২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাসেল ডমিঙ্গোর সাত চ্যালেঞ্জ

-

পোশাক পাল্টানোর মতোই কোচ পরিবর্তনের ফাঁদে টাইগার ক্রিকেটে। শেষ ৭ বছরে বাংলাদেশের অষ্টম কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। ২০১১ সালের সর্বশেষ জেমি সিডন্সের সৌভাগ্য হয়েছিল পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাম্প্রতিক কোচ পরিবর্তনের ইতিহাস নতুন ডমিঙ্গোর জন্যও তৈরি করেছে নির্দিষ্ট মেয়াদে দায়িত্ব পালনে বাড়তি চ্যালেঞ্জ।
পরিষ্কার ধারণা
সদ্য বিদায়ী টাইগার কোচ স্টিভ রোডসকে ‘ জয়-পরাজয়ে অভিব্যক্তিহীন চমৎকার একজন মানুষ’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। অথচ এক বছর আগে নিয়োগকালীন সময়ে ইংলিশ কোচের উদার ব্যক্তিত্বের প্রতি চরম সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিল বিসিবি। সংস্থাটির কর্তাদের অনেকেই রোডসকে অনেক বেশি সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন হাথুরাসিংহের তুলনায়।
অনেকের মতে লঙ্কান কোচের সাথে বিসিবির সম্পর্কের অবনমনের সূচনা হয় ২০১৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের সময়। তবে কোচ হিসেবে কাজ শুরু মাত্র দুই মাসের মাথায় রোডসের সাথে বিসিবি প্রধানের টানপড়নের খবর প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। টাইগার ক্রিকেটের সাম্প্রতিক কোচিং অধ্যায় রাসেল ডোমিঙ্গোর জন্য অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত করেছে বিসিবির প্রকৃত চাওয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা অর্জন!
তামিম-মাশরাফির অনুপস্থিতি
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সিনিয়র দুই ক্রিকেটারকে মাশরাফি বিন মর্তুজা ও তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে কোচিং ক্যারিয়ারের সূচনা হচ্ছে ডমিঙ্গোর। অবসরের বিষয়টি আপতত স্থগিত করেছেন মাশরাফি। খেলা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিলেও আগামী বছরের মার্চের আগে মাঠে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট নেই ওয়ানডে অধিনায়কের। সংক্ষিপ্ত বিশ্রামে বর্তমান ক্রিকেটের বাইরে তামিম। টাইগার ক্রিকেটের সবচেয়ে সিনিয়র দুই সদস্যের অবর্তমানে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহের শ্রেষ্ঠ নৈপুণ্য বের করে আনার কোনো বিকল্প নেই ডমিঙ্গোর সামনে।
দ্বিতীয় প্রজন্ম
দীর্ঘ মেয়াদে ডমিঙ্গোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র লিটন দাস, সৌম্য সরকার , সাব্বির রহমান ও মুস্তাফিজুর রহমান। তবে পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব রয়েছে তাদের মধ্যে। প্রতিভাবান এ সব ক্রিকেটারদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নৈপুণ্য উপহার দেয়ার প্রত্যয় জাগানোর কাজটি নতুন কোচের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। নতুনদের মধ্যে একমাত্র মেহেদি হাসানই উন্নতি ধারাবাহিকতা অটুট রাখার কৃতিত্ব দেখাতে পেরেছেন।
সঠিক উইকেট
ঘরের মাঠে ঠিক কী ধরনের উইকেটে খেলতে চান, তা চূড়ান্ত করতে হবে ডমিঙ্গোকে। ২০১৬ সালের পর থেকে স্পিন বান্ধব স্লো-উইকেটে খেলার পথ বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ। অধিক মাত্রায় স্পিন নির্ভরতা হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে পেস বোলিংয়ের ভবিষ্যৎ। ২০১৮-১৯ মওসুমে ঘরের মাঠে টাইগার বোলারদের ৭৭ উইকেটের মাত্র ৩টি গেছে পেসারদের দখলে।
স্লো-উইকেটে আধিপত্য টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলিংকে ঠেলে দিয়েছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। আসন্ন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টাইগারদের পারফরম্যান্সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে ঘরের মাঠে খেলার জন্য ডমিঙ্গো কী ধরনের উইকেট বেছে নিচ্ছেন তার উপর।
অধঃপতিত ঘরোয়া ক্রিকেট
বাংলাদেশের সবপর্যায়ের ক্রিকেটের মধ্যকার নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ডমিঙ্গোর আগ্রহ প্রশংসাযোগ্য। কিন্তু এ জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে তিনি কতটা স্বাধীনতা পাবেন তা অবশ্য সময়ই নির্ধারণ করবে। মূলত ৫০ ওভার ফরম্যাট নির্ভর বাংলাদেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ ঘরোয়া ক্রিকেট ঢাকা লিগ। সাম্প্রতিক সময়ে লিগটির বিপক্ষে আম্পায়ারিং দুর্নীতির অভিযোগ চরমে পৌঁছেছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন বাংলাদেশের চার দিনের ফার্স্টক্লাস ক্রিকেট।
কে বেশি ক্ষমতাবান?
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবকিছুতেই মতামত রয়েছে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসানের। তার ক্ষমতার ব্যাপারে হয়তো ইতোমধ্যেই স্পষ্ট ধারণা হয়ে গেছে ডমিঙ্গোর।
প্রধান লক্ষ্য
বিসিবির মূল লক্ষ্যÑ ঘরের মাঠে টাইগারদের নিয়মিত জয়ের ধারাবাহিকতা। একটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়কেও প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপ টার্গেট বাংলাদেশের। হাতে ১২ মাস সময় পাচ্ছেন ডমিঙ্গো।

সূত্র : ক্রিকইনফো

 


আরো সংবাদ



premium cement