২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তালগাছে কে রে

-

হাতেম আলীকে গাঁয়ের সবাই একজন সাহসী মানুষ হিসেবে চেনে। এর পেছনে অনেক ঘটনাও আছে। তার পোড় খাওয়া চেহারা দেখেও সেটি অনুমান করা যায়। তা ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এর যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। লোকমুখে ডাকাতদের সাথে তার ধস্তাধস্তি আর বীরত্বের সাথে লড়ে যাওয়ার ঘটনা প্রসিদ্ধ।
কিন্তু সে দিন ঘটল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী একটি ঘটনা। এই ঘটনা তার জীবনের মোড়কে ঘুরিয়ে দিলো।
রাত তখন ১টা কী দেড়টা হবে। গাঁয়ের সব মানুষ গভীর ঘুমে ডুবে আছে। কোনো সাড়াশব্দ নেই কোথাও। এমন সময় হাতেম আলী ঘর থেকে বাইরে বের হলো প্রয়োজন সারতে। কিন্তু যেইনা পুবদিকের তালগাছটার নিচে এলো তখনই কে যেন তালগাছের মাথা থেকে তার নাম ধরে ডাক দিয়ে উঠলো।
এই হাতেম! এত রাইতে এইহানে কী করতে আইলি?
হাতেম আলী ভ্রু কুঁচকে উপরে তাকালো। হাতে থাকা টর্চ লাইটের আলো জ্বেলে ধরলো সোজা উপরের দিকে। না তো, কোথাও তো কাউকে দেখা যাচ্ছে না। তাহলে কি সে ভুল শুনলো! এসব ভাবতে না ভাবতেই আবারো একই ডাক পুনরায় শুনতে পেলো।
কীরে ব্যাটা, সাহস কি বেশিই বাইড়া গেলো? দাঁড়া, মজা দেখাচ্ছি।
এইবার তার মনে হলো, না, সত্যিই তাকে কেউ ডাকছে ওপর থেকে। বুকের ভেতর সবটুকু শক্তি একত্র করে হাতেম আলী জবাব দিলো,কে রে তুই? ভালোই তো ফাপর নিচ্ছিস। সাহস থাকলে নিচে নেমে আয়তো। দেখি, তোর বুকের পাটা কতটুকু!
এ কথা বলা শেষ করতে না করতেই পেছন থেকে কে যেন দুই কাঁধ চেপে ধরল তার। সাথে সাথেই জ্ঞান হারালো হাতেম আলী।
পরদিন ভোরবেলা বেশ কিছু লোক ক্ষেতে যাওয়ার সময় লক্ষ করলো, হাতেম আলী অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে তালগাছের নিচে। দ্রুত তারা তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। হাতেম আলী ঘটে যাওয়া সব ঘটনা শোনায় সবাইকে। চোখেমুখে ভয়ের স্পষ্ট ছাপ বোঝা যায় তার। সবাই অবাক হয়ে শুনে তার সাথে ঘটে যাওয়া পুরো কাহিনী। সাহসী হাতেম আলীর জীবনে এই প্রথম এমন অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটলো।
তারপর থেকে গভীর রাতে একা একা কেউ তালগাছের নিচে যাওয়ার সাহস করেনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement