২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তেঁতুলগাছের ভূত

তেঁতুলগাছের ভূত -

উজাড় বাড়ি আসলে উজাড় নয়। একটা সময় গভীর জঙ্গলে ছাওয়া ছিল। এই বাড়ির নাম শোনামাত্রই এখনো মানুষের গা ছমছম করে। যদিও আগের মতোন ঝোপ-ঝাড় এখন আর নেই। তবে এখনো যে পরিমাণ গাছগাছালি আছে, তা-ও একেবারে কম নয়। বিশেষ করে নাম না জানা কয়েকটি বড় বড় গাছ। এদের ডালপালাগুলোও এত বিশাল যে, মাঝারি আকারের গাছের চেয়ে বড়। এখনো এই উজাড় বাড়িতে এমন কয়েকটি জায়গা আছে, যেখানে সূর্যের আলোকেও অনেক কষ্ট করে প্রবেশ করতে হয়। সেই উজাড় বাড়ির উত্তর পাশে একটি তেঁতুলগাছ আছে। ইয়া বড়সড়। সেই তেঁতুলগাছের তলায় একটা ধানী জমি। সেই জমিতে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে প্রতিদিন ডাকসই খেলে। মাগরিবের আজান হলেই যে যার বাড়িতে ফিরে যায়।
প্রতিদিনের মতোন আজও সবাই সেখানে খেলাধুলা করছে। তাদের আনন্দের যেন আর সীমা নেই। কখন যে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে কেউ খেয়াল করেনি। এমন সময় তেঁতুলগাছের ভেতর থেকে একটি আচানক আওয়াজ বেরিয়ে এলো। আর সেই আওয়াজটা হলো, তেঁতুল... তেঁতুল... তেঁতুল বড় টক রে, তোদের সবাইকে চিবিয়ে খেতে আমার বড় শখ রে...! এই ভয়ঙ্কর কথাগুলো সবার আগে যার কানে ঢুকল, তার নাম ঐশী। ঐশী তখন চিৎকার করে বলল, সবাই খেলা বন্ধ কর। আমি তেঁতুলগাছের ভেতর একটি ভয়ানক আওয়াজ শুনেছি। সাথে সাথে সবাই খেলা বন্ধ করে ঐশীকে ঘিরে ধরে বলল, তুমি কী শুনেছ... তাড়াতাড়ি বলো। আমাদের আর ত সইছে না। এমন সময় আরো জোরসে সেই আওয়াজটি আবার স্পষ্ট শোনা গেল।
তেঁতুল... তেঁতুল... তেঁতুল বড় টক রে, তোদের সবাইকে চিবিয়ে খেতে আমার বড় শখ রে...!
ইউশা বলল, এটা নিশ্চয়ই ভূতের গলার আওয়াজ। আমি ইউটিউবে ভূতের গল্প শুনেছি। একদম সেইরকম কণ্ঠস্বর। ভূতেরা সব সময় কাঁপা কাঁপা গলায় কথা বলে। এখানে আর থাকা ঠিক হবে না। সবাই চল... আমরা বাড়ি ফিরে যাই। কিন্তু ছোট্ট মেয়ে আরশি বলল, আমি ওসব ভূতপ্রেত এ বিশ্বাস করি না। বাবা বলেছেন, ভূত বলতে আসলে কিছুই নেই। ওরা কেবল গল্পেই থাকে, বাস্তবে থাকে না। আরশির কথায় সায় জানিয়ে পড়শি বলল, এটাই সঠিক কথা। আমিও শুনেছি। তখন ইউশা বলল, তাহলে তোমরা থাক, আমি চলে গেলাম। এই বলে ইউশা বাড়ির দিকে হাঁটা দিলো। এমন সময় ঐশী বলল, চলো আমরা দাদাভাইকে নিয়ে আসি। দাদাভাই অনেক জ্ঞানী আর সাহসী মানুষ। তিনি নিশ্চয়ই এই রহস্যের একটা কিনারা করতে পারবেন। সবাই তখন সমস্বরে বলল, সেটাই ভালো হবে। সবাই চলো...চলো...। যাওয়ার সময় সবাই আবার শুনতে পেল, তেঁতুল... তেঁতুল... তেঁতুল বড় টক রে, তোদের সবাইকে চিবিয়ে খেতে আমার বড় শখ রে...!
যাক অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই ঐশীর দাদাভাই আবদুল হামিদ সাহেবকে নিয়ে ফিরে এলো। ইতোমধ্যে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। সবকিছু শোনে ঐশীর দাদাভাই জিজ্ঞেস করলেন, আওয়াজটা কি তেঁতুলগাছের কাণ্ড থেকে এসেছে নাকি শাখা-প্রশাখা থেকে? অন্য কেউ জবাব দেয়ার আগেই আরশি বলল, আমার যতটা মনে হয়েছে আওয়াজটা তেঁতুলগাছের গোড়ার দিক থেকেই এসেছে। আরশির কথা শেষ হতে না হতেই আবার সেই আওয়াজটি শোনা গেল। এখন আরো স্পষ্ট এবং পরিষ্কার। তেঁতুল... তেঁতুল... তেঁতুল বড় টক রে, তোদের সবাইকে চিবিয়ে খেতে আমার বড় শখ রে...! ঐশীর দাদাভাই বললেন, কোনো সমস্যা নেই। আমি সবকিছু বুঝতে পেরেছি। তেঁতুলগাছের গোড়ার দিকে একটা বিশাল গুহা আছে। সেখান থেকেই আওয়াজটা এসেছে। ঐশী আমার টর্চলাইটটা দাও তো বোন। ঐশী দাদাভাইয়ের হাতে টর্চলাইটটি দিয়ে মনে মনে গৌরব বোধ করল।
সাথে সাথে শুরু হয়ে গেল তেঁতুলগাছের ভূত ধরার অ্যাকশন। আর কোনো সাড়াশব্দ নেই। চারপাশে সুনসান নীরবতা। সবাই বিড়ালের মতো পা টিপে টিপে তেঁতুলগাছের সেই গুহাটার মুখের সামনে এসে দাঁড়াল। ঐশীর দাদাভাই সাথে সাথে গুহার ভেতরে টর্চ জ্বালিয়েই হেসে উঠলেন। বললেন, আরে... সাজিদ যে! তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আয় বলছি। সাজিদ ভয়ে ভয়ে বেরিয়ে এলো। মাটির দিকে মুখ। সবাই হা হা করে হাসতে লাগল। ঐশীর দাদাভাই বললেন, সাজিদ কাজটা তুমি ভালো করনি। ভয় দেখানো ভালো মানুষের কাজ নয়। তা ছাড়া এসব গাছের গুহার ভেতরে বিষধর সাপ থাকে। আর কোনোদিন এমন কাজ করো না। সাজিদ মুখে কিছু বলল না, কেবল মাথা নেড়ে সায় জানালো।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরে সেদিন কী ঘটেছিল : বিবিসির প্রতিবেদন ইসরাইলের কাছে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র ফরিদপুরে সেদিন কী ঘটেছিল : বিবিসির প্রতিবেদন স্বর্ণের দাম কিছুটা কমলো অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ ব্যক্তি ভর্তি পাঁচবিবিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক ব্যক্তির মৃত্যু স্পেশাল অলিম্পিকে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, প্রশংসিত দেওয়ানগঞ্জের রবিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরো ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা থাই-মিয়ানমার সীমান্ত শহরের কাছে আবারো সংঘর্ষ শুরু : থাই সেনাবাহিনী পাঁচবিবিতে মোটরসাইকেল ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গায়

সকল