২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সহানুভূতি

-

মিতুলদের ঘরের ভেন্টিলাইটে একটি পাখি বাস করে। মিতুল পাখিটার সাথে খুব ভাব জমায়।
কখনো কখনো আবার মিতুল খাবার রেখে আসে। যদি কোনো সময় দেখে পাখিটা ঘরে নাই। তখন মিতুলের খুব মন খারাপ হয়। মিতুল মনে মনে ভাবে
পাখিটা বোধহয় একেবারেই চলে গেছে। একটু পরপর উঁকি দিয়ে দেখে পাখিটা ফিরেছে কি না। পাখিটা ফিরলে মিতুল খুব উৎফুল্ল। অগ্রহায়ণ মাস বলে কথা। তাই পাখিটা বনে বনে ঘুরছে। নবান্ন এলে যেমন গ্রামীণ পরিবেশ উৎসবে মুখরিত। ঘরে ঘরে পিঠে পুলির আমেজ। পুলকভরা মুখ শিশু-কিশোর নজুয়ানদের।
এই সময়ে পাখিদেরও নবান্ন উৎসবের আমেজ দেখা যায়। বিকেল হতেই সব ধরনের পাখি জড়ো হয় মাঠে । পড়ে থাকা ধান খাওয়ার ধুম পড়ে যায় পাখিদের মাঝে, আর কিচিরমিচির আওয়াজে ফুটিয়ে তুলে তাদের নবান্ন উৎসব।
এই সব মিতুলকে খুব আনন্দ দেয়। মিতুল পাখি খুব ভালোবাসে। তবে পাখি পোষতে ভালোবাসে না। কারণ সে বুঝেছে পাখি খোলা আকশে উড়তে ভালোবাসে। তাই পাখিকে খাঁচায় আটকিয়ে রাখাটা অন্যায়।
গাঁও গেরামে হেমন্ত এলেই যেন সকাল-সন্ধ্যা একটু কুয়াশা পড়তে দেখা যায়। শীতপ্রবাহ বিরাজমান। তাই পাখিরা পাখিদের বাসস্থান বন দিয়ে আরামদায়ক ও মজবুত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পাখিদের বাসস্থান গাছের ডালে হয়ে থাকে বেশির ভাগ।
মিতুল শীত প্রবাহ দেখে শীতের আরমদায়ক পোশাক পরিধান করে নিলো। মিতুলের পাখিটার কথাও স্মরণ হলো। তাই পাখির বাসায় উষ্ণতার জন্য আরামদায়ক কাপড়, তুলো এইগুলো রেখে এলো। কিন্তু একটু পরেই দেখে এইগুলো উধাও। এপাশ-ওপাশ খুঁজে দেখল কোথাও নেই। একটু দূরেই চোখ গেল একটি গাছের ডালে। ওইখানে একটি পাখি ও তার ছানা শীতে থরথর করে কাঁপছে। আর মিতুলের পাখিটি গাছের ডালে থাকা মা পাখি ও ছানা পাখিকে নিজের ঘরের বন আর মিতুলের দেয়া উষ্ণ কাপড়গুলো দিয়ে নড়বড়ে গাছের ডালে মজবুত বাসস্থান ও উষ্ণতা দিতে ব্যাকুল হয়ে পড়ছে। মিতুল তাদের মিতালি দেখে গাল বেয়ে গড়াল কয়েক ফোঁটা উষ্ণ জল। তারপর একদিন মিতুল স্কুলে যাওয়ার পথে একদা বৃদ্ধা এভাবে শীতে থরথর করে কাঁপুনি করতেছে তখনই মনে পড়ে গেল পাখিদের সহানুভূতির কথা।


আরো সংবাদ



premium cement