২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আযীয আল সউদ

-

সালমান বিন আবদুল আযীয বিন আব্দুর রহমান বিন ফয়সল বিন তুর্কি বিন আব্দুল্লাহ বিন মোহাম্মদ বিন সউদ ১৯৩৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা ছিলেন হেসা বিনতে আহমদ আল সুদাইরি। তিনি মুবাব্বা প্রাসাদে বেড়ে ওঠেন। সালমান প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন রিয়াদের প্রিন্স স্কুলে। বাদশাহ আবদুল আযীয তার সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি ধর্মতত্ত্ব ও আধুনিক বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন।
১৯ বছর বয়সে সালমান তার সরকারি দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তার পিতা ১৯৫৪ সালের ১৭ মার্চ সালমানকে রিয়াদের আমির ও মেয়র পদে নিয়োগ দান করেন। ১৯৫৫ সালে সৎভাই বাদশাহ সউদ সালমানকে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় রিয়াদের মেয়র নিযুক্ত করেন। ১৯৬০ সালের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
১৯৬৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সালমান বিন আবদুল আযীয রিয়াদ প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন। ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে নিযুক্ত ছিলেন। গভর্নরের দায়িত্ব পালনকালে সালমান রিয়াদকে একটি মধ্য আয়তনের নগরী থেকে প্রধান বৃহদাকার মেট্রোপলিটন মহানগরীতে রূপান্তর করেন। একই সাথে তিনি দেশে পর্যটনের বিকাশ, রাজধানী প্রকল্প গ্রহণ ও বিদেশী বিনিয়োগে আকৃষ্ট করেন। রিয়াদে সালমানের প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত প্রাদেশিক প্রশাসন হিসেবে মূল্যায়ন করা হতো।
সউদী বাদশাহ
খাদেমুল হারামাইন সউদী বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আবদুল আযীযের ইন্তেকালের পর সালমান বিন আবদুল আযীয ১৪৩৬ হিজরির ৩ রবিউস সানি (২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি) সউদী আরবের সপ্তম বাদশাহ ও খাদেমুল হারামাইন হিসেবে ঘোষিত হন।
সালমানের সরকারি অভিজ্ঞতা
১৯৫৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সালমান রিয়াদ প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন। ১৯৬৩ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত ৪৮ বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রিয়াদের ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের কর্মসূচি গ্রহণের নির্দেশ দেন।
২০১১ সালের নভেম্বরে সালমান তার ভাই ক্রাউন প্রিন্স সুলতানের মৃত্যুর পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত হন। আর প্রিন্স সাততাম বিন আব্দুল আজিজকে রিয়াদের পরবর্তী গভর্নর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একই সাথে সালমান জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) সদস্যও নিযুক্ত হন।
২০১২ সালের ১৮ জুন ভাই ক্রাউন প্রিন্স নায়েফ বিন আব্দুল আজিজের মৃত্যুর পর সালমান বিন আব্দুল আজিজকে ক্রাউন প্রিন্স ঘোষণা করা হয়। একই সাথে তিনি উপপ্রধানমন্ত্রীও নিযুক্ত হন।
২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলেন। বাদশাহ ও তার পরিবার আন্তর্জাতিক সংবাদপত্র ‘আল সার্ক আল আউসাত’ এবং দৈনিক সংবাদপত্র ‘আল এখতিসাদিয়াহ’-এর মালিক। সালমানের পুত্র প্রিন্স সুলতান ১৯৮৫ জুনে মহাশূন্যে পাঠানো ডিসকভারি মহাশূন্য যানে ভ্রমণকারী প্রথম আরব ও মুসলিম সউদী রাজকীয় পরিবারের সদস্য।
পুরস্কার লাভ
১৯৫৬ সালের পর থেকে বাদশাহ সালমান প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের শিকারদের কাছে ত্রাণসহায়তা প্রদানে বিভিন্ন মানবিক সেবাদান উদ্যোগে মূল ভূমিকা পালন করেন। তার এই মানবিক সেবার জন্য তিনি বহু পদক ও সম্মাননা লাভ করেছেন। এর মধ্যে বাহরাইন, বসনিয়া ও হার্জেগোবিনা, ফ্রান্স, মরক্কো, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, সেনেগাল, জাতিসঙ্ঘ, ইয়েমেনের দেয়া বিভিন্ন পুরস্কার এবং কিং আবদুল আযীয পুরস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আযীয অনেকগুলো সম্মানসূচক ডিগ্রি ও একাডেমিক পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মধ্যে মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি, প্রিন্স সালমান একাডেমিক অ্যাওয়ার্ড ও বিজ্ঞানে অবদানের জন্য বার্লিনের ব্রান্ডেনবার্গ একাডেমি অব সায়েন্স অ্যান্ড হিউমিনিটিজের কান্ট পদক অন্যতম।


আরো সংবাদ



premium cement