয়ে এসেছেন। তাদের অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। কিন্তু বৃহৎ পরিসরে যদি আরো অনেকে এগিয়ে আসেন, তাহলে আমরা এই লড়াইয়ে জিততে পারব ইনশাআল্লাহ। সেই সহায়তা হতে পারে ১০০, ৫০০০ কিংবা ১ লাখ টাকা দিয়ে। টাকা দিয়ে না হোক হতে পারে দুস্থ মানুষকে খাবার কিনে দিয়ে। আসুন, পুরো দেশকে আমরা একটা পরিবার ভেবে চিন্তা করি এবং এই বিপদে সবাই সবাইকে সহায়তা করি। আল্লাহ নিশ্চয়ই রক্ষা করবেন। ইনশাআল্লাহ।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘পুরো বিশ্ব এখন করোনাভাইরাসের বিপক্ষে লড়াই করছে। দিনে দিনে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরো বাড়ছে। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনাভাইরাসের বিপক্ষে সবাইকে সচেতন করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। করোনা মোকাবেলার জন্য এই অর্থ হয়তো খুব বেশি নয়। কিন্তু আমরা যদি নিজেদের অবস্থান থেকে অবদান রাখতে পারি, তবে এই মহামারী ভাইরাসের বিপক্ষে বড় পদক্ষেপই হবে। আমরা যদি দায়িত্ব নিতে পারি এবং অন্যের অবদানের সমালোচনা না করে আন্তরিকভাবে অবদান রাখার চেষ্টা করি, তবে করোনার বিপক্ষে এই যুদ্ধে আমরা জিততে পারব। সবাই দয়া করে বাড়িতে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। সবাই ভালো থাকুন ও আমাদের দেশকে সুরক্ষিত রাখুন।’
মহামারী করোনাভাইরাসের জন্য সরকার থেকে এখনো কোনো তহবিল গঠন করা হয়নি। তাই এই অনুদান কোথায় দেয়া হবে, এ নিয়ে বিসিবির সাথে আলোচনা করেছেন খেলোয়াড়রা, এমনটা নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার সাব্বির খান।

 


আরো সংবাদ



premium cement