২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ফুলকীর জীবন

-

ফুলকির বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে ওরা খুব কষ্টে আছে। তাই ফুলকির মা পাশের বাড়ির বড় সাহেবের ছেলের বাসায় ওকে কাজে দিয়ে দিলো। ফরিদ সাহেবের দু’টি মেয়ের সাথে খেলাধুলা করে আর ঘরের টুকিটাকি কাজ করে। বিকেলের দিকে শিশুরা ছবি আঁকে তখন ফুলকি পাশে বসে থাকে। সেদিন ছোট মেয়েটা কিছুতেই ছবিটা আঁকতে পারছিল না। কালকেই এটি জমা দিতে হবে।
ফুলকি তখন বলে, আমাকে একটি কাগজ দাও আমি চেষ্টা করি। মেয়েটা বলে তুই তো লেখাপড়া জানিস না, তুই কি আঁকতে পারবি? ফুলকি বলে আমি লেখাপড়া জানি না ঠিকই; কিন্তু আমি খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারি। ছোট মেয়েটা ওর হাতে কাগজ-পেনসিল দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই খুব সুন্দর করে ছবিটি এঁকে দিলো। স্কুলের শিক্ষক পুরো নম্বর দিলো এবং তার আঁকার খুব প্রশংসা করল। ছোট মেয়েটি প্রতি সপ্তাহে এই কাজটি করতে লাগল।
বড় মেয়ে ঝুমা পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। এই কাজটি মোটেও তার পছন্দ হচ্ছে না, তাই সে তার বাবা-মাকে বলে দিলো। বাবা-মা ছোট মেয়ে উমাকে বুঝিয়ে বলে দিলো- এটি খুব খারাপ কাজ। তুমি যা আঁকতে পারো তাই আঁকো। ফুলকিকে কিছু কাগজ আর পেনসিল দিয়ে বলে দিলো- অবসর সময়ে তুই ছবি আঁকবি। সাহেবের কথা শুনে ফুলকি তো মহা খুশি। কিছু দিন পর ফরিদ সাহেব ওদেরকে ডেকে বলে- তোদের আঁকা ছবিগুলো আমি দেখব। ফুলকির আঁকা ছবিগুলো দেখে তারা হতবাক হয়ে গেল। তারা বলতে লাগল, ওকে আঁকার সুযোগ দিলে নামকরা শিল্পী হতে পারবে। আল্লাহ কার ভেতরে কোন বিষয়ে প্রতিভা দিয়েছেন কেউ জানে না। সুযোগ পেলে ওরাও অনেক ভালো কিছু করতে পারে। ফরিদ সাহেব তার বউকে বলে দিলো, ওকে যেন ছবি আঁকার সুযোগ দেয় আর যা কিছু লাগে কিনে দেয়। ফুলকির বয়স যখন ১৬ বছর তখন ফরিদ সাহেব ফুলকির ছবিগুলো দিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্য ছবিগুলো বিক্রি হয়ে গেল। প্রত্যেকে মেয়েটির ছবির খুব প্রশংসা করল। রাতে ফুলকিকে ডেকে ফরিদ সাহেব বলে, এই টাকাগুলো তোর নামে ব্যাংকে জমা থাকবে, তোর মা এলে তুই বাসা ভাড়া করে থাকবি, ভাইটাকে লেখাপড়া করাবি। ফুলকি কেঁদে কেঁদে বলে, খালু আপনাদের ছাড়া আমি কেমন করে থাকব? ফরিদ সাহেবের বউ ফুলকিকে বলে- আরে বোকা মেয়ে, তুই আমাদের পাশের ফ্ল্যাটটিতে থাকবি। দেশ-বিদেশে তোর ছবির সুনাম ছড়িয়ে পড়বে, তোকে অনেক ছবি আঁকতে হবে।
সকাল বেলা ফরিদ সাহেব সবাইকে ডেকে পত্রিকাতে ফুলকির ছবিগুলো দেখাল। ফুলকি ফরিদ সাহেবের পায়ে হাত দিয়ে কেঁদে ফেলে বলে- আপনাদের এই ঋণ আমি কোনো দিন শোধ করতে পারব না। পৃথবীতে এখনো ভালো মানুষ আছে, যারা আমাদের মতো মানুষকে বাঁচার সুযোগ করে দেয়।


আরো সংবাদ



premium cement
অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান

সকল