২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সময় চাইলেন ডোমিঙ্গো

-

আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের একমাত্র টেস্ট। গতকাল ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে দলের ভালোমন্দ, ক্রীড়াপ্রেমী, দর্শক ও সংবাদ মাধ্যম নিয়ে অনেক কথাই বললেন দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। ভালো কিছু পেতে চাইলে অনভিজ্ঞ দলটিকে সময় দেয়ার কথা বললেন তিনি।
সময় চাইলেন কোচ
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে প্রশ্ন-উত্তরপর্ব শেষ করার পর কিছু সময় চেয়ে নিলেন ডোমিঙ্গো। অনেকটা অনুরোধের ভঙ্গিতে সাংবাদিক ও দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বললেন, ‘যাওয়ার আগে দুই একটি বিষয়ে কথা বলতে চাই। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে পাগলের মতো ভালোবাসে। দর্শক, সংবাদমাধ্যম, সবকিছুই অবিশ্বাস্য। তবে সবাইকে বুঝতে হবে, এই টেস্ট দলে নাজমুল তিনটি টেস্ট খেলেছে, সাইফ তার দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। আবু জায়েদ মাত্র সাতটি টেস্ট খেলেছে। এবাদত খেলেছেন চারটি। দলটা খুবই অনভিজ্ঞ।
দলের অধিনায়ক দায়িত্ব নিয়েই ভারত, পাকিস্তানের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব করেছে। বিশ্বের অন্যান্য অধিনায়কের হাতে ১০০-১৫০ টেস্ট খেলা টেস্ট বোলার আছে। ব্রড খেলেছে ১৪০, রাবাদা খেলেছে ৫০ টেস্ট, ফিল্যান্ডার খেলেছে ৭০ টেস্ট। মিচেল স্টার্ক খেলেছে ৬০ টেস্ট। আমি বলতে চাচ্ছি, সংবাদমাধ্যমকে ধৈর্য ধরতে হবে। নির্বাচকদেরও কিছু ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা রাখতে হবে। আমি যে দলের কোচিং করাচ্ছি, এই মুহূর্তে টেস্ট ক্রিকেটে এটিই সবচেয়ে অনভিজ্ঞ টেস্ট দল। আর আপনারা প্রত্যাশা করছেন, এই দলটি ভারত, পাকিস্তান গিয়ে এক দিনের অনুশীলনেই ওদের সাথে প্রতিযোগিতা করবে।
সুতরাং, ধৈর্য ধরুন। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে। সমর্থক ও সংবাদমাধ্যমের সমর্থন ওদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভালো খেলতে হবে, ওরা এটা জানে। তবে কিছু সময় দরকার, বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। সুতরাং, ধৈর্য ধরুন। ওরা আপনাদের গর্বিত করবে। কিছু সময় দরকার এই যা।’
দল গঠনে ভূমিকা
কদিন আগেই বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান বলেছিলেন, এখন থেকে বাংলাদেশ দলের সব ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্তে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন। দলের একাদশ, ব্যাটিং অর্ডার সব সিদ্ধান্তেই লাগবে তার সবুজ সঙ্কেত। ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কোচ ও অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে নাকি তিনি তোয়াক্কা করবেন না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলতে নামার আগে টেস্ট দল কে ঠিক করবে জানতে চাইলে মৃদু হেসে ডোমিঙ্গো জানালেন, ‘বিসিবি প্রধান দল নিয়ে বেশ আবেগপ্রবণ। দল ভালো করুক, এটাই তিনি চান। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কথা হয়নি। দরকার আছে বলেও মনে করি না, এখন পর্যন্ত।’
প্রসঙ্গ মাহমুদুল্লাহ ও মুস্তাফিজ
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাদ দেয়া হয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে। এতে ধারণা করা হচ্ছে রিয়াদের টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ। তবে অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে টেস্টে ফিরতে হলে নিজেকে প্রমাণ করেই ফিরতে হবে বলে মনে করছেন ডোমিঙ্গো ‘টেস্ট দলে জায়গা পেতে হলে তাকে আবার সেভাবেই পারফর্ম করে ফিরতে হবে। তবে একজন প্লেয়ারের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার আছে, কখন সে দেশের হয়ে খেলা শেষ করবে। তবে আমি তাকে বলব, সাদা বলে মনোযোগ দেয়ার জন্য। সে আমাদের দলের সাদা বলের ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ মুহূর্তে সে দলের বাইরে। তবে লাল বলের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে বলেছি।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল মুস্তাফিজুর রহমানকে। তখন ডোমিঙ্গো বলেছিলেন, বল ইনসুংইয়ের দক্ষতা বাড়াতে না পারলে দলে ফেরার সম্ভবনা খুবই কম এই কাটার মাস্টারের। অথচ পরের টেস্টে অর্থাৎ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দলে ঢুকলেন মুস্তাফিজ। কোচ জানালেন মুস্তাফিজ দলে রয়েছে অনুশীলনের জন্য। একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। ‘দলের নতুন বোলিং কোচ ওটিস গিবসন মুস্তাফিজকে নিয়ে কাজ করবেন। টেস্টে না খেললেও প্রতিদিন সে বোলিং করবে, কোচের সাথে কাজ করবে। আপাতত তার কাজ এটিই। কিছুটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে তার ব্যাপারে। আমার মনে হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিজের বোলিংয়ের কিছু পরিবর্তন না আনবে, ততক্ষণ সে টেস্ট খেলার জন্য প্রস্তুত নয়।’ তিনি আরো বলেন, এ বাঁহাতি পেসারের মূল শক্তি লাইন-লেন্থ ও নিয়ন্ত্রণ। বাকি পেসারদের সাথে মুস্তাফিজের পার্থক্য হলো সে দুই ধরনের কাটার মারতে পারে। কিন্তু কাটার আর লেন্থ বলগুলো ডানহাতি। ব্যাটসম্যানরা বুঝতে পারলে সহজেই মুস্তাফিজের বলকে ঝুঁকিমুক্ত করা যায়। এখন তাকে লেন্থ থেকে বল অন্তত ১০ শতাংশ ভেতরে আনতে হবে। তখনই ব্যাটসম্যানদের মনে ভয়ের সঞ্চার হবে।’
অপেশাদারী আচরণ
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অপেশাদারী আচরণ অবাক করে না রাসেল ডোমিঙ্গোকে। এমন কিছু তিনি নাকি দক্ষিণ আফ্রিকাতেই দেখে এসেছেন। ‘দেখুন, আমি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছি। সেখানে অনেক সমস্যার মধ্যে কাজ করতে হয়েছে। আমি ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া থেকে আসিনি, যেখানে আপনি যা ইচ্ছে তাই করতে পারবেন। এসব ব্যাপারে আমি অভ্যস্ত। বোর্ডের পক্ষ থেকে আসা চাপ ক্রিকেটারদের কাছে পৌঁছতে দেই না। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অধিনায়ক ও ক্রিকেটারদের এসব থেকে দূরে রাখি।’


আরো সংবাদ



premium cement