২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

৯ বছর পর ফাইনালে মালদ্বীপ

মালদ্বীপ ৩ : ০ নেপাল
ফাইনালে উঠার আনন্দে মাতোয়ারা মালদ্বীপের ফুটবলাররা :শফিউদ্দিন বিটু -

কোনো ম্যাচ না জিতে এবং কোনো গোল না দিয়ে টস ভাগ্যে এবারের সাফের সেমিফাইনালে আসা মালদ্বীপের। যা তাদের ফুটবলের গত ২০ বছরের ফুটবল ইতিহাসের সাথে বেমানান। এই নিয়ে বেশ চাপে ছিলেন তাদের ক্রোয়েশিয়ান কোচ পিটার সেগার্ট। আলী আশফাকের মতো ফুটবলারকে তিনি রাখেননি দলে। কিন্তু কাল প্রথম সেমিফাইনালে নেপালের বিপক্ষে সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারায় মালদ্বীপ জাতীয় দল। একে একে তিনবার বল পাঠালো এবারের সাফের গতকালের আগ পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো দলের খ্যাতি পাওয়া নেপালের জালে। স্বাগতিক বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিতে এসেছিল নেপাল। কাল নেপাল জয়ের মাধ্যমে ৯ বছর পর আবার সাফ ফুটবলের ফাইনালে এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। ২০০৯ সালে এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই তারা সর্বশেষ সাফের ফাইনালে খেলেছিল। সাফের ফাইনালে এটি মালদ্বীপের পঞ্চম উপস্থিতি। অন্য দিকে নেপালও পঞ্চমবারের মতো বাদ পড়লো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই আসরের সেমিফাইনাল থেকে। ১৫ সেপ্টেম্বর ফাইনাল।
গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভারতের কাছে ০-২ গোলে হেরে টসে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার পর মালদ্বীপ কোচ বলেছিলেন, সেমিতে আমরা ঠিকই গোল করব এবং ফাইনালে যাব। কাল তার শিষ্যরা সে কাজই করে দেখালো বৃষ্টিভেজা মাঠে। তাদের তিনটি গোলের পরই বাড়তি উল্লাস ছিল কোচ সেগার্টের। শূন্যে লাফিয়েছেন। অন্যদের জড়িয়ে ধরে আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। ম্যাচ শেষেতো কাউকে বাদ দেননি কোলাকুলি করতে। নিশ্চয়ই গত সাফে আফগানিস্তানকে ফাইনালে নেয়ার পর এবার মালদ্বীপকে ফাইনালে নিয়ে বেশ খুশি তিনি। সাথে মুখ বন্ধ করলেন সমালোচকদের।
ম্যাচের সময় বৃষ্টির সাথে শুরু হয় বজ্রপাত। ফলে ম্যাচের ২৭ মিনিট পর বজ্রপাতের হাত থেকে ফুটবলারদের রক্ষা করতে খেলা বন্ধ রাখেন ম্যাচ কমিশনার চাইনিজ তাইপের চেন লিয়াং। ৩২ মিনিটি পর আবার খেলা শুরু। অবশ্য এর আগেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় মালদ্বীপের দখলে। ৯ মিনিটে এগিয়ে যায় ২০০৮-এর সাফ চ্যাম্পিয়নরা। অধিনায়ক আকরাম আবদুল গনির বাম পায়ের নেয়া বাঁকানো ফ্রি-কিকে পা ছোঁয়াতে মালদ্বীপের এক ফুটবলার। কিন্তু তিনি বলের নাগাল পাননি। আবার বলটি ঠেকাতে ব্যর্থ নেপালের গোলরক্ষক কিরন কুমার লিম্বুও। ফল যা হওয়ার তাই। বলের আশ্রয় সোজা জালে।
এরপর শুরু হয়ে নেপালিদের ম্যাচে ফেরার প্রাণান্তকর চেষ্টা। কিন্তু তাদের তারকা ফুটবলার ভারত খাওয়াজ ৪১ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করায় সমতা আসেনি। বিমল ঘার্তি মাগারের শট গোলরক্ষক মোহাম্মদ ফয়সালের হাত ফসকে বের হলে সেই বল বাইরে মারেন ভারত খাওয়াজ। ৬১ মিনিটে বিমলের হেডে বাধা বিপক্ষ কিপার। এরপর ৬৮ ও ৭৬ মিনিটে আবার গোল মিস নেপালের।
২০১৩-এর সাফের স্বাগতিক এবং সেমিতে বিদায় নেয়া নেপাল যখন গোল পরিশোধে মরিয়া, তখন মালদ্বীপ কোচ কাউন্টারে জয় নিশ্চিতের কৌশল অবলম্বন করেন। তাতেই ফল। ৫০ মিনিটে হাসান নিয়াজ গোলরক্ষককে একা পেয়েও যে শট নেন তা ঠেকান নেপালের কিপার। ৭৮ মিনিটেও হুসাইন সুফিয়ানের হেডে বাধা কিরন। তবে ৮৪ মিনিটে আর টেনশনে থাকতে হয়নি মালদ্বীপকে। বদলি আসাদুল্লাহ আবদুল্লাহর শট ডিফেন্স কিয়ার করলে সেই বল বক্সের বাইরে গিয়ে পড়ে ইব্রাহিম হোসেন ওয়াহেদের পায়ে। মুহূর্তেই তার শট বোকা বানায় নেপালের শেষ প্রহরীকে। ম্যাচ তখনই শেষ। তাই বলে ডিফেন্সিভ হয়ে পড়েনি মালদ্বীপ। যে কারণে ৮৭ মিনিটে আবার তাদের গোল উৎসব। এবারো গোলদাতা ইব্রাহিম হোসেন ওয়াহেদ।
ইনজুরি টাইমে ফের বিমলকে মালদ্বীপের কিপার হতাশ করলে ৩ গোলের হার নিয়ে সাফের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন অপূর্ণই রাখতে হয় নেপালকে।


আরো সংবাদ



premium cement