১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আগডুম বাগডুম : কবিতা

-

গ্রামের বাড়ি
নজরুল ইসলাম শান্তু

আমার গ্রামের মেঠোপথ ছিল মাটির গন্ধে মাখা
স্নিগ্ধ কোমল শীতল পরশে সুখ ছিল ঝাকানাকা।
পথের দু'ধারে শ্যামল সফেদ খেজুর গাছের সারি
তার থেকে ঠিক চার মাইল দূরে পুটিয়াতে নানাবাড়ি।

দূর থেকে দূর সুর তরঙ্গে খাল-বিল ভরা মাছ
পুকুরের পাড় জুড়েই ছিল বাতাবি লেবুর গাছ।
মাঠ থেকে মাঠ ঘাটের স্বরূপ ধান ফসলে ভরা
কৃষকের হাল পারে না দমাতে চৌত্র মাসের খরা।

হাঁটবারে তাই ব্যস্ত সবাই হয় কেহ সাঁকো পার
তাই এতো লোক মাথায় বোঝা আঁকাবাঁকা চারিধার।
দূরের গ্রামের সুরের লহর পালকিতে বুঝি নর...
নোয়াদ্দার-ঐ হাজি বাড়ি থেকে সিড্যাতে যায় বর।

সে পথ আমার খুবই চেনাজানা প্রাণহীণ লাগে আজ
ক্রমাগত সব হচ্ছে বিলীন সবুজের কারুকাজ।
গুলমাইজ আমার গ্রামের বাড়ি আমার জন্মঘাঁটি
প্রকৃতির সেরা গ্রামীণধারায় উর্বরা তার মাটি।


কর্মের ফল
লাবনী খানম

কর্ম যেমন ফলটা তেমন
সত্য কথা ভাই,
অতি শ্রমে সফলতা
বিফলতা নাই।

লোহা যেমন মরিচা পায়
অবহেলার তর,
কর্মবিমুখ মানবেরা
দুখী জীবন ভর।

অধ্যবসায় করে যে জন
সেই তো জ্ঞানী হয়,
জীবনযুদ্ধে করে সংগ্রাম
অন্তরে নাই ভয়।

অন্যায়, মিথ্যা অপকর্মে
চরিত্র হয় ক্ষয়,
নির্ভীকতা সত্য লড়াই
আনবে একদিন জয়।

ছোট্ট মোদের মানবজীবন
কর্ম করে যাও,
যত আছে মনবাসনা
পূর্ণ করে নাও।

 

ইঁচড়েপাকা
কবির আশরাফ

ছেলে খুব চঞ্চল
ঘুরে পুরো অঞ্চল একাকী,
বয়স পাঁচ কি ছয়
নাই ডর নাই ভয়
সহজে বুঝে সে
সাইনবোর্ডে লেখা কি।
শুধু করে খাই খাই
খেয়ে বলে খাই নাই কি আজব,
বকে সে আজেবাজে
অন্যের কামে কাজে
শুধু শুধু ভুল ধরে বেআদব।
খুব বেশি পাজি সে
অকাজের কাজী সে ইশ্,
মা'র সাথে রাগ করে
চুপিচুপি পাকঘরে
খেয়ে ফেলে ইঁদুরের বিষ।

 

ইতিহাস
নূর সিরাজী

ইচ্ছে করলে অনেক কিছুই
করতে পারো জাল
সাদা সাদাই কালো কালোই
থাকবে চিরকাল।

আপন কর্ম যায় না ঢাকা
কাবার গেলাপ ধরে,
সত্য যাহা উঠবে ফুটে
দু’দিন আগে পরে।

আসল সত্য গোপন করে
মিথ্যে করে পেশ,
মহাকালের ইতিহাসে
ভাবছো হবে বেশ।

বই পঠনে অতীত যেমন
আজকে আমরা জানি,
বর্তমানের বাস্তবতাও
জানবে লোকে মানি ।

মীর জাফর ও সিরাজুদ্দৌলা
ইতিহাসে যেমন,
তোমার আমার ইতিহাসও
জানবে লোকে তেমন।

 

শেষ বিকেলে
শাহরিয়ার শাহাদাত

শেষ বিকেলে পাতায় পাতায়
হলদে রোদের মাখামাখি,
সোনালি রঙ ধানের ক্ষেতে
ধানটুনিদের ডাকাডাকি।

সবুজ ঘাসের রুপ মলাটে
ঘাসফড়িংয়ের ওড়াউড়ি
দূর দিগন্তে গাঙশালিকের
বেপরোয়া ঘোরাঘুরি।

আকাশছোঁয়া গগন শিরিষ
নীলচে আঁচল বিছিয়ে রাখে
নারকেলের ঐ নরম শাঁখে
শীতল হাওয়া আদর মাখে।

এই প্রকৃতি ডাকছে আমায়
‘আর কিছুক্ষণ থাকবি পাশে?
একটু পরেই ফিরবো ঘরে
মুয়াজ্জিনের আযান ভাসে।

ধূপের মতন সন্ধ্যা নামে
বুনো তুলসীপাতার ভাঁজে
ঘোল আঁধারে ছাতিম ফুলও
জুনির আলোয় হীরক সাজে !


আরো সংবাদ



premium cement